আমি ধর্ষিত হতে চাই আমাকে হেফাজত করবেন না

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ০৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:০১:৪০ বিকাল



হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার একটি দফা প্রকাশ্যে নারী-পুরুষ অবাধ বিচরণ, ইসলাম বিরোধী নারীনীতি, এই দাবীগুলো ইসলামী দলগুলোর অনেক আগের দাবী দিন দিন বেহায়াপনা হেফাজতের কাছে মনে হয়েছে বেড়ে গেছে তাই হয়তো তারা এই দাবীটি জুড়ে দিয়েছে। হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক দল এই দল যতই যা বলুক তারা কখনও রাষ্ট্রের কোন আইন পরিবর্তন করতে পারবে না। এটা হেফাজতের একটি দাবি সরকার ইচ্ছে করলে মানতেও পারে নাও পারে। হেফাজতে ইসলাম তাদের সমাবেশ থেকে কখনও বলেনি যে নারীরা চাকুরী করতে পারবে না, রাষ্ট্রের কোন গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকায় অংশ নিতে পারবে না। তারা বলেছেন প্রকাশ্যে নারী-পুরুষ অবাধ বিচরণ- অথার্ৎ বেহায়াপনা। আমাদের কয়েকজন নারী ও নারী সংগঠন লাফিয়ে পরেছে হেফাজতের বিরুদ্ধে। মনে হয়েছে যে কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশের সকল নারীকে গৃহবন্ধি করে ফেলা হবে। কিংবা নারীদের ঘর থেকে বের হলে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। কয়েকটি মিডিয়াও হেফাজতের মুল দাবিগুলোকে পিছে ফেলে পেছনের দাবিকে সামনে আনার চেষ্টাও চালাচেছ। অন্য দিকে আমার মনে হয় যে নারী ও নারী সংগঠন গুলো হেফাজতের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে গেছেন তারা হয়তো হেফাজতের দাবিটি স্পষ্ট না কারায় বুঝতে পারেনি। কারন হেফাজত বলেছে বেহায়াপনা, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষ অবাধ বিচরণের কথাটা যদি একটু খোলাশা করে বলতো তাহলে আন্দোলন রত নারীও নারী সংগঠন লাফিয়ে পরতো না।

লাফিয়ে পরা নারীদের হেফাজতের বিরুদ্ধে ও নিজেদের ছোট মনে করায় একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা না বলে পারছি না-

সাল ঠিক মনে নেই তবে ২/৩ বছর আগের ঘটনা।

রাস্তাদিয়ে হেটে যাচ্ছি। একটি বাড়ির পাশ থেকে যাওয়ার সময় একটি নারীর চিৎকার শুনতে পেলাম। কয়েক পা যেতে না যেতে আরো চিৎকার বেড়ে গেলো । রাস্তার কয়েকজন লোক দাড়িয়ে গেলো সাথে আমিও দাড়িয়ে গেলাম। এক, দুজন করে বেশ কয়েক জন বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলাম। ঢুকে দেখলাম ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে স্বামী তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করছে মহিলা চিৎকার করছে । মহিলা যত চিৎকার করে স্বামী তত মার বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপস্থিত কারোই ব্যাপারটা সহ্য হচ্ছেনা । কেউ বলছে মহিলা মারা যেতে পারে যেভাবে মারছে। তো খুব রাগ হয়ে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে পরলাম। স্বামীর কাছ থেকে লাঠিটি ছিনিয়ে নিলাম। স্বামীকে বললাম ভাই এইভাবে স্ত্রীকে পেটালে উনি তো মারা যাবে। তো এভাবে মারছেন অপরাধ কি ওনার।

মহিলা বলে উঠলো- ভাই মোর অপরাধ অইলো মুই তরকারিতে লবন কম দেছেলাম।

এই কথা বলতে না বলতে স্বামী লাফ দিয়ে উঠে আমারকে ধাক্কা মেরে বলল এই আমি মারছি তুই আবার অন্যর কাছে নালিশ করো বলে আরো ২/৩টি চড় মারলো। তো আমার অনেক রাগ হলো- আমি সহ্য না করতে পেরে লোকটাকে ২/৩টি চর মারলাম, পুলিশে দিয়ে দিবো বলে বাইরে বেড় করে নিয়ে এলাম। উপস্থিত অনেকেই ক্ষেপে গেলো। এর মধ্যে স্ত্রী লাফ দিয়ে বাইরে এসে আমাকে বলল- এই মেয়া মোর স্বামী মোরে মারছে হেতে আপনের অইছকি। আপনে মোর স্বামীরে মারার কেডা। মোর স্বামীরে পুলিশে দিতে চন। মুই আমনেরে পুলিশে দিমু মোর স্বামীরে মারা পান্নে। আমি জায়গায় হতভম্ব হয়ে গেলাম। উপস্থিত সকলে আস্তে আস্তে বেড়িয়ে গেল এক ভদ্র লোক আমাকে বল্ল ভাই আপনি চলেন নাহলে সমস্যা হতে পারে।

আমিও সাথে সাথে কাপুরুষের মতো বেড়িয়ে আসতে হলো।

প্রসঙ্গত ঘটনাটি লিখতে হলো। এখানে হেফাজত ও নারী প্রসঙ্গে ছিলাম। অতি ভদ্র লোক গুলো একটু লজ্জা জনক কথা হলে খোলাশা করে বলতে পারেন না এটাই ভদ্রতা নম্্রতা এই ইসলামের শিক্ষা। যেমন- এ লোক তার স্ত্রিকে গোপনাঙ্গে চরম আঘাত করেছে। মহল্লায় বিচারের ডাক দিয়েছে শত শত মানুষ হাজির

গ্রাম্য বিচারক : তোমার স্বামী তোমাকে মেরেছে।

স্ত্রী: জি। অনেক এমন আঘাত করেছে আমি কয়েক বিছানা থেকে উঠতে পারছিলামনা।

স্ত্রীর: স্বাক্ষীতে স্বামী অপরাধি হয়ে রায় হবে। ঠিক তখন :

স্বামী : বিচারক সাহেব ও মিথ্যো বলছে আমি ওকে মারিনি একটু আদর করেছি। হয়তো একটু জোরে লেগেছে তাই অভিমান করে বলছে।

স্ত্রী: না চেয়ারম্যান সাহেব উনি মিথ্যো বলছে ।

স্বামী: তাহলে ওকে (স্ত্রীকে) দেখিয়ে বলল। কোথায় মেরেছি দেখাতে বলেন, যে ওকে কয়েক দিন বিছানা থেকে উঠতে পারেনি।

বিচারকঃ স্ত্রীকে দেখিয়ে হ্যা দেখাও কোথায় তোমাকে মারা হইছে।

স্ত্রি: দেখাতে পারে নি কোথায় তাকে নির্যাতন করেছে।

বিচার স্বামীর পক্ষেই চলে গেল।

এই গল্পটা বলা হলো শুধু যে নারীরা লাফিয়ে পরেছে তাদের জন্য। যারা হেফাজতের দাবী বুঝতে পারে নি তাদের জন্য বুঝানোর জন্য একটু খোলামেলাই লেখতে হচ্ছে। বিশেষ করে নাট্য অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী আপার উদ্দেশ্য বলব বর্তমান নাট্য জগতে যে পরিমান খোলা মেলা কার্যক্রম হচ্ছে তা আপনি ভাল করেই উপলব্দি করেন সেই বিষয়েতো হেফাজতের কোন দাবী হয়নি। যখন মাত্রাতিরিক্ত হচ্ছে ঠিক সেই সময় হেফাজত কঠিন হয়েছে। আমরা দেখেছি প্রভা, তিন্নি, মিলা সহ কয়েকজনের যে পর্ন বাজারে এসেছে তাতে আর কত স্বাধীনতা আপনারা চান বুঝতে পারছি না।

যাইহোক, এখানে হেফাজতে ইসলাম যে অবাধ বিচরণ বুঝিয়েছে সেটা হচ্ছে আপনারা শাহবাগ সারোয়াদি উদ্যানে গেলে দেতে পাবেন প্রেমিক-প্রেমিকা, ভাসমান পতিতারা প্রকাশ্য যেভাবে চুমাচুমি, চাপাচাপি করে, রাস্তায় প্রায় রিক্সায় দেখা যায় ছেলে মেয়েরা যেভাবে দুধ চাপাচাপি করে রিক্সা ভ্রমন করে, বিভিন্ন মার্কেটে দেখা যায় মেয়েদের স্তনের বোটা ছাড়া বাকি অংশই দেখা যায়। যাতে ছেলেরা উত্তেজিত হয় এরকম পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায় । হেফাজতে ইসলাম আমার মনে হয় সেই সমস্ত কর্যক্রমের উদ্দেশ্য বলেছেন। এই খোলামেলার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত ধর্ষনের প্রতিযোগীতায় নেমেছে। বর্তমান আধুনিকতার ছোয়ায় যে পরিমান ধর্ষন বেড়েছে তা অতিতে সমস্ত সরকাররের আমালকে হার মানিয়েছে। একজন নারী সাংবাদিককে হেফজতের সমাবেশ থেকে যে আচরণ করেছে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু একুশে টিভির কর্তৃপক্ষ কি ভুলে গিয়ে ছিল ওখানে বিএনপি বা আওয়ামীলীগের কোন সমাবেশ না ওটা ছিল দেশের বিশিষ্ট আলেম ওলামাদের সমাবেশ ইসলাম ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা করেও অন্য পুরুষ রিপোর্টার পাঠাতে পারতো। যাইহোক প্রসঙ্গ অন্য সেটা হচ্ছে সাংবাদকি নতো ইকবাল সোবহান বলনে, “গতকাল হফোজতরে সম্মলেনে নারী সাংবাদকিদরে প্রতি যে আচরণ করা হয়ছে;ে তাতে মনে হচ্ছ,ে আফগানস্তিানে তালবোন নারীদরে যমেন পশ্চাৎপদ করে ফলেছেলি, বাংলাদশেওে তমেন পরস্থিতিি সৃষ্টরি চষ্টো হচ্ছ।ে”

কিন্তু সাগর-রুনি হত্যা মামলার এতো গুলো দিন পার হয়ে গেছে এই ব্যাপারে কেন নিশ্চুপ হয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও সাংবাদিক নির্যাতনেও এসরকার পুরস্কার পাওয়ার মত রেকর্ড করেছে। কই সেগুলো নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যাথা নেই । সাংবাদিক সাগর-রুনি সপরিবারে যে নিমর্মভাবে হত্যা হয়েছে তা কোন দেশের পরিস্থিতি করা চেষ্টা হচ্ছে সেটা তো বলেন না।

অন্যদিকে নাগরিক সংহতি নামে একটি সংগঠন একটি সমাবেশ করেছেন সমাবেশে বলা হয়েছে - র্ধমরে নামে নারীকে বন্দি করার অপচষ্টোর বরিুদ্ধে রাষ্ট্র-সরকার-সমাজ ও ব্যক্তরি সম্মলিতি প্রতরিােধ গড়ে তােলার আহবান জানানাে হয়।- নাগরকি সংহতরি

কিছুদিন আগে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখলাম পুলিশ কলেজ ছাত্রীসহ কয়েকজন মহিলা গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ। সেখানে অন্তস্বতা মহিলাও রয়েছে তাদের রিমান্ডও চাওয়া হয়েছে এখনও কারাগারে রয়েছে। তাদের অধিকার রক্ষার ব্যপারে তো আপনাদের কোন কথা নেই, কারণ তারা বোরকা পাড়া ছিল তাই। তারা অবাধ বিচরণ করতো না।

সর্বপরি যেটা সেটা হচ্ছে অনেক সময় শোনা যায় অনেক নেত্রিরা বলেন মেয়েরাও মানুষ মেয়েদেরকে ছেলেদের মত অধিকার দিতে হবে। আমি কখনও কোন নেতা বা ইসলামী দলকে বলতে শুনিনি যে মেয়েরা মানুষ না গরু/গাধা। কিন্তু নিজেরাই নিজেদের মর্যাদা রক্ষার বিপরিতে যাচ্ছেন। আপনারা অবাধ কেন আরো খোলামেলা অবাধ চলাফেরা করলে হেফাজতে ইসলাম কেন পৃথিবীর কেউ আপনাদের রুখতে পারবে না। কারণ দেশে দিন দিন ভাসমান পতিতার সংখ্যা বারছে আবার ধর্ষনের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসলামী ও অন্য ধর্মের মধ্যে পার্থক্য ইসলাম নারীদের সম্মান দিতে শিখায় অন্য ধর্মে মেয়েদের অসম্মান করে । পর্দায় থাকলে কেউ তাকাবে আপনার দিকে দুধ বেরকরে হাটলে উত্তেজিত কেউ চেপে ধরতে পারে এটাই স্বাভাবিক।

এখন আপারাই চিন্তা করেন আপনারা ঘরে থাকবেন নাকি প্রভার মত আলোচিত হবেন।

সর্বশেষ যেটা বুঝা যায় আপনারা রাস্তায় বেড়িয়ে অবাধ চলাফেরা করে ধর্ষনের শিকার হতে চান অন্য দিকে হেফজতে ইসলাম আপনাদের রক্ষা করতে চেয়েছে।

বন্ধুরা আমি আন্তরিক ভাবে দু:খিত একটু বেশি খোলামেলা লিখে ফেলেছি।

ধন্যবাদ সকলকে

বিষয়: রাজনীতি

১৮৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File