৫ই মে ঢাকা অবরোধ সফল করতে দেশের ইসলামপ্রিয় মুসলমানের প্রতি আহবান হেফাজতে ইসলামের
লিখেছেন লিখেছেন সরকার বিরোধী ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:৫৮:১৩ সন্ধ্যা
৬ই এপ্রিলের লংমার্চ সফল করার পর এখন ৫ই মে ঢাকা অবরোধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। সরকারি-বেসরকারি তরফে নানা রকম প্রতিবাদ প্রতিরোধের ঘোষণার পরও থেমে নেই তারা। যে কোন মূল্যে ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ই মে’র ঢাকা অবরোধকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশালে শানে রেসালাত সম্মেলন করা করেছে। গঠন করা হয়েছে ঘেরাও কর্মসূচি বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটি। ১৬ই এপ্রিল চট্টগ্রামের দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা ও নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে এ কমিটি গঠন করা হয়। হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ৫ই মে দেশের প্রতিটি জেলা থেকে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি সফল বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা-পর্যালোচনা, রোডম্যাপ প্রণয়ন এবং জেলা ভিত্তিক হেফাজতে ইসলামের কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে কেন্দ্রীয় দিকনির্দেশনা দেবে সমন্বয় কমিটি। এছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আওতায় ৭টি উপ-কমিটি ১৯শে এপ্রিল থেকে জেলা কমিটির সঙ্গে বৈঠকের জন্য দেশব্যাপী সফর শুরু করছে। সংগঠিত করছে ইসলামপন্হি তৌহিদী জনতাকে। ওদিকে গত এক সপ্তাহে যেসব জেলায় সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম, প্রতিটি সমাবেশে তৌহিদী জনতার উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। এ পর্যায়ে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঠেকাতে মরিয়া সরকার। এজন্য ৬ই এপ্রিলের মতো নানা কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে। কাজে লাগানো হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে। মাঠে নেমেছে এনজিও এবং মহিলা নেত্রীরা। ২৭শে এপ্রিল রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন সরকারপšি’ নারী নেত্রীরা। এক শ্রেণীর আলেম ওলামাও মাঠে। প্রত্যক্ষ পরোক্ষ হুমকি দেয়া হচ্ছে ওলামা-মাশায়েখ, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন-খাদেম এবং তৌহিদী জনতাকে। উদ্দেশ্য, ঢাকা অবরোধে কর্মসূচিতে অংশ নেয়া থেকে তাদের বিরত রাখা। বিশেষ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন মসজিদের ইমামকে ‘অন্য কাজে’ ব্যতিব্যস্ত রাখার কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। মসজিদের মাইক যাতে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির কাজে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে নেয়া হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ। লিফলেট বিতরণ করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন থেকে। আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে। এক কথায় যে কোন কৌশলে অবরোধ কর্মসূচিতে লোক সমাগম ঠেকিয়ে দেয়া। সরকারের আশঙ্কা আগামী ৫ই মে ৬ই এপ্রিলের মতো লাখ লাখ লোকের সমাগম হতে পারে। সে সমাবেশ থেকে যদি ‘দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত’ কর্মসূচি চলবে ঘোষণা দেয়া হয় তাহলে চরম বেকায়দায় পড়বে সরকার। এ আশঙ্কা থেকে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে জনসমাগম ঠেকানোর কৌশল নেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল কোন মন্তব্য করতে অপারগতা জানান। তবে হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা বলেন, সরকারের কোন অপকৌশলে কাজ হবে না। ৫ই মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ভাবেই সফল হবে। যেমনিভাবে সফল হয়েছে ৬ই এপ্রিলের লংমার্চ মহাসমাবেশ। এদিকে হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী মুসলিম জনতাকে ঘেরাও কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি দেশের নারী সমাজকে কোন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, আখেরি নবী হযরত রাসুলুল্লাহ্্ (সা.), পবিত্র কুরআন, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের রীতিনীতি নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগাররা যেসব মিথ্যা, বানোয়াট, জঘন্য অশ্লীল ও উদ্ভট কল্পকাহিনী ব্লগে তুলে ধরে দীর্ঘ দিন থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করার যে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে, তার প্রতিবাদে উলামা-মাশায়েখ, ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতার লাগাতার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কিন্তু এসব বন্ধে সরকারের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ইসলামের দুশমনরা যেন দ্বিগুণ উৎসাহে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শাহবাগের কথিত জাগরণ মঞ্চ থেকে এদেশের হক্কানী উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষোদগারমূলক বক্তব্য ও হুংকার দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে উলামা-মাশায়েখ ও কোটি কোটি তৌহিদী জনতার দাবির পরিবর্তে সরকার ইসলাম বিদ্বেষীদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছে। সর্বশেষ কথিত গণজাগরণ মঞ্চের দাবি মতে সরকার দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে প্রেসে তালা দিয়ে পত্রিকাটি বন্ধের সকল ব্যবস্থা নিয়েছে। আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আগামী ৫ই মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শরিক হয়ে ইসলাম বিরোধী সকল অপতৎপরতা ও অপসংস্কৃতি আগ্রাসন বন্ধের ঈমানী দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখনি এসব বন্ধে আমরা সক্ষম না হলে আগামীতে মুসলিম পরিচিতি নিয়ে এদেশে বসবাস করাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন