মহাবুদ্ধিমন মগার মহাকান্ড!

লিখেছেন লিখেছেন গালিব মাহমুদ শিশির ১৩ মার্চ, ২০১৩, ১১:১০:২৮ রাত

নাম তার জুলমত মিয়া। কাজে-কামে কিছুটা মগামিপনার মিশ্রণ বিধায় লোকে তাকে মগা বলে ডাকে। আসলে কিন্তু তার বুদ্দি-সুদ্দি খুবই ভালো। বিচক্ষন মগা আর কি। তবে মাঝে মাঝেই সে মগা সাজে। আজও সে তেমনই সাজল।

১০০০,৫০০,১০০,৫০,২০ ও১০ টাকার নোট মিলিয়ে দশ হাজার টাকার দু'টো বান্ডিল বানিয়ে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে মালার মতোন গলায় ঝুলিয়ে রাস্তায় রাস্তা হাঁটতে লাগল সে। আর যাকেই সামনে পেলো তাকেই ডেকে বলতে লাগলো- এই দেখো, দেখো, আমার কত টাকা!

তার এই কান্ড দেখে অনেকেই বলল- এই মগা! পাগল হয়ে গেলি নাকি? টাকা গলায় ঝুলিয়েছিস ক্যান? চোর-ডাকাত পেলেতো সব কেড়ে নেবে, সাথে জানটাও যাবে। কে শোনে কার কথা, কারো কথায় কর্ণপাত না করে সে তার কাজ করতেই থাকলো।

ব্যাপারটা নজরে পড়ে মহল্লার সবার। তাই গণ্যমান্য কয়েকজন জুলমত মিয়াকে ধরে বলল- কিরে, এতদিন তো ছিলি মগা, এখনতো দেখছি পাগলও হয়ে গেছিস। হেমায়েতপুর যাবার শখ জাগছে নাকি? ব্যাপার কি বল? টাকা গলায় ঝুলিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছিস কেন? এগুলো কি এভাবে দেখানোর জিনিস?

গণ্যমান্য সম্মানিত ব্যক্তিগণকে দেখে আশ-পাশের আরো অনেক লোক জড়ো হলো সেখানে। অনেক লোকের সমাগম দেখে ফন্দিমতো এবার জুলমত মিয়া বলল, যদি সমাজে বুদ্ধিমান ও মাথা মোটা ব্যক্তিরা তাদের বোন-কন্যাদের কে বেপর্দাভাবে, উগ্র সাজুগুজু করিয়ে রাস্তায় রাস্তায় বের করে এনে পুরুষদের লোলুপ দৃষ্টির খোরাক এবং কিশোর-তরু-যুব সমাজ নষ্ট বানাবার রাস্তা তৈরী করেও তারা মনে করেন- তারা নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার কায়েম করেছেন, তারা যদি পাগল না হন, তবে আমিও পাগল না।

মগার কথা শুনে এক ব্যক্তি ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলল, এসব বলে কি বুঝাতে চাচ্ছো তুমি? মেয়েদেরকে ঘরে বন্দী করে রাখতে হবে? এসব সেকেলে, মধ্যযুগীয় ও অসামাজিক কথা বাদ দাও। এখন নারীরা সব দিকে এগিয়ে চলেছে। সংসদ থেকে সেলুন পর্যন্ত নারীদের অবাধ বিচরণ! আর নারী-পুরুষ একসাথে মিলে কাজ করতে করতে এভাবে সহশিক্ষা ও সহকর্ম, সহবাস(!) ব্যাপক হলেই নারীদের উপর থেকে পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি উঠে যাবে। তখন আর দেশে বিশৃঙখলা থাকবেনা।

জুলমত মিয়া বলল, তাহলে টাকাও ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে গলায় বেধে দেখালে চোর-ডাকাতরা ভাল হয়ে যাবে। ওরা আর চুরি-ডাকাতি করবে না। কারণ, দেখতে দেখতে তাদের টাকার স্বাদ মিটে যাবে।

সুতরাং এজন্য আমার জান যাবে কেন?

যদি তা না হয়, তবে আমিও বলবো-আপনারা যেভাবে দেশের উন্নতি কায়েম করতে চাইছেন, সেভাবে অবনতি ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়। টাকা যেমন লোভনীয়, নারী তেমন আকর্ষণীয়া। টাকা দেখেই যদি চোর-ডাকাতের লোভ না মেটে, তবে নারীকে শুধু উন্মুক্ত পেলেই লোলুপ পুরুষের তৃষ্না মিটবে না। বরং পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হবে। এ জন্য কঠোর আইন করেও ইভটিজিং আর নারী ধর্ষণ রোধ করা যাবে না। যখন হয়েছে ফোঁড়া, ফোঁড়ার ঔষধই খেতে হবে, পেট ব্যথার ঔষধ খেলে চলবে না। মগার এ বুদ্দিমনা কথা শুনে সবাই হাঁ করে তাকিয়ে রইলো!

বিষয়: বিবিধ

১১৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File