আমরা তো অনেক এগিয়ে গেছি!
লিখেছেন লিখেছেন গালিব মাহমুদ শিশির ০১ মে, ২০১৩, ০১:৫১:২৫ দুপুর
ঐ শালার পোলা ওঠ! যা ভাগ ইখান থিকা…!
বলেই পুলিশের ইউনিফর্ম পড়া লোকটা লাগাতার হাতে থাকা ডান্ডা দিয়ে অনেকগুলো আঘাত করলো ছেলেটার পিঠে।…পায়ে…হাত ে।…যেখানে সুবিধা পেলো, সেখানে।
ও মা গো!
ব্যথায় ককিয়ে উঠলো বালকটা……
যাইতাছি।
…যাইতাছ ি…আর মাইরেন না।…
কাতর কণ্ঠে বললো, প্লাটফর্মে পত্রিকা বিছিয়ে, সেভেন আপের বোতলকে বালিশ বানিয়ে শুয়ে থাকা, পুলিশের পিটুনিতে সদ্য ঘুম থেকে জাগ্রত ১২-১৩ বছরের বালকটা।
শোয়া থেকে উঠতে উঠতে আরো কয়েকটা আঘাত সপাং সপাং শ্বব্ধ শোনা গেলো। বালকটা দাঁড়িয়েই কোনোমতে দৌড়ে পালালো দানবরুপী পুলিশের সামনে থেকে।
নিরাপদ দুরত্বে গিয়েই পুলিশটাকে কষে ইচ্ছামতো গালাগাল করলো ছেলেটা। তারপর স্টেষনের শেষপ্রান্তে থাকা ছোট ডোবাটার ধারে গিয়ে পা ছড়িয়ে বসে পড়লো। আঘাতে আক্রান্ত স্থান গুলো রক্ত জমে লাল টুকটুকে রুপ নিয়েছে। কিছুটা ছিলে গেছে।
এটি রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটা রেলষ্টেষনের নিত্যদিনকার ঘটনা। সারাদিন কাজ কর্ম শেষে ছিন্নমুল, ঘরবাড়িহীন মানুষগুলো রাতটা কাটানোর জন্য, একটু বিশ্রাম, একটু আশ্রয়ের জন্য বেছে নেয় ফাকা পড়ে থাকা রেলষ্টেষনের প্লাটফর্ম। এখানেই রাতে এসে এলিয়ে দেয় পরিশান্ত,ক্লান্ ত দেহটা।…মশার কামড়ে অতিষ্ঠ, বিরক্ত হয়ে…সারারাত যেমন তেমন, ভোর হতে না হতেই রেলওয়ে পুলিশ এই মানুষগুলোকে ঘুম থেকে উঠিয়ে প্লাটফর্ম খালি করার জন্য ডান্ডা হাতে বেরিয়ে পড়ে।… বিবেকহীনের মতো ঘুমন্ত মানুষগুলোর উপর লাঠিচার্জ করে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়। খুবই অমানবিক দৃশ্য……
মনটা কেঁদে ওঠে আমার। ভোর বিহানে ট্রেন ধরতে এসে এমন দৃশ্য আমি অনেক দেখেছি।
ভাবি,
এসব দৃশ আর কতকাল দেখতে হবে আমাদের?
সরকার না বলে দেশ দারিদ্র্যমুক্ত, ডিজিটাল হয়েছে, তবে এরা কারা??
বিষয়: বিবিধ
১১৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন