সবার উপরে ভারত সত্য
লিখেছেন লিখেছেন ফারহানা শারমিন ৩০ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:০৬:৫২ রাত
সেদিন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে ভারতীয় সেনাদের নিয়ে একটা ডকুমেন্টারী দেখছিলাম।ডকুমেন্টারীর এক পর্যায়ে বলা হয়,'১৯৬৫ সালের পর ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হয় আর এর ফলে জন্ম নেয় বাংলাদেশের;১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে পাকিস্তানী বাহিনী।
বাক্যগুলো খেয়াল করেন।এখানে ৭১ এ বাংলাদেশের ব্যাপারটা গৌণ ধরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকেই মূখ্য ধরা হচ্ছে।অধিকাংশ ভারতীয়ও মনে করে ৭১ এ যুদ্ধটা হয়েছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে,আর এর ফলস্বরুপ বাংলাদেশের জন্ম হয়্ִ
শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তবতা।
৪৭ এ দেশ ভাগের পর ভারত বার বার চেয়েছে পাকিস্তানকে ২ টুকরো করতে।ফলে নানামুখী ষডযন্ত্রে তারা লিপ্ত হয়েছিল,,সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায় শাসন যোগ হওয়াতে ভারতের কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছিল।ফলে পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করতে সফল হয়েছিল ভারত।যা চূডান্ত রূপ নিয়েছিল পাকিস্তান ২ টুকরো হবার মধ্য দিয়ে।
একজন ভারতীয় অবশ্যই ৭১ এ ভারতের ভূমিকাকে সমর্থন করবে।ভারত-পাকিস্তান চিরশত্রু,,সুতরাং ভারতীয় সরকারের মত প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকও চাইত পাকিস্তান ধ্বংস হোক, এতে যে ভারতেরই লাভ।
এবার ফেরত আসি বর্তমানে।ভারত এখন আমাদের চিরশত্রু।আমাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে ভারত নাক গলায়,আমাদের উপর দাদাগিরি ফলায়।
ফলে এর প্রতিবাদে এদেশে তৈরী হয়েছে তীব্র ভারত বিরোধী মনোভাব।
ভারত ধ্বংস হোক,ভারত টুকরো টুকরো হয়ে যাক,আমরা এটা চাই।কেননা এতে আমাদের স্বার্থ জডিত,ভারত এতে আর আমাদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারবে না।
কাশ্মীর চাইছে স্বাধীন হতে,সেভেন সিস্টারস চাইছে স্বাধীন হতে,সেখানের স্বাধীনতাকামী মানুষকে থামিয়ে দিচ্ছে ভারত অস্ত্রের মুখে।
এখন আমি যদি সেই স্বাধীনতাকামী মানুষদের হাতে অস্ত্র তুলে দেই তবে কি অন্যায় হবে?
এতে করে তারাও স্বাধীনতা পাবে আর আমরাও ভারতের শক্তি খর্ব করতে পারবো।
এটি এক হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সমৃদ্ধ করবে।
৭১ এ ভারত যখন আমাদের অস্ত্র দিয়েছিল তখন একে আপামর ভারতীয়রা সমর্থন দিয়েছিল,কংগ্রেস-বিজেপি সহ সভ ভারতীয় রাজনৈতিক দল একে সমর্থন দিয়েছিল,,কেননা এতে তখন ভারতেরই লাভ।
অথচ আমরা কি করছি?
আজ নিজামী সাহেব,বাবর সাহেবকে ঠিক এই কাজের জন্যই ফাসি দেয়া হল!
আদালতের রায় অনুযায়ী উনারা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্য করেছিলেন।তো যদি সাহায্য করেই থাকেন তা তো উনারা করেছেন বাংলাদেশের স্বার্থেই,বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বের জন্যই।
অথচ আমরা কিনা উনাদের এই অসাধারন কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ফাসি দিচ্ছি!
ধন্য এই বাঙ্গালী জাতির!
৭১ এ ভারতের সকল রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থের জন্য এক থাকতে পেরেছিল,আর আমরা আজ এক থাকা তো দূরের কথা উল্টো বিরোধীদের ফাসি দিয়ে দিচ্ছি!
আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমানিত হলো আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশের চাইতে ভারতের স্বার্থটাই বড়।
নিজামী সাহেব,বাবরা যদি অস্ত্র সরবরাহ করে অপরাধী হন তাহলে ৭১ এ অস্ত্র সরবরাহ করে ইন্দিরা গান্ধীও অপরাধ করেছিল।
উলফা নেতা পরশ বডুয়া যদি অস্ত্র নিয়ে অন্যায় করে থাকেন তবে ৭১ এও মুজিব,তাজউদ্দীনরা অস্ত্র নিয়ে অন্যায় করেছিলেন।
অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় যদি নিজামী সাহেব,বাবরদের ফাসি হয় তবে একই কাজের জন্য ৭১ এও ইন্দিরা গান্ধী,শেখ মুজিবের ফাঁসি হওয়া দরকার ছিল।
কপি ঃ আবেদ শাহরিয়ার
বিষয়: রাজনীতি
১৩৯৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন দেশের যে পরিস্তিতি সেখানে সবাই কে অস্ত্র হাতে নিয়ে অস্ত্র মামলায় আসামী হতে হবে।
অথবা সবচেয়ে নির্যাতিত সাতক্ষিরা থেকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন