পুরনো রাজনৈতিক নাটকের ডিজিটাল ভার্সন
লিখেছেন লিখেছেন মাহমুদ১২১৩ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:০৭:১৭ রাত
শাহবাগের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগ যা করছে বা তাদের তাত্ত্বিক মুরুব্বি বামরা যা করছে তার মূল কারন দেশ থেকে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা। তারা যুদ্ধাপরাধীদের ফাসির দাবিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আর তা একটু মাথা খাটালেই স্পষ্ট হয়ে যায়। কারন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই যদি মূল ইস্যূ হয়ে থাকে তাহলে কেন আওয়ামী লীগের ভিতরে যে যুদ্ধাপরাধীরা আছেন তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হচ্ছে না। এমনকি তাদের গ্রেফতার করার দাবিও তো করা হচ্ছে না ।আওয়ামী লীগের ভিতরে যে যুদ্ধাপরাধীরা আছেন তারা কি মন্ত্রীত্বে অধিষ্ঠিত হননি ? তারা কি আওয়া্মী লীগের নমিনেশন নিয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য হননি ? তারা কি নিজেদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করছেন না ? তাদের সাথে কি বঙ্গবন্ধুর পরিবার আত্নীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করেননি ?? নাকি তারা আওয়ামী লীগ করেন বলে যুদ্ধাপরাধী হওয়া স্বত্তেও তারা এখন মুক্তিযুদ্ধা। একদিক থেকে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিকও নয় । কারন গত কয়েক দিন আগে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেছিলেন, বাংলাদেশের মালিক আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে মালিক তো চাইলেই পারেন যাকে খুশি তাকে মুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার বা আল বদরের তকমা দিতে !!!!!
তবে আমরা যে যাই বলি না কেন, শাহবাগে আওয়ামী লীগ ও বামদের এই যৌথ প্রয়াস আমাদের গতানুগতিক রাজনীতিই একটি অংশ। যদিও এবারের প্রয়াসটি কিছুটা ভিন্ন তার ডিজিটাল রূপের কারনে। বাম নিয়ন্ত্রিত এই আওয়ামী লীগ সরকারেরই নির্বাচনী ইশতেহার ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে কিনা এটা দেশের জন সাধারনই ভালো জানেন। কেননা ২০১৩ সালে এসেও আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ যেভাবে এনালগ চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতকে স্লাইজ করেছে তাতে ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে কিছুটা সন্দেহ তো থেকেই যায়। তাই সেকূলারিজমের আড়ালে থাকা নাস্তিক এই সরকারকে বলছি, আপনাদের সকল অংগ সংগঠনগুলোকে ডিজ়িটাল করুন। তাদের জন্য এ কে ৪৭, স্নাইপার গানের ব্যবস্থা করুন। যাতে করে তারা ঘরে বসেই সাধারন মানুষের জন্য যমের ব্যবস্থা করতে পারেন।
ডিজিটাল আন্দোলনের প্রসঙ্গেই আসা যাক, শাহবাগে অবস্থানকারীরা এ পর্যায়ে এসে দাবি করছেন ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার। যদিও আন্দোলনের প্রথম ভাগে তারা এই দাবি করেনি। প্রথম ভাগে তাদের দাবি ছিল একটাই আর তা হল ইসলামী দল ও ইসলামী দলগুলোর সাথে রাজনৈতিক কারনে যারা ঐক্য মত পোষন করে সেসকল দলে যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের ফাসি। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী যুদ্ধাপরাধীরা এর অন্তরভূক্ত নন। কারন তারা আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে বিবর্তনের ধারায় স্থান পেয়েছেন, এখন তারা চাইলেই নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করতে পারেন।
ইসলাম ভিত্তিক দলগুলোতে অনেকে আছেন যারা যুদ্ধাপরাধী নন তার পরেও তারা যুদ্ধাপরাধী কারন আওয়ামী লীগ ও তাদের তাত্ত্বিক মুরুব্বি বাম রাজনীতিবিদরা তাদের পছন্দ করেন না। সেক্টর কমান্ডার অথবা দেশের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিরাও যুদ্ধাপরাধী হতে পারেন যদি তারা আওয়ামী লীগের সাথে কোন বিষয়ে একমত না হন। একমাত্র আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে যে কেউ নিজেকে নিষ্পাপ করে তুলতে পারেন, অনেকটা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গায় স্নান করার মত।
অবশেষে এনালগ শাহবাগী ও ডিজিটাল শাহবাগীদের বলছি, ট্রাফিক জ্যামের এই শহরে হাজারো মানুষের জন্য ভোগান্তি তৈরি করছেন আপনারা। পিজি ও বারডেম হসপিটালের অসংখ্য রোগীর যন্ত্রনার কারন হচ্ছেন। অসুস্থ রোগীরা এম্বুলেন্স পরে থাকছেন ঘন্টার পর ঘন্টা । তা না যেতে পারছেন পিজিতে , না যেতে পারছেন ঢাকা মেডিকেল বা বারডেম হসপিটালে। ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তাটি গত ৯ দিন ধরে আপনারা বন্ধ করে রেখেছেন। শাহবাগীদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
বিষয়: রাজনীতি
১১৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন