জামায়াতে ইসলামী; নাকি ইসলামের শত্রু ? জামায়াতে শয়তানীর অনৈ্সলামিক আমলনামা (ধারাবাহিক) পর্ব -২ ।

লিখেছেন লিখেছেন ছাগু ও পাকি বিরোধী ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৬:২৬:৪২ সকাল

এই নামে মাত্র ইসলাম, কর্মকাণ্ডে শয়তানের গ্র্যান্ডফাদার ; দলটির জন্ম পাকিস্তানের জনাব মওদুদি সাহেবের হাতে । তার কিছু ইসলাম বিরোধী আমল নামা(দ্বিতীয় কিস্তি তথা ২ পর্ব ) মওদুদি সাহেব লিখিত কিতাবের রেফারেন্স সহ উল্লেখ করলাম ।এর পরেও এ দলের অনুসারীকে কি জামায়াতে ইসলামী(ইসলামের দল) বলবেন, নাকি জামায়াতে শয়তান তথা শয়তানের দল বলবেন সে দায়িত্ব ভার রইল সচেতন ও বিবেকবান,আদর্শ মানুষের কাছে। সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা হল-সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার উর্দ্ধে। তাদের দোষ বর্ণনা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ”। (শরহুল আকায়েদ পৃষ্ঠা ৩৫২)

মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন-আমি [সাহাবাদের] তাদের প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও আমার অনুগত। {সূরা তাওবা-১০০}

রাসূল সাঃ সাহাবাদের সম্পর্কে বলেন-আমার সাহাবীরা তারকাতুল্য। তোমরা যারই অনুসরণ করবে হেদায়েত পেয়ে যাবে। {কানুযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০০২, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২৪৩৫৫}

অথচ দেখুন মওদুদী সাহেব কিভাবে সাহাবায়ে কিরামকে আক্রমণ করেছেন নোংরা উক্তিতে-

১) “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এর লক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন ৩৫শ’ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)

২) “সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদিস বর্ণনা করেছেন।”

(তরজমানুল কোরআন ৩৫ সংখ্যা) ঙ/৩)

৩) “সাহাবাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের বদ-স্বভাবের পুনরাবৃত্তি ঘটে।”

(তাফহীমাত ২য় খণ্ড, ১৫৫ পৃষ্ঠা)

৪) “হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ণ অযোগ্য ছিলেন”।

(তাজদীদ ও ইয়াহইয়ায়ে দীন: পৃষ্ঠা ২২,)

৫) “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের সময় ব্যাক্তিসম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ)কে পরাভূত করেছিল।

(তরজুমানুল কুরআন, রবিউস সানি ৩৫৭ হিজরী)।

৬) “হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর মাঝে সজন-প্রীতির বদগুণ বিদ্যমান ছিল।

(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ৯৯)

৭) “হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় খেলাফতকালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নেই। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৪৬/১৪৩)

৮) “হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বার্থবাদী, গনিমতের মাল আত্মসাৎকারী, মিথ্যা সাক্ষ্যগ্রহকারী ও অত্যাচারী ছিলেন”।

(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৭৩)

পবিত্র কুরআন শরীফ সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য

কোরআন করিম হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়।” (তাফহিমাত, ১ম খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি যেন আপনি (নবী) মানবজাতিকে অন্ধকারের অতল গহবর থেকে উদ্ধার করে আলোর পথ দেখাতে পারেন। সূরা ইবরাহীম, আয়াতঃ ১।

মুফাসসিরীনে কেরামের ব্যাখ্যানুযায়ী আলোর পথই হচ্ছে মুক্তির পথ। কে সত্যবাদী? মহান মালিক নাকি মাওদূদী সাহেব?

নবীজী সাঃ এর হাদীস সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য

“হাদীস কিছু লোক থেকে কিছু লোক পর্যন্ত অর্থাৎ মানুষের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছে। এসবকে বড়জোর সঠিক বলে ধারণা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নেই। আর একথা স্পষ্ট যে, আল্লাহর দীনের যে সকল বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর দ্বারা ঈমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্য নির্ণীত হয় সেগুলো গুটিকয়েক লোকের বর্ণনার উপর নির্ভর করে মানুষকে বিপদগ্রস্ত করা আল্লাহ তায়ালা কখনো পছন্দ করতে পারেন না।”

(রাসায়েল ও মাসায়েল, ৬৭ পৃষ্ঠা) কী কুখ্যাত মন্তব্য!!! একটু বিবেচনা করুন।

মওদূদী সাহেবের আরো কিছু ভ্রান্ত মতবাদ

ইসলামী রীতিনীতি

“পোশাক পরিচ্ছদ, চাল-চলন, আকৃতি-প্রকৃতি চুল কার্টিং ইত্যাদির ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করতে কোন দোষ নেই”। (তরজুমানুল কুরআন, ছফর সংখ্যা, ১৩৬৯ হিজরী)

ইসলাম বলে, ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদ-প্রকৃতি চাল-চলন ইত্যাদি গ্রহণ করবে। এসব ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করবে না। (এমদাদুল মুফতিয়ীন, ২য় খণ্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা)

প্রসঙ্গঃ দাড়ি কাটা ও রাখা

ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-তোমরা গোফ খাট কর আর দাড়ি লম্বা কর। (তিররমিযী শরীফ, হাদিস নং-২৭৬৩)

এছাড়া অন্য হাদিসে এসেছে-পুরুষদের স্বাভাবিক প্রকৃতি হল সে তার দাড়ি লম্বা রাখবে। (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৫৩)

দাড়ি লম্বা করার কথা হয়েছে হাদিসে। কাটার কথা কোথাও নেই। তাই সাহাবায়ে কিরামের আমলই আমাদের একমাত্র ভরসা এই ক্ষেত্রে যে, দাড়ি কতটুকু বড় রাখতে হবে? মুসান্নাফে ইবনে শাইবাতে এসেছে-হযরত ইবনে ওমর রা. এর আমল ছিল-তিনি দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখতেন। সুতরাং দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখা ওয়াজিব। এর চে’ কম দাড়ি রাখা আর চেছে ফেলার মাঝে কোন পার্থক্য নাই। যেমন জোহরের ফরজ নামায চার রাকাত। দুই রাকাত সারা জীবন পড়লেও যেমন জোহর কোনদিনও আদায় হবেনা। তেমনি এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখলে তা কোনদিনও দাড়ি রাখা বলে সাব্যস্ত হবেনা।

অথচ মওদুদী সাহেবের আক্বিদা দেখুন কী বলে?

“দাড়ি কাটা ছাঁটা জায়িয। কেটে ছেঁটে এক মুষ্টির কম হলেও ক্ষতি নেই। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পরিমাণ দাড়ি রেখেছেন সে পরিমাণ দাড়ি রাখাকে সুন্নত বলা এবং এর অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে মারাত্মক অন্যায়”। (রাছায়েল মাছায়েল, ১ম খণ্ড, ২৪৭ পৃষ্ঠা)

প্রসঙ্গঃ সুন্নতে রাসূল

“হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত, আখলাককে সুন্নত বলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে সাংঘাতিক ধরনের বিদয়াত ও মারাত্মক ধর্ম বিকৃতি।

(রাছায়েল মাছায়েল, ২৪৮ পৃষ্ঠা)

ইসলাম বলে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত,আখলাক ও স্বভাব-চরিত্র আমাদের অনুকরণের জন্য উত্তম নমুনা বা সুন্নত। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-তোমাদের জন্য নবীজীর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াতঃ ২১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫৪৪}

প্রসঙ্গঃ দ্বীনের আসল উদ্দেশ্য

“দ্বীনের আসল মকছুদ হলো ইসলামী হুকুমত। নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি সমস্ত ইবাদত হলো উক্ত মকছুদ অর্জনের মাধ্যম”।

(আকাবেরে উম্মত কী নজরমে, ৬৪ পৃষ্ঠা)

* ইসলাম বলে, দ্বীনের আসল মকছুদ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি কায়েম করা। ইসলামী হুকমত উক্ত মকছুদ অর্জনে সহায়ক। (শরহুল আকায়েদ, ৩০৪ পৃষ্ঠা)

এত সব ভ্রান্ত আক্বিদা পোষণ করার পরও যদি কেউ তাকে আল্লাহ ওয়ালা বলে সম্বোধন করে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে আমাদের কী’বা বলার আছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মওদুদী ফিতনা এবং কথিত আহলে হাদীস ফিতনা, থেকে আমাদেরকে হিফাযত করুন।

বিষয়: রাজনীতি

১৭৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File