কবিতাটি আমেদের দেশের তথাকথিত দেশপ্রেমিক রাজনিতীবিদদের জন্য প্রজয্য ঠিক তেমনি প্রজয্য এদেশের নিশ্চুপ জনতার জন্য

লিখেছেন লিখেছেন অগ্নি বার্তা ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:৩৪:০৩ দুপুর



নন্দলাল

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ -

স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।

সকলে বলিল, 'আ-হা-হা কর কি, কর কি, নন্দলাল?'

নন্দ বলিল, 'বসিয়া বসিয়া রহিব কি চিরকাল?

আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই দেশ?'

তখন সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা বাহবা বেশ।'

নন্দর ভাই কলেরায় মরে, দেখিবে তারে কেবা!

সকলে বলিল, 'যাও না নন্দ, করো না ভায়ের সেবা'

নন্দ বলিল, ভায়ের জন্য জীবনটা যদি দিই-

না হয় দিলাম, -কিন্তু অভাগা দেশের হইবে কি?

বাঁচাটা আমার অতি দরকার, ভেবে দেখি চারিদিক'

তখন সকলে বলিল- 'হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা বটে, ঠিক।'

নন্দ একদা হঠাৎ একটা কাগজ করিল বাহির,

গালি দিয়া সবে গদ্যে, পদ্যে বিদ্যা করিল জাহির;

পড়িল ধন্য দেশের জন্য নন্দ খাটিয়া খুন;

লেখে যত তার দ্বিগুণ ঘুমায়, খায় তার দশ গুণ;

খাইতে ধরিল লুচি ও ছোকা ও সন্দেশ থাল থাল,

তখন সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা, বাহবা নন্দলাল।'

নন্দ একদা কাগজেতে এক সাহেবকে দেয় গালি;

সাহেব আসিয়া গলাটি তাহার টিপিয়া ধরিল খালি;

নন্দ বলিল, 'আ-হা-হা! কর কি, কর কি! ছাড় না ছাই,

কি হবে দেশের, গলাটিপুনিতে আমি যদি মারা যাই?

বলো কি' বিঘৎ নাকে দিব খত যা বলো করিব তাহা।'

তখন সকলে বলিল – 'বাহবা বাহবা বাহবা বাহা!'

নন্দ বাড়ির হ'ত না বাহির, কোথা কি ঘটে কি জানি;

চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি,

নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে 'কলিসন' হয়;

হাঁটতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়,

তাই শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়ে রহিল নন্দলাল

সকলে বলিল- 'ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক্ চিরকাল।'

বিষয়: বিবিধ

২১৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File