স্ত্রী-সন্তানদের উদ্দেশ্যে কাদের মোল্লা ‘আমার দিনতো শেষ পর্যায়ে, চিন্তা করো না’
লিখেছেন লিখেছেন দুষ্টু পোলা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:১৭:০৯ রাত
গাজীপুরের কাশিমপুরস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-২ এর বন্দী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার সাথে শনিবার দুপুরে স্ত্রী সানোয়ারা জাহান দেখা করেছেন। এসময় তার মেয়ে আমাতুল্লাহ পারভীন ও আমাতুল্লাহ শারমিন, মেয়ে জামাতা মহিব উল্লাহ এবং ভাতিজা নূরুল হকও সাথে ছিলেন। বর্তমানে কাদের মোল্লা ওই কারাগারের ‘৬০ সেল’র বন্দী।
কারাগারের কারাধ্যক্ষ সুভাষ চান্দ্র ঘোষ জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা দেখা করতে আসেন। তারা সাক্ষাৎকার কক্ষে গ্রীলের সামনে দাঁড়িয়ে (সাধারণ কয়েদিদের সাক্ষাতের নিয়মে) কাদের মোল্লার সাথে আধা ঘণ্টা কথা বলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক কারা কর্মকর্তা জানান, এসময় কাদের তার স্ত্রী-সন্তানদের অভয় দিয়ে বলেন, আমার দিনতো এখন শেষ পর্যায়ে, আমার জন্য তোমরা চিন্তা করো না।
কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির জানান, গত মঙ্গলবার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজার রায়ের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে গাজীপুরে কাশিমপুরস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-২ তে পাঠানো হয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত কাদের মোল্লা সশ্রমদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে কারাগারের বাগানে মালির কাজ দেওয়া হয়েছে। কোন সশ্রমদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীকে কারাগারে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শারীরিক যোগ্যতা, সামর্থ ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে কাজ দেওয়া হয়। আর আমরা তাদের বৈধ চাহিদা, আটক, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকি। এ ক্ষেত্রে ভাল আচরণ ও কাজের জন্য আসামিরা বছরে সর্বোচ্চ ৩ মাসের রেয়াত পেতে পারেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে তাকে গত সোমবার কাশিমপুর থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরদিন মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
কাশিমপুরস্থ ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারের পার্ট-২ -এর কারাধ্যক্ষ সুভাষ চান্দ্র ঘোষ জানান, জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশনের অযোগ্য অপরাধে সাজা হওয়ায় কারা হাজতি কাদের মোল্লার আগের ডিভিশন বন্দীর সকল সুযোগ রহিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে সাধারণ কয়েদির মর্যাদা ও পোশাকে কাশিমপুর কারাগারের সাধারণ সেলে (‘ষাট সেল’-পূর্ব) পাঠানো হয়েছে। এখানে তিনি সাধারণ কয়েদির মতো সকল সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। এসময় তাকে বেশ বিমর্ষ দেখা গেছে। শুক্রবার নামাজ এবং মোনাজাতের মাধ্যমেই কেটেছে তার অধিকাংশ সময়। ডিভিশন পাওয়া বন্দী থাকাকালে তাকে খাঁট, ম্যাট্রেস, বালিশ, লেপ, চেয়ার-টেবিল, একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, টেলিশভন, চিকন চালের ভাত, মাছ ও মাংস সরবরাহ করা হলেও ষাট সেলে দেওয়ার পর তাকে কারাবিধি অনুয়ায়ী তুলনামূলক কম পরিমাণে মোটা চালের ভাত, মাছ ও মাংস, এবং তিনটি কম্বল দেওয়া হয়েছে। তবে তার নিজের আনা একটি টেলিভিশন তার কক্ষে দেওয়া হয়েছে। গেল দু’দিন টেলিভিশনে তার বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ ও দেশের বিভিন্নস্থানে গণসমাবেশ ও ফাঁসির দাবি করে বিক্ষোভের খবর দেখে তাকে ভেঙ্গে পড়তে দেখা গেছে।
এরআগে কাদের মোল্লা মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার হওয়ার পর ২০১০ সালের ১৯ জুলাই তাকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার পাঠানো হয়। পরে ২০১১ সালের ২৪ জুন তাকে কাশিমপুর কারাগারের পার্ট-২তে স্থানান্তর করা হয়।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৪০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন