রঙিন ঢাকা যাদুর দোকান!

লিখেছেন লিখেছেন ঢাকাটাইমস ২৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:২৩:০৬ রাত

শিশু, নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ- সবাই জটলা করে কিছু একটা দেখছে। আর থেকে থেকে দিচ্ছে করতালি। জটলার ফাঁক গলে ভেতরে ঢুকে থির হওয়ার আগেই, মগজে কেমন একটা ধাক্কা লাগল! সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুদর্শন যুবকের হাতের ছোঁয়ায় অনেকগুলো সাদা কাগজ ডলারের নোট হয়ে গেলো। আবার খালি বাক্স দেখিয়ে, সেই বাক্স আবার পরক্ষণেই গুটিতে পূর্ণ করা হলো। চমক জাগানিয়া এসব কাণ্ডকীর্তি চলছিলো বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের এক দোকানে।



এস্কেলেটর দিয়ে বসুন্ধরা সিটির লেভেল তিনে উঠলেই যে কারো চোখে পড়বে ছোট্ট কিন্তু খুব সুন্দর করে সাজানো কাঁচঘেরা এক ‘ম্যাজিক সপ’। সোজা বাংলায় বললে- যাদুর দোকান। খুব ছোট্ট হলেও এ দোকান পণ্য বোঝাই করা। যাদুর দোকানের কর্ণধার এম এস রহমান।

যেভাবে দোকান...

২০০৮ সালে চালু করা হয় এ যাদুর দোকান। রহমান বললেন, এ দোকান খোলা নিয়ে আছে একটি ঘটনা। বসুন্ধরা সিটি চালু হওয়ার সময় কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানায়, তাদের শপিংমলে যাদু দেখাতে হবে রহমানকে। এমন সুযোগ তো হাতছাড়া করা যায় না। এ নিয়ে নেমে পড়লেন। সারাও পেলেন বেশ। সেখান থেকেই মাথায় এলো, বসুন্ধরায় একটা দোকান হলে ভালোই হয়। যেই ভাবা, সেই কাজ । সিঁড়ির মাথায় বক্স করে বানিয়ে ফেললেন একটি ‘ম্যাজিক সপ’। প্রতিদিন অনেক মানুষকে বিনোদন দিচ্ছেন। আবার নিজের ব্যবসাটাও প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন এরই মধ্যে। ম্যাজিক সপে যাদুও শেখা যায়। এজন্য শর্ত হচ্ছে, যাদুর উপকরণ কিনতে হবে।

যাদুর দোকানের কর্ণধার এম এস রহমান জানালেন, ছোটবেলা থেকেই সুস্থ বিনোদন আর সমাজের জন্য কিছু করার একটা তাগিদ অনুভব করতেন। অনেক কিছুই দেখেছেন, দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যাদু দিয়েই মানুষের কাছাকাছি যাবেন। এম এস রহমানের ভাষ্য, ‘যাদু কিন্তু কোনো আধ্যাত্মিক ব্যাপার না,্ কোনো তন্ত্র-মন্ত্রও নয়। এটা একটা কৌশল মাত্র। হাতের দক্ষতা, যন্ত্র ও উপস্থিত বুদ্ধির সফল সমন্বয় হলো যাদু।’

আপনিও হতে পারেন যাদুকর

যে কেউ আধা ঘন্টা যাদুবিদ্যা শিখে নিয়ে দুই-তিন দিন অনুশীলন করলে যাদু দেখাতে পারবে। আর ১৫ দিন এক টানা অনুশীলন করতে পারলে ওস্তাদ যাদুশিল্পী হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন যাদুশিল্পী রহমান।

তাঁর মত, একসময় যাদুচর্চা কঠিন ছিল। সবাই যাদুকে তন্ত্র-মন্ত্র মনে করতো। সেই দিন পাল্টে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে সবাই যাদুকে স্বাভাবিক শিল্প হিসেবে নিচ্ছে। পেশা হিসেবেও যাদুশিল্পের প্রসার হচ্ছে। অনেকে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আজকাল নাচ-গানের পরিবর্তে যাদু প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। এটা যাদুশিল্পের অগ্রসরতারই প্রমাণ। যাদুর একটি প্রদর্শনী করে পাঁচ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। যাদুশিল্পী রহমান জানালেন, একজন যাদুকরকে কথাবার্তা, আচার-আচরণে কেতাদুরস্ত হতে হবে। আর থাকতে হবে দর্শকদের মন ভোলানোর গুণটি। তবেই সে ভালো যাদুকর হতে পারবে।

রহমানের যাদুর দোকানেই পরিচয় হয় খুদে যাদুকর সোহেলের সাথে। ১২ বছরের এ কিশোর সম্পর্কে রহমান বলেন, ‘যাদু দেখিয়ে এই ছেলে সামরিক কর্তাদের পর্যন্ত মন জয় করে নিয়েছে। যারা একবার ওর হাত সাফাই দেখেছে, তারা ওর ভক্ত হয়ে যায়।’ এমন যাদুশিল্পী হতে চাইলে যেতে পারেন রহমানের যাদুর দোকানে।

লেখাটি এর আগে এখানে প্রকাশিত

http://www.dhakatimes24.com/index.php?view=details&data=Income&news_type_id=1&menu_id=26&news_id=25639



বিষয়: বিবিধ

১৭৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File