অভিজিত ও কিছু প্রশ্ন -

লিখেছেন লিখেছেন কানিজ ফাতিমা ০২ মার্চ, ২০১৫, ০৯:১০:০৩ সকাল

আমি অভিজিত হত্যার ব্যাপারটাকে বিশ্লেষণ করি যেভাবে -

অভিজিতের অধিকার - তিনি একজন লেখক ও একটিভিস্ট ছিলেন। তিনি লিখতেন, ইসলামের সমালোচনা করতেন। তার অধিকার রয়েছে নিজের চিন্তা ও চেতনাকে লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার, যুক্তি দিয়ে যেকোনো মতের সমালোচনা করার।

অভিজিতের দায়িত্ব- প্রত্যেক অধিকারের সঙ্গেই একটা দায়িত্ব থাকে। নিজের মত প্রকাশের অধিকার এর সঙ্গে অন্যের অনুভুতিতে আঘাত না করার দায়িত্ব জড়িত। অভিজিত যুক্তি দিয়ে ইসলামের সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকক্ষেত্রেই অযৌক্তিক ভাবে তার লেখায় মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসের অনুভুতিতে আঘাত করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি তার অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত না করার দায়িত্বটি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

কিন্তু এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার শাস্তি মৃত্যু হতে পারে না। তার অধিকার ছিল ভালোভাবে নিরাপদে বেচে থাকার।

যারা তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে তাদের অধিকার ছিল নিজের ধর্মকে ভালবাসার। কিন্তু তাদের কোনো অধিকার ছিলনা ভিন্ন মতের কাউকে হত্যার হুমকি দেবার। তারা এক্ষেত্রে অনধিকার চর্চা করেছে। তারা আমার মতে "Under educated - over zealous" কম শিক্ষিত বেশী আবেগী। তাদের এই আচরণ ইসলাম সম্মত নয়। তাদের এই আচরণ ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে গিয়েছে। কারো লেখার জবাব লেখা দিয়ে দিতে হয় , হুমকি দিয়ে নয়।

এই পরিস্থিতিতে উদ্ভব হয়েছে তৃতীয় পক্ষের যারা উপরের দুই পক্ষের ভুলের সুযোগ নিয়েছে। তাদেরকে বলির পাঠা বানিয়েছে। অভিজিত খুন হলো আর হুমকিদাতারা ফাসলো - মাঝখান দিয়ে লাভ তাদের।

এবার মাঠে এলো কিছু বুদ্ধিজীবী - যারা সুচতুর ভাবে "ধর্মান্ধ রা " মেরেছে বলে এই তৃতীয় পক্ষের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন। আড়াল করছেন প্রকৃত খুনী।

প্রকৃত খুনীর বিচার হওয়া জরুরী ইসলামের স্বার্থে, বাংলাদেশের স্বার্থে , অভিজিতের পরিবারের জন্য , সত্যের স্বার্থে। দয়া করে নিরপেক্ষ তদন্তের পূর্বেই "ধর্মান্ধ " জিকির তুলে মানুষের দৃষ্টি ঝাপসা করবেন না। ধর্মান্ধ মানুষ রয়েছে , বাংলাদেশ সহ সব দেশেই রয়েছে , তারা ইসলামের অপকার বেশী করছে - এ সবই সত্য। কিন্তু ধর্মান্ধ কেউই অভিজিতকে হত্যা করেছে নাকি কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে এটা করেছে বাংলাদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র প্রমানের জন্য সেটা এখনও প্রমানিত নয়। সত্যের সঙ্গে মিথ্যা মিশ্রিত করলে সেটা মিথ্যা হয়। দয়া করে আধা সত্য আধা মিথ্যা দিয়ে সহজ সরল তরুণ তরুনীদের বিভ্রান্ত করবেন না।

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

306788
০২ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৪৬
হতভাগা লিখেছেন : বই মেলায় যেখানে এত নিরাপত্তা বলয় সেখানে জনাকীর্ন স্থানে পুলিশের কাছাকাছি কাউকে চাপাতি দিয়ে কোপানো কি খুব সোজা ? এটাই তথাকথিত মৌলবাদীদের জড়িত থাকার সম্ভাবনাকে ঠুনকো করে ফেলে ।

চাপাতি গুলো কি পুলিশের তল্লাশীতে ধরা পড়ে নি ?
০২ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৫৩
248233
আয়নাশাহ লিখেছেন : সত্য সম্ভবত বের করা হবেনা। সাগর রুনি'র ক্ষেত্রে যা ঘটেছিল, অভিজিতের বেলায়ও সেটাই ঘটতে যাচ্ছে।
306791
০২ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৫০
মায়াবন বিহারিণী হরিণী লিখেছেন : যেসব ধর্মান্ধের দল তাকে হত্যার প্রকাশ্য হুমকি দিল, তারা মারেনি!!! তো মেরেছে কারা?



০২ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৪৮
248241
হতভাগা লিখেছেন : পুলিশের কারণে ঢাকা শহরে বিরোধীরা তো বেরই হতে পারে না ।

এসব জায়গায় পুলিশ নিরাপত্তা দেয় আর বিভিন্ন মাসজিদে পুলিশ থাকে সন্দেহভাজন কাউকে মনে হলে গ্রেফতার করার ধান্ধায়।

অভিজিতের ঘটনাটা ঘটেছে পুলিশের সামনেই ।

যেখানে পুলিশ সন্দেহ হলেই গ্রেফতার করে বিরোধীদের সেখানে ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশের সামনে দিয়ে চলে গেলেও পুলিশ কিছু করে নি ?



306792
০২ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৫৪
আয়নাশাহ লিখেছেন : আপনারা একটা মিলাদ দেন, আমাদের প্রধান মন্ত্রী অভিজিতকে এখনো শহিদ ঘোষণা করেন নাই, সংসদেও কোন প্রস্তাব পাশ হয়নাই।
০২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬
248255
আবু জান্নাত লিখেছেন : ভাই, "শহীদ" কি কোন কলাগাছের নাম? মিলাদ দিয়ে ঘোষনা করলেই হয়ে যাবে?
306800
০২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:০৮
আবু জারীর লিখেছেন : অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এগুলো ইসলাম পন্থীদের কাজ নয়, যদি হত তাহলে সারকার, খুনীদের মাটির নিচ থেকে হলেও খুজে বের করত। যেহেতু একটা ঘটনার মটিভও এ পর্যন্ত উদ্ঘাটিত হয়নি তাই ইসলাম বিরোধীদের প্রতি সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
ধন্যবাদ।
306806
০২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৪০
আবু জান্নাত লিখেছেন : কত হাতি গোড়া মরছে তাদের কোন আলোচনা নেই, অভিজিৎ কি এমন ব্যক্তিত্ব যে, তার জন্য সবাইকে আলোচনা করতেই হবে? এই আলোচনাটি না করলেই ভালো। কারণ এটা হতে পারে রাজনৈতিক চাল।
306810
০২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
খান জুলহাস লিখেছেন : হাসিনার রাজনৈতিক শিকার অভিজিত। না হলে সাথে সাথে খুনী ধরা পরত।
306819
০২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:১০
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : কেউ নাস্তিক হতে পারেন সেটা তার ব্যক্তিগত অভিমত, সেটা নিয়ে কারো আগ্রহ থাকতে পারেনা। তবে নিজেদের মুক্তমনা দাবী করে অন্যের ধর্মবিশ্বাসকে গালাগালি, কাটাকাটি, ঠাট্টা মস্করা করে উপহাস করা টিপ্পনী মারা কোন মুক্তমনা মানুষের কাজ হতে পারেনা। এসব কাজকে যদি মুক্তমনা বলা হবে তাহলে বাঁদরামী কাকে বলা হবে?

তারা নাস্তিক কুন সমস্যা নাই, তাই বলে তারা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মকে আক্রমন করে কেন? তারা তো হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান সবাইকে আক্রমনের লক্ষ্য বানানো উচিত। কিন্তু সেটা তারা করেনা কেননা তারা বাহিরে মুক্তমনা হলেও ভিতরে হিংসুক, জিঘাংসা সৃষ্টিকারী, উত্তেজক ও উৎকট মনোবৃত্তির অপ্রকৃতস্থ যুবক। তারা নিজেরাই নিজেদের শত্রু সৃষ্টি করে, সেটাকে সুবিধাবাদিরা সুযোগ মত ব্যবহার করে।

যারা অভিজিতকে হত্যা করেছে, তারা অভিজিতের আমেরিকা থেকে ঢাকায় আগমন ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গমন এ ব্যাপারে বিস্তারিত ধারনা ছিল। অভিজিতের পরিবারের প্রাত্যহিক রুটিন সম্পর্কে তারা সম্যক অবগত ছিল। যার কারণে কাজটি সুচারু রূপে করতে সক্ষম হয়েছে? অভিজিতের মুক্তমনা ব্লগ বন্ধ কেন? তার সর্তীর্থরা ঠিকই জানে যে, অভিজিত গোপনে যে কর্ম করেছে, সাধারন মানুষ জানতে পারলে মৃত ও অসহায় অভিজিতের জন্য মর্মবেদনা টুকুও জুঠবে না।

অভিজিতের এই কাজকে তারই পরিচিত সর্তির্থরা কাজে লাগিয়েছে। সেতো বেশীদিন আগের কথা নয় মন্ত্রী ইনুর সতির্থ বামপন্থিরা নিজেরা নিজেদের কত মানুষ হত্যা করেছে।

- ইনু তার সতির্থ বাম নেতা কাজি আরেফ কে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করিয়েছে কেননা কাজি আরফ বেচে থাকলে এতদিন ইনু বাঁচতেন না।

- মেনন সাহেবের কলিজার অর্ধেক নাই, ১৯৯৩ সালে তারই সতির্থরা তার বুকে গুলি করে ঝাঁঝড়া করেছিল। খালেদা জিয়া রাষ্ট্রিয় খরছে মেনকে বিদেশে পাঠিয়ে কলিজা মেরামত করে এনেছিলেন কেননা মেনন সাহেবের বোন তো খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং সবচাইতে কাছের পরামর্শ দাতা।

বামপন্থী তথা নাস্তিকদের রাজনীতির ধরনটাই এমন। তারা বক্তৃব্য বিবৃতি দিয়ে জনগনের শত্রু বনবে তারপর নিজেদের মানুষ দিয়ে তাকে খুন করিয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রতিদন্ধি কমিয়ে নেবে আর দোষ দেবে জনগনের! কেননা তিনি এতদিন জনগনকে বাশ দিচ্ছিলেন সুতরাং শত্রু সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা তো সেখান থেকেই হবে।

তাজউদ্দীনের মত ব্যক্তিও ১৯৭৩ সালে মুজিব বাহীনির ভয় অন্তরে লুকিয়ে ঘুমাতে যেতেন। তিনি বলতেন এরা আমার নিজের লোক কিন্তু এরা আমাকে মেরে জাসদের নামে চালিয়ে দিবে। যেভাবে অভিজিতের কপালে জুটেছে।
307062
০৩ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০৩:৪৩
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : অভিজিতকে যারা হত্যা করেছে তার বিচার সবারই কাম্য।
কিন্তু অভিজিত যে কাজ করেছেন তার দ্বায়টা কে নেবে।
আপনি তার লেখা পড়ুন। আমি মনে করি আমার লেখার স্বাধিনতা ততটুকু যতটুকু অন্যের হৃদয়ের দেয়াল টপকাতে না হয়।
ধন্যবাদ।
309933
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০২:১৩
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : তারা আমার মতে "Under educated - over zealous" কম শিক্ষিত বেশী আবেগী।

না, কথাটা পুরো ঠিক নয়। তারা মোটেও কম শিক্ষিত নয়। আপনিই এতা নিরূপণ করলেন কেমন করে? হা হতে পারে আবেগী।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File