তালেবান হামলা উগ্রবাদ - এর দমন করতে হবে। - শাহ আব্দুল হান্নান

লিখেছেন লিখেছেন কানিজ ফাতিমা ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:০২:৪৮ রাত

2০১৪ সালের সবচেয়ে শোকাবহ ঘটনা হলো ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারের একটি স্কুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের বা তালেবানের হামলা, যার ফলে স্কুলের ১৩২ জন ছাত্রছাত্রীসহ ১৪১ জন নিহত হয়েছে। এসব ছাত্রছাত্রীর বেশির ভাগের বয়স দশ থেকে পনেরো বছর।

এ ঘটনাকে পাকিস্তানের সব রাজনৈতিক দলসহ বিশ্বের সব নেতৃবৃন্দ নিন্দা করেছেন। এদের মধ্যে ওবামা ও মোদিও রয়েছেন। পাকিস্তানে সর্বদলীয় সভা হয়েছে, যাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে সাত দিনের মধ্যে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা। এ কমিটিতে সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিও থাকবেন। এ কমিটির রিপোর্ট মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। পাকিস্তানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য দিকে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ তাদের চার মাসব্যাপী আন্দোলন তুলে নিয়েছে। ইমরান খান বলেছেন, এ সময়ের মূল সমস্যা হলো সন্ত্রাসবাদ।

তালেবান এ ঘটনা কেন ঘটাল? তারা কী চায়? তারা ইসলামি শরিয়ার প্রয়োগ চায়। পাকিস্তান সংবিধান প্রণয়নের পর থেকেই ইসলামি রাষ্ট্র। ১৯৭৩ সালে প্রণীত পাকিস্তানের সংবিধানে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের শাসনের কথা বলা হয়েছে। কুরান ও সুন্নাহ মোতাবেক আইন প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। সেখানে জাকাত আইন রয়েছে। সাক্ষ্য আইনে ইসলামি সাম্যের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, হত্যা - এসব ক্ষেত্রে কুরআনের বিধান হদুদ আইন জারি করা হয়েছে।

তারপর তারা আর কী চায়? যদি এসব বিধান ভালোভাবে কার্যকরী না হয়ে থাকে, তাহলে তারা রাজনৈতিক দল করে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসতে পারে এবং তাদের ইচ্ছামতো পরিবর্তন শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারে, অযথা রক্তপাত না করে।

রাসূল সা: সে সময়ে যে সিস্টেম বা যে ব্যবস্থা কায়েম ছিল তার ভেতরেই কাজ করেন। তিনি মক্কায় দাওয়াতের মাধ্যমে কাজ করেন, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নয়। কারণ বাস্তবতার দাবি ছিল শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করা। এ কারণেই মুসলিম বিশ্বের মূল স্রোতের ইসলামি দলগুলো মধ্যপন্থী। তারা গণতান্ত্রিক পথে তথা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সম্মতিতে পরিবর্তন চায়।

হিজরতের পর মদিনায় গিয়ে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে মদিনার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। ইহুদিদের সাথে চুক্তি করেন। সেই চুক্তির মাধ্যমেই ঐক্য সৃষ্টি হয় এবং রাষ্ট্র স্থাপিত হয়। রাসূলের ইন্তেকালের পর খিলাফতে রাশেদার সবাই নির্বাচিত হন। তৃতীয় খলিফা নির্বাচনের সময় জনমত যাচাই করা হয়। জনমত যাচাইয়ে দেখা যায়, হজরত উসমান রা:-এর সমর্থন বেশি। তিনি খলিফা হন। জনমত যাচাই কেবল মদিনায় হয়। দেশব্যাপী নির্বাচন তখন বাস্তব ছিল না। এখনকার পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই দেশের সবার মতামত নিতে হবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সিস্টেমের ভেতরে কাজ করতে হবে। যতটুকু সম্ভব ততটুকুই করতে হবে। বাকিটুকু ভবিষ্যতের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

কিছু মানুষ মুসলিম বিশ্বে শক্তির জোরে পরিবর্তন করতে চায়, রক্তপাত ঘটায়, আত্মঘাতী হামলা করে। এদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তালেবান ছাড়াও, নাইজেরিয়ায় বোকো হারাম, উত্তর ইরাকের খিলাফতের দাবিদার গোষ্ঠী এবং আরো কিছু গোষ্ঠী এ ধরনের রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে গোটা মুসলিম উম্মাহকে দাঁড়াতে হবে। শ্রেষ্ঠ আলেমদের দায়িত্ব হচ্ছে এদের বোঝানো। প্রয়োজনে তাদেরকে শক্তির মাধ্যমেই মোকাবেলা করতে হবে এবং তাদেরকে নিরস্ত্র ও আটক করতে হবে। যেভাবেই হোক তাদেরকে দমন করতে হবে। এই পরিস্থিতির সুযোগে কিছু মহল মূল ধারার ইসলামি দলগুলোকে, ইসলামকে অভিযুক্ত করতে পারে। তা করা অন্যায় হবে।

সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

296580
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩৬
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : “২০১৪ সালের সবচেয়ে শোকাবহ ঘটনা হলো ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারের একটি স্কুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের বা তালেবানের হামলা, যার ফলে স্কুলের ১৩২ জন ছাত্রছাত্রীসহ ১৪১ জন নিহত হয়েছে"।
স্যার এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, স্যার এটাই যদি ২০১৪ সালের সবচেয়ে শোকাবহ ঘটনা হয় !! তবে আপনার কাছে আমার প্রশ্নঃ ২০১৪ সালের জুলাই এবং অগাস্ট এ মানবতার দুশমন বর্বর ইয়াহুদিরা যখন ঘোষণা দিয়ে প্যালেস্টাইনের স্কুলে স্কুলে বোমা হামলা করে দুইদিনে প্রায় ৫০০ শিশু সহ ২ মাস ধরে প্রায় এক থেকে দুই হাজার শিশুকে হত্যা করেছে, সেটা কে কি বলবেন??????? পাকিস্থানের ঘটনাটা কি সেটার চেয়েও ভয়াবহ, অমানবিক এবং শোকাবহ !!!!!!!! নিঃসন্দেহে তালেবানরা যা করেছে সেটা ইসলাম বিরোধী, মানবতা বিরোধী। যেহেতু যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নারী এবং শিশু হত্যা করা, মানবতার ধর্ম ইসলামে নিষিদ্ধ, তাই তাদের এই কাজকে আমি চরম ঘৃণা করি, তাদের কেও ঘৃণা করি । কিন্তু এই ঘটনাকে ২০১৪ সালের সবচেয়ে শোকাবহ বলতে আমি প্রস্তূত নয়, আমার কাছে ২০১৪ সালের সবচেয়ে শোকাবহ ঘটনা হচ্ছে প্যালেস্টাইনের গাজায় গণহত্যা ।
অবশিষ্ট লেখার সাথে আমার দ্বিমত নেই । ধন্যবাদ স্যার । আল্লাহ আপনাকে ইসলাম এবং দেশের আর সেবা করার তাওফিক দিন । আমীন ।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৬
240177
ঈগল লিখেছেন : শাহ আব্দুল হান্নান স্যার ইসলামের খেদমত করবে? তিনি তালেবানের হামলা দেখলেন কিন্তু এর উল্টোপিঠ তিনি দেখতে পেলেন না। আল্লাহর কসম করে বলছি, উল্টোপিঠ যিনি দেখতে অসমর্থ তার দ্বারা ইসলামের খেদমত করা সম্ভব নয়।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:১৬
240242
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : আমি দুঃখিত !! তবুও বলতে হচ্ছে " যারা কথায় কথায় আল্লাহ কসম কাটে, তাদেরকে আমি খুব অপছন্দ করি"।
আর যার সম্পর্কে জানেন না, তাকে নিয়ে মন্তব্য না করাই উত্তম। তিনি তালেবান এর মত ভাবেন না। এই জন্য তাকে দিয়ে ইসলামের খেদমত সম্ভব । কারন তিনি ইসলামের উপকার হয়ত করতে পারবেন না, কিন্তূ তার দ্বারা ইসলামের ক্ষতি অন্তত হবেন। যে খতিটা করছে তালেবান এবং আইএসআইএস ।
296589
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৭
সামসুল আলম দোয়েল লিখেছেন : কোনো বিশেষ দল বা সংগঠন ইসলামের প্রতীক নয়। ইসলামে যুদ্ধের মাঠেও নারী, বৃদ্ধ ও শিশু হত্যা নিষিদ্ধ।
সুতরাং ইসলামের দুশমনদের জন্য এটা বুঝা কষ্টকর, ইসলাই একমাত্র মুক্তির পথ..
296624
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২২
আবু মারইয়াম লিখেছেন : তালেবানদের ৩০০০০ মানুশ, শিশু, নারী সহ হত্যা করেছে পাকিস্থান আর্মী। হান্নান চাচার হঠাত পাকিস্থান আর্মীর প্রতি এক তরফা দয়া হলো কেনো বুঝলাম না! এদের প্যান্ট শার্ট পড়া শিশু মারা গোনাহ আর তালেবান্দের সালোয়ার কামিজ পড়া শিশু মারা জায়েজ?
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৯
240178
ঈগল লিখেছেন : আবু মারিয়াম সাহেব, চাচার বয়স হয়েছে, চাচা নিজে তো কোট টাই পড়েন তাই চাচার দিল ওদিকেই। সালোয়ার কামিজ যারা পড়ে চাচার ক্ষীণ দৃষ্টিতে তাদেরকে মুসিলমই মনে হয় না হয়ত।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:১৮
240185
আবু মারইয়াম লিখেছেন : your comment is personal attack to him. He is an intelligent and practicing good Muslim. May be he has some different view!
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৩৯
240290
কানিজ ফাতিমা লিখেছেন : রাসুল স:ও তো সালোয়ার কামিজ পরতেন না। Happy
296651
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪
পরবাসী লিখেছেন : তালেবান হল কেন ?
আই এস হল কেন ?

আজ যদি সাদ্দাম থাকত, আপনাদের কি আই এসের উথান দেখা লাগত ?

তালেবান,আইএস তৈরী হয় কুফ্ফারদের জুলুমের কারনে। আর আপনাদের মত সো কলড (মদারেত) মুসলিমরা শুধু ওদেরই দোষ দেন। কখনও বলেননা তালেবান আইএস কুফ্ফারদের অযাচিত হস্তক্ষেপের ফসল।

এক জুলুম আরেক জুলুমের ক্ষেত্র তৈরী করে।

সন্দেহ নেই বাংলা ভাই শায়খ আব্দুর রহমানরা শাস্তির উপযুক্ত,শাস্তি পেয়েছেও। কিন্তু আমাদের সমাজের নেতারাও (যারা মানবরচিত বিধান দিয়ে বিচার ফয়সালা করে)যে দোষী একথা মুসলমানের মনে পড়ে না।

তালেবান কি চায় ? শরীয়া আইন।

ধর্মের নামে যে পাকিস্থান স্বাধীন হয়েছে, সেখানে শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠার জন্যে মানুষ মারার পথ কেন বেছে নিত হল ?

বর্তমানের কুফুরী শক্তি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার বক্তব্যকে এত নির্ভরযোগ্য মনে করছেন কেন ? আর্মী অফিসাররা যখন পাকিস্থানের প্রত্যন্ত অণ্চলে তালেবানদের পাশাপাশি তাদের স্ত্রী শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করে সে সম্পর্কে তো একটা বোলগ লিখলেন না।

শুধু গত মাসে ১৬০০ তালেবান আর তাদের স্ত্রী শিশুদের হত্যা করেছে নাপাক সেনাবাহীনি।

তালেবানরা বার বার বলছে আমরা কোন শিশু হত্যা করি নাই। আমরা আর্মীদের সেই সব যুবক ছেলেদের হত্যা করেছি যারা আর কিছুদিন পরে তাদের পিতাদের অবস্থান নেবে আরা আমাদের হত্যা করবে।

সেখানে কি হয়েছে,আসলেই তারা কি শিশু মেরেছে না যুবক ছেলে মেরেছে তা আমি জানিনা। কিন্তু তাই বলে কুফুরী মিডিয়ার কোন কথাকে বিশ্বাস করা কোন ভাল মুসলমানের উচিত না।

আপনার নাম কানিজ ফাতেমা (ফাতেমার গোলাম)। এটা শিরকী নাম। আমরা রসুল (সা) এরও গোলাম না। আমরা শুধু আল্লাহর গোলাম।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩৫
240283
কানিজ ফাতিমা লিখেছেন : ভাই আপনি কানিজ শব্দটার অর্থ করলেন কিন্তু ফাতিমা শব্দটার অর্থ করলেন না। দুটো শব্দেরই অর্থ করুন তাহলে আর শিরক মনে হবে না। Happy
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
240406
পরবাসী লিখেছেন : কানিজ - গোলাম (ফার্সী)
ফাতেমা - ফাতেমা

কানিজ ফাতেমা - ফাতেমার গোলাম

বুঝা গেল ?
296668
২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:৩১
মির্জা লিখেছেন : With due respect to Chacha, I am sorry to say, he is politically very benign. Maybe he should also write a piece on US drone attack and Pakistani Army's crime in North Waziristan which actually triggered this inhuman retaliatory attack.
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৩৭
240289
কানিজ ফাতিমা লিখেছেন : https://www.youtube.com/watch?v=FHb5QKQcC2s#t=473

শিশু হত্যা ফেরাউনের সুন্নাহ
ফেরাউন বনি ইসরাইলদের শিশু হত্যা করত। আমাদের রাসুল সা: কোনদিন একজন শিশু হত্যাকে সমর্থন করেননি। কাজেই যারা শিশু হত্যা করে তারা ফেরাউনের সুন্নাত ফলো করে। আমাদের রাসুলের সুন্নাহ নয়।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:২৯
240323
মির্জা লিখেছেন : শুধু এক টাইপের ফেরাউনের বিরুদ্ধে বলা তো সুবিচার করা হলো না। আরেক টাইপের ফিরাউন যে পাকিস্তান, ইয়েমেন, সোমালিয়াতে ড্রোন হামলা চালিয়ে নারী, শিশু, পুরুষ হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাটা সম্ভবত রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, তাই না? শোনেন, এটা আদর্শবাদ না, সুবিধাবাদ। মনে রাখবেন।
296780
২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৫১
কানিজ ফাতিমা লিখেছেন :

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File