বন্ধুত্ব! আমার জীবন থেকে ওই শব্দটা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে নয়; যেন পালিয়ে গেছে...

লিখেছেন লিখেছেন misbah monjur ২৫ মে, ২০১৩, ০২:৪৪:১৮ দুপুর

বন্ধু! ছোট্ট একটি শব্দ। একটি বাক্য। একটি নাম। কিন্তু এর ভিতরলুকিয়ে আছে অজানা কোন এক সূর।

শব্দটি বিন্দু হলেও এর ভিতর লুকিয়ে সিন্ধু। লুকিয়ে আছে অজানা এক বাঁধন। আলাদা এক সম্পর্ক।অজানা এক টান। অজানা এক আবেগ। এক ভালোবাসা ।

মাঝে মাঝে চোখের পাতায়, হৃদয়ের আকুলতায়, একান্ত নির্জনেবন্ধুদেরই খুঁজি। ভাবি! বন্ধুরাই আমার পুঁজি। তাদের নিয়ে আকাশ চুম্বি কত শত কল্পনাকরি। মনের গভীরতায় এক ভালোবাসা অনুভব করি। তাদের শূন্যতা উপলব্দি করি। একটা গোপনব্যথা উপলব্দি করি। কিন্তু এইসব অনুভুতি নিজেরমাঝে গোপন রাখি; গোপন রাখি আমার এই টান; আমার এই ভালোবাসা।

কিন্তু কেন? কী এর হেতু?

হ্যাঁ! কেন আজ আমি বন্ধুদেরপাশে যাই না; সঙ্গ দেই না; কাছে ডাকি না; সাথেও থাকি না!

কারণ, যখনই বন্ধুদের কথামনে হয়। এক ভাললাগা তৈরি হয়। এক ভালোবাসা উপলব্দি হয়। ঠিক তখনই আমার চোখের মাঝেভেসে ওঠে এক মুখ। কানের মাঝে ভেসে ওঠে এক সূর। মনের মাঝে ভেসে ওঠে কেবল স্মৃতি।বুকের ভিতর জেগে ওঠে এক পোরনো প্রীতি। চোখ দিয়ে গড়িয় পড়ে অশ্রু। গাল বিজে পরিহিতকাপরও ভিজে যায়। তবু থামেনা আমার কান্না। রাগে, দুঃখে আর অনুশোচনায় আমি ভেঙে পড়ি। নিজেরপ্রতি নিজের খুব রাগ হয়। নিজেকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম অপরাধী মনে হয়।

বন্ধু নামের শব্দটা আমারজন্য মানায় না। এটা আমার কছ থেকে চিরতরের জন্য বিদায় নিয়েছে। আমার জীবন থেকে ওইশব্দটা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে নয়; যেন পালিয়ে গেছে...

সেই থেকে আমি কার সাথেবন্ধুত্ব করি না। কারো সাথে তেমন চলি না। কাউকে তেমন সঙ্গ দেই না। আর নতুন করেঅপরাধী হতে চাই না। নতুন করে দুষ কাঁধে চাঁপাতে চাই না। আমি চাই না কেউ আমার জন্যতার নিজের জীবন হারিয়ে ফেলুক। নিজেকে তিলে তিলে তিলমত্তাকরুক। নিজেকে মৃত্যুমুখে পতিত করুক।

হ্যাঁ! এটাই সত্য। আমিকাউকে আর মরতে দিব না। কাউকে আর হারতে দিব না। যেভাবে হারাতে হয়েছে আমার প্রাণেরবন্ধুটিকে। প্রিয় মানুষটিকে।

শাহাদাত! যে আর দুনিয়ায়নেই। হপারে চলে গেছে। চিরতরে হারিয়ে গেছে। আমা থেকে পালিয়ে গেছে। আমিই দায়ি;একমাত্র আমিই।

তাকে আসার কথা বলছিলাম।স্থান ও সময় বলে দিলাম। আমি অপেক্ষা করছিলাম তার জন্য। সময় এগুতে লাগল। ঘড়ির কাঁটাটিকটিক করে চলতে লাগল। সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিমা দিগন্তে যেতে লাগলো। কিন্তুসে তখনো আসছিল না। প্রচন্ড রোদ। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। সে আসছে/ আসবে এমন ভেবেঅপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু আসল না। আমারকথা রাখল না। আমাকে অবাঞ্ছিত ও খেয়ালিপনা মনে করল। এইভেবে আমাকে বাধ্য হয়ে বাড়িরপথে ফিরতে হল।

সামনে এগুতে লাগলাম।টার্মিনালে আসার পথে লোকের ভিড় দেখে থমকে দাঁড়ালাম। মনের অজান্তেই লোকের আবরণ বেদকরে ঘটনাস্থলে আসলাম। নাহ! আর বলা যাবে না। আমি বলতে পারব না। কারণ,সেখানে গিয়ে দেখলাম আমার বন্ধু পড়ে আছে রক্তে রঞ্জিত দেহ নিয়ে। মানুষ তাকে ঘিরেআছে। আমি স্থির থাকতে পারলাম না। তাকে কোলে তুলে নিলাম। বলতে লাগলাম “বন্ধু! কেন তুই আমার জন্যআসতে লাগলে? কেন আমার জন্য মারা গেলে? কেন আমাকে তুই অপরাধী করে চলে গেলে? দেখ!তোর জন্য মালা এনেছি, তোকে পরিয়ে দিব বলে। একবার তাকা আমার দিকে। একটা বার”। কিন্তু না; ও আর তাকালনা। ও আমায় অপরাধী করে চলে গেল।

এরপর থেকে আমার ভয়, যদি আর কারো সাথে বন্ধুত্ব করি, হয়ত নতুনকরে অপরাধী হব। আমার জন্য হয়ত অতুন করে কেউ মারা যাবে। অতএব আমি কাউকে মারতে চাইনা।

আমায় স্বার্থপর ভেবো না। আমি আমার বন্ধুদের ভালো চাই। তাই...

বিষয়: বিবিধ

১৫৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File