পূজার উৎসবে কোন মুসলমানের যাওয়া ও প্রসাদ খাওয়া জায়েয কি না?

লিখেছেন লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ২১ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৫৪:৫১ রাত

আল্লাহ্ পবিত্র কুর'আনের মোট চার জায়গায় উল্লেখ করেছেন- * সূরা বাকারার ১৭৩ নং আয়াতে, * সূরা মায়িদাহ’র ৩ নং আয়াতে, * সূরা আন’আমের ১৪৫ নং আয়াতে, * সূরা নাহলের ১১৫ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আল্লাহ্ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস খাওয়া।

আর যে পশু জবাই করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে”

অর্থাৎ যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয় বা জবেহ করা হয় সেটা আমাদের জন্য ভক্ষন করা আল্লাহ্ হারাম করে দিয়েছেন। আর এই কারনেই পূজার প্রস্বাদ খাওয়া হারাম। কারণ এতে বিন্দু মাত্রও কারো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই যে হিন্দুদের পুজাতে, পশু সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী কার নামে উৎসর্গ করা হয়ে থাকে।সুতরাং হিন্দু বা অন্যান্য মুর্তিপুজকদের ধর্মীয় উৎসবে প্রাসাদ বা যে কোন পশুর মাংস ভক্ষন করা মুসলিমদের জন্য হারাম।

এখন আসি পূজার অনুষ্ঠানে মুসলিমদের যাওয়ার বিষয়ে-

আমাদের দেশে যখন হিন্দুদের পূজার উৎসব চলতে থাকে তখন অনেক মুসলিম-ই তাদের ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে। ঐ অনুষ্ঠানে উপভোগ করে।অনেকে উৎসুক ভাবেই যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হিন্দুদের চাইতে উৎসুক মুসলিমই বেশী ।

এখন একটু ভেবে দেখুন, সেখানে কি হয়?, পুর্তিপূজা হচ্ছে,তার সামনে মাথা নত করে সেজদাহ করা হচ্ছে এগুলো সবই আল্লাহর সাথে শির্ক করা।

আর শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়, সবচেয়ে জঘন্যতম অপরাধ। মহান আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্র সাথে শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়।(সুরা লুকমানঃ ১৩) আর শির্কের অপরাধ আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। মহান আল্লাহ বলেন : "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না,কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন,এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ৪৮)। .

এখন দেখুন, কোরআনের ভাষায় সেখানে সবচেয়ে বড় অন্যায় পাপ আপনার সামনে হচ্ছে। আর আপনি মন ভরে তাউপভোগ করছেন । সমর্থন দিচ্ছেন ।আর রাসুল (সাঃ) বললেন-তোমাদের কেউ কোন গর্হিত/ অন্যায় কাজ হতে দেখলে সে যেন নিজের হাতে (শক্তি প্রয়োগে)তা সংশোধন করে দেয়,যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে তবে যেন মুখ দ্বারা তা সংশোধন করে দেয়, আর যদি তাও না পারে তবে যেন সে ঐ কাজটিকে অন্তর থেকে ঘৃণা করবে। আর এটা হল ঈমানের নিম্নতম স্তর। [সহিহ মুসলিম,ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং ৭৮] .

অথচ আপনি ঐ অন্যায়কে বাঁধা তো দেনই না, মনথেকেও ঘৃণা করেন না বরং ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে মনে মনে উপভোগ করেন। অন্তত মন থেকে ঘৃণা করলেও দুর্বলতম ঈমানদার হিসেবে আপনার ঈমান থাকত কিন্তু ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে তাদের অনুষ্ঠান মনে মনে উপভোগ করার পরেও কি আপনি দাবী করবেন যে- আপনার ঈমান ঠিক আছে। এটা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।

আর একটি পরিতাপের বিষয় হল মুসলিমরা তাদের পুজায় অংশগ্রহন করে,কিন্তু হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের, মুসলিমদের ঈদের অনুষ্ঠানে কয় জনকে দেখেছেন?মুসলিম হিসাবে লজ্যা থাকা চাই ।তবে একটা কথা স্বরণ রাখতে হবে প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বঃ স্বঃ স্হানে রেখে আমাদেরকে চলতে হবে। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার বা মন্দ বলারও কোন অবকাশ নেই। তাদের কর্ম ও কর্ম ফল তাদের জন্য আমাদের কর্ম ও কর্ম ফল আমাদের জন্য। اكم دينكم ولى دين । সুরায়ে কাফেরুন"

বিষয়: বিবিধ

২১৯৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

346726
২১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:০২
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : উদারমণা হতে হলে সেখানে গিয়ে মূর্তির সামনে সেলফি তুলে ফেসবুক-টুইটারে দিতে হয়। আর মৌলবাদি হলে এত কিছুর কোন দরকার নেই।
২১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:১৯
287871
এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া লিখেছেন : উদারমনা নিজের ঈমানকে বিসর্জন দিয়ে নয়
346737
২১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:৫১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমরা যেমন হীনমন্যতা্য় ভুগি তারা কিন্তু ভুগেনা। আর ধর্মনিরপেক্ষতা প্রমানে যারা পূজা করতে যায় তারা এটাই প্রমান করে যে ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই হলো ইসলাম বিরোধিতা।
২১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১০:১৫
287872
এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া লিখেছেন : রাইট১০০%
347411
২৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:২৬
হতভাগা লিখেছেন : দেব দেবীর জন্য উৎসর্গ করা খাবার খাওয়া আল্লাহর সাথে শিরক করা ছাড়া আর কিছুই নয় ।

আল্লাহ আমাদের এমন ভয়ংকর পাপ হতে রক্ষা করুন - আমিন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File