হজের সফরে মৃত্যু বরনকারী হাজী সাহেবানদের মর্যাদা
লিখেছেন লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:৫৪:৫২ দুপুর
হজের সফরে মৃত্যু বরনকারী হাজী সাহেবানদের মর্যাদা =
প্রতি বছরই হজের সময় সৌদি আরবের মক্কা বা মদিনায় অবস্থানকালে অনেক হজযাত্রী মারা যায়।
এই বছরও গত কাল ১১/৯/2015 ঘটে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও বর্ষনের কারণে নির্মানাধীন বিল্ড়িংয়ে স্হাপিত ক্রেন ভেঙ্গে পড়ে ১০৭ জন নিহত ও ১৩৮ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এই জন্য আমরা নিহত সকল হাজী সাহেবানদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। এবং নিহতের সকল পরিবারের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি যাতে তারা এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেন আমিন ।
নিয়ম অনুযায়ী হজ করতে যাওয়া কোনো হজযাত্রী মারা গেলে তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্র প্রত্যেক হাজিকে হজের প্রস্ততিকালেই দিতে হয়। মক্কায় মারা গেলে মক্কায় ,এবং মদিনায় মারা গেলে মদিনায় দাফন করা হয়।
জান্নাতুল মোয়াল্লা মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে অবস্থিত মক্কা শরিফের একটি বিখ্যাত কবরস্থান। এই কবরস্থানের কোনো কবর বাঁধানো নয়, নেই কোনো কবরে নামফলক। এখানে অনেক সাহাবির কবর আছে। আছে নবী করিম (সা.)-এর স্ত্রীদের কবর। আগে হজ করতে এসে কেউ মক্কায় মারা গেলে এখানে কবর দেওয়া হতো। স্থান সংকুলান না হওয়ায় এখন ভিন্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আর কেউ মদিনায় মারা গেলে তাকে ‘জান্নাতুল বাকী’ নামক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই কবরস্থানটি মসজিদে নববীর সন্নিকটে পূর্ব দিকে অবস্থিত। এখানে অনেক সাহাবি, নবী (সা.) এর পরিবারের অনেক সদস্যদের কবর রয়েছে।
বস্তুত মৃত্যুর জন্য প্রত্যেক হজযাত্রী মানসিকভাবে প্রস্তত থাকেন। এবং ইহরামের কাপড় পরিধান করে এর স্বীকৃতিও দিয়ে থাকেন। এভাবে হজের সফরে বেরিয়ে মারা গেলে তার আমলনামায় হজের সওয়াব লেখা হয়।
আসলে একজন মুমিন তার সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবার দ্বারপ্রান্তে গেল, হজের জন্য ঘর থেকে বের হল, আর তখনই হয়তো এসে পড়ল তার সেই অবধারিত মুহূর্ত যা খণ্ডানো বা এড়ানোর কোনো উপায় নেই। তবে মুমিনের জন্য তাতে খুব দুঃখিত হওয়ার বা কোনো কষ্ট পাওয়ার কারণ নেই। দয়াময় আল্লাহতায়ালার দয়ায় হজ সম্পন্ন না করেও তিনি হজের সওয়াব পেতে থাকবেন।
এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে; অতপর সে মারা গেছে, তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত হজের নেকি লেখা হতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি উমরার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে; অতপর সে মারা গেছে, তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত উমরার নেকি লেখা হতে থাকবে।’ -তারগিব ওয়াত তারহিব: ১১১৪
অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। জনৈক মুহরিম (হজের জন্য ইহরাম পরিধানরত) ব্যক্তিকে তার সওয়ারি ভূপাতিত করলে তার মৃত্যু হয়। তখন হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তাকে বরই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার দু’টি কাপড়েই (ইহরামের দুই কাপড়) তাকে কাফন পরাও। তবে তার মাথা ও চেহারা ঢেকো না। কেননা, কিয়ামত দিবসে সে তালবিয়া পাঠ করা অবস্থায় উত্থিত হবে। -সহিহ মুসলিম: ১২০৬ ,
হয়তো আপনারা অনেকে হারাম শরীফে অনেক মৃত ব্ব্যক্তির মাথাও চেহারা খোলা আবস্হায় জানাযা ও দাপনের কাজ সমপন্ন করতে দেখেছেন । কারণ সে কেয়ামতে তালবিয়াহ পাঠ করতে করতে উঠবেন এই জন্যই চেহারা ও মাথা খোলা রাখা হয়
বিষয়: বিবিধ
১৩০০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ খাইর
শিক্ষনিয় পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ। আমার আব্বাও হজ্জ এর পর মক্কায় ইন্তেকাল করেছিলেন। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন