বৈজ্ঞানীক দৃষ্টিকোণে ইসলামের আমল নামাজ ১ম পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ০১ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:৫৯:০২ দুপুর
বৈজ্ঞানীক দৃষ্টিকোণে ইসলামের আমল নামাজ
নামাজ আল্লাহর বিশেষ এক এবাদত,যা আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের সহায়ক, একমাত্র নামাজ মুসলিম-অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী এক বিশেষ এবাদত,তাছাডা হাজারো উপকারীতার কথা আমরা কোরআন-হাদীস থেকে জানতে পারি। কিন্তু আজকাল বিজ্ঞান আমাদের নামাজ সম্পর্কে কি বলে তা নিয়েই আলোচনা করবো। তবে একথা দিবালোকের ন্যায়ই সত্য যে কোরআন বুঝতে আমাদেরকে বিজ্ঞান বুঝতে হবেনা তবে বিজ্ঞান বুঝতে হলে কোরআন বুঝতে হবে। তবে আজকাল বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন গবেষনার মাধ্যমে আমাদেরকে কোরআন বুঝতে অনেকাংশে সহায়ক হচ্ছে ।
আমরা অনেকেই জানি নামাজের বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক উপকারিতাও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল শারীরিক উপকারিতা। আর মুসলিম হিসেবে আপনি এটাও হয়তো জেনে থাকবেন যে, নামাজের শ্রেষ্ঠতম অংশ হল সিজদা।
তাই এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই যে পবিত্র কোরআনে সিজদা শব্দটি কম করে হলে ও ৯০ বার উল্লেখ করা হয়েছে। একবার ভেবে দেখুন কিভাবে সিজদা করি আমরা। স্বাভাবিক অবস্থায় আমরা যখন দাড়িয়ে থাকি বা বসে থাকি তখন আমাদের ব্রেইনে রক্ত পৌছায় ঠিকই, কিন্তু তা একটা স্বাস্থ্যকর ব্রেইনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু আমরা যখন সিজদায় যাই তখন মস্তিষ্কে/ব্রেইনে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্ত সঞ্চালিত হয়, যা একটা স্বাস্থ্যকর ব্রেইনের জন্য খুবই জরুরী। আর আমরা যখন সিজদা করি তখন ব্রেইনের ন্যায় আমাদের মুখমণ্ডলের ত্বকেও অতিরিক্ত রক্তসঞ্চালন হয়, যা আমাদের চিল্বলাইন(chilblain) নামক এক ধরনের চর্মরোগ এবং এজাতীয় আরও অনেক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।তাছাড়া সিজদা আমদেরকে সাইনুসাইটিস (sinusitis) থেকেও বাছিয়ে রাখে। কেননা যারা নিয়মিত সিজদা করে অর্থাৎ নামাজ পড়ে তাদের সাইনাসের (sinus) প্রদাহ হবার সম্ভাবনা অনেক কম।
এছাড়াও সিজদার আরও উপকার রয়েছে। যেমন, যারা নিয়মিত সিজদা করে তাদের ব্রঙ্কাইটিস (bronchitis) হবার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কম। একটা লোক যখন স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস ছাড়ে তখন আমদের ফুসফুসে থাকা দূষিত বায়ুর কেবল দুই-তৃতীয়াংশ বের হয় বাকি একতৃতীয়াংশ ভিতরেই থেকে যায়। কিন্তু কেউ যখন সিজদায় অবনত হয় তার এবডমিনাল ভিসেরা(abdominal viscera) ডায়াফ্রামের(diaphragm) উপর চাপ প্রয়োগ করে, ফলে ডায়াফ্রাম ফুসফুসের নিছের দিকে (lower lobes) চাপ প্রয়োগ করে।
ফলে কেউ যখন সিজদায় অবনত অবস্থায় শ্বাসপ্রশ্বাস নেয় তখন ফুসফুসের ভিতরে জমে থাকা এক তৃতীয়াংশ দূষিত বাতাসও বের হয়ে যায়, যা একটা সুস্থ ফুসফুসের জন্য খুবই দরকারি। এর ফলে আমদের ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ হবার সম্ভাবনাও কমে যায় অনেকাংশে।
যদি কেউ নিয়মিত সিজদা করে তবে সিজদার সময় করা অঙ্গভঙ্গি ও শরীরের বিভিন্ন রকমের নাড়াচাড়ার কারণে তার অর্শ(hemorrhoid) বা পাইল্স(piles) এবং হার্নিয়া (hernia) হবার সম্ভাবনাও কমে যায় অনেকাংশে।
আবার আমরা যখন সিজদা থেকে উঠে দাড়াই তখন শরীরের পুরো ওজন আমদের পায়ের উপর পড়ে এবং আমদের পা আর রানের পেশীতে চাপ পড়ে। তখন সে পেশীগুলু সক্রিয় হয়ে উঠে যা আমাদের নিন্মাঙ্গে রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে দে, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও নামাজে রুখু সিজদা বসা আর উঠে দাঁড়ানোর সময় আমরা বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করি যার কারণে আমাদের মেরুদণ্ডে ও বিভিন্ন রকমের নাড়াচাড়া হয়, যা আমদের মেরুদণ্ডের বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে বাঁচিয়ে রাখে।
নামাজের এরকম হাজারো উপকারিতা আছে যা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আমরা মুসলিমরা সালাত আদায় করি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর তার প্রশংসা করবার জন্য। তাই আমাদের মুসলিমদের জন্য উপরে উল্লেখ করা উপকারগুলো হল এক ধরনের সাইড ডিশ(side dishes)।
বলতে পারেন ডেজার্ট(dessert), যা মূল খাবারের পরে সামান্য পরিমাণে খাওয়া হয়। একজন অমুসলিমকে নামাজের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য উপরোক্ত উপকারগুলুর কথা বলতে পারেন আপনি; তা হয়ত তাকে নামাজের দিকে আকৃষ্ট করবে, কিন্তু আমাদের মুসলিমদের জন্য প্রধান বা মূল খাবার অর্থাৎ নামাজের মূল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর হুকুম পালনে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার সাথে তাঁর প্রিয় বান্দা ও তার রসূলের বিধান মেনে চলা।
চলবে.)>>>>>>>>>>>>>>>
২য় পর্ব
http://www.todaybd.net/blog/blogdetail/detail/2300/salamat/63590#.VR-fovysWuI
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আগে জানা ছিল না, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম , শোকরিয়া।
নামাজের বৈজ্ঞানিক উপকারীতা নিতে ধারাবাহিক লিখতে পারেন, যদি পর্যাপ্ত সময় এবং উপকরণ আপনার হাতে থাকে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন