তাবলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষন
লিখেছেন লিখেছেন এম আবদুল্লাহ ভূঁইয়া ১৬ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৫০:১৭ রাত
আচ্ছালামু আলাইকুম, তাবলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি , মুহতারম
তাবলীগের মেহনতে কি পরিমান অমুসলিম ইসলামের ছায়াতলে এসেছে এমন কোন তথ্য কোন ডকুমেন্ট , কারগুজারী জানা থাকলে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
বিষয়: বিবিধ
১৭২৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মনে রাখতে হবে যুদ্ধ ইসলাম কায়েম করার মাধ্যম নয়, বরং ইসলাম রক্ষা করার মাধ্যম। ইসলাম কায়েম করতে হবে দাওয়াত দিয়ে যেমনটা ইসলামের প্রথম যুগে নবী সাঃ মক্কায় করেছেন,আর যুদ্ধ করে ইসলাম রক্ষা করতে হবে,যেমনটা নবী সাঃ মদীনা জীবনে করেছেন। যারা তাবলীগের বিরোধিতা করছেন এই বলে যে তাবলীগ জামাত শুধু নামাজের কথা বলে নামাজ কায়েমের বা দীন কায়েমের কথা ভাবেনা তাদের উদ্দেশ্যে বলছি যে আসলে তারা তাবলীগ জামাতের মিশনটাই জানেননা, বুঝেন না, আর বুঝার চেষ্টাও করেন না বলে মনে হয়। তাবলীগ জামাতের উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষকে আল্লাহ মুখী করা, অন্তরে দীনের বুঝ আর দরদ সৃষ্টি করে দেওয়া মাত্র ৷
এরপর সে ব্যক্তিগতভাবে আলেম উলামা বা দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সমুহ থেকে দ্বীনের ইলম, মাসয়ালা মাসায়েল শিখবে এবং দ্বীনের প্রয়োজনে জিহাদ, আন্দোলন,রাজনীতি করবে এগুলো সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর তাবলীগ জামাত এ ব্যপারে নিষেধ করেনা ৷
আর একটা বিষয়, যারা রাজনীতি করে তারা যদি মাদ্রাসায় না পড়ায় এর দ্বারা নাহক্ব প্রমাণিত হয়না অনুরূপ যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা যদি তাবলীগ না করে বা মাদ্রাসায় না পড়ায় তারাও গোমরাহ না। তাহলে তাবলীগ জামাত রাজনীতি না করলে গোমরাহ হবে কেন ? সবাই সবার জায়গায় থেকে দীনের কাজ করবে শর্ত হল পদ্ধতিটা আল্লাহ ও তাঁর নবীর তরীকায় হতে হবে ।
দ্বীনি কাজের অনেকগুলো শাখা আছে যা গননা করে শেষ করা যাবেনা তবে এর মধ্যে তাবলীগ ও একটি প্রধানতম শাখা আরো যেসব শাখা রয়েছে, যেমন
১- গ্রহণযোগ্য আমীরের নেতৃত্বে কাফিরদের মুকাবিলা করে দ্বীনে ইসলামকে সমুন্নত করার মানসে জিহাদ করা ৷
২- খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মানসে কাজ করা ৷
৩- ইসলাম বিদ্বেষীদের ইসলামের বিরুদ্ধে নানাভিদ অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগের জবাব দেয়া কথা ও লেখনির মাধ্যমে ৷
৪- ইসলামের মৌল বিশ্বাস ও আমল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীস ভিত্তিক সঠিক সমাধান জানিয়ে জাতিকে শিরক-বিদআত থেকে মুক্ত রাখতে চেষ্টা-মেহনত চালিয়ে যাওয়া যা বিশ্বের সকল মুফতি মুহাদ্দেস সহ ওলামা-মাশায়েখ গন আঞ্জাম দানে সচেষ্ট আছেন ৷
৫- কুরআন ও সুন্নাহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল মানববন্ধন সভা সেমিনার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিবাদ করে হকের আওয়াজকে বুলন্দ করা।
৬- দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিজ্ঞ আলেম-ওলামা তৈরী করে দ্বীন প্রচারে সচেষ্ট হওয়া ইত্যাদি ৷
৭-সঠিক পদ্ধতিতে যারাই উপরোক্ত কাজ করছেন, তারা সবাই দ্বীনের কাজ করছেন। গুরুত্বের দিক দিয়ে কারো কাজ কারো থেকে কম নয় ।
আইয়্যামে জাহেলিয়াতের কুফরীর অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতিকে দ্বীনের আলোয় আলোকিত করতে রাসূল সাঃ , রক্তঝরা মেহনত করেছেন। সাহাবাগণ অকাতরে জীবন বিলিয়েছেন, ঘর-বাড়ি সংসার সন্তান সন্ততি সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য, দ্বীনকে বুলন্দ করতে জিহাদের ময়দান থেকে জিহাদের ময়দানে ছুটে বেরিয়েছেন ৷যার কারনে বিদায় হজের দিন উপস্হিত প্রায় সোয়া লক্ষ ছাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মাত্র ১০ হাজারের মত ছাহাবীর কবর মক্কা-মদীনায় পাওয়া যায় , আর বাকীদের কবর পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছিডিয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷কেন তা ?একমাত্র দ্বীন প্রচারের জন্যই তো তাইনা !
সেই সাথে একদল সাহাবা সারাক্ষণ মসজিদে নববীতে দিনরাত দ্বীনের ইলম আহরণ করেছেন, (যারা আসহাবে ছুফ্ফাহ নামে পরিচিত ছিল আজও মসজিদে নববীতে সেই স্হানটি ইতিহাসের সাক্ষি হিসাবে বিদ্যমান আছে রওজা মোবারকের পাশে )
দ্বীনী বিষয়ে প্রাজ্ঞতা অর্জনের জন্য। কারণ মূল দ্বীন হল, আল্লাহর আদেশ আর নিষেধ পালন করার নাম ,যদি কুরআন ও হাদীস আত্মস্থকারী গবেষক ব্যক্তিগণ না থাকেন, তাহলে পুরো জাতি ধর্মের নামে অধর্ম পালন করতে শুরু করে দিবে। তারা বুঝতেই পারবে না, তারা যা পালন করছে বা যা বলছে তা দ্বীন নয়। তাই ইলমে দ্বীন অন্বেষণ করা, দ্বীন শিক্ষার কাজে ব্রত থাকা দ্বীনের একটি অত্যাবশ্যকীয় ফরজ কাজ। সেই সাথে প্রয়োজনে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়াও দ্বীনের একটি ফরজ কাজ। ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার মেহনতও দ্বীনের কাজ।
এক কথায় একটি আরেকটির পরিপূরক। কোনটির অবদানই কোনটি থেকে কম নয়। তবে সকল জমানায়ই সবচে’ বড় কাজ অবশ্যই কুরআন ও হাদীসের প্রাজ্ঞ আলেম তৈরী করা , কারণ প্রাজ্ঞ আলেম না থাকলে, কুরআনের অপব্যাখ্যা, মিথ্যা-জাল বর্ণনা ইত্যাদি মানুষের ঈমানে-আমলে ঢুকে পড়ে অবশেষে গোটা ধর্মটাই একটি বিকৃত ধর্মে রূপ লাভ করবে। এ কারণে প্রাজ্ঞ আলেম তৈরী করার প্রচেষ্টা দ্বীনের একটি আবশ্যকীয় জরুরী বিষয়।
সেই সাথে দ্বীনের তাবলীগও দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়। রাসূল সাঃ সারা জীবন মৌলিকভাবে যে কাজ করে গেছেন সেটির নাম তাবলীগ।
সেই সাথে রাসূল সাঃ সশরীরে ২৭টি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। সুতরাং জিহাদও একটি ফরজ আমল। আমলী জিন্দেগী গঠন করতে অসংখ্য হাদীস বলে গেছেন। যা বুঝে পালন করা উম্মতের জন্য জরুরী। তাই ইলমে দ্বীন অন্বেষণ করাও ফরজ। সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনও দ্বীনের একটি অংশ ৷
তাছাডা সবাই একসাথে সব কাজ করতে সক্ষম নয়। তাই সবাইকে সব কাজের জন্য বাধ্য করাও উচিত নয়। একদল দ্বীনের যে কাজ করছেন, তারা অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ ভাব রাখাও উচিত নয়। কিংবা ছোট নজরে দেখারও কোন অবকাশ নেই ৷
এ কথাটি আরও স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই যে,
শুধু মাত্র তাবলীগকেই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী,তবে বলতে হবে তাবলীগও দ্বীনের একটি কাজ ।
শুধু মাত্র জিহাদই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে জিহাদও দ্বীনের কাজ।
শুধু খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনীতিই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মেহনতও দ্বীনের কাজ।শুধু মাত্র ইলমে দ্বীন শিক্ষা-দীক্ষায় রত থাকাই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে ইলমে দ্বীনের শিক্ষা-দীক্ষা ও দ্বীনের কাজ।তেমনি ভাবে আত্মশুদ্ধি হাসিলের জন্য সঠিক পদ্ধতিতে মেহনত করাই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে আত্মশুদ্ধি হাসিলের জন্য সঠিক পদ্ধতিতে মেহনত করাও দ্বীনের কাজ ৷
সকলেই যার যার অবস্হানে থেকেই সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করছেন এতে কোন সন্দেহ নেই ৷ না হয় অন্ধের হাতি দেখার ঘটনার মতই হয়ে যাবে,কারন শুধু মাত্র পাঁ পেট বা কান আর মাথার নাম হাতি নয় বরং এ সব গুলোর সমষ্টির নামই হল হাতি ৷ তদ্রুপ তাবলীগ ,রাজনীতি,জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ , এলমে দ্বীন শিক্ষা ও তাসাউফ এর সমষ্টির নাম হল ইসলাম, একটা ছাডা অন্যটি বিকলঙ্গ ৷এইভাবে যারাই সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করছেন, সবাইকে এক কাজে নিয়ে আসার জন্য বলা বোকামী বৈ কিছু নয় ৷ সবাইকে নিজের মত সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করতে দিন , তবে সবার পদ্ধতিই যেন কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক পদ্ধতি হয় এটি হল বিবেচ্য বিষয় ৷
সুতরাং তাবলীগ জামাতের ভাইরা কেনসশস্ত্র জিহাদে অংশ নেয় না, ইসলামী খিলাফতের জন্য আন্দোলনে রত হয় না? এ প্রশ্নটি করা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি সকল হক্কানী মুজাহিদগণ কেন কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ রেখে দাওয়াত ও তাবলীগে এসে যায় না এমন প্রশ্নও অযৌক্তিক।এমনিভাবে সকল প্রাজ্ঞ গবেষক আলেমকে দাওয়াত ও তাবলীগের চিল্লায় পাঠানোর মানসিকতাও একটি অযৌক্তিক মানসিকতা। যেমন সকল দাওয়াত তাবলীগের সাথিদের মাদরাসায় ভর্তি করে বিজ্ঞ আলেম বানানোর জন্য চেষ্টা করা ও অযৌক্তিক ৷যাই হউক সহজ কথা হল, সঠিক পদ্ধতিতে যারাই দ্বীনের কাজ করছেন, সবাই হকের পথে আছেন। সকলের কাজই প্রশংসনীয়। সবার জন্য সব কাজ করা সম্ভব নয়। তবে সবাইকে সবাই সাপোর্ট দিতে হবে। তাহলেই ইসলামের বিজয় সহজ হবে। শক্তি বৃদ্ধি পাবে। অযথা বিতর্ক আমাদের মাঝে বিভক্তির দেয়ালকেই মজবুত করে দিবে যা কখনো কাম্য নয় ৷
জন্ম আমার ভারতে,মায়ের কোলে চড়েই রায়টে সব হারিয়ে এক মুসলীম প্রধান গ্রামে উঠেছিলাম৷হাঁটে শেখার পরেই দেখেছি ঐ গ্রামের মাঠে শীত কালে মাস ব্যপী যাত্রাগানের আসর জুয়া মদ চলত৷ বয়স যখন৮/৯ তখন হঠাৎ এ সব বন্ধ হয়ে গেল৷ দুই তিন বছরের মধ্যে ঐ গ্রামে ৯ জন হজ্জ করে এলেন৷ গ্রামে মাদ্রাসা হল৷ আশ পাশের সব গ্রামের চেহারা বদলে গেল৷ হঠাৎ করে সবাই ভাল হয়ে গেল৷ আর তা তবলীগের কারণেে৷ বড় হয়ে বুঝেছি৷ ধন্যবাদ৷
২. ইউরোপঃ ইউরোপে ১০ বছরে ২০ হাজার ইংরেজ মুসলমান হয়েছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি মেইল এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
৩. ইংলেন্ডঃ ইংলেন্ডে তাবলীগ জামাতের মেহনতে প্রতি বছর ১০ হাজার বৃটিশ মুসলমান হচ্ছে। ১৯৯১ সালে চার্চে গমনকারী খ্রিষ্টানদের সংখ্যা ছিল ৮,৫৪,০০০ এবং মসজিদে গমনকারী মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ৫,৩৬,০০০ হাজার। ১৯৯২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মসজিদে গমনকারী মুসলমানদের সংখ্যা ৪০,০০০0 আর চার্চে গমনকারী খ্রিষ্টানদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২০,০০০।
৪. ফ্রান্সঃ ফ্রান্সে খুব দ্রুতগতিতে ইসলামের বিস্তার লাভ করছে।মাওঃ তারেক জামীল ছাঃ মাঃ জিঃ এর বয়ানে শুনতে পাই যে ফ্রান্সের এক পাদ্রী তাবলীগি জামাতের হাতে মুসলিম হয়ে রাইওয়ান্ড মারকাজে এসে সময় লাগিয়েছেন এবং সময় লাগাতে গিয়ে তিউনিশিয়াতে মৃত্যু বরন করেছেন। ১৫ বছরে প্রায় দেড় হাজার মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
তাবলিগ নিজেরাই জানে যে-তারা পরিপূর্ণ ইসলাম অনুসরন করতে পারে না। তারা বলে আগে সকলকে নামাজে দাখিল করে,তবে অন্য বিষয়ে দাওয়াত দেওয়া হবে। গত ১০০ বছরে তারা সকলকে এখনও নামাজে,রোজায় দাখিল করতে পারেনি। তাই এর পরবর্তী কাজগুলো বা ফরজ,ওয়াজিবগুলো এখনও আবশ্যক হয়নি।তারা স্তর প্রথায় দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য তারা ঠিক কোন স্তরে আছে আমার জানা নেই। আমার জানা মতে তারা খুবই সৎ,পরহেজগার লোক। তারা কারো সাথে শত্রুতা করেনা। সকলের সাথে তাদের বন্ধুত্ব
মনে রাখতে হবে যুদ্ধ ইসলাম কায়েম করার মাধ্যম নয়, বরং ইসলাম রক্ষা করার মাধ্যম। ইসলাম কায়েম করতে হবে দাওয়াত দিয়ে যেমনটা ইসলামের প্রথম যুগে নবী সাঃ মক্কায় করেছেন,আর যুদ্ধ করে ইসলাম রক্ষা করতে হবে,যেমনটা নবী সাঃ মদীনা জীবনে করেছেন। যারা তাবলীগের বিরোধিতা করছেন এই বলে যে তাবলীগ জামাত শুধু নামাজের কথা বলে নামাজ কায়েমের বা দীন কায়েমের কথা ভাবেনা তাদের উদ্দেশ্যে বলছি যে আসলে তারা তাবলীগ জামাতের মিশনটাই জানেননা, বুঝেন না, আর বুঝার চেষ্টাও করেন না বলে মনে হয়। তাবলীগ জামাতের উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষকে আল্লাহ মুখী করা, অন্তরে দীনের বুঝ আর দরদ সৃষ্টি করে দেওয়া মাত্র ৷
এরপর সে ব্যক্তিগতভাবে আলেম উলামা বা দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সমুহ থেকে দ্বীনের ইলম, মাসয়ালা মাসায়েল শিখবে এবং দ্বীনের প্রয়োজনে জিহাদ, আন্দোলন,রাজনীতি করবে এগুলো সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর তাবলীগ জামাত এ ব্যপারে নিষেধ করেনা ৷
আর একটা বিষয়, যারা রাজনীতি করে তারা যদি মাদ্রাসায় না পড়ায় এর দ্বারা নাহক্ব প্রমাণিত হয়না অনুরূপ যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা যদি তাবলীগ না করে বা মাদ্রাসায় না পড়ায় তারাও গোমরাহ না। তাহলে তাবলীগ জামাত রাজনীতি না করলে গোমরাহ হবে কেন ? সবাই সবার জায়গায় থেকে দীনের কাজ করবে শর্ত হল পদ্ধতিটা আল্লাহ ও তাঁর নবীর তরীকায় হতে হবে ।
দ্বীনি কাজের অনেকগুলো শাখা আছে যা গননা করে শেষ করা যাবেনা তবে এর মধ্যে তাবলীগ ও একটি প্রধানতম শাখা আরো যেসব শাখা রয়েছে, যেমন
১- গ্রহণযোগ্য আমীরের নেতৃত্বে কাফিরদের মুকাবিলা করে দ্বীনে ইসলামকে সমুন্নত করার মানসে জিহাদ করা ৷
২- খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মানসে কাজ করা ৷
৩- ইসলাম বিদ্বেষীদের ইসলামের বিরুদ্ধে নানাভিদ অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগের জবাব দেয়া কথা ও লেখনির মাধ্যমে ৷
৪- ইসলামের মৌল বিশ্বাস ও আমল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীস ভিত্তিক সঠিক সমাধান জানিয়ে জাতিকে শিরক-বিদআত থেকে মুক্ত রাখতে চেষ্টা-মেহনত চালিয়ে যাওয়া যা বিশ্বের সকল মুফতি মুহাদ্দেস সহ ওলামা-মাশায়েখ গন আঞ্জাম দানে সচেষ্ট আছেন ৷
৫- কুরআন ও সুন্নাহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল মানববন্ধন সভা সেমিনার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিবাদ করে হকের আওয়াজকে বুলন্দ করা।
৬- দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিজ্ঞ আলেম-ওলামা তৈরী করে দ্বীন প্রচারে সচেষ্ট হওয়া ইত্যাদি ৷
৭-সঠিক পদ্ধতিতে যারাই উপরোক্ত কাজ করছেন, তারা সবাই দ্বীনের কাজ করছেন। গুরুত্বের দিক দিয়ে কারো কাজ কারো থেকে কম নয় ।
আইয়্যামে জাহেলিয়াতের কুফরীর অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতিকে দ্বীনের আলোয় আলোকিত করতে রাসূল সাঃ , রক্তঝরা মেহনত করেছেন। সাহাবাগণ অকাতরে জীবন বিলিয়েছেন, ঘর-বাড়ি সংসার সন্তান সন্ততি সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য, দ্বীনকে বুলন্দ করতে জিহাদের ময়দান থেকে জিহাদের ময়দানে ছুটে বেরিয়েছেন ৷যার কারনে বিদায় হজের দিন উপস্হিত প্রায় সোয়া লক্ষ ছাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মাত্র ১০ হাজারের মত ছাহাবীর কবর মক্কা-মদীনায় পাওয়া যায় , আর বাকীদের কবর পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছিডিয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷কেন তা ?একমাত্র দ্বীন প্রচারের জন্যই তো তাইনা !
সেই সাথে একদল সাহাবা সারাক্ষণ মসজিদে নববীতে দিনরাত দ্বীনের ইলম আহরণ করেছেন, (যারা আসহাবে ছুফ্ফাহ নামে পরিচিত ছিল আজও মসজিদে নববীতে সেই স্হানটি ইতিহাসের সাক্ষি হিসাবে বিদ্যমান আছে রওজা মোবারকের পাশে )
দ্বীনী বিষয়ে প্রাজ্ঞতা অর্জনের জন্য। কারণ মূল দ্বীন হল, আল্লাহর আদেশ আর নিষেধ পালন করার নাম ,যদি কুরআন ও হাদীস আত্মস্থকারী গবেষক ব্যক্তিগণ না থাকেন, তাহলে পুরো জাতি ধর্মের নামে অধর্ম পালন করতে শুরু করে দিবে। তারা বুঝতেই পারবে না, তারা যা পালন করছে বা যা বলছে তা দ্বীন নয়। তাই ইলমে দ্বীন অন্বেষণ করা, দ্বীন শিক্ষার কাজে ব্রত থাকা দ্বীনের একটি অত্যাবশ্যকীয় ফরজ কাজ। সেই সাথে প্রয়োজনে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়াও দ্বীনের একটি ফরজ কাজ। ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার মেহনতও দ্বীনের কাজ।
এক কথায় একটি আরেকটির পরিপূরক। কোনটির অবদানই কোনটি থেকে কম নয়। তবে সকল জমানায়ই সবচে’ বড় কাজ অবশ্যই কুরআন ও হাদীসের প্রাজ্ঞ আলেম তৈরী করা , কারণ প্রাজ্ঞ আলেম না থাকলে, কুরআনের অপব্যাখ্যা, মিথ্যা-জাল বর্ণনা ইত্যাদি মানুষের ঈমানে-আমলে ঢুকে পড়ে অবশেষে গোটা ধর্মটাই একটি বিকৃত ধর্মে রূপ লাভ করবে। এ কারণে প্রাজ্ঞ আলেম তৈরী করার প্রচেষ্টা দ্বীনের একটি আবশ্যকীয় জরুরী বিষয়।
সেই সাথে দ্বীনের তাবলীগও দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়। রাসূল সাঃ সারা জীবন মৌলিকভাবে যে কাজ করে গেছেন সেটির নাম তাবলীগ।
সেই সাথে রাসূল সাঃ সশরীরে ২৭টি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। সুতরাং জিহাদও একটি ফরজ আমল। আমলী জিন্দেগী গঠন করতে অসংখ্য হাদীস বলে গেছেন। যা বুঝে পালন করা উম্মতের জন্য জরুরী। তাই ইলমে দ্বীন অন্বেষণ করাও ফরজ। সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনও দ্বীনের একটি অংশ ৷
তাছাডা সবাই একসাথে সব কাজ করতে সক্ষম নয়। তাই সবাইকে সব কাজের জন্য বাধ্য করাও উচিত নয়। একদল দ্বীনের যে কাজ করছেন, তারা অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ ভাব রাখাও উচিত নয়। কিংবা ছোট নজরে দেখারও কোন অবকাশ নেই ৷
এ কথাটি আরও স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই যে,
শুধু মাত্র তাবলীগকেই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী,তবে বলতে হবে তাবলীগও দ্বীনের একটি কাজ ।
শুধু মাত্র জিহাদই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে জিহাদও দ্বীনের কাজ।
শুধু খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনীতিই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মেহনতও দ্বীনের কাজ।শুধু মাত্র ইলমে দ্বীন শিক্ষা-দীক্ষায় রত থাকাই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে ইলমে দ্বীনের শিক্ষা-দীক্ষা ও দ্বীনের কাজ।তেমনি ভাবে আত্মশুদ্ধি হাসিলের জন্য সঠিক পদ্ধতিতে মেহনত করাই দ্বীনের কাজ মনে করা গোমরাহী, তবে বলতে হবে আত্মশুদ্ধি হাসিলের জন্য সঠিক পদ্ধতিতে মেহনত করাও দ্বীনের কাজ ৷
সকলেই যার যার অবস্হানে থেকেই সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করছেন এতে কোন সন্দেহ নেই ৷ না হয় অন্ধের হাতি দেখার ঘটনার মতই হয়ে যাবে,কারন শুধু মাত্র পাঁ পেট বা কান আর মাথার নাম হাতি নয় বরং এ সব গুলোর সমষ্টির নামই হল হাতি ৷ তদ্রুপ তাবলীগ ,রাজনীতি,জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ , এলমে দ্বীন শিক্ষা ও তাসাউফ এর সমষ্টির নাম হল ইসলাম, একটা ছাডা অন্যটি বিকলঙ্গ ৷এইভাবে যারাই সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করছেন, সবাইকে এক কাজে নিয়ে আসার জন্য বলা বোকামী বৈ কিছু নয় ৷ সবাইকে নিজের মত সঠিক পদ্ধতিতে দ্বীনের কাজ করতে দিন , তবে সবার পদ্ধতিই যেন কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক পদ্ধতি হয় এটি হল বিবেচ্য বিষয় ৷
সুতরাং তাবলীগ জামাতের ভাইরা কেনসশস্ত্র জিহাদে অংশ নেয় না, ইসলামী খিলাফতের জন্য আন্দোলনে রত হয় না? এ প্রশ্নটি করা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি সকল হক্কানী মুজাহিদগণ কেন কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ রেখে দাওয়াত ও তাবলীগে এসে যায় না এমন প্রশ্নও অযৌক্তিক।এমনিভাবে সকল প্রাজ্ঞ গবেষক আলেমকে দাওয়াত ও তাবলীগের চিল্লায় পাঠানোর মানসিকতাও একটি অযৌক্তিক মানসিকতা। যেমন সকল দাওয়াত তাবলীগের সাথিদের মাদরাসায় ভর্তি করে বিজ্ঞ আলেম বানানোর জন্য চেষ্টা করা ও অযৌক্তিক ৷যাই হউক সহজ কথা হল, সঠিক পদ্ধতিতে যারাই দ্বীনের কাজ করছেন, সবাই হকের পথে আছেন। সকলের কাজই প্রশংসনীয়। সবার জন্য সব কাজ করা সম্ভব নয়। তবে সবাইকে সবাই সাপোর্ট দিতে হবে। তাহলেই ইসলামের বিজয় সহজ হবে। শক্তি বৃদ্ধি পাবে। অযথা বিতর্ক আমাদের মাঝে বিভক্তির দেয়ালকেই মজবুত করে দিবে যা কখনো কাম্য নয় ৷
সহমত
মন্তব্য করতে লগইন করুন