একটি বিশেষ ইন্টারভিউ (যা আপনি আর কোথাও পাবেন না)
লিখেছেন লিখেছেন বিডি রকার ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৪১:৩০ সকাল
শাহবাগ আন্দোলনের সূচনাকারী সংগঠন অনলাইন ব্লগার এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কএর আহবায়ক ডাঃ এইচ ইমরানের সাথে দেশের প্রথম FULL সাদাকালো (Not হলুদ) টেলিভিশন চ্যানেল পঁচাত্তর টেলিভিশনের জুনিয়র রিপোর্টার শাহিন আলির একটি Exclusive সাক্ষাৎকার। সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটা নিচে দেয়া হলঃ
-
শাহিনঃ আসসালামু আলাইকুম ইমরান সাহেব, ভালো আছেন?
ইমরানঃ আপনি সালাম দিলেন মনে হলো, তা-ও শুদ্ধভাবে! আপনি রাজাকার-টাজাকার নাকি?
শাহিনঃ না!! এইসব আপনি কী বলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আমার বাবার দিকের আত্মীয় লাগেন।
ইমরানঃ ও, তাই নাকি... তাইলে তো আপনি মুক্তিযোদ্ধা। রাজাকার বলার জন্য আমি দুঃখিত।
শাহিনঃ না ভাই, এটা আবার একটু বাড়িয়ে বললেন (লজ্জ্বা পেয়ে)।
ইমরানঃ না না, সত্য কথাই বলেছি।
এমন সময় শাহিন মালিক তার ব্যাগ থেকে কাঁচের একটা দর্শনীয় বোতল বের করলেন।
ইমরানঃ কীরে ভাই, এটা আবার কোন চীজ?
শাহিনঃ (হাসতে হাসতে) এটা তেমন কিছু না। খাঁটি ফরাসি শ্যাম্পেন। আপনাদের প্রাণপ্রিয় ব্লগার বন্ধু আসিফ মহিউদ্দিনের কাছে শুনলাম আপনারা নাকি আবার গলায় কিছু না পড়লে ঘুমাতে পারেন না, কাজও করতে পারেন না। তাই আর কী.........
ইমরানঃ কী দরকার ছিল (বলতে বলতে বোতল খুলে গ্লাসে ঢেলে খাওয়া শুরু করলো)
শাহিনঃ এরপর ইমরান সাহেব, এই যে আপনারা এতোদিন যাবত আন্দোলন করছেন, আপনাদের কি একটুও ক্লান্তি লাগছে না?
ইমরানঃ কী যে বলেন। দৈনিক যে ব্যক্তি অফিসে যায়, আর নির্দিষ্ট সময় অফিসে বসে কাজ করার জন্য বেতন পায় তার কি অফিস করতে টায়ার্ড লাগে? আর লাগলেও তো তাকে অফিসে যেতে হয়, নাকি?
শাহিনঃ মানে, একটু ক্লিয়ার করে বলেন দেখি ভাই।
ইমরানঃ এর মানে হইলো, এই যে এতোদিন যাবত আমরা আন্দোলন করতেছি এইটা কি ফাও ফাও নাকি? এর লাইগ্যা আমরা ডাইরেক্ট-ইনডাইরেক্ট কতভাবে লাভবান হইতাছি!!
শাহিনঃ মানে...............
ইমরানঃ মানে আর কি, সরকার আর “র” এর কাছ থেকে কি কম টাকা পাইতেছি ভাবছেন? আর তাছাড়া সারাদিন লাইভ দেখাইতেছে সব টিভি চ্যানেলগুলোতে। এই কারণে পাবলিসিটিও হইতেছে প্রচুর। আগে যেইখানে আমারে রাস্তার কুত্তা-বিলাইও চিনতো না, এখন সেইখানে ফেসবুক, ইন্টারনেটসহ সারাদেশে সবাই আমাকে হারামী ইমরান মানে এইচ. ইমরান নামে চেনে।
শাহিনঃ ও, তাইলে তো ইন্ডিয়াডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আপনাদের থেকে অনেক ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
ইমরানঃ আয়-হায়, এইডা কী কন। আমরা ধন্যবাদ দিমু কেন। তারা কি ভাবছেন এইগুলা শুধু শুধু তাদের চ্যানেলগুলাতে লাইভ টেলিকাস্ট করতাছে? তাদেরকে তো আমাদের চেয়েও বেশি টাকা দিছে ‘র’। যেন তারা মানুষের মাঝে একটা হুজগ তুলতে পারে। এই বাঙ্গাল জাতটা তো আবার হুজুগে মাতাল।
শাহিনঃ তাই নাকি!!
ইমরানঃ শিখ মুজিবের মত একটা ভাদাইম্যা তো এই হুযুগের কারণেই এই জাতির এত বড় নেতা হইতে পারছিল। হেই বলদ আর কিছু না পারলেও খুব ভালো ফটর ফটর কইরা মানুষরে সম্মোহিত করতে পারতো। হেই তো ১৯৭১ সালে মানুষের মাঝে স্বাধীনতার হুজুগটা তুললো আর স্বাধীনতার পর দেশের নেতা হইয়া গেছিল। বাঙালী জাতি যদি হুজুগে মাতাল না হইতো তাহলে কেমনে কী হইতো আপনিই কন। তবে এখনকার মানুষগুলো একটু আন্ধা টাইপের। তারা নিজেগো চোখে কিছুই দেখে না, তারা এইসব চ্যানেলগুলোকে নিজেগো চোখ মনে করে। তাই এই চ্যানেলগুলারে ‘র’ টাকা দিলো আমাগো এই ভুয়াজাগরণ নিয়া হুজুগ তোলার জন্য। (কথাগুলো শেষ দিকে একটু জড়ায় যাচ্ছিল)
শাহিনঃ (অবাক হয়ে) ভাই আপনি কি একটু বেশি খাইয়া ফেললেন? এইগুলা কি কইতেছেন।
ইমরানঃ (সম্বিৎ ফিরে) হ্যাঁ হ্যাঁ, তাইতো, একটু বেশিই খায়া ফেলছি। অ্যাঁ, মানে আমি কি একটু আগে বঙ্গবন্ধুরে নিয়া কিছু বলছি নাকি। মানে...... কিছু মনে করতে পারতাছি না। (মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
শাহিনঃ না, মানে, তেমন কিছু বলেন নাই ইমরান সাহেব। এইটা কোন সমস্যাই না। কালকে শাহবাগ যাইয়া একটু পর পর ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই’ বইলা রগ ফাটাইয়া চিল্লাবেন, তাইলেই হবে।
ইমরানঃ ঠিক বলেছেন, ঠিক বলেছেন।
শাহিনঃ ইমরান সাহেব, আমরা আপনার আগের একটা কথার ব্যপারে আরেকটু জানতে চাই।
ইমরানঃ কোন ব্যপারটা?
শাহিনঃ আপনি বলছিলেন ‘র’ – আপনাদের অনেক সাহায্য করছে। এই ব্যপারটা যদি একটু ক্লিয়ার করতেন।
ইমরানঃ এই সাধারণ ব্যপারটা বুঝলেন না। ভারত শুরু থেকেই জামায়াতে ইসলামীকে তাদের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করতো। তারা এটাও জানতো জামায়াতকে না থামালে এরা একসময় না একসময় ক্ষমতায় আসবেই, আর তাহলেই তো তাদের জারিজুরি ফাঁস হয়ে যাবে। তারা আর বাংলাদেশকে তাদের মার্কেট বানাতে পারবে না। বাংলাদেশকে শোষণ আর অত্যাচারও করতে পারবে না। তাই তারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আর এদেশীয় রাজাকার-আলবদররা যেসব অপকর্ম করতো তাকে আরো লক্ষগুণে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে মানুষের কাছে প্রচার করতো যে এসকল অপকর্ম করেছে জামায়াতের লোকেরা। আর তখন থেকেই তারা যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে মার্কড হয়ে গেল।এই ধরেন এখন, আমাদের বসদের প্ল্যান মত কি সুন্দর সব হিন্দু-বৌদ্ধদের ঘরবাড়ি উপাসনালয় জালাইয়া-ভাইঙ্গা দেওয়া হইসে, আর মিডিয়ার হাতে কিছু টাকা ধরাইয়া এই দায় জামাত-শিবিরের উপর চাপাইয়া দিতে বলসে । এম্নে যদি প্রচার চালানো হইতে ঠাকে তবে আজ থেকে ৪২ বছর পরে সবাই নিশ্চিত থাকবে এইসব কাজ তারাই করছে । তবে সমস্যাটা কি জানেন , ১৯৭১ সালে এতো প্লানমত কাজ করার পরেও তাদের প্রকৃত চেহারা-চরিত্র দেখে, যথাযথ প্রমাণাদি না থাকায় ও পরবর্তী গর্দভ সরকারগুলোর ব্যর্থতায় এই বিষয়টা চাপা পড়ে গেল। কিন্তু এখন এই সরকারের আমলে তারা আবার একটা চরম মওকা পেল ব্যপারটা মিটিয়ে ফেলার। সাজালো ‘যুদ্ধাপরাধী’ নাটক। ভারতীয় ‘র’ এর নির্দেশনায় ও পরিচালনায় নাটকটি ভালোই চলতো যদি না আওয়ামী সব কয়টা এতটা বেয়াকুফ না হতো। এই গর্দভগুলো পদে পদে এমন সব ভুল করতে লাগলো যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। তার উপরে আবার জামাতি গোঁয়ারগুলো দেশে-বিদেশে যে প্রচারণা ও প্রতিরোধ চালালো তাও অবিশ্বাস্য। এরপর আবার বিশ্বগর্দভ ও আবাল নিজামুল হকটা লাগাইলো একটা মহা আন্ধা গেরো। তাই পরিশেষে আমাদের দিয়ে এই শাহবাগ নাটকটা সাজানো হলো। এর টার্গেটটা ছিলো যে, এটা বুঝানো যে, সাধারণ মানুষরাও রাজাকারের ফাঁসির নামে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি চায়। তাছাড়া আরেকটা উদ্দেশ্য ছিল, যাতে এই আন্দোলনের ফলে দেশে একটা অস্থিরতা বিরাজ করে আর এই সুযোগে আটক নেতাগুলোরে ফাঁসিতে লটকাইয়া দেওয়া যায়। এসব কারণেই মনে করেন ‘র’ আমাদেরকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নানাভাবে সাহায্য করছে।
শাহিনঃ বাহঃ এটা তো পুরাই ঝাক্কাস কাহিনী। তা ইমরান সাহেব, এই নাটকে আপনাদের সফলতা কেমন দেখছেন?
ইমরানঃ কী কন! সফলতা মানে---- ব্যপক সফলতা। দেখেন না এখন আমরা সরকারের আসনে আসীন!!অনেকেই তো এখন আমাদের সরকার বলা শুরু করছে । আসলে তো আমরা সরকার না, সরকার হইল আমাদের বসরা মানে ইন্ডিয়ানরা । এখন ‘র’ এর প্ল্যানমতো আমাদের দাবীগুলো নাটকে মঞ্চস্থ হবে আর সরকার এমন ভাব দেখাবে যেন এটা ১০১% জনগণের দাবী। আর তারা সেগুলো পূরণ করবে। তবে নাটকে মাঝে মাঝেই ছোটখাটো কিছু ঝামেলা হইতেছে। সবাই তো আর এই সিক্রেটগুলো জানে না। তবে সেটা কোন ব্যপার না।
শাহিনঃ আর জনসমাগমের ব্যপারটা............
ইমরানঃ ওঃ ঐটা। আরে ভাই; এতো জনসমাগম লাগে? দেখেন না, আমাদের মিডিয়াগুলোর ক্যামেরাম্যানগুলো কি দক্ষ!! পঞ্চাশ-ষাটজন মানুষ থাকলেও এমনভাবে এমন এঙ্গেল থেকে জুম করে দেখাবে যেন মনে হবে শাহবাগে লাখ-লাখ মানুষের কারণে জায়গার সঙ্কুলান হইতেছে না, বরং কয়েকজন সাইড দিয়া এপাশ-ওপাশ কইরা পইড়া যাইতেছে। আর এরপরও তো মাঝে মাঝেই অনেক মানুষ হইতেছে। আমাদের ছাত্রলীগের গুন্ডাগুলারে কি আপনারা এতই মগা পাইছেন । তারা দু-একটা চাপাতি আর ভোজালির ক্যারামতি দেখাইলে ভার্সিটি থেইকা দল বাইন্ধা ছেলে-মেয়ে আসে। আর আসার পরে তো মনে করেন আমাগোর আর কিছুই করা লাগে না; হেরাই জোশের ঠেলায় সব করে। আমরা মনে করেন আস্তে চিল্লাইলে তারা জোরে চিল্লায়। আমরা একবার শ্লোগান দিলে সেই শ্লোগান ৫০বার প্রতিধ্বনি্ত হয়। আর তাছাড়া মনে করেন একটা সাইকোলজিকাল ব্যপার স্যপার আছে না!! মনে করেন, একটা ছেলে আরেকটা মেয়ের সামনে জোশের ঠেলায় অনেক কিছুই কইরা ফেলায়। আবার একটা মেয়ে একটা ছেলেরে পাইলে জোশের ঠ্যালায় অনেক কিছুই বইলা ফেলায় । মনে করেন এইডা তাদের জন্য একটা মিলনমেলা। এই মনে করেন কাউরে পছন্দ-টছন্দ হইয়া যায় যদি। তাছাড়া খাবার-দাবার, পায়খানা, নাস্তা সব ফ্রী। এমনকি রাতে ঘষাঘষি কইরা ঘুমানোও যায় কপালে থাকলে। হ্যাঁহ হ্যাঁহ... (হাসি, সাথে একটু একটু করে গিলতেছেন)
(একটুক্ষণ একটানা গিলার পর) মনে করেন, এইডা একটা বউমেলা। বইমেলার পাশেই আরেকটা মেলা। পাশাপাশি দুটি মেলা মন্দ না, কী বলেন? অনেকে তো মনে করেন শুধু এই মেলা দেখতেই এখানে আসে। তাছাড়া সরকারও স্কুল কলেজে নোটিশ দিয়া বাধ্যতামূলক হিসেবে এখানে ছাত্র-ছাত্রী আনাইতেছে। এই ৪২ বছরে কি মানুষকে কম ডোজ দেওয়া হইছে নাকি? এত এত যে ডোজ দেয়া হল সেটার একটা রিএকশন দেখানো লাগবে না? এর লাইগা অনেকে বাচ্চা-পোলাপান নিয়া আইসা পরছে দেশপ্রেম দেখানোর জন্য আর শিখানোর জন্য। সবই ঈশ্বরের লীলাখেলা। ওহ স্যরি! আমি তো আবার ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না... হাহ হাহ।। (বলে অট্টহাসি, হাসি যেন থামেই না, এমন হাসি দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন রিপোর্টার)
শাহিনঃ ইমরান, (একটু ঠেলা দিলেন) ইমরান সাহেব কি ঠিক আছেন?
ইমরানঃ (সাথে সাথে নিজেকে সামলে নিয়ে) হ্যাঁ, ঠিক আছি বৈকি।
শাহিনঃ ইমরান সাহেব, আমরা ডোজটার ব্যপারে আরো কিছু জানতে চাই। I Mean আপনারা গোয়েবলসের নীতি অনুসারে এই মিথ্যা ইতিহাসগুলোকে একশোবার সত্য বলে প্রচার করলেন- এটাই ডোজ?
ইমরানঃ হ্যাঁ এটাই ডোজ, তবে এইটা সাধারণ ডোজ না; সুপার পাওয়ারফুল ডোজ। সাপোজিটোরিজও বলতে পারেন। কারণ জোর করেও অনেকরে এই ডোজ দেয়া হইছে।
শাহিনঃ এই যে আপনারা এমনভাবে গণহারে সুপার পাওয়ারফুল ডোজ দিলেন- এর কারণেই তো অনেকেই এই আন্দোলনে আসছে। তারা যদি এই আন্দোলনকে ধীরে ধীরে অন্যান্য সমস্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিয়ে যায় অর্থাৎ আন্দোলন যদি অন্য খাতে প্রবাহিত হয় তাহলে আপনারা কি করবেন?
ইমরানঃ দেখেন, এই আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হওয়ার কোন সুযোগই নাই। এর মূল কারণ হইলো, এটা কোন আন্দোলনই না। কেননা সরকারের পক্ষে এই আন্দোলন, সরকার এই আন্দোলনকে চালাইতেছে, সব সুযোগ-সুবিধা দিতেছে সরকার। কেউ যদি এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায় বা সীমা অতিক্রম করে তবে সে যে-ই হোক তাকে ডান্ডা মেরে ঠাণ্ডা করে দেয়া হবে। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো আমাদের লার্কি আক্তার। আর আন্দোলন যদি ভিন্নখাতে ঘুরতে যায় তবেই সরকারের সব সুযোগ সুবিধা মানে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হবে আর শুরু হবে পিনিক মারা। আর তাতেই সব আন্দোলন অফ হয়ে যাবে মানে মারা যাবে। তবে বেশি চিন্তা করবেন না; সে সুযোগ নাই। বাংলাদেশের তরুণ সমাজ আর সাধারণ বলদগুলো (উনি ভুলে মানুষের স্থলে এটা বলে ফেলেন, পরে অবশ্য মাফ চান) এত চালাক না, ওদের হাত-পা-চোখ-মুখ সব বান্ধা। ওরা সূর্যের হলুদ আলো ছাড়া আর কোনো আলো দেখতে পারে না, হলুদ কথন ছাড়া কোনো কিছু বলতেও পারে না , আর হলুদ কর্ম ছাড়া কোনো কিছু করতেও পারে না ।
শাহিনঃ খুবই ভালো। স্যার, আরেকটা প্রশ্ন ছিলঃ অনেকেই তো বলছে এসব সরকারেরই সাজানো, যেন সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করা যায়।
ইমরানঃ কথাটা সন্দেহাতীতভাবে সত্য কথা। আরে বললাম না, এদেশের মানুষ আন্ধা রামছাগল। সরকার চাইতেছে এদের সব কিছু লুট কইরা ঘুমের ওষুধ খাওয়াইয়া আবার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত ঘুম পারাইয়া রাখবো । বিডিআর বিদ্রোহ , শেয়ার বাজার লুট , হলমার্ক কেলেঙ্কারি , পদ্মা সেতু , রেলের দুর্নীতি ইত্যাদি তো এই সরকার করছে তো করছে – সবাইরে জানাইয়া করছে ।আর এইগুলো হতে বাঁচার একমাত্র উপায় হইল এই যুদ্ধাপরাধ ইস্যু , কেননা এইটার সাথে আবেগের ব্যাপক সম্পর্ক আছে । তাই সরকার এই বিষয়টা দিয়া শাক দিয়া মাছ ঢাকার চেষ্টা করতেছে , মানে ঘুমের ওষুধ হিসেবে ব্যাবহার করতেছে । তবে ভারতের এইগুলো নিয়ে মাথাব্যাথা নাই । কারণ আওয়ামী লীগ না পারলে ওদের হাতে বিএনপি আছে । এদের যে কারো হাত দিয়া জামায়াতরে ধ্বংস করাই ভারতের টার্গেট । তবে সমস্যা হল বিএনপি আওয়ামী লীগের মত এতোটা মুনাফিক টাইপ না ।
শাহিনঃ মানে স্যার , বিএনপিও আপনাদের হাতে আছে !
ইমরানঃ আছে মানে, বিএনপি হলো স্ট্যান্ড বাই। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ না হলে বিএনপি দ্বারা জামাআত নির্মূল করা হবে। এর জন্যই দেখবেন বিএনপিও সরাসরি জামায়াতকে নির্দোষ বলবে না। কেননা দেখা যাবে কালের চক্রে হয়তো এই বিএনপিকেই এই যুদ্ধাপরাধ ইস্যুর মাধ্যমে জামায়াতকে ধ্বংস করতে হবে। আর যত যাই হোক বিএনপিও তো চায় না জামাত তাদের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠুক।
শাহিনঃ বাহ, তাহলে তো স্যার দেখা যাচ্ছে আপনার ইন্ডিয়ান ‘বস্’রা অনেক বুদ্ধিমান ও দূরদর্শী।
ইমরানঃ (লজ্জ্বা পেয়ে) বস্ বলবেন না, প্রভু বলেন, আমার তো আপাতত অন্য কোন প্রভু নাই, তাই উনারাই আমার প্রভু।
শাহিনঃ স্যার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। স্যার এই যে আপনারা শাহবাগ থেকে জামায়াত শিবির নির্মূলের উস্কানীর পাশাপাশি তাদের সবরকম প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের জন্যও এক প্রকার উস্কানী দিচ্ছেন এই ব্যপারে একটু বলবেন কি?
ইমরানঃ (গিলতে গিলতে) ভাই আপনি আমায় এই অমৃতটা দিয়েছেন (বোতলের দিকে ইঙ্গিত করে) বলে আমি আপনার অনেক টিটকারি সহ্য করছি। এই যে আপনি বললেন আমরা উস্কানী দিচ্ছেন, আসলে একে উস্কানী না বলে উৎসাহ বলাই ভালো। এটাও কিন্তু আমাদের নিজেদের ইচ্ছায় নয়, প্রভুদের ইচ্ছায় করছি। কেননা আপনি দেখবেন জামাত এখনো এত বড় কোন দল না, তারা দেশের ক্ষমতায়ও নেই, এরপরও তারা ব্যাংকিং, বীমা, হসপিটাল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কোচিং সর্বক্ষেত্রে পদচারণা অব্যাহত রেখেছে। অর্থাৎ তারা ইসলাম অনুযায়ী দেশ পরিচালনার আগেই নিজেদের মাঝে একটি যথাসম্ভব ইসলামী সমাজ কাঠামো চালু রেখেছে। তাছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান শুধু তাদের মাঝেই নয়, সাধারণ মানুষের মাঝেও অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে ও দেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে। কেননা, কেন জানি তারা যেসব প্রতিষ্ঠান চালায় সেগুলো খুব দ্রুত উন্নতি করে। এই ধরেন ইসলামী ব্যাংক, এইটা চালু হওয়ার সময় আমরা কত বিরোধিতা করেছিলাম – ধর্মের অযুহাত দিয়েছিলাম, যার কোনটাই টিকে নি। এটি এখন হাজার কোটি টাকা লাভ করে, আর সরকারকেও উন্নয়নের জন্য অনেক টাকা দেয়। আর সবচেয়ে রাগ লাগে মুখে ঘেউ ঘেউ করলেও অনেক আওয়ামী নেতাদেরও নামে বেনামে ইসলামী ব্যাঙ্কে একাউন্ট থাকে । (একটু এদিক ওদিক তাকালেন) আমারও অবশ্য একটা আছে। ( সাথে সাথে উনি অবশ্য বলে দিয়েছেন কাউকে না বলতে, কিন্তু লিখতে মানা করেননি-তাই লিখছি।) এই হল অবস্থা। তো আমাদের উপর অর্ডার এলো এই যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটার উসিলায় এসব প্রতিষ্ঠানেও ধ্বংসজজ্ঞ চালাতে হবে । যেন এতে দেশটাও পিছিয়ে যায় , আবার ঐ জামাতি বদমাশগুলোরও ক্ষতি হয় । আমাদের সফলতাও আসছে , যা শুনলাম এই কয়েক সপ্তাহের ভাংচুরেই ওদের প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছি ( বলে বিজয়ের হাসি) ।
শাহিনঃ আলাদা করে জামায়াত শিবির সম্পর্কে কিছু বলবেন ?
ইমরানঃ আলাদা কইরা আর তেমন কি বলব । এই যে দিন রাত এতো কষ্ট করতেছি সবই তো এই আপদটা দূর করার জন্য । বুঝছেন , জামায়াত শিবিররে যতই সংখ্যায় কম বা দুর্বল মনে করেন ,এরা হল হল ঘাগু পার্টি । এদের জানের মায়া নাই । এই যে কই না , এদের অনেক টাকা , এদের কাছে পেট্রোডলার আসে , এগুল সব ভুয়া কথা । এরা কী করে জানেন, নিয়মিত সবাই চাঁদা দেয় , যে যত বড় নেতা আর ধনী ,তারে তত বেশি চাঁদা দিতে হয় । ঠিক অন্য দলগুলোর উল্টা । জামায়াতের কথা আর কি বলমু , ওইগুলো তো দাড়িওয়ালা বুইড়া । শিবিরের জন্যই মাঝে মাঝে আমার খারাপ লাগে । এই যে শিবির সম্পর্কে এতো খারাপ কথা কই এরপরও ওদের সংখ্যা খালি বাড়ে । কী তরুন তরুন টসটসে পোলাগুলা জীবনটা নষ্ট করে জান্নাতের জন্য , যেটারে জীবনে দেখেই নাই । তোগোর এতো বুদ্ধি-সাহস নিয়া যদি তোরা আমাদের দলে আসতি তাহলে বুঝতি , জীবনটা পুরাই স্বর্গ । টাকা-পয়সা , নারী সবই পাইতি ।
শাহিনঃ স্যার, এবার আপনাদের এই ব্লজ্ঞের-এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে চাই ।আপনাদের সবারই নাকি ইসলাম নিয়ে এলার্জি আছে ?
ইমরানঃ বুচ্ছি …আপনিও আমার দেশ পত্রিকা পড়ছেন ।
শাহিনঃ না স্যার, আমি এসব কর্মকাণ্ড ইন্টারনেট এ অনেক আগে থেকেই লক্ষ্য করেছি । এক মৃত রাজিবকে নিয়ে আমার বেশি আগ্রহ নাই। কথা হচ্ছে, আপনারা যেসব ব্লগাররা শাহবাগে আন্দলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা প্রায় সবাই এরকম ব্লগে ইসলামবিরোধী ও ধর্ম নিয়ে কটূক্তিপুর্ণ লেখা অনেক আগে থেকেই লেখে আসতেছেন ও আপনারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছেন । আর এজন্যই আপনাদের নিয়ে নানা জনে নানা সন্দেহ করছেন । অনেকে বলছেন , আপনারা নাকি ইসলামবিরোধী ব্লজ্ঞেরদের একটি চক্র , যাদের কাজই হল এরকম আঘাত দেয়া , তাছাড়া আপনাদের উদ্দেশ্যও নাকি দুরভিসন্ধিমূলক ? এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন ?
ইমরানঃ প্রশ্ন তো করলেন একটা ঝাকানাকা । তা…. সত্যি বলমু নাকি মিথ্যা বলমু ?
শাহিনঃ ভাই আমি সত্যান্বেষী-সত্যসন্ধানী মানুষ । সত্যটাই জানতে চাই ।
ইমরানঃ এই যে আপনি বললেন, আমরা একটি ইসলামবিরোধী ব্লগারচক্র –কথাটা সত্যি । প্রভুদের নির্দেশেই এই কয়েক মাস আগে আমরা এক হয়ে এই গ্রুপটা তৈরি করি । আমরা এসব কাজের জন্য ব্যাপক অংকের টাকা পাই । আমাদের টার্গেট হল এই দেশের মুসলমানদের ইমান-আকিদায় বিরুপ প্রভাব ফেলা, সেই সাথে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করা যেন এই সুযোগে আমাদের প্রভুরা তাদের কার্য সহজেই সমাধান করতে পারে। এগুলো নিয়ে আরো কাহিনী থাকলেও এতো বিস্তারিত বলার সময় নাই । আরেকটা ব্যপার হলো ইসলাম। এই যে তাবলীগ-মাবলীগ আরো কিছু সংগঠন আছে যারা ইসলামের দাওয়াত দেয় শুধু, ইসলাম প্রতিষ্ঠার ব্যপারে তাদের খুব একটা তৎপরতা নেই, আমাদেরো তাদের ব্যপারে খুব একটা আগ্রহ নেই। কিন্তু দেখেন জামাআত ইসলামী মৌলবাদীগুলো আমাদের হটিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্যই তাদের নিয়ে আমাদের এত চিন্তা-মাথাব্যথা। তারা আবার খুবই সুকৌশলে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী আগায় যা খুবই ভয়ঙ্কর। আর সত্যি কথা বলতে কি, ইসলামও কিন্তু এরকমই। অর্থাৎ ইসলামের শিক্ষা হলো ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই কারণেই সঠিক ইসলাম এবং জামায়াতকে নিয়ে আমাদের এরকম এলারজি রয়েছে।
শাহিনঃ কেন, তাবলীগও তো আপনাদের জন্য হুমকি হতে পারে।
ইমরানঃ জ্বী না। কেননা তাবলীগের নীতি হল তরল পদার্থের মত আর জামাত হল কঠিন পদার্থ। যেমনঃ- আপনি পানি বা তরল পদার্থকে যেমন পাত্রে রাখবেন সেটি তেমন আকার ধারণ করবে। তাবলীগরেও আপনি যেমন বলবেন, যেমন রাখবেন- শুনতে তারা বাধ্য, অন্যথা তারা ফিনিস হয়ে যাবে। আর তাদের ফিনিস করা সময়ের ব্যপার।
কিন্তু জামাতিরা কঠিন পদার্থ। যেই পাত্রে রাখবেন, সে সেইরকম আকার ধারণ করবে না। বরং তার নিজস্ব আকার-আকৃতি আছে, সেটাই বজায় থাকবে। অর্থাৎ ইসলামেই তারা অটুট থাকবে।
শাহিনঃ বহত খুব, বহত খুব। আপনাদের আন্দোলনের জন্য আমার শুভকামনা।
ইমরানঃ ইহাকে আন্দোলন বলিয়া আর লজ্জ্বা দিবেন না। হাহ হাহ হাহ............... (বিকট হাসি)
(তখন পর্যন্ত খানিকটা বিরতি দিয়ে দিয়ে তিনি ক্রমাগত মাল গিলছেন)
শাহিনঃ আপনাদের আন্দোলন কবে নাগাদ চলবে সে সম্পর্কে কি কিছু জানাতে পারবেন?
ইমরানঃ নারে ভাই। উপর থেকে অবস্থা বুঝে অর্ডার আসবে। আগেই এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
শাহিনঃ ধন্যবাদ ইমরান ভাই। আপনার অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে অনেক মূল্যবান তথ্য জানলাম।
ইমরানঃ আপনারেও ধন্যবাদ। আশা করি মাঝে মাঝেই আপনি এসব অমৃত নিয়ে হাজির হবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
শাহিনঃ নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার।
এই বলিয়া দ্রুত পদে সেখান থেকে প্রস্থান করিলেন ছদ্মবেশী শিবির ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (SIA) এর প্রতিভাবান তরুণ অফিসার শাহিন মালিক। জীবন বাজি রেখে বুদ্ধিমত্তার সাথে এসব খবর বের করে আনলেন তিনি। এ কাজে খাঁটি শ্যাম্পেনের সাথে ব্যবহার করেছিলেন SIA এর আবিষ্কৃত হাসিস (এক ধরণের নেশা জাতীয় বস্তু) এবং লিটল ফ্রুটিকা। ফলে ছোট-বড় সব সত্যিগুলাই প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে।
*পাঠকদের উপর যথার্থ আস্থা রেখেই আমার এই লেখাটি। আকারে ইঙ্গিতে, অপ্রকাশিত সত্য ও তথ্য এবং প্রমাণের ভিত্তিতে আর অনুমানে কিছু লুকায়িত ও গোপন সত্য উন্মোচন করার চেষ্টা করেছি। সেই সাথে কিছু মেসেজ দেয়ার ও কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি। এতে বিশ্বাস করা বা না করা পাঠকের উপর নির্ভরশীল। তবে বিশ্বাস করলে ও সত্য অনুধাবন করতে পারলে আপনার বিশ্বস্ত মানুষজনকে যথাসম্ভব জানিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন বলে আশা করি।
লেখক -
ওবামা বিন লাদেন
বিষয়: বিবিধ
২০৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন