টি টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপের ইন্ডিয়ান কনসার্ট ইস্যুতে আমার দৃষ্টিতে সেরা দুটি মন্তব্য ; হায় শেখ হাছিনা যদি ইহা দেখতে পেত.... !
লিখেছেন লিখেছেন বিডি রকার ১৬ মার্চ, ২০১৪, ০৮:১৩:৪১ রাত
ইন্ডিয়ার বাংলা প্রদেশে এমন কনসার্ট হতে দেখে অনেকে অবাক হলেও আমি অবাক হইনি । বরং দুঃখের হাসি মুখে নিয়ে সকলের মতামত শুনেছি এই কদিন ।
আমি এই বিষয়ে হয়তো পরে লিখব , কিন্তু তার আগে দুজন মর্মাহত ব্যক্তির মতামত( যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে প্রাপ্ত ) আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম ....
#প্রথমেই অনিক নামে একজন ভাইয়ের কমেন্টঃ
Shafquat Rabbee Anik-
'' এই মুহুর্তে ফেইসবুকে অনেক সমালোচনা হচ্ছে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের উদবোধনী অনুষ্ঠানে হিন্দির কাছে বাংলার হেরে যাওয়া নিয়ে। তীব্র তর্ক হচ্ছে হিন্দি শিল্পীদের কাছে বাঙালি শিল্পীদের বেইল পাওয়া-না-পাওয়া নিয়ে।
আমি একটু ভিন্ন এঙ্গেল থেকে পুরো ঘটনাটি দেখেছি। দেশের বর্তমান শাসক গোষ্ঠির সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। দেশে চেতনা ব্যাবসার আড়ালে সত্যিকার অর্থে কোন বহিঃশক্তির উদ্দেশ্য হাসিলের কাজ চলছে, তা নিয়েও নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু আজকের অবস্থার পেছনে আমাদের দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের ভুমিকা কি ছিল তা নিয়ে অনেক কিছুই বলার আছে।
একটি রাজনৈতিক শক্তি তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে কারও কাছে নির্লজ্জ আত্ম-সমর্পন করতেই পারে। এটাকে তাদের বিজনেস পলিসিও বলা যেতে পারে। কিন্তু দেশের সিংহভাগ বাংলা প্রেমী সংস্কৃতিকর্মী যদি সেই পরাশ্রয়ী রাজনৈতিক শক্তির পিছে ঘুরঘুর করে নিজেরাই নিজেদের ভাত মারেন, তাহলে পাবলিকের কি?
পাবলিকের কাজ হলো অনুষ্ঠানে গিয়ে তামাশা দেখা। সাধারণ পাবলিকের কিছু যায় আসে না তারা লোকাল তামাশা দেখল নাকি ফরেইন তামশা দেখল। তামাশাটা জমলেই হলো।
কিন্তু দেশীয় শিল্পীদের জন্যে উপরের হিসেবটা এতো সহজ না। তাদের পারফরমেন্স দেখানোর সুযোগ যদি তারা নিজেরাই সংকুচিত হতে দেন, হিন্দি-ওয়ালারা এসে কিন্তু আমাদের আমজনতাকে বলে দিবে না যে, “বাপু তোমাদের দেশীয় প্রযোজনার তামাশাও তোমাদের একটু আধটূ দেখা উচিত”। দেশের শিল্পীদেরকেই নিজেদের স্বার্থ দেখতে হবে। দরকার হলে লড়াইয়ে নামতে হবে।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বাংলাদেশের মিডিয়া কর্মিদের একটি বড় অংশ ভারত ও হিন্দি তোষণে নিবেদিত প্রান। সুতরাং, এই একই মিডিয়া কর্মিরা যখন ভারতের হাতে নাকাল হন, উচ্ছিষ্টের মতো ব্যাবহার পান, অনুষ্ঠানের সবচাইতে উপক্ষিত স্লটে পারফর্ম করার সুযোগ পান, অল্প সময়ের ভাগ-বাটয়ারা নিয়ে নিজেরা নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি করেন, তখন তাদের প্রতি খুব বেশি সমবেদনা জানানোর প্রয়োজন কি পাবলিকের আছে?
নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে আমাদের দেশে হিন্দি আগ্রাসনে বিরক্ত মিডিয়া কর্মি অনেকেই আছেন। কিন্তু তাদের প্রায় সবাই একটা বড় রোগে ভুগেন। এই রোগের নাম হলো সাহসের অভাবজনিত রোগ। আমাদের মিডিয়া কর্মিদের মধ্যে যারা চেতনার ব্যাবসা কিংবা ভারতের দালালি করেন না, তারাও নিজেদেরকে সুশীল প্রমানে খুব বেশি ব্যাস্ত থাকেন। “আই হেইট পলিটিক্স” মার্কা কথা বার্তা বলেন আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন। ভাগ্যের পরিহাসে, গা এড়িয়ে চলতে চলতে এই মিডিয়া কর্মিরা এখন তাদের আম ও ছালা উভয়ই হারাতে বসেছেন।
দেশের নায়ক, গায়ক, সেলিব্রেটিদের বলছি। আর কতো ভাবে অপমানিত হলে বুঝবেন কেউ আপনাদের পাছায় লাত্থি দিয়েই যাচ্ছে? আর কতোবার নিজের দেশের মাটিতে, হিন্দি সিঙ্গিং ছাগলের সাথে একই স্টেজে উঠবেন?
সময় থাকতে থাকতে সাহস করে কথা বলা শুরু করুন। প্রতিবাদ করুন।
প্রতিবাদ হিসেবে হিন্দি সিঙ্গিং ছাগলদের সাথে স্টেজে উঠা বাদ দিন। দেশের সব শিল্পিরা যদি একটা সমন্বিত ভুমিকা পালন করেন, স্টেজ বর্জন করেন, তাহলে নির্লজ্জ সরকারকেও তাবেদারি করতে অনেক বেগ পেতে হবে।
দেশপ্রেম-ট্রেম গুল্লি মারেন। নিজেদের শ্রেণী স্বার্থ রক্ষার তাগিদেই চেতনার ব্যাবসার আড়ালে নির্লজ্জ হিন্দি তোষোনের যে মচ্ছব দেশে বসেছে তা রুখে দিন।''
এবার শুহান নামে আরেক ভাইয়ের কমেন্টঃ
Jajabor Shuhan-
'' গত ডিসেম্বরে যখন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বানানোর অপরাধে দর্জি দের গ্রেফতার করা হচ্ছিলো তখন রাগের বশে বলছিলাম এই দেশের মাটিতে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের “লাল-সবুজের” বদলে দাদাদের “তেরঙ্গা” উড়বে । অনেকেই সেদিন আমাদের জামাত-শিবির বলে গালি দিছিলেন!
এখন বুকে হাত দিয়া বলেনতো আজকে ঢাকা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম কে কোন ভারতের কোন প্রাদেশিক রাজধানীর স্টেডিয়াম ছাড়া অন্য কিছু মনে হইছে ?
যেভাবে আমাদের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি , ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি , সুন্দর বন , তিস্তা দাদাদের হাতে চলে যাচ্ছে ঠিক সেভাবেই আমাদের জাতীয় পতাকার বদলে দাদাদের তেরঙ্গাও একদিন এই বাংলার মাটিতে উড়বে ।কারণটা কি জানেন? আজকে যে লোকগুলা নিজেদের লিজেন্ডদের অপমান দেখার পর ও এতোক্ষণ ভরে স্টেডিয়ামে বসে অনুষ্ঠান দেখলো তারাই ২৬ তারিখ সবচেয়ে বেশী কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাইবার রেকর্ড ভাংতে ছুটবে ।
করপোরেট দেশপ্রেম দিয়া শো অফ করা যায় স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না
(গালি দিবেন?দেন?আমারে গালি দিয়া আপনার চেতনা রক্ষা পাইলে সমস্যা নাই । তাও কিছু একটা তো বাচবে) ''
**
আমি আর কি বলব, বরং আপনারা পারলে আরও কিছু যোগ করুন ...
বিষয়: রাজনীতি
১৭৭৭ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মিনার রশিদের স্টিকি পোস্টে অনেক মেধাবী ভায়েরা মন্তব্য করেছেন আমি ওখান তেকে একটা সেরা মন্তব্য আপনার জন্য তুলে দিলাম পড়ে দেখুন ।
সাদাচোখে লিখেছেন : কৃত্রিম জাতীয়তাবোধকে আকড়ে ধরলে - জাতি এমন করেই শকড্ হবে, হা পিত্যেশ করতে বাধ্য হবে এবং হারানোর ভয়ে চমকে উঠবে।
মানুষ হিসাবে আমাদের দূর্ভাগ্য এই যে, আমরা ডিভাইন জাতীয়তাবোধ বা জাতির পরিচয়কে (মুসলিম) গৌন করে - শঠ ও প্রতারকদের দেওয়া অলীক জাতীয়তাবোধকে আকড়ে ধরতে গিয়েছি (৪৭ পূর্ব ভারত, ৪৭ পরে পাকিস্থান আর ৭১ পরে বাংলাদেশ) - এবং বার বার প্রতারিত হয়েছি, বঞ্চিত হয়েছি, রক্ত জরিয়েছি, লাশ হয়েছি।
আজকের এই বিতর্ক ও আলোচনা - আমাদের কৃত্রিম আইডেনটিটির কারনেই যৌক্তিক - যা আমাদের কে কষ্ট দিচ্ছে।
অথচ আমরা যদি আমাদের সত্যিকার জাতি স্বত্তার পারসপেকটিভ হতে এই চিন্তা ও আলোচনা করতে পারতাম - তবে মিথ্যার চাদর সরতে শুরু করতো এবং সত্যের জন্য সংগ্রাম ও ত্যাগ করা সহজ হতো - জাতিকে প্রতারিত হয়েছে এমন বোধ হতে মুক্তি দেওয়া যেত।"
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
১৯৯০ এর পর হতে মধ্যে এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশ সমূহও সোভেয়েত রাশিয়ার আয়ত্বে থাকতে চাইতো।
আর আপনি পরাশক্তির আয়ত্বে থাকতে চাইলে ভারত কেন - সরাসরি ভারতের বাবা মায়ের আয়ত্বে থাকার চেষ্টা করাই কি উত্তম নয়?
দয়া করে আর যাই করুন - নিজের বিবেকবুদ্ধির সাথে প্রতারনা করলেও সাধারন মানুষের সাথে ওটা করবেন না, ফ্যাক্টস ও ফিগারকে বিকৃত করবেন না।
আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আইয়ুব বাচ্চুরা হাসিনাদের প্রেতাত্মা। কাজে আজ যা হল এটি তাদের হাতের কামাই। জাতির জন্য দূর্ভাগ্য যে, এসব মেরুদন্হীন লোকগুলো আমাদের গায়ক যারা অন্য দেশের শিল্পিদের কাছে শিশুসম। আবার অভিমান করে বেটা! হায়রে দেশে। হায়রে শিল্পী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন