নিরাপত্তাহীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা!!!!

লিখেছেন লিখেছেন ইছমাইল ২৩ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:৪০:০২ দুপুর

পাহাড় ঘেরা সুনিবিড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এবং জনজীবনের কোলাহল মুক্ত এক অনাবিল মনোরম পরিবেশে অবস্হিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের খ্যতনামা ও শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় সমুহের মধ্যে এটি অন্যতম। বানিজ্যক রাজধানী চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার উত্তরে হাটহাজারী থানার ফতেপুর ইউনিয়নের জোবরা গ্রামে পাহাড়ি ও সমতল ভূমির উপর এর অবস্থান।

একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু হলে ও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আবাসিক হল র‌য়েছে মাত্র ৯ টি। আবাসিক সংকটের কারনে চবির ৮০ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী

চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে। আর এ আসা যাওয়ায় সবছেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যাতায়ত ও যানবাহন সমস্যা। শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসতে হয় শাটল ট্রেন বা হাটহাজারি সড়ক দিয়ে বাসে করে। হাটহাজারি সড়ক দিয়ে বেশ কয়েক রুটের বাস চলাচল করে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তরী নামক মেক্সী সার্ভিস চট্টগ্রাম শহরের নিউ মার্কেটে আসে। আর হাটহাজারি এসড়কের পাশে রয়েছে বেশ কিছু বড় বড় হাট বাজার। যেমন আমান বাজার, চৌধরীর হাট , মধন হাট। এসব হাট বাজার মানে হচ্ছে যানজট এর কারখানা, আর পথে পথে লোক উঠা নামা করে,যার ফলে এর শিকার হয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস তো বটে পরীক্ষা পর্যন্ত মিসকরে। আর এসব প্রতিবাদ করলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর উপর গাড়ীর সুপারভাইজার সহ এক শ্রেনীর সুবিধাভোগী কিছু যাত্রীর নির্যাতন। তেমনি একটি ঘটনার শিকার আমি খোদ নিজে, ২০০৩ সালের ৩০শে জুলাই চট্টগ্রাম শহরের থেকে ছেড়ে আসা মেক্সীতে ভাড়া নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে স্হানীয় দুই তিনজন লোক অক্সিজেন নেমে যায়। আর মেক্সী মদন হাটে এলে জংগলপট্রীর ক্যম্পাস খ্যাত সেই এলাকার ১০/১২ জংলী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের এক বড় ভাই সহ আমাদের তিনজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তাদের বর্বোরচিত হামলায় আমরা মারাত্নক ভাবে আহত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে স্হানীয় চেয়ারম্যনের সহায়তায় আমারা সেদিন কোনোভাবে মুক্তি পেলে ও মুক্ত হতেপারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো ছাত্র-ছাত্রী, সামান্য ভাড়ার জন্য মেক্সীর ষ্টাপরা ছাত্রদের হাসফাতাল পর্যন্ত পাঠিয়েছে। আর এ কাজের সহযোগী ছিলেন তখনকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। মেক্সী প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদমিনার থেকে ছাড়লে ও পরবর্তীতে দালাল ভিসির সহায়তায় মেক্সী সার্ভিস বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেন ষ্টেশনের পাশ্বে তাদের অবস্হান করে নেয়ে। যার ফলে তারা যে কোন সময় সাধারন ছাত্রদের উপর ঝাপিয়ে পড়ত। আর সুযোগ ফেলে রিক্সাওয়ালারা ও থেমে থাকেনা।

শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার অপর বাহন হচ্ছে শাটল ট্রেন। ছাত্র-ছাত্রীরা এর নাম দিয়েছেন দূর্ভোগ ট্রেন। জোর যার মুল্লুক তার নীতিতে ট্রেনের বগিগুলো মুলত বগিবিত্তক গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে থাকে। যার ফলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকটা জিম্মী থাকেন বগিগ্রুপ গুলোর হাতে। প্রতিবাদ করার সাহস রাখেন না কেউ জান চলে যাওয়ার ভয়ে। বগির বড় ভাইদের কর্তৃত্ব মুখ বুঝে সহ্য করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের।

বগিগুলো এমন যে বর্ষায় দরজা জানালার পাশাপাশি ট্রেনের চালের ফুটো দিয়ে ও পানি পড়ে। আর ট্রেনের লাইনের অবস্হা এতই নাজুক যে কয়েক বছর আগে চবির রেল লাইন পর্যব্যক্ষন করে এক বিদেশী পর্যব্যক্ষক বলেছিলেন এর প্রতিটি স্লিপারে হয়তো একজন করে ফেরেশতা আছেন, যার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এই ট্রেনে চড়ে জীবিত পিরতে পারছে। দূঘটনার ঝুকি নিয়ে ট্রেন চলছে প্রতিদিন। আর ক্ষেত্রবিশেষ মনে হয় ট্রেনের বগি যেন ভ্রাম্যমান মানুষের বেডরুম কিছেন ও টয়লেট।

আর ক্যম্পাস থেকে ছেড়ে আসা রাত্রের সর্বশেষ ট্রেনে ছিনতাইকারীদের আতঙ্কে জান যায় যায়। কারো গলার মালা, কারো হাতের বালা, কানের দুল, নাকের ফুল হাতের ঘড়ি, টাকাকড়ি, মোবাইল সেট বিসর্জন দিয়ে রিক্ত হস্তে শহরে ফিরেন।

মেক্সীর নির্যাতন বা ট্রেনের অসহনীয় নির্যাতনে রক্ষাপেলে ও ছাত্ররাজনীতির বলির শিকার হচ্ছেন অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী। অথচ নীরব দেশের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসন। দেখেও যেন অনেক কিছু দেখেননা। দেখেবেন বা কিভাবে, তাদের সন্তানরাতো আর জংগল পট্রির এই ক্যম্পাসে পড়া লিখা করেন না!

শিক্ষার্জনের পাশাপাশি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের নৈতিক অধিকার নিয়ে এই ক্যম্পাসে ঘুরে বেড়াক, আর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্নের ক্যম্পাস অনেক দুর এগিয়ে যাক, প্রিয় ক্যম্পাসের সাফল্য কামনায়...

ইছমাইল, সাবেক শিক্ষার্থী,চবি.

দুবাই,সংযুক্ত আরব আমিরাত.

(লিখাটা ইতিপৃর্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এ প্রকাশিত হয়েছিলো, প্রকাশিত হওয়ার দুদিন পরে মুছে দেয়। এছাড়া আরো একটি অনলাইন নিউজ পেপারে প্রকাশিত হওয়ার দুদিন পরে মুছে দেয়, কোন কারনে এমন হচ্ছে জানিনা)

বিষয়: বিবিধ

১১৬৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

212199
২৩ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:২২
হতভাগা লিখেছেন : আপনাদের বাস সার্ভিস নেই , ঢাবির মত বড় বড় বাস ? ওদের কিছু কিছু বাস তো নারায়ন গন্জ , গাজীপুরও যায় । এরকম কিছু নেই ?
২৩ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:০১
160607
ইছমাইল লিখেছেন : বাস সার্ভিস প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তা ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাস সার্ভিসের সুযোগ গ্রহন করে থাকে।
212219
২৩ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪৮
নীল জোছনা লিখেছেন : এতো দেখি ভয়ানক খবর দিলেন। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে মেধা বিকশিত হবে কিভাবে?
২৩ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:০৩
160609
ইছমাইল লিখেছেন : শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে সন্ত্রাস করা যাবে অনায়াসে।Crying Crying Crying
212264
২৩ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:০৪
ফেরারী মন লিখেছেন : ভালো কিছুর জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেই তো পারে। এই দেশে আন্দোলন ছাড়া কোন জিনিসটা অর্জিত হয়েছে বলতে পারবেন?
২৩ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:০৭
160612
ইছমাইল লিখেছেন : সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেই তার ফল মাইর খাওয়া ছাড়া আর কি? তারা তো আর রাজনীতি করেনা
212430
২৪ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চট্টগ্রাম কেন দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় তেই এই সমস্যা আছে। আমার মনে হয় জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে অনার্স কোর্সগুলি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিনে বিভিন্ন কলেজে স্থানান্তর করা দরকার। সেক্ষেত্রে আবাসন সমস্যার সমাধান এবং গবেষনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আরো কাজ করার সুযোগ পাবে।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:০৭
160869
ইছমাইল লিখেছেন : আবাসন সমস্যার সমাধান হবে বলে আমার মনে হয় না। কারন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে অনেক কলেজের হোস্টেল আছে নামে মাত্র কাজে হোস্টেল গুলো বন্দ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File