বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিতর্ক ও তৎপ্রসঙ্গে
লিখেছেন লিখেছেন কামরুল আলম ০৭ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৫৪:৩০ দুপুর
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দেশ স্বাধীন হয়েছে। সরকার গঠিত হয়েছে ১০ এপ্রিল। প্রায় ২ সপ্তাহ দেশের কোন প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। বিষয়টি অনেক দেরিতে হলেও ধরা পড়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। তাই তারা ঘোষণা করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই ওই সময় দেশের ‘রাষ্ট্রপতি’ ছিলেন।
৭৫ পরবর্তী জিয়াউর রহমানের শাসনামলে এ বিষয়টি নিয়ে কোন চিন্তা করেননি তারা। পরবর্তীতে এরশাদের শাসনামলেও বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। ৯১ সালে বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও এ বিষয়ে কোন কথা বলেনি কেউ। ২০০১ সালে দুই তৃতীয়াংশ ক্ষমতা পেয়েও আলোচনায় আনা হয়নি এ বিষয়টি। সংবিধান এবং ইতিহাসে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। ২৬শে মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত কে দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এটা এখন এক হাস্যকর আলোচনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আওয়ামীলীগের অতি উৎসাহী কেউ কেউ জিয়াউর রহমানকে প্রায় সময় পাকিস্তানের দালাল বলার চেষ্টা করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। জিয়াউর রহমান ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে আমরা জেনেছি তাতে কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি রণাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। যার দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হলো, যিনি নিজে মুক্তি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলেন তাকে আর যাই হোক ‘পাকিস্তানের দালাল’ বা ‘মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না’ বলার কোন সুযোগ নেই। যার যতটুকু প্রাপ্য ততটুকু সম্মান ও মর্যাদা তাঁকে দিতেই হবে।
ইতিহাসের পাতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘মুক্তিযুদ্ধের মহান নায়ক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানির কথা। বইয়ের পাতায় ‘মুক্তিযুদ্ধের মহান নায়ক’ হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম পাঠ করে নতুন প্রজন্মের অনেকেই ধারনা করে বসে বঙ্গবন্ধু মনে হয় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং তিনিই মনে হয় যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ছিলেন। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা হলো ২৫শে মার্চের কালো রাত্রে পাকিস্তানি সৈনিকদের হাতে বন্দী হয়ে তিনি চলে যান পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি বঙ্গবন্ধু। এখন যদি এ ঘটনাকে উল্লেখ করে কেউ বলে বসে ‘শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধা ছিলেননা’ তাহলেও নিশ্চয়ই সেটা মানানসই হবে না কোনক্রমেই।
বিষয়: রাজনীতি
১১১২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার পর্যবেক্ষন শেখ মুজিব যুদ্ধ চান নি? তিনি চেয়ে ছিলেন রক্তপাতহীন বিজয়। তাই আপোষ রফার মাধ্যমে স্বায়ত্বশাসন পরবর্তীতে বিনা যুদ্ধে বাংলা জয়। কিন্ত ভারতীয় দালাল ও RAW এর কুটকোশলে মুক্তিযুদ্ধ হয় যার সুবিধা এখন ভারত নিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় লুটপাট করেছে জোরপূর্বক এখন করছে তাবেদার সরকারের মাধ্যমে। সার্বভোমত্ব বিপন্ন। সার্বভোমত্বের প্রশ্নে জামায়াত ও বংগবন্ধু পাকিস্তানের অখন্ডতার ব্যাপারে সহমত ছিলেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন