ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রতারনার ডিজিটাল কৌশল তাই সাবধান !
লিখেছেন লিখেছেন ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন ১৬ জুন, ২০১৫, ০১:০৮:১৪ রাত
ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা তথ্যপ্রযুক্তির নতুন নতুন স্বপ্ন দেখছি তাই বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ সময়ের সাথে পাল্লাদিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন দিক । প্রতি মুহুর্তেই বিজ্ঞানের অবদানে ডালপাল মেলছে তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন দিক যা সত্যি ই আমাদের গর্বের বিষয় । আর এই সাথে তথ্যপ্রযুক্তিকে অপব্যবহার করে প্রতারক চক্র ও সক্রিয় রয়েছে প্রতারনায় । আজ আমি এমনি একটি প্রতারনার কথা সবাইকে অবগত করবো যার দ্বারা ভবিষ্যতে যে কেউ এধরনের প্রতারনার হাত থেকে রক্ষা পায় । তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে আমি ও তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমার ব্যবসাকে প্রসাবের চেষ্টা করছি আমি ব্যক্তিগত ভাবে একজন শাড়ীর ব্যবসায়ী শো রুমের পাশাপাশি ফেইসবুককে কাজে লাগিয়ে ফেইসবুকের ফেন পাইজের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছি । আজ (১৫/০৬/২০১৫) দুপুর ১:৫০ আমার মোবাইল ফোনে ০১৮৪৮০৫৪৩১৯ নাম্বার থেকে একটি ফোন আসে ও পাশ থেকে একজন ভদ্রবেশী চিটার পুরুষ সালাম দিয়ে বলেন এটা কি অনলাইন শাড়ী মেলা স্যার আপনার পাইজের একটা শাড়ী আমার স্ত্রী পছন্দ করেছেন তো আমি কিভাবে অর্ডার করতে পারি । ভদ্রবেশী চিটার নিজেকে কুমিল্লা সেনানিবাসের একজন মেজর হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয় । তখন তার কাছে আমি অর্ডার কনফার্মের প্রথম থাপ স্বরুপ প্রোডাক্টের কোড নাম্বার জানতে চাই উনি তখন প্রোডাক্টের কোড নাম্বার বলেন সেই সাথে ঐ প্রোডাক্টের মূল্য ৬৯৫০ টাকা বলে কিছু ডিসকাউন্ট দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমাদের প্রোডাক্টে সংবাদ পত্র কর্মীছাড়া আর কাউকে ডিসকাউন্ট দেয়া হয়না বলে জানালে উনি আমাকে আগামী কালকের ( ১৬/০৬/২০১৫) এর মধ্যে কুমিল্লা সেনানি বাসে পৌছানো যাবে কিনা সেটা জানতে চায় কার তার স্ত্রীর একটা অনুষ্ঠান শুক্রবার তার জন্যই এই শাড়ীটার অর্ডার করা তখন আমি তাকে ১৭/০৬/২০১৫ তারিখে ডেলিভারির কথা নিশ্চিত করলে উনি তাতে রাজি হন কারণ আমরা ক্রেতাদের সন্তুষ্টির জন্য ঢাকাতে চব্বিশ ঘন্টা ও সমগ্র বাংলাদেশে আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ক্রেতারদের হাতে তাদের অর্ডার করা পন্য তুলে দিতে বদ্ধ পরিকর বলে তাকে নিশ্চিত করি । তখন ঐ চিটার আমাদের পেমেন্টের ব্যপারে জনাতে চায় । আমরা যেহেতু ঢাকার বাহিয়ে এস এ পরিবহনের মাধ্যমে কন্ডিশন পেমেন্টর মাধ্যমে পন্য পাঠাই তাই আমি তাকে বলি যে সে যেন এস এ পরিবহনের মাধ্যমে ই কন্ডিশনে টাকা প্রদান করে শাড়ীটা গ্রহন করে । তখন ঐ চিটার বলে ভাই আমি আগামি কাল কুমিল্লার বাহিরে অফিসের জরুরী কাজে চলে যাব তাই আমি অগ্রমি বাবদ আপনাকে ৩১৫০ টাকা পাঠেতে চাই আপনার কি কোন বিকাশ এ্যকাউন্ট আছে ? আমি যেহেতু অনলাইনে ব্যবসা করি তাই আমার বিকাশ এ্যকাউন্ট থাকাটা স্বাভাবিক এবং উনি আমাকে যে নাম্বারে ফোন দিয়েছে ঐটাই আমার বিকাশ নাম্বার তা আমি উনাকে জানিয়ে দেই । এর ঠিক মিনিট তিনেক পরে উনি আমাকে আবার ফোন দেয় এবং বলে যে ভাই আপনি যেই নাম্বার দিয়েছেন ওটা ইনভেলিট বলছে আমি তখন তাকে বলে যে না ওটাই আমার বিকাশ নাম্বার তখন বলে যে আমি যেই এজেন্টের কাছে এসেছি তার সাথে একটু কথা বলেন তখন অন্য আরেক জনের সাথে কথা বলে , বলে দেই যে না এটা আমার সঠিক বিকাশ নাম্বার তখন প্রথম চিটার আমাকে বলে যে আমি অন্য এ্যজেন্ট থেকে চেষ্টা করছি । এর মিনিট দুয়েক পরে আমার মোবাইলে একটা ম্যাসেজ( ০১৮১৩২২০২০৯ নাম্বার থেকে ) আসে কিন্তু আমার শো-রুমের ক্রেতা থাকার জন্য আর ম্যসেজ চেক করা সম্ভব হয়নি তখন ই ঐ চিটার আমাকে ফোন করে বলে ভাই আমি আপনাকে ৩১৫০ টাকা বিকাশের মাধমে পাঠিয়ে দিয়েছি আপনি বোধহয় পেয়ে গেছেন তাই ভাল ভাবে চেক করে শাড়ীটা পাঠিয়ে দিবেন আমি ক্রতের ভিরের কারণে তার সাথে শুধু ওকে বলেই ফোন রাখে দেই । ঠিক তার মিনিট খানেক পরে আমার ফোনে একটা ফোন আসে ( ০১৮৭২১৫১৪৪৪ নাম্বার থেকে ) ভাই আমি কুমিল্লার একজন বিকাশ এ্যাজেন্ট এক লোক এসে আমাকে আপনার নাম্বারে ৩১৫০ টাকা বিকাশ করতে বলেছেন কিন্তু আমি ভুলে ৬১৫০ টাকা আপনার নাম্বারে পাঠিয়েছি ভাই আপনিতো জানেন যে আমরা বিকাশ করে মাত্র হাজারে চার টাকা পাই তাই ভাই আমি গরীব মানুষ আপনি যদি দয়া করে আমার বাকি তিন হাজার টাকা ফেরৎ পাঠান তা হলে আমার খুব উপকার হবে । তখন আমি ঐ ম্যাসেজ টা চেক করে দেখি যে ৬১৫০ টাকার একটা ম্যসেজ এসেছে কিন্তু ভিরের কারনে কোথাথেকে এসেছে অর্থাৎ কোন নাম্বার থেকে এসেছে সেটা আর খেয়াল করা হয় নি । তখন আমি প্রথম চিটার কে ফোন করি যে ভাই আপনি যেখান থেকে বিকাশ করেছেন ঐ লোক সম্ভবত তিন হাজার টাকা বেশি পাঠিয়ে ছে তাই আপনি অনুগ্রহ করে তাকে আরো তিন হাজার টাকা দিয়েদিবেন আর আমি বাকি আটশত টাকা এস এ পরিবহনে কন্ডিশন করে দিব তখন উনি আমাকে বলে যে ভাই আমি তো দুরে চলে আসছি আর এই মুহুর্তে আমার কাছে অত টাকা ও নেই বলে ফোন রেখে দেয় । এর সাথে সাথে আবার বিকাশের এ্যাজেন্ট বেশে চিটার আমাকে ফোন করে যে ভাই আমি গরীব মানুষ কি করলেন আর যে লোক টাকা পাঠিয়েছে আমি তো টাকে চিনি না ভাই আপনি কিছু একটা করেন না হলে আমার ব্যবসার অনেক ক্ষতি হবে আমার ও তো স্ত্রী পুত্র আছে বলে সে আমাকে ইমোশনালি দূর্বল করেফেলেছে তখন আমি তাকে শান্ত করি বলে আপনি কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন আমি পাঠাচ্ছি বলে ফোন টা রেখে দেই । আবারও বিকাশের এ্যাজেন্ট বেশে চিটার আমাকে ফোন করে এবং বলে ভাই আমি আপনাকে আমার পারছোনাল বিকাশ নাম্বার ( ০১৭৮৪৪৩৩৩৯৭ ) টা দিচ্ছি আপনি দয়া করে ঐ নাম্বারে টাকাটা পাঠান । তখন আমি টাকা পাঠানোর জন্য বিকাশ নাম্বারে ডায়াল করি এবং ৩০০০ টাকা ০১৭৮৪৪৩৩৩৯৭ নাম্বারে পাঠেতে চেষ্টা করি কিন্তু আমার বিকাশ এ্যকাউন্টে ঐ পরিমান টাকা না থাকায় আমার কাছে ম্যাসেজ আসে যে আপনার বিকাশ এ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই আর এই ম্যাসেজ পাওয়ার পরই আমার ভুল কাটে যে আমি তো কোন প্রতারনার শিকার হচ্ছি এবং সাথে সাথে আমার বিকাশ এ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করি এবং দেখি যে না আমার আগের ব্যালেন্স ই আছে । সাথে সাথে আবার এ্যাজেন্ট বেশে চিটার আমাকে ফোন দেয় যে ভাই টাকা টা তো আমি এখন ও পেলাম না আমি তখন ওকে বলি যে আমি তো ডাবল টাকা পাঠিয়াছি এবং বাকি থাকলে আমি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে পাঠিয়ে দিব । এর পরে বাকী সব ফোন নাম্বার গুলি বন্ধ ছিল । অবশ্য পরে আমার মার্কেটের সামনে অবস্হান করা এক জন পুলিশের সাব ইনিসপ্যাকটের কে ঘটনা টা জানাই এবং সারা দিন আমি খুবই অস্হিরে ভিতর পার করেছি যে মানুষ কতটুকু প্রতারক হতে পারে এবং প্রতারক রা ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগ সময়ের সাথে পাল্লাদিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়া তারা নতুন নতুন প্রতারনার কৌশল বের করছে ! তার চেয়ে ও আশ্চর্যের বিষয় হলো যে বিকাশ ব্রাক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস কিন্তু প্রতারক রা কি করে এত সাহস পেল যে এই সার্ভিস কে ব্যবহার করে তারা সাধারন পাবলিকের সাথে প্রতারনা করেই চলছে ! সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যে কোন পদ্ধিতে বা কি ভাবে ব্রাক ব্যাংক বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং এর এ সেবার জন্য এ্যকাউন্ট খুলছে ? অবশ্যই এতে স্বচ্ছতার অনেক অভাব আছে যা কাজে লাগিয়ে প্রতারক রা নীড়িহ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । তাই সবাই কে অনুরোধ করবো এ ধরনের প্রতারকদের হাত থেকে সাবধান ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ক্রয় বিক্রয়ের বিকিকিনিতে ক্রেতা বিক্রেতাকে যে ঠকাতে পারে এটা প্রথম শুনলাম ।
বিক্রেতারা তাদের কোন পন্যের কৃত দামের কমপক্ষে দেড় গুন না পেলে জিনিসই বেচে না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন