বর্ষবরণে বস্ত্রহরণ !

লিখেছেন লিখেছেন ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন ২০ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:২০:২৮ রাত

নববর্ষ প্রত্যেক জাতির জন্য একটি আনন্দময় দিন । পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি নানা বর্ণিল আয়োজনে উৎযাপন করে তাদের নিজস্ব নববর্ষ । পুরোনোর গ্লানি দুঃখ কষ্ট সব কিছু ভুলে নতুন উদ্দিপনায় নতুন আনন্দে বরণ করে নেয় নতুন বছরকে । ইংরেজী নববর্ষের পর সারা পৃথিবীতে ঘটা করে পালন হয় চাইনিজ নববর্ষ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বাহিরে ও প্রবাসী বাংগালীরা নিজ নিজ অবস্হানে থেকে নিজের সংস্কৃতিকে ধারন ও লালনের মাধ্যমে পালন করে আসছে বাংলা নববর্ষ । ধর্ম বর্ণ নির্বিষেশে আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে ঘটা করে পালিত হয়ে আসছে বাংলা বর্ষবরন অনুষ্ঠান বিশেষ করে গ্রামে ই পালিত হতো বাংলা বর্ষবরণ কিন্তু বিগত বেশ করেক বছর যাবৎ আমাদের শহুরে ব্যস্ত জীবনে কিছুটা হলেও আনন্দের ছোয়া দিতে পেরেছে বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান এই জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে হয় ছায়ানট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ কে । ছায়ানট ১৩৭৪ বঙ্গাব্দ ইংরেজী ১৯৬৭ সালের পহেলা বৈশাখ থেকে ঢাকার রমনা উদ্যানের অশ্বত্থ গাছের নিচে সুরের মূর্চ্ছনা আর কথামালায় বরণ করে নেয় বাংলা নববর্ষকে যদিও ১৯৭১ সালে বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের বছর বাংগালীর প্রিয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করতে পারেনি ছায়ানট এছাড়া বাকী সব বছর ই ছায়ানট আয়োজন করে আসছে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ধর্মীয় উগ্রবাদ তথা মৌলবাদীদের অপশক্তি ওদের সমগ্র শক্তি দিয়ে নস্যাত করতে চেয়ে ছিল ছায়ানট তথা বাংগলীর বর্ষবরনের অনুষ্ঠান আর সে লক্ষে ২০০১ সালের তথা বাংলা ১৪০৮ সনের ১লা বৈশাখ রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মৌলবাদি জঙ্গিদের বোমা হামলায় নিহত হন ১০ জন আর আহত হয় অর্ধ শতাধিক সাধান মানুষ ৷

তার পর ও মৌলবাদের কালো থাবা বন্ধ করতে পারে নি বাংগালীর প্রাভেন স্পন্দন থেমে থাকেনি বা বন্ধ হয়ে যায়নি বাংগালীর বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান । কিন্তু কোন ভাবেই যেন নানা অপশক্তি হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না আদের ইতিহাস আমাদের ঐতিহ্য আমাদের শিল্প আমাদের সংস্কৃতি । আমাদের বর্তমান শহুরে জীবন অত্যন্ত কর্মব্যস্ত জীবন জিবিকার প্রয়োজনে মানুষ আজ উৎসম আনন্দ থেকে বন্হিত । তাই আজ যে কোন উৎসবে ই নগরবাসী উচ্ছলিত হয় তাই প্রতিটি উৎসবেই আমাদের বিনোদন প্রেমী নগরবাসী ঘড় ছেড়ে বাহিরে আসে সামান্য বিনোদনের জন্য কিন্তু যেখনে ও আজ ঘটছে নানা অঘটন ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে শাওন আক্তার বাঁধন নামের এক তরুনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল একদল হয়েনা বিবস্ত্র অবস্হায় উপস্হিত জনতার সাহায্যে পুলিশ উদ্ধার করে শাওন আক্তার বাঁধন কে । ২০১৫ সালে এসে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃতি হলো সেই একই স্হানে তবে এবার আর রাতের অন্ধকারে নয় দিনের আলোয়ে আইন শৃংখলা বাহীনি সহ হাজার জনতার সামনে অন্তত্য গোটা বিশেক তরুনী যুবতীর শ্লীলতাহানি হয় ঠিক যেন আমেরিকার ফ্লোরিডা সমুদ্র তটে প্রকাশ্য দিবালোকে তরুণীকে গণধর্ষণের মত । একই দিনে দেশের আরো খ্যাত নামা দুইটি সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই ছাত্রীকে ও শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়ে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বপ্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীদের দ্বারা । আমার কাছে এসব ঘটনা গুলিকে মনে হচ্ছে এটা যেন নতুন করে আমাদের বাংগালীদের শিল্প সংস্কৃতিকে ধ্বংসের নতুন করে পায় তারা উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী সদা সর্ব শক্তি দিয়ে ব্যস্ত আছে আমাদের বাংগালীদের শিল্প সংস্কৃতিক তথা আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য কে ধ্বংস করতে এর সাথে নতুন করে এ আবার কোন অপশক্তির আর্বিভাব যে ওরা আমাদের মা বোনদের ইজ্জনিয়ে সিনি বিনি খেলে নতুন করে ভয় ও আতংকের সৃষ্টি করছে ? হয়তো ওদের চাওয়া আমাদের বাংগালী মেয়েদের সম্ভম বাংগালী তথা বাংলাদেশীদের একটা ঐত্যিহ্যের বড় অংশ মা- বোনের সম্ভম রক্ষার জন্য লাখো বাংগালী হাসিমুখে জীবন উৎর্গ করেছে একাত্তরে আমাদের মাহান মুক্তি যুদ্ধে অথচ সেই বীর শহীদের রক্তকে আজ অপবিত্র করা হচ্ছে । যে কথা বলতে চেয়ে ছিলাম আজকের এই অপশক্তির ধারনা ওরা যে কু-কর্ম করেছে তার জন্য হয়তো আগামীতে কোন পিতা তার মেয়েকে নিয়ে ,কোন স্বামী তার স্ত্রীকে নিয় কোন ভাই তার বোন কে নিয়ে কোন প্রেমীক তার প্রমিকাকে নিয়ে আর বর্ষবরন সহ কোন উৎসবের দিনে ঘর থেকে বের হবে নিস্তব্দ হয়ে যাবে আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতি প্রাণ হারাবে আমাদের উৎসব প্রান হারাবে আমাদের নগরবাসী । আদৌ কি এটা সম্ভব ? আমরা চাইনা কোন অপশক্তি হাতে আমাদের শিল্প সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যায় আমরা চাই না কোন অপশক্তির কাছে মাথা নত করতে । আমারা চাই না বর্ষবরণের দিন আর কোন বোনের বস্ত্র হরণ হোক । এখন ই সময় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের নয়তো অচিরেই আমাদের শিল্প সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে ।

বিষয়: বিবিধ

৮৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File