অভিজিৎ হত্যাকান্ডঃ অভিজিতের মুক্তমনা ব্লগে আমার লেখালেখি- আমার স্পষ্ট উচ্চারন কিছুতেই আমি এই খুনকে সমর্থন করতে পারিনা
লিখেছেন লিখেছেন সালাহউদ্দিন নাসিম ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:৪৪:৫৪ রাত
২০০৮ সনে ফেইসবুকে একাউন্ট খুলেছিলাম। বুঝতাম না ভাল ফেইসবুকে কি করে মানুষ। মাঝে মাঝে সময় পেলে নেট সার্চ করতাম। বড় ভাইয়েরা বলতেন যে ব্লগে ইসলাম বিরোধীরা ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের বিপক্ষে প্রচুর লেখালেখি করে -- মিথ্যের ফুলুঝুড়ি ছোটায় অথচ কেউ জবাব দেবার নেই। ২০১১-২০১২ সালটা ব্লগে বিচরণ করেছি পুরো দমে। সোনার বাংলাদেশ ব্লগে নিয়মিত বিচরন ছিল। তবে শুরুটা হয়েছিল মুক্তমনা ব্লগ দিয়ে। একটি লেখা দেখেছিলাম বোকা মেয়ের ৬০ টি প্রশ্ন। ইসলাম সম্পর্কে ৬০ টি প্রশ্ন করেছিল বোকা মেয়ে নিক সেজে। প্রশ্নগুলো আসলেই বোকা বোকা ছিল তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।
রাতে জেগে সব গুলোর জবাব লিখে পোস্ট করেছিলাম মুক্তমান ব্লগে। কিন্তু কাজ হয়নি ওটা প্রকাশ করাই হয়নি। ব্লগের শুরুতে দেখবেন সুন্দর করে লেখা আছে সেকুলার ব্লগ-মুক্তমনা! সেকুলার মানে কোন ধর্মের পক্ষে স্থান নেওয়া হবেনা। এটা খুব ভাল। তবে আমরা জানি আসলে সেকুলার মানে ধর্মনিরপেক্ষতা হলেও আদতে এটি ধর্মহিনতা তার চেয়ে বড় ইসলাম বিরোধীতা! ইতিহাস ঘাটলে এটাই প্রমাণিত হবে যে সেকুলার নিয়ম কোণ ধর্মকে প্রাধান্য দেয়না এটা যেমন সত্য আরেকটু আগ বাড়িয়ে ইসলামকে ডিফেন্ড করতে চায় সব ক্ষেত্রে যেন সেকুলারের জন্মই হয়েছে ইসলামের বিরোধীতা করার জন্য। এই মুক্তমনা ব্লগের অনেক স্ক্রিন শট আমি সংগ্রহ করে রেখেছিলাম। পোস্টের শিরোনাম , ভাষা এবং ছবি এমন ছিল যে কোন মুসলমান যার মনে একটু হলেও আল্লাহর বিশ্বাস সঞ্চিত আছে সে সহ্য করতে পারবেনা। একটি পোস্ট ছিল আল্লাহর নবী সাঃ এবং তার স্ত্রীদের পারিবারিক জীবন নিয়ে নোংরা কৌতুক ছবিসহ------------- অনেক চেষ্টা করেছিলাম এর জবাব দিতে বা এগুলো ডিলিট করাতে কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ ছিল। আমি ধরেই নিয়েছিলাম এটা নিশ্চিত ভারতীয় হিন্দুদের কাজ- আমি তখন অভিজিত এর পরিচয় জানতাম না-- তবে কষ্টের সীমা ছিল না যখন জানলাম যে মুক্তমনা ব্লগের সাথে বাংলাদেশের কিছু মানুষ যাদের নাম মুসলিম হিসেবেই আমরা জানি তারাও আছে!
এতকিছুর পরও আমি কিছুতেই অভিজিৎ কে খুন করার ব্যাপারটা সমর্থন করতে পারছিনা। সেকুলাররা নিজেদের উদার মুক্তমনা হিসেবে পরিচয় দিলেও কাজে তারা চরম নীচ মনের এটা তাদের ব্লগে গেলেই টের পাবেন। খারাপ বলবে মিথ্যে বলবে কিন্তু আপনাকে জবাব দেবার সুযোগও দিবেনা। তবু যুক্তির জবাব যুক্তি দিয়েই দিতে হয়। যুক্তি যখন মানুষের শেষ হয় তখনই মানুষ সহিংস হয়ে ওঠে। যারা অভিজিৎ কে মেরেছে তারা কিছুতেই সঠিক কাজটি করেনি এটা অনেক যুক্তি দিয়েই বুঝানো যাবে। ধর্মের দিকে গেলে বাংলাদেশে ইসলামিক সরকারনেই যে উনার ইসলামার মতানুসারে বিচার করবেন, আর শুধু নাস্তিকতার কারনে যদি উনাকে মারতে হয় তবে কেন নাস্তিকদের জননী এই বিচারের প্রথম তালিকায় আসবেন না?
যদি ধরে নেন যে সরকার নাস্তিকদের প্রশ্রয় দিচ্ছে -------তাইলে তো এটাও শিউর যে এইসরকারের সমর্থনে দেশে অনেক লোক আছে ! নাস্তিকদের যদি এত জন সমর্থন দেয় তবে ধরে নিতে হবে যে ইসলাম পন্থীদের দাওয়াতীকাজ এখনো অনেক দূর যেতে হবে। এইভাবে খুন করে কি আদর্শের জ বাব দেওয়া যায়? জনসমর্থন আদায় করে যদি এমন করা যেতে যে এই নাস্তিক এর ফাসি চাই এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় এসেছে ------তবে একটা কথা হত কিন্তু সেটা করা হয়নি। এর আগেও হুমায়ুন আযাদ এবং থাবা বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে ------------ কে মেরেছে সেটা প্রমানিত হয় নাই-----
যুক্তিতে যেহেতু আসেনাই যে কে মেরেছে সেহেতু এটাও বলা যায় যে সরকার চারদিকের চাপ সামলাতেই নিজের আশ্রিতকে জেড়ে ফেলে আরেকজনের কাধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে -------- হতেই পারে কারন এর আগে এরকম অনেক হয়েছে। তবে রাগের মাথায় ইসলাম পন্থীরা কেউ করেছে এটা মেনে নেওয়া কঠিন। মারতে হলে এর চেয়ে বড় স্বীকার কি আর ছিল না? যেই মেরে থাকুক------- অভিজিৎ মরে গেছে। ওর ব্যাপারটা মহাবিচারকের উপর ছেড়ে দেওয়াই মঙ্গল তবে হ্যা এইটা নিয়ে রাজনীতি হবার আগে আমরা এর সুষ্টু তদন্তের দাবী জানাই-------------------
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অন্ততঃ একটা হলেও জাহান্নামের কীট শেষ হল!
এই দিক বিবেচনায় সমর্থনযোগ্য!!
কারণ আপনার দক্ষতা আছে যুক্তিতে , শক্তিতে নেই । আরেকজনের দক্ষতা যুক্তিতে নেই , আছে শক্তিতে ।
এখন আপনি তার উপর আপনার দক্ষতা প্রয়োগ করতে চাইলে সেও তো আপনার উপর তার দক্ষতা দেখাতে চাইবে।
সব কিছুরই একটা লিমিট থাকা উচিত । আপনার স্বাধীনতা এমন না যে আপনি বিনা বাধায় হাসিনা বা ওবামার রুমে ঢুকে যাবেন , আপনাকে এ ব্যাপারে বেশ সতর্কতা ও রীতিনীতি বজায় রেখে এগুতে হবে । এবং পৃথিবীর সব জায়গাতেই মানুষ এটা মেনে চলে ।
ধর্মের ব্যাপারে তো এটা আরও সিরিয়াস । অন্য ধর্মের ব্যাপারে নোংরা কথা না বলে নিজের ধর্ম নিয়ে থাকাটাই উচিত । তাতে হানাহানি হয় না ।
ধর্ম ছাড়া মানুষ আর পশুর মধ্যে কোন পার্থক্যই আর থাকে না ।
হুমায়ুন আযাদ এর ঘটনা,আসিফ মহিউদ্দিন এর ঘটনা নিয়েও একই কথা বলা হযেছিল। কিন্তু কোন ক্ষেত্রেই কিছু প্রমানিত হয়নি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন