সিলেটে সুন্দরী গৃহবধূ খাদিজা রিমার মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়Worried Worried

লিখেছেন লিখেছেন গেরিলা ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:৪৭:৩২ রাত



সিলেটের সুন্দরী গৃহবধূ খাদিজা আক্তার রিমার গভীর প্রেমও পরনারীর আসক্তি থেকে দূরে রাখতে পারেনি স্বামী নাজিমকে। বন্ধু ফরহাদের প্ররোচনায় তিনি বখাটে হয়ে যান। এবং বন্ধুর প্ররোচনায় নিজের স্ত্রীকে খুন করে তিনি এখন কারান্তরীণ। রিমার খুনের ঘটনায় সিলেটে গত ৫ দিন ধরে তোলপাড় চলছে। তবে গতকাল কাজের মেয়ে সুমির বক্তব্যে বেরিয়ে এসেছে আসল তথ্য। আর সিলেটের কোতোয়ালি পুলিশ এ নিয়ে একের পর এক নাটক করে চলেছে। এতে করে মেয়ের খুনের বিচার চাইতেও ভরসা পাচ্ছেন না রিমার মা ও বাবা। নাজিমের বাড়ি বিশ্বনাথের জানাইয়া গ্রামে। তার পিতার নাম ইন্তাজ আলী। আর রিমার বাড়ি দুর্যাকাপন গ্রামে। রিমার পিতার নাম আবদুল মছব্বির। ২০১১ সালে নাজিম অনেকটা জোর করেই বিয়ে করেন রিমাকে। বেশ ধুমধামে দুই পরিবারের সম্মতিতে সিলেট নগরীর আগ্রা কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে হয়। বাসা এখন সিলেট নগরীর যতরপুরে। শ্বশুরের ভাড়া করা বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন নাজিম। ওই বাসায় নাজিম ও রিমা ছাড়াও তার শাশুড়ি ও কাজের মেয়ে সুমি থাকতো। গত এক মাস আগে শাশুড়ি চলে যান লন্ডনে। নাজিমসহ রিমা কাজের মেয়ে সুমিকে নিয়ে ওই বাসায় থেকে যান। নাজিমের বন্ধুর নাম ফরহাদ। ফরহাদের বাড়ি দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও বলে জানা গেছে। বন্ধু ফরহাদের প্ররোচনায় নাজিম নিজ বাসায় নানা অপকর্ম করতেন। শাশুড়ি লন্ডন থাকার সুবাদে নাজিমের বাসায় কলগার্লদের এনে ফুর্তিতে মেতো উঠতেন ফরহাদ। কখনও কখনও নাজিমও ফুর্তিতে মেতে উঠতেন।

নিজ ঘরে স্ত্রীকে রেখে কলগার্লে সঙ্গে ফুর্তি করায় বাধা দেন রিমা। আর এ নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক বিরোধ। রিমা স্বামী নাজিমের আসল চরিত্র বুঝে ফেললে নাজিম রিমার উপর ক্ষেপে যায়। এ নিয়ে গত এক মাস ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। মাঝে মধ্যে এ নিয়ে রিমা ও নাজিম ঝগড়াও করেছে। বন্ধু ফরহাদের সামনেই নাজিম প্রায়ই রিমাকে গালিগালাজ করতো। ২৭শে জানুয়ারি রাতে কাজের মেয়ে সুমিকে বাসার বাইরে পাঠিয়ে দেয় নাজিম ও ফরহাদ। আর এই সুযোগে তারা বাসার ভেতরে রিমার হাত-পা বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে রিমার গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নাজিম ও ফরহাদ। পরে লাশ ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে দেয় ফ্যানের সঙ্গে। এ ঘটনার পর নাজিম রিমাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তবে তার আগেই পালিয়ে যায় ফরহাদ। তবে, পুলিশের হাতে বন্দি থাকা নাজিম খুনের ঘটনা অস্বীকার করেছে। সে খুন করেনি বলে জানায়। তবে কাজের মেয়ে সুমি সাংবাদিকদের জানিয়েছে, বাসায় প্রায় সময় ফরহাদ অপরিচিত নারীদের নিয়ে আসতো। তারা বাসায় ফুর্তি করতো। রিমা এতে বাধা দিতো। এ নিয়ে ঝগড়া হতো। এ সময় রিমাকে মারধরও করা হতো। ঘটনার দিনও রিমাকে খুব বেশি মারধর করা হয়। আর ঘটনার দিন ডিম আনার কথা বলে তাকে বাইরে পাঠানো হয়। ওই সময় ফরহাদ ও নাজিম বাসাতে ছিল। সুমি জানায়, ফিরে এসে দেখে রিমাকে খুন করা হয়। এ সময় সে পাশের বাসার মানুষকে বিষয়টি জানাতে গেলে ফরহাদ তার গলায় চেপে ধরে বলে। একপর্যায়ে ফরহাদ তাকে খুন করারও হুমকি দেয়। এদিকে, পুলিশের কাছে কাজের মেয়ে সুমি এসব কথা বললেও পুলিশ বিষয়টিকে রহস্যময় করে তুলেছে। এদিকে, খুনের ঘঁনার পর তিন দিন রিমার লাশ হিমাগারে ছিল। তার বাবা ও মা বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর লাশ দাফন করা হয়েছে। আর রিমার খুনের ঘটনাটি পরিবারের লোকজন অনুসন্ধান করতে গিয়ে বহু তথ্য পেয়েছেন। রিমার পিতা আবদুল মছব্বির দাবি করেছেন, তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, রিমার বাসার সকল মূল্যবান জিনিসপত্র খুনের ঘটনার পর লুট করা হয়েছে। এদিকে, পুলিশও স্বীকার করেছে রিমার গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার সাব ইন্সপেক্টর রকিবুর রহমান জানান, ময়না তদন্ত রিপোর্টের পর মামলা অথবা আপস নিষ্পত্তির পক্রিয়া চলবে।

সুত্রঃ মানব জমিন

বিষয়: বিবিধ

১৪১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File