আওয়ামী বাসরে নববধূ কমিউনিষ্ট
লিখেছেন লিখেছেন তৃতীয় নয়ণ ২০ জানুয়ারি, ২০১৩, ১০:৪৭:১০ রাত
ভারতের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কান্ডারী মুসলিম লীগের রাজনীতির বুক চিরে জন্ম নেয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। মূলত মুসলিম লীগের রাজনীতি থেকে বিদ্রোহী হয়েই আওয়ামী মুসলীম লীগের জন্ম। ক্রমান্বয়ে আওয়ামী মুসলীম লীগ হয়ে উঠে পাকিস্তান বিরোধী ও ভারতপ্রেমী । আওয়ামী মুসলীম লীগের উপর ভরসা রাখে ভারত। ভেঙ্গে গেল পাকিস্তান। আওয়ামী লীগ হয়ে উঠে আরো ধর্মনিরপেক্ষ। বদলে দেয় নাম । হলো আওয়ামী লীগ। ধর্মীয় রাজনীতির খোলষ থেকে আওয়ামী লীগ হয়ে উঠে ভারতপূজারী পূজিবাদী বর্জোয়া শ্রেণীর রাজনীতির ক্রীড়নকে। সমাজতানিত্রক দর্শনের বিপরীতে গিয়ে পূজিবাদী দর্শনের ধ্বজাধারী ছিল আওয়ামী লীগ। স্বাধীন হলো বাংলাদশে। স্বাধীন বাংলাদেশে সমাজতন্ত্রী কমিউনিষ্টরা সবচেয়ে বাধার মুখোমুখী হয়ে মুজিব আমলে। শেখ মুজিব জাসদের ২৪ হাজার নেতা কর্মীকে হত্যা করেছে বলে জানা যায়। আজ কোথায় সিরাজ শিকদার? বলে সংসদে দম্ভোক্তী করে শেখ মুজিব। অতপর আওয়ামী রাজনীতির অভিশাপে বাম রাজণীতির মরণদশা। পেরিয়ে গেছে অনেকটি বছর। মান অভিমান ভুলে ভালোবাসার নুতন সূর্য আকাশে উকি মেরেছে। আওয়ামী লীগের ভালোবাসার কুঞ্জে এখন কুমিউনিষ্ট কোকিলের কুহুতান। মূয়ুর বেশে আওয়ামী কুঞ্জে চলছে আওয়ামী কমিউ লীলা খেলা। পূজিবাদ সমাজবাদ একাকার হয়ে নাম হয়েছে মুজিববাদ। বর্তমানে আওয়ামী লীগের মাঝি মাল্লারা কমিউনিষ্ট আন্দোলনের ডুবন্ত তরীর কান্ডারী।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের মহাসুদিন চলছে। একই সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য দেখা দিয়েছে দুর্দিন। এবারও ৬৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী, উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটিতে সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের অবস্থান সুসংহতই নয়, জোরদার হয়েছে। বলাবলি হচ্ছে, দিন দিন কমিউনিস্টনির্ভর হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগ। দলের রাজনীতিতে সবচেয়ে বিফল প্রচার সম্পাদক, স্বাধীনতা-উত্তর ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূহ উল আলম লেনিনের একলাফে প্রেসিডিয়ামে ঠাঁই পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিষণ্নতার চাদরে ঢেকে দিলেও রাজনৈতিক অঙ্গনকে চমকে দিয়েছে। এর নেপথ্য কারিগর কে, তা জানতে চাইছেন সবাই। বঙ্গবন্ধুর নৌকার গুণটানা মাঝি-মাল্লা, যাদের শরীরের পরতে পরতে দুঃসময়ের নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন তাদের প্রতি কেন এ অবহেলা? এ কেমন নিয়তি? এমন প্রশ্নের পর প্রশ্ন এখন দলে। স্বাধীন দেশে ডাকসু নির্বাচনে যে লেনিন ব্যালটবাক্স ছিনতাই করেও ভিপি হতে পারেননি, তিনি আজ কোনো অবদান না রেখেই আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামে! অন্যদিকে ডাকসুর বিজয় মুকুট যারা মাথায় পরেছিলেন তারা নেই কমিটিতে! প্রশ্ন, কেন? ষাটের দশকের ছাত্র ইউনিয়ন সভানেত্রী মতিয়া চৌধুরী এবারও আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামে ঠাঁই পেয়েছেন। আরেক ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ এবারও শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক হয়েছেন। স্বাধীনতা-উত্তর ছাত্র ইউনিয়নের আরেক সভাপতি আবদুল মান্নান খান দফতর সম্পাদক পদে বহাল আছেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ইয়াফেস ওসমান নতুন কমিটিতেও আগের পদে বহাল রয়েছেন। সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা হওয়ার সুবাদে আসাদুজ্জামান নূরও বহাল তবিয়তে দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদেই আছেন। গত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুননির্বাচিত হন। কাউন্সিলররা দলের ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পণ করেছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম যে ওয়ার্কিং কমিটি ঘোষণা করেন তা নিয়ে ওই রাত থেকেই সর্বত্র আলাপ-আলোচনা ও নানামুখী কথাবার্তা ঠাঁই পেয়েছে। তির্যক বাক্যবাণে অনেকেই বলাবলি করছেন, জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে যে আওয়ামী লীগের বাম-ডানের ভরাডুবি ঘটিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত চূড়ান্ত বিকাশ ঘটেছিল, সেই দলে এখন আদর্শচ্যুত দেউলিয়া ন্যাপ-কমিউনিস্টদের দোর্দণ্ড প্রতাপ। কেউ কেউ এমনও বলছেন, আওয়ামী লীগ আজ 'আওয়ামী কমিউনিস্ট লীগ' হয়ে গেছে। সরকার ও দলে কমিউনিস্ট আর কমিউনিস্ট!
বিষয়: রাজনীতি
১১২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন