আওয়ামী লীগ পচে গেছে , মরে গেছে , আজ বিলুপ্ত । এখন শুধু বাকশাল ''----মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান [
লিখেছেন লিখেছেন বুলবুল হ্যাপী ০৪ জুন, ২০১৩, ০৭:৩৪:৪৯ সন্ধ্যা
জনাব মো নাসিম । আওয়ামী লিগের একজন বড় মাপের নেতা । স্বররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন । প্রেসিডিয়াম সদস্য । মহাজোটের মুখপাত্র । তার বক্তব্য মহাজোটের ভার বহন করে । তিনি বলেন ----বাংলাদেশে আর কোন দিন তত্ত্বাবোধায়ক ব্যবস্থা ফিরে আসবে না । তত্ববোধায়ক আনতে হলে সুপ্রীম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে । আগামী বছরের জানুয়ারী মাসে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । জনকন্ঠ ৩/৬/১৩ ।
তিনি দলীয় সম্মেলনে এই বক্তব্য দিয়েছেন । তার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে । দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বক্তব্য গুরুত্বহীন নয় । তার বক্তব্য আওয়ামী লীগের অবস্থান -ভুমিকা প্রকাশ করে । দেশ পরিচালনায় তাদের সফলতা-ব্যর্থতা নির্ধারিত হয় । নীতিনির্ধারনী বডির মানুষগুলো কি বলেন , কি করেন তা দেখার চোখ এবং বুঝার ব্রেন কোটি কোটি । দলের স্বচেতন এবং প্রতিপক্ষের স্বজাগ দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ গুলো নেতাদের বক্তব্য কতটা গ্রহন যোগ্য তা বুঝতে পারে ।
দেশের মানুষকে এই ডিজিটাল যুগে এত বোকা ভাবা ঠিক নয় । তত্ত্ববোধায়ক ব্যবস্থা কি জিনিষ তা এখন অশিক্ষিত রিকসা ড্রাইভারও জানে । নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সরকার গঠনে এর প্রয়োজনীয়তা এবার পাকিস্তান প্রমান করেছে । ৯১-২০০৯ পর্যন্ত ৪ টি নির্বাচনে বাংলাদেশে তা কতটা কার্যকরী তা প্রমানিত হয়েছে । '' খাল কেটে কুমির '' আনতে চান না । অথচ কুমিরের পিঠে চড়েই শেখ হাসিনা গণভবনে প্রবেশ করেছেন । এই কুমিরের পিঠে চড়ে যেন আর কেউ গণভবনে প্রবেশ করতে না পারে তাই '' কুমির হত্যা '' করা হয়েছে । দেশের ৯০ ভাগ মানুষ এই '' কুমির '' তত্ত্বাবোধায়ক বিধানের পক্ষে । আর কখনও এই বিধান আসবে না । জনাব নাসিম সাহেবের এই বক্তব্য আপত্তিজনক এবং গ্রহন যোগ্য নয় । এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি তার দল কে জনগনের বিপক্ষে দাড় করালেন । সাহস থাকলে গণভোট দিন । বক্তব্যের আসারতা বুঝতে পারবেন ।
******* সুপ্রীম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট বাতিল *******
তত্ত্ববোধায়ক আনতে হলে সুপ্রীম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে । জনাব নাসিম সাহেবের এই বক্তব্য বড়ই হাস্যকর । সুপ্রীম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট কাদের জন্যে ? জনগনের জন্যে রাষ্ট্রের এই অঙ্গ তৈরী হয়েছে । জনগণের স্বার্থে বাতিল করে নতুন ভাবে তৈরী করতে নিষেধ কোথায় ? '' তোমরা সবাই ভুল , আমি শুধু ঠিক '' এই বেঠিক জায়গাটা ত্যাগ করুন । বেআক্কেল আবস্থান ছাড়ুন । ক্ষমতার মোহ চশমাটা খুলে জনতার চশমা লাগান । সব ঠিক ঠিক দেখতে পাবেন । সুপ্রীম কোর্ট বাতিল করতে হবেনা । বাতিল করতে হবে যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকার মানসিকতা । পার্লামেন্ট চলমান রেখে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয় না । এমন নজির পৃথিবীতে নেই ।
******* ডবল এমপি *******
জনাব নাসীম সাহেব ! আপনারা ১৫ তম সংবিধান সংশোধনিতে পার্লামেন্ট বাতিলের ব্যবস্থা রাখেন নি । সুপ্রীম কোর্টের কথা শুনেননি । কোর্টের কাঁধে কুড়াল রেখে ক্ষমতা দীর্ঘায়ীস্থ করার ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে পাগল হয়ে গেছেন । মহা পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ এক গাজাখুরী সংশোধনি এনেছেন । সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন । ডবল সদস্য । সংসদ সদস্য নন এমন যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি শপথের অপেক্ষায় থাকবেন ।পুরাতন সদস্য পদত্যাগ না করলে তিনি শপথ নিতে পারবেন না । এই প্যাচাল কৌশলের উদ্দেশ্য কি ? পৃথিবীর কোথায়ও আছে কি ? ইহা কি গণতন্ত্রের আওয়ামী মডেল ?
সংসদ বাতিলের জন্যে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করবেন এমন বিধান রাখা হয়নি । রাষ্ট্রপতি চাইলে পার্লামেন্ট বাতিল করতে পারবেন না । সংসদ সদস্যরাই নব নির্বাচিত সদস্যদের পথ করে দিবেন । না দিলে মহাসংকট । সময় হলে টের পাবেন । অবশ্য এর পিছনে একটি খারাপ উদ্দেশ্য থাকতে পারে । তা হল কোন কারনে নির্বাচন না হলে অথবা কাংখিত ফলাফল না হলে বর্তমান সংসদের কার্যকারিতা অব্যাহত রাখা যাবে । বিনা নির্বাচনেই ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে । বঙ্গভবন তো ঠিক থাকছেই । গণভবন যাতে নড়চর না হয় । বিষয়টা যত সহজ ভাবা হচ্ছে আসলে কি সহজ ? মোটেই না । খুবই জটিল ।
************ অনাস্থার জায়গা মেরামত করুন ************
আর যদি আন্তরিক হন । সংকট হতে বাচতে চান । তা হলে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিন । বিরোধীদের আস্থায় নিন । অনাস্থার জায়গা মেরামত করুন । অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসাবে লেডি স্পীকারকে বসিয়ে সমাধান হবে না । তাতো যে লাউ সেই কদু । প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান সাহেবকে তত্ব্ববোধায়ক সরকার প্রধান হিসাবে মেনে নিতে পারেননি । বয়স বৃদ্ধি করায় তাকে মানেননি । এখন আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর অধীনে যে নির্বাচন করতে চান তাতে বিরোধী পক্ষ অংশ গ্রহন করতে পারে কি ? শেখ হাসিনার স্থানে বেগম জিয়া থাকলে আপনারা মেনে নিতেন কি ? অনির্বাচিত সংসদ সদস্য যদি স্পীকার হতে পারেন তা হলে অনির্বাচিত ব্যক্তি স্বল্প সময়ের জন্যে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার প্রধান হতে পারবেন না কেন ? সংবিধান লংঘন করে মিডিয়া বন্ধ করলেন , সভাসমাবেশ - মানব বন্ধন নিষিদ্ধ করলেন , রাতের আধারে গণহত্যা চালালেন , রিমান্ডের নামে চরম নির্মম নিষ্ঠুর নির্যাতন করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন । আর আপনারাই সেই সংবিধানের ধারা দেখান । মানতে বলেন । বড়ই চমৎকার আপনাদের অদ্ভুত রাজনীতি ।
******** জনতার দল জনতার কাতারে আসতে ভয় কেন ? ***********
ক্ষমতার ধারাবাহিকতার চিন্তা ছাড়ুন । আম জনতার কাছে যান । সফলতার জোয়ার সৃষ্টি করেছেন । ভয় কিসের ? পুলিশের বেরিক্যাড তুলে নিন । জনতার দল জনতার কাতারে আসুন । গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রন করতে চান ? রিমোট কন্ট্রোলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না । পুলিশ তান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের কবর তৈরী হয় । বিরোধী মত -পথ-মিডিয়া দমন করে '' দলতন্ত্র '' ব্যক্তি বিশেষের নেতৃত্ব - কতৃত্বের ভিতর দিয়ে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করা যায় । গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না । দেশে কল্যান আসবে না । হিংসা বিদ্বেষ , সংঘাত , প্রতিশোধ নেয়ার মানসিকতা
গণতান্ত্রিক সমাজে বেমানান । গণতন্ত্রের জন্যে সংগ্রাম । মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার শ্লোগান । ভাত-কাপড়ের সমাধান । জান-মালের নিরাপত্তার গ্যারান্টি । ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ -চাকুরী । মিডিয়ার স্বাধীনতা । সুসাশন প্রতিষ্ঠা । এগুলোর হিসাব কষেন । খতিয়ান বানান । পাবলিকেরে জানান । ৪ সিটি নির্বাচন আপনাদের এসিড টেস্ট কেস । বিরোধী শিবিরের আস্তিত্বের লড়াই । এই নির্বাচনে প্রমান হবে দেশের মানুষ কি চায় । একক নেতৃত্ব - কতৃত্ব - একদলীয় গণতন্ত্র - নাস্তিক ইসলামের দুশমনের সাশন চায় ? না জাতীয়তাবাদী এবং ইসলাম পন্থীদের সাশন চায় । সেই ফয়সালার জন্যে অপেক্ষায় থাকতে হবে মাত্র কয়েক দিন ।
'' ২৫/১/১৯৭৫ ]
বিষয়: বিবিধ
১৩৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন