cricket

লিখেছেন লিখেছেন অয়োন ২০ জানুয়ারি, ২০১৩, ০১:০৭:৫১ দুপুর

দুরন্ত রাজশাহীর নাটকীয় জয়

৯৯ রান করেও জয়! গতকাল বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এমন চমকই দেখিয়েছে তামিম ইকবালের দুরন্ত রাজশাহী। দলটির বোলাররা ১০০ রানের সহজ টার্গেট অতিক্রম করতে দেয়নি বিপিএলের হ্যাভিওয়েট দল চিটাগং কিংসকে। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে ২ রানের জয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুরন্ত রাজশাহী। আর এ জয় পাওয়ায় পূর্ণ দুই পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে তামিম ইকবালরা।

শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট হাতে তুলে নেয় দুরন্ত রাজশাহী। চিটাগং কিংসের বোলারদের চাপের মুখে শুরু থেকেই খেই হারিয়ে ফেলে দলটির ব্যাটসম্যানরা। নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৯৯ রানে থেমে যায় রাজশাহীর রানের চাকা।

দলীয় দুই রানেই ওপেনার জহুরুল হক অমি রানআউটের ফাঁদে পা দিলে প্রথম উইকেট হারায় রাজশাহী। ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই দলীয় ১৮ রানে উইকেট ছাড়া হন রাজশাহীর ইংলিশ ব্যাটসম্যান মইন আলী। শুরু থেকে ধৈর্যের সঙ্গে ব্যাট চালালেও দলীয় ৩৩ রানে মাহমুদুল্লাহর হাতে কট অ্যান্ড বোল্ড হতে হয় ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ইকবালকে। সাজঘরের পথ ধরার আগে ১৬ বলে ১৭ রান করেন তামিম। চিটাগং কিংসের আঁটোসাঁটো বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের সামনে রাজশাহীর টপঅর্ডার, মিডল অর্ডার ও টেইল এন্ডারের কোনো ব্যাটসম্যানই নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। অসহায় আত্মসমর্পণ করে উইকেট ছাড়া হতে হয় সবাইকে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরার মুক্তার আলী। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে টেস্ট স্টাইলে ৩১ বলে ২২ রান করেন তিনি। ১৩ রান আসে জিয়াউর রহমানের ব্যাট থেকে। অতিরিক্ত খাত থেকে ১৬ রান না এলে নির্ধারিত ওভার শেষে দুরন্ত রাজশাহীর সংগ্রহ থাকতো আরও নিচে। চিটাগং কিংসের বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট নেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ইংলিশ পেসার রবি বোপারা।

জয়ের জন্য ১০০ রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা সামনে পেলেও তা অতিক্রম করতে পারেনি চিটাগং কিংস। রাজশাহীর বোলারদের সামনে নির্ধারিত ওভারের তিন বল আগেই ৯৭ রানে গুঁড়িয়ে যায় দলটি। বিপিএলের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। বিপিএলে সর্বনিম্ন রানও চিটাগংয়েরই। গত বছর প্রথম আসরের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের বিপক্ষে ৯৩ রানে গুঁড়িয়ে যায় দলটি।

দলীয় ৬ রানেই ওপেনার জেসন রয়কে (৫) শেন ইরভাইনের তালুবন্দি করেন রাজশাহীর স্পিনার নাঈম ইসলাম জুনিয়র। দলীয় ১৬ রানে অপর ওপেনার ব্র্যান্ডন টেলরকে (৯) উইকেট ছাড়া করেন স্পিনার মনির হোসেন। দলীয় ২৫ রানে তাজুল ইসলামের বলে রবি বোপারাকে জহুরুল ইসলাম অমি স্ট্যাম্প করলে তৃতীয় উইকেট হারায় চিটাগং কিংস। এমন বিপর্যয়ের মুখে চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাহমুদুল্লাহ-মেহরাব হোসেন জুনিয়র ৩৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করলেও তাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান দুরন্ত রাজশাহীর স্পিনার ফরহাদ হোসেন। মেহরাবকে (১৮) আবুল হাসানের তালুবন্দি করান তিনি।

চিটাগং কিংসের বাকি লাইনআপটা ধসিয়ে দেন পেসার আবুল হাসান ও শেন ইরভাইন। দলীয় ৮৭ রানে আবুল হাসান অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে উইকেট ছাড়া করলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে চিটাগং। উইকেট ছাড়ার আগে ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদুল্লাহ। তার এ ইনিংসটি পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা দিয়ে সাজানো। মাহমুদুল্লাহ ও মেহরাব ছাড়া চিটাগংয়ের কেউই দুই অংকের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। নামের প্রতি একেবারেই সুবিচার করতে পারেননি ব্রেন্ডন টেলর, জেসন রয়, বরি বোপারা, নাঈম ইসলাম ও জেকব ওরামের মতো তারকা ব্যাটসম্যানরা। দুরন্ত রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে পেসার আবুল হাসান রাজু চার ওভার বল করে মাত্র ২০ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ১.৩ ওভার বল করে ৬ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন শেন ইরভাইন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুটি উইকেট নেয়ায় ম্যাচসেরা হন দুরন্ত রাজশাহীর এ জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার।

দ্বিতীয় ম্যাচেও গ্ল্যাডিয়েটর্সের বড় জয়

উদ্বোধনী ম্যাচে খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের বিপক্ষে বড় জয় পাওয়ার পর গতকাল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও নবীন দল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৩৫ রানের বড় জয় পেয়েছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। টানা দুই জয়ের ফলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষ স্থান আরও মজবুত করল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় মাশরাফি বিন মর্তুজার ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুল। ৪৭ বলে গড়া তার এ ইনিংসে আটটি চার ও তিনটি ছক্কার মার রয়েছে। অপরাজিত ৩৪ রান করেন জশোয়া কোব। অন্যদের মধ্যে লুক রাইট ২২, ওয়াইজ শাহ ২৮, এনামুল হক বিজয় ১৯ ও সাকিব আল হাসান ১৩ রান করেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৬৭ রানে থেমে যায় রংপুর রাইডার্সের চাকা। উইকেট ছাড়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রানের ইনিংস খেলেন নাসির হোসেন। ৪৯ বলে গড়া তার এ ঝড়ো ইনিংসে পাঁচটি চার ও ছয়টি ছক্কার মার রয়েছে। নেইল ও’ব্রেইন ৩৫ বলে ৪০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। ঢাকার বোলার সাকিব দুটি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের মোহাম্মদ আশরাফুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দুরন্ত রাজশাহী : ৯৯/৯ (২০ ওভার)। মুক্তার আলী ২২*, তামিম ইকবাল ১৭ ও জিয়াউর ১৩।

বোলিং : মাহমুদুল্লাহ ১৭/২ ও রবি বোপারা ১৯/২।

চিটাগং কিংস : ৯৭/১০ (১৯.৩ ওভার)। মাহমুদউল্লাহ ৪০ ও মেহরাব ১৮।

বোলিং : আবুল হাসান ২০/৩ ও ইরভাইন ৬/২।

ফল : ২ রানে জয়ী দুরন্ত রাজশাহী।

বিষয়: বিবিধ

৯৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File