বাংলাদেশের সমসাময়িক (১৯৭১-২০১৩) রাজনীতির রুপরেখা
লিখেছেন লিখেছেন মনসুর ২৩ মে, ২০১৩, ০৬:১৪:৩১ সন্ধ্যা
রাজনীতির নামে বর্তমান বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা আসলে কিছু সন্ত্রাস-প্রিয় নষ্ট রাজনীতিবিদ আর দুর্নীতিবাজ বদ আমলাদের চক্রান্তমূলক ষড়যন্ত্র, এটা লুটপাট আর হিংসার রাজিনীতি, এর ভিতরে গণ-মানুষের জন্য ইতিবাচক কিছু নেই। কারন হিসাবে বলা যায় যে - কোনো মানব সমাজ যদি দীর্ঘ দিন ধরে দরিদ্র, অশিক্ষিত, যথাযথ কর্ম-সংস্থানহীন, আর নৈতিক অবক্ষয়-এর মধ্যে থাকে তবে সেই সমাজ ধীরে ধীরে ধংসপ্রাপ্ত হয় - জাতি পরিনত হয় হতদরিদ্র, কুশিক্ষিত, লোভী আর দুর্নীতিপ্রিয় এক অসভ্য সমাজে। বাংলাদেশেও এই প্রক্রিয়ার প্রভাব যথেষ্ট ক্রিয়াশীল। এই অবস্থায় "কল্যণমূখী গণতন্ত্র" তার স্বাভাবিক কার্যকারিতা হারায়, শাষন ব্যবস্থা পরিনত হয় সন্ত্রাসপ্রিয় নষ্ট কু-রাজনীতিবিদদের হাতিয়ারে।
ব্রিটিশ শাষন আমলের শেষ দিকে এই দেশ ছিলো দরিদ্র মুসলিম কৃষক আর হিন্দু জমিদারদের। অনেক আন্দোলন আর রক্ত ঝরানোর পর আবারো ব্রিটিশ-হিন্দু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পাক-ভারত সীমানা নির্ধারিত হয়। জন্ম নেয় জমজ রাষ্ট্র পাকিস্থান। আমাদেরকে বুঝতে হবে, ১৯৭১-এ দেশকে (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্থান) ভাংগা হয় নাই, বরং বদ-পাকিদের অন্যায়-অত্যাচারে অতিষ্ট দেশের সাধারণ জনগণ পশ্চিম-পাকিস্থান থেকে স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলো - এটা ঐতিহাসিক সত্য। মনে আছে ১৯৭১-এ স্বাধীনতার পরে অনেকেই বলাবলি করেছে যে, যুদ্ধটা একটু তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে গেলো - আর এখন বুঝছি আসলে স্বাধীনতার পর আমাদের 'স্বাধীনতা' হাইজ্যাক হয়ে গেছে ষড়যন্ত্রকারী একদল সন্ত্রাসপ্রিয় নষ্ট রাজনীতিবিদ আর দুর্নীতিবাজ আমলাদের দ্বারা - ফলাফল: এই অসভ্য রাজনীতিবিদরা একদল ভারত-পন্থি মাতাল, আরেক দল পাক-পন্থি চোর, কিন্তু কোনো দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ-পন্থি কোনো সৎ রাজনীতিবিদ নেতা নাই . . . !!
আজ এই বাংলাদেশে রাজনীতি মানেই 'নষ্ট-রাজনীতি' - সাধারণ জনগণের মূর্খতা-দারিদ্রতা-অসহায়ওতাকে পুঁজি করে যে কোনো প্রকারে দেশের শাষক হয়ে দেশকে লুট-পাট করে নিজেদের আখের গুছানো। এই বদ নেতারা মুখে যাই বলুক না কেন, যত আন্দোলনেরই ডাক দিক না কেন, শেষ পর্যন্ত এদের গন্তব্য দেশে অরাজকতা বহাল রেখে, আইনের শাসনকে অগ্রাহ্য করে চুরি-ডাকাতি-সন্ত্রাসী করে নিজেদের পকেট ভারী করা। এরা ধংস করে চলেছে সুশিক্ষার সকল পথ, দূর্নীতি-বান্ধব পরিবেশে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সমাজের জন্য ইতিবাচক সেবার সকল কার্যক্রম, দেশ শাসনের সরকারী কার্যক্রম পরিণত হচ্চে অসৎজনদের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থাপনা হিসাবে, . . . . আসলে, এই নষ্ট-লোভী রাজনীতিবিদরা আর তাদের দোসর বদ আমলারা কেউই চায় না দেশে আইনের সুশাষন কায়েম হোক, দারিদ্রতার অবসান হোক, বা সৎ-সচেতন-সুশিক্ষিত সমাজ গড়ে উঠুক। লীগ-দল-জমায়েত-সমাবেশ সবই একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এই বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেখলে আমাদের সকল রাজনীতিবিদরাই (ডান-বাম-ধর্মীয়-ক্ষত্রিয়) মূলতঃ নৈতিকতাহীন, সন্ত্রাসপ্রিয়, দুর্নীতিবাজ, আর প্রচন্ড লোভী এবং তারা এই সমাজেই লালিত-পালিত হচ্ছে। সকল অশান্তি-অরাজগতার নেতৃত্তে এরাই।
ফলে, ক্রমবর্ধমান আর্থ-সামাজিক অবক্ষয়ের এই সময়ের প্রেক্ষাপটে সমসাময়িক বাংলাদেশের রাজনীতির সুত্রটি এরকম, "ক্ষমতার রাজনীতি =সন্ত্রাসপ্রিয় নষ্ট রাজনীতিবিদ +দুর্নীতিবাজ আমলা +লোভী ব্যবসায়ী +অনৈতিক শিক্ষক +কুশিক্ষিত লোভী বৃহৎ জনগোষ্ঠি +নির্যাতিত অসহায় ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি।"
এখন, দেশের দুর্বল সাধারণ জনগণ (নির্যাতিত অসহায় ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি) বিষয়টি অনুমান করে সুধু অসহায় বোধ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না। কখনো কখনো ভোটের নাটকের সময়ই তারা সুযোগ পায় নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার। কিন্তু কাকে ভোট দেবে সবই সমান বদ - স্বাভাবিকভাবই 'কুশিক্ষিত লোভী বৃহৎ জনগোষ্ঠির' কাছে বড় বড় বদ ডাকাত গুলিই প্রধান্য পায়, তথাকথিত 'গণতন্ত্রের' নামে চলে সন্ত্রাসীদের একনায়কতন্ত্র যার সাথে জনকল্যানমূখী গণতন্ত্রের কোনো দূরতম সম্পর্কও নাই। সুতরাং দেশ ও দশের উপর এই অপরাজনৈতিক ধর্ষন চলছে আর চলতেই থাকছে, যতদিন না সংশ্লিষ্টজনদের সৎ-দেশপ্রেম উদয় হয়।
জনৈক ব্যক্তি লিখেছেন "আমি চরম ভাবেই কথিত সভ্যতার এই বিবর্তন কে ঘৃণা করি" - আসলেই্তো ঘৃণ্য বিষয়কে ঘৃণা করবেনই না বা কেনো। আজ পর্যন্ত এমনতো কখনো শোনা যায়নি যে, সাধ করে কেউ বেশ্যা হয়েছে, বরং সমাজ-পরিবেশ-পরিস্থিতি তাকে বেশ্যা বানিয়ে ঐ অবস্থায় ধরে রেখেছে। . . . . বেশ বোঝা যাচ্ছে যে, আপনি দেখিয়া-শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছেন। যে কোনো সৎ-মুসলমানের জন্য ক্ষেপার মত বিষয়ইতো বটে, . . . !!
কিন্তু কেনো "এই মানুষগুলি ঐ রকম করছে" ??
এগুলি আসলে কেয়ামতের আলামত মাত্র। এরকম না হলে তো আর কেয়ামত ঘনিয়ে আসতে পারছে না !!
যেমন ধরুন যে, ইসলামে স্বেচ্ছায় নামাজ (সালাত) ত্যাগকারী নিজেকে মুসলমান দাবি করতে পারে না - নিজেকে মুসলমান করতে ঈমান (বিশ্বাস) আনার পাশাপাশি আমল (সৎ কাজ) করাও জরুরী। অথচ আজ সমাজে কুশিক্ষার অবাধ প্রচার আর অনৈতিক-অপসংষ্কৃতির বহুল প্রসারের ফলে বেশিরভাগ মুসলমানই নামেমাত্র মুসলমান, তারা অনেকেই ইসলামকে জানতে-বুঝতে-পালন করতে চায় "ইসলাম বিরোধী অমুসলমানদের" মত করে, ফলে আচার-আচরন-বিশ্বাসে তারা যে কোনো অমুসলমানেরই সমতুল্য।
সৎ-মুসলমান দাবিদার হিসাবে আমার-আপনার দ্বায়িত্ত্ব ছিলো মানব সমাজকে ইসলামের পক্ষে ইতিবাচক ভাবে গড়ে তোলা, কিন্তু আমরা তা পারিনি, আমাদেরই ব্যর্থতা। (মহান আল্লাহ আমাদেরকে যেনো মাফ করেন, আমীন।)
আমাদের এই সমাজে আজ নামধারী মুসমানের আধিক্য, যারা আসলে ইসলামকে ঘৃণাই করে। আজ এই দেশে মিথ্যাচার-সুদ-ঘুষ-জুয়া-লাম্পট্য-দ্শ্যুতার-ই জয়জয়াকার। কারন হিসাবে বলা যায় মানুষের লোভ-হিংসা-অসততার আবাধ বিকাশ। আর এর পিছনে রয়েছে সমাজে কুশিক্ষার প্রচার, অনৈতিকতার প্রসার আর সৎ-ধর্মহীনতার অভাব।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
বিষয়: বিবিধ
২৪০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন