এমন মুফতির দরকার কি

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ আবু তাহের ০৫ জুন, ২০১৫, ০৮:২৬:০১ রাত

এইতো সেদিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন মুফতি ফতোয়া দিলেন যে, চেয়ারে বসে নামাজ পড়া জায়েজ নয়। পেপারে ফলাও করে সেটা ছাপাও হলো। বোধ করি মুফতি সাহেবের বুকের ছাতি হাত খানেক বেড়ে গিয়েছিল। পরের দিন পত্রিকায় দেখলাম যে সেই ফতোয়া নিয়ে নাকি তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।

আমি পত্রিকায় আসা সেই ফতোয়ার পূর্ণ বিবরণটা পড়েছি, মনে হয় আপনারাও পড়েছেন। মুফতি সাহেব চেয়ারে বসে নামাজ না পড়ার ব্যাপারে যে সব যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন সেগুলোকে আমার তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও এবং কারনগুলো যুক্তিযুক্ত মনে না হলেও তো সেই ফতোয়াটি এসেছে ইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা থেকে! অনেকের নিকট থেকে এর পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা শুনলাম কিন্তু মুফতি সাহেবের সেই ফতোয়ায় সকলে একমত হতে পারছিলেন না। আর এটাই স্বাভাবিক যে এক বিষয়ে সবাই একমত নাও হতে পারেন।

মজার বিষয় হলো, কেউ কেউ রসিকতা করে বলতে লাগলেন যে, যেখানে শামীম মোঃ আফজাল আছেন সেখানকার ফতোয়া আর কিই বা হতে পারে। বিষয়টাকে সেদিন তেমন গুরুত্ব না দিলেও বিপত্তি ঘটলো তার পরের দিন।

মিডিয়ার কল্যাণে দেখলাম যে, মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক চলছে আর সেই বৈঠকের এক পর্যায়ে ইফার সেই ফতোয়ার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আর তার পরের দিনই ঘটলো সেই ঘটনাটা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাদের প্যাডে এই বিবৃতি মিডিয়ায় পাঠালো যে, ফতোয়াটি ঐ মুফতির নিজস্ব ব্যাপার, এর সাথে ইফার কোন প্রকার সম্পর্ক নাই! আরও আশ্চর্য হলাম তখন, যখন দেখলাম যে, যেই মুফতি সাহেব ফতোয়াটি দিয়েছেন তিনি এই ব্যাপারে আর টু শব্দটি পর্যন্ত করলেন না! তার মানে কি এই যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগেই ইফার মুফতি কুপোকাত!

মুফতি সাহেবের ফতোয়া ‌''ঠিক'' এটা যদি তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন তাহলে তো তিনি ইফার পরের সিদ্ধান্ত জানার সাথে সাথেই সেখান থেকে পদত্যাগ করতেন আর বলতেন যে, যে যাই বলুক এই ফতোয়ার ব্যাপারে আমি অটল। আর যদি ভুল মনে করে থাকতেন তাহলে মিডিয়ার মাধ্যমে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বা ভুল স্বিকার করে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি না অটল থাকলেন আর না ক্ষমা চাইলেন বা সেখান থেকে সরে আসলেন!

এখন সাধারণ মানুষ কি ধরে নিবে। ধরে নিবে এই যে, প্রধানমন্ত্রীর কথায় ফতোয়াও চেঞ্জ হয়! প্রধানমন্ত্রী কি সেই মুফতির চেয়েও বড় মুফতি। নাকি মুফতি সাহেব শুধু চাকরি বা গোলামি করার জন্যই ইফাতে আছেন এটা সেই মুফতি মহোদয়ের কাছে জানতে খুব ইচ্ছে করছে।

প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েই যদি ফতোয়ার কাজ হয় তাহলে এই সব সার্টিফিকেটধারী মুফতি মাওলানাদের এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকার দরকারই বা কি। নাকি তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সকল কাজকে ''ইসলামের আলোকে" বৈধতা দেওয়ার জন্যই সেখানে বসে আছেন!

বিষয়: বিবিধ

১০৫৯ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

324887
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৮:২৯
বাংলাদেশ টাইমস্ লিখেছেন : পিলাচ
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৮:৪৯
266867
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
324898
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৯:১১
ছালসাবিল লিখেছেন : আচ্ছা ভাইয়া, প্রধানমন্ত্রী কি চেয়ারে বসে নামাজ পরে Day Dreaming নাহলে এই ফতয়াতে ভিতি কিসের Day Dreaming চিন্তা লাগছে Smug Smug নিজের সুবিধা কে না বোঝে Time Out Give Up Catch
১২ জুন ২০১৫ সকাল ১১:০২
267367
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : আমারও তেমনটিই মনে হচ্ছে
324902
০৫ জুন ২০১৫ রাত ০৯:১৮
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১২ জুন ২০১৫ সকাল ১১:০২
267368
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
324956
০৬ জুন ২০১৫ সকাল ০৮:২৬
শেখের পোলা লিখেছেন : এটি আওয়ামী গননতন্ত্র যেখানে সরকারী আদেশে মসিদের আজান বন্ধ হয়৷ কোর্টের রায়, বিনা বিচারে মানুষ মারার লাইসেন্স দেওয়া হয়৷ সেখানে ফতোয়া কোন ব্যাপার নয়৷ আর ইফা! যেখানে ইমামদের খ্যামটা নাচ দেখানো হয়৷ সেখানে আর কি আশা করেন?
১২ জুন ২০১৫ সকাল ১১:০৩
267369
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : সহমত
325031
১০ জুন ২০১৫ বিকাল ০৫:৫৪
সাদাচোখে লিখেছেন : যথার্থ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। কিন্তু লা জবাব।

ইয়াহুদী রাবাইদের একাংশ - ঠিক যা করতো বলে কোরআন ও হাদীস উল্লেখ রয়েছে - অধুনা মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ভূখন্ডে তার বিস্তার ও প্রসার আরো মজবুত হয়েছে এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশানের মত এমনতর অথরিটিটিভ জায়গায় শিকড় গেড়ে বসেছে।

ফলাফল হল এই যে আজকের মুসলিমরা বানের জলে ভাঁসা খড়কুটায় পরিনত হয়েছি, আলটিমেট স্লেইভ এ পরিনত হয়েছি, নিজের জিহ্বা দিয়ে কাফের মুশরিক ও জায়োনিস্টদের জুতা পরিষ্কার করে জীবন যাপন করছি আর ঐ সব মুফতিরা কোরান ও হাদীস বিক্রি করে খাচ্ছে ও খাওয়াচ্ছে।
১২ জুন ২০১৫ সকাল ১১:০৪
267370
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : যথার্থই বলেছেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File