নামাজে জোরে আমীন বলা ও প্রতি রুকনে দুই হাত উঠানো নিয়ে কিছু কথা।
লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ২২ মার্চ, ২০১৪, ০২:১৫:৫৪ দুপুর
রাসূল সা: এর নামাজ
ড. শাইখ মুহাম্মাদ ইলিয়াস ফয়সাল দামাত বারকাতুহুম- তাঁর একটি বই- নবীজীর নামায এ উল্লেখ করেন- ইবনে কাসীরে রয়েছে- লোকেরা উচ্চ আওয়াজে দুআ করল। তখন রাসূল সা: তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে লোক সকল! আস্তে। তোমরা এমন কাউকে ডাকছ না যিনি শোনেন না কিংবা তোমাদের থেকে দূরে রয়েছেন। তোমরা যাকে ডাকছ তিনি সকল কথা শোনেন এবং অতি নিকটে রয়েছেন।” আমীন হল- দুআ। উচ্চস্বরে দুআকারীকে রাসুল সা: বারণ করেছেন। যেহেতু আল্লাহ তায়ালা সকল আওয়াজ শুনেন এবং সবার নিকট রয়েছেন সেহেতু আমীন অনুচ্চ স্বরে বলা উচিত। কেননা এটিই আল্রাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট পছন্দনীয়।
কুরআনের দলীল- তোমার পালনকর্তাকে স্মরণ করবে মনে মনে, সকাতর ও সশঙ্কচিত্তে, অনুচ্চ স্বরে, প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় এবং তুমি উদাসীন হবে না। সূরা আরাফ- আয়াত 205
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বললেন- আমি কি তোমাদের নিয়ে রাসুল সা: এর নামাযের মতো নামায আদায় করব না? এরপর তিনি নামায পড়লেন এবং শুধু নামাযের শুরুতে রাফয়ে ইয়াদাইন করলেন। - জামে তিরমিজী-1/35
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রা: বলেন- “একদিন রাসুল সা: আমাদের কাছে তাশরীফ আনলেন্ এবং বললেন- কী ব্যাপার, আমি তোমাদের হাত ওঠাতে কেন দেখি যেন তা বেয়াড়া ঘোড়ার উর্ধ্বে উত্থিত লেজ! তোমরা নামাযে স্থির থাকবে।” সহীহ মুসলিম-1/181।
হযরত জাবির রা: অপর এক বর্ণনায় উল্লেখ করেন- “তোমরা তোমাদের হাতগুলো দ্বারা কীসের ইঙ্গিত কর যেন সেগুলো বেয়াড়া ঘোড়ার উর্ধ্বে উত্থিত লেজ। তোমাদের করণীয় কেবল এ টুকু যে, উরুর উপর হাত রাখবে অত:পর ডানে বামে উপবিষ্ট ভাইদের সালাম দিবে।”
তৃতীয় দলিল: আসওয়াদ রহ: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- আমি হযরত উমর রা: কে দেখেছি, তিনি শুধু প্রথম তাকবীরের সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন, পরে করতেন না। (তহাবী-1/164)
চতুর্থ দলিল: আসিম ইবনে কুলাইব রহ: তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন- হযরত আলী রা: নামাযে প্রথম তাকবীরে হাত উঠাতেন এরপর আর হাত উঠাতেন না। (সুনানে বায়হাকী-2/80)
পঞ্চম দলিল: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: এর আমল সম্পর্কে মুজাহিদ রহ: বলেন- আমি আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: এর পিছনে নামায পড়েছি। তিনি প্রথম তাকবীর ছাড়া অন্য সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন না। ( তহাবী-1/163)
ষষ্ঠ দলিল: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: এর আমল- আসওয়াদ রহ: বলেন- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: শুধু প্রথম তাকবীরের সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন, এরপর আর করতেন না। ( জামিউল মাসানীদ)
লা মাযহাবীদের এক মুরুব্বীর নাম- নওয়াব সিদ্দীক হাসান রহ: তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে নিজের দলের সম্পর্কে এভাবে অনুভূতি পেশ করেন- ইমাম গাযালী রহ: একবার যায়েদ ইবনে আহমদের মজলিসে উপস্থিত হয়ে এই হাদীসটি শুনতে পান- “পূর্ণাঙ্গ মুসলিমের নিদর্শন হল অহেতুক বিষয়াদি পরিহার করা”। হাদীসটি শুনে তিনি বলে উঠলেন- “আপাতত এই হাদীসটিই আমার জন্য যথেষ্ট।”।
এটা ছিল সে সময়ের মনীষীদের অবস্থা, কিন্ত বর্তমান সময়ের মূর্খ লোকগুলোর হাদীস চর্চার সার কথাই হল মুজতাহিদ ইমাম গণের মধ্যে যে সব বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে তার মধ্যে থেকে ইবাদত সংক্রান্ত কিছু হাদীস নির্বাচন করা আর দৈনন্দিন জীবনের অন্য সব বিষয়কে একদম পরিত্যাগ করা।
আর তাদের হাদীস অনুসরণের অর্থ হল ইমামগণের মধ্যে মতভেদপূর্ণ সেই মাসআলাগুলোকে কেন্দ্র করে দ্বন্ধ ও বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়া।
বলাবাহুল্য যে, এসব লোক আহলে হাদীসের প্রকৃত পথ থেকে বিচ্যুত। লেনদেন বিষয়ক হাদীস সমূহের কিছু মাত্র ধারণাও এদের নেই। তাদের জ্ঞান গরীমার অবস্থা এই যে, হাদীস শাস্ত্রের নীতিমালা অনুযায়ী একটি মাসআলাও হাদীস থেকে বের করতে সক্ষম নয়। ফলে হাদীস অনুযায়ী চলার তৌফিক তাদের নসীব হয়না।
আর হবেই বা কিভাবে? এরা তো শয়তানের কূমন্ত্রণা ও চক্রান্তের কারণে হাদীস অনুযায়ী চলার পরিবর্তে শুধু ( আহলে হাদীস ) হওয়ার মৌখিক দাবীতেই ক্ষ্যান্ত থাকে। তাদের ধারণায় প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ দ্বীন এটুকুই। এরা যেন মুসলিম জাতির পশ্চাৎপদ দল সমূহের সঙ্গে পিছনেই থাকতে চায়।আমি বহুবার এদেরকে পরীক্ষা করে দেখেছি এদের ছোট বড় সবারই এক অবস্থা। তাদের কাউকেই আমি দেখিনি যে ন্যায় নিষ্ট্ মুসলমানদের পথ অনুসরণ করতে কিংবা মূল্যবান লোকদের অনুগামী হতে আগ্রহী। বরং তাদেরকে দেখেছি দুনিয়ার ধন সম্পদ সংগ্রহের পিছনে মগ্ন থাকতে এবং পদ পদবীর জন্য লোভাতুর হতে।
হালাল হারামের কোন ভেদাভেদ এদের মধ্যে নেই। ইসলামের নিষ্টতা থেকে হৃদয় এদের শূন্য। স্বল্প বুদ্ধি ও অবাধ্যচারী মানুষের মতো এরাও মুসলিম উম্মাহর সমস্যা ও সম্ভাবনার ব্যাপারে অতিশয় নির্লিপ্ত।
...অসমাপ্ত।
বিষয়: বিবিধ
৭৮৫৩ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 744
نِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِينَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ". وَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " آمِينَ ".
৭৪৪ - আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন তোমারও ‘আমীন’ বলো। কেননা, যারা ‘আমীন’ (বলা) ও ফিরিশতাদের ‘আমীন’ (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, রাসূল ﷺ ও ‘আমীন’ বলতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি (ইফা)
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 745
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَالَ أَحَدُكُمْ آمِينَ. وَقَالَتِ الْمَلاَئِكَةُ فِي السَّمَاءِ آمِينَ. فَوَافَقَتْ إِحْدَاهُمَا الأُخْرَى، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ".
৭৪৫ - আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ যকন তোমাদের কেউ (সালাত (নামায)) ‘আমীন’ বলে, আর আসমানে ফিরিশতাগণ ‘আমীন’ বলেন এবং উভয়ের ‘আমীন’ একই সময় হলে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি (ইফা)
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 746
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا قَالَ الإِمَامُ {غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ} فَقُولُوا آمِينَ. فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ". تَابَعَهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنُعَيْمٌ الْمُجْمِرُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه.
৭৪৬ - আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ ইমাম ‘গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ’ পড়লে তোমরা ‘আমীন’ বলো। কেননা, যার এ (আমীন) বলা ফিরিশতাদের (আমীন) বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। মুহাম্মাদ ইবনু আমর (রহঃ) সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর মাধ্যমে নাবী ﷺ থেকে এবং নু’আইম- মুজমির (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় সুমাই (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সুনানে নাসাঈ
অধ্যায়ঃ ৯/ সালাত আরম্ভ করা | হাদিস নাম্বার: 933
৯৩৩। কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আমীন বলে, আর ফেরেশতারাও আকাশে আমীন বলেন, তখন যদি একটির সাথে অপরটির মিল হয় তবে তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করা হয়।
কুরআনের যে আয়াতটি দিলেন সেটির তাৎপর্য আপনি বুঝতে সক্ষম হননি বলে আমি মনে করি।
যারা চুপে চুপে আমিন বলেন এবং রাফয়ে ইয়াদাইন করেননা তাদের অনেককে দেখি জিকির এর নামে উচ্চস্বরে আওয়াজ করে। কুরআনের এ আয়াতে এসব বিদয়াতী কর্মকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আমীন বলতে সময় লাগে মাত্র ১ সেকেন্ড। আপনার যুক্তিমত তাহলে কি ফরজ নামাযে জোরে কিরায়াত পড়া নাজায়েজ?
আপনার বর্ণিত হাদীসগুলি মোটেও চুপে চুপে আমিন বলা এবং রাফেয়ে ইয়াদাইন এর বিপক্ষে শক্ত যুক্তি নয়। এছাড়া ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের পরিবর্তে অবজ্ঞা ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য স্পষ্ট।
এবার আমি কয়টি রেফারেন্স দিচ্ছি।
রুকূতে যাওয়া ও রুকূ হ’তে ওঠার সময় ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ করা সম্পর্কে চার খলীফা সহ প্রায় ২৫ জন ছাহাবী থেকে বর্ণিত ছহীহ হাদীছ সমূহ রয়েছে। একটি হিসাব মতে ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’-এর হাদীছের রাবী সংখ্যা ‘আশারায়ে মুবাশ্শারাহ’[95] সহ অন্যূন ৫০ জন ছাহাবী[96] এবং সর্বমোট ছহীহ হাদীছ ও আছারের সংখ্যা অন্যূন চার শত। [97] ইমাম সুয়ূত্বী ও আলবানী প্রমুখ বিদ্বানগণ ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ -এর হাদীছকে ‘মুতাওয়াতির’ (যা ব্যাপকভাবে ও অবিরত ধারায় বর্ণিত) পর্যায়ের বলে মন্তব্য করেছেন।[98] ইমাম বুখারী বলেন,
لَمْ يَثْبُتْ عَنْ أَحَدٍ مِّنْهُمْ تَرْكُهُ. و قَالَ : لاَ أَسَانِيْدَ أَصَحُّ مِنْ أَسَانِيْدِ الرَّفْعِ-
অর্থাৎ কোন ছাহাবী রাফ‘উল ইয়াদায়েন তরক করেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি। তিনি আরও বলেন ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’-এর হাদীছ সমূহের সনদের চেয়ে বিশুদ্ধতম সনদ আর নেই’। [99] রাফ‘উল ইয়াদায়েন সম্পর্কে প্রসিদ্ধতম হাদীছ সমূহের কয়েকটি নিম্নরূপঃ
(১) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন,
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكَبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوْعِ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوْعِ… مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ، وفي رِوَايةٍ عنه: وَ إِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ…. رواه البخاريُّ-
‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাতের শুরুতে, রুকূতে যাওয়াকালীন ও রুকূ হ’তে ওঠাকালীন সময়ে….. এবং ২য় রাক‘আত থেকে উঠে দাঁড়াবার সময় ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ করতেন’। [100] হাদীছটি বায়হাক্বীতে বর্ধিতভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, فََمَا زَالَتْ تِلْكَ صَلاَتُهُ حَتَّي لَقِيَ اللهَ تَعَالَي- ‘এভাবেই তাঁর ছালাত জারি ছিল, যতদিন না তিনি আল্লাহর সাথে মিলিত হন’। অর্থাৎ আমৃত্যু তিনি রাফ‘উল ইয়াদায়েন সহ ছালাত আদায় করেছেন।
(২) মালিক ইবনুল হুওয়াইরিছ (রাঃ) বলেন,
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا كَبَّرَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا أُذُنَيْهِ، وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا أُذُنَيْهِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوْعِ فَقَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ، رواه مسلمٌ-
‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন ছালাতের জন্য ‘তাকবীরে তাহরীমা’ দিতেন, তখন হাত দু’টি স্বীয় দুই কান পর্যন্ত উঠাতেন। অতঃপর রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে উঠার সময় তিনি অনুরূপ করতেন এবং ‘সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’ বলতেন’।
أَلاَ أُصَلِّيْ بِكُمْ صَلاَةَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَصَلَّى وَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ مَرَّةً وَاحِدَةً مَعَ تَكْبِيْرَةِ الْاِفْتِتَاحِ، رواه الترمذىُّ وابوداؤدَ-
‘আমি কি তোমাদের নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত আদায় করব না? এই বলে তিনি ছালাত আদায় করেন। কিন্তু তাকবীরে তাহরীমার সময় একবার ব্যতীত অন্য সময় আর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করলেন না’।[103] উক্ত হাদীছ সম্পর্কে ইবনু হিববান বলেন,
هَذَا أَحْسَنُ خَبَرٍ رَوَى أَهْلُ الْكُوْفَةِ فِي نَفْيِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ عِنْدَ الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ الرَّفْعِ مِنْهُ، وَهُوَ فِي الْحَقِيْقَةِ أَضْعَفُ شَيْءٍ يُعَوَّلُ عَلَيْهِ، لِأَنَّ لَهُ عِلَلاً تُبْطِلُهُ-
‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে কূফাবাসীদের এটিই সবচেয়ে বড় দলীল হ’লেও এটিই সবচেয়ে দুর্বলতম দলীল, যার উপরে নির্ভর করা হয়েছে। কেননা এর মধ্যে এমন সব বিষয় রয়েছে, যা একে বাতিল গণ্য করে’।[104]
শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটিকে ছহীহ মেনে নিলেও তা ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ -এর পক্ষে বর্ণিত ছহীহ হাদীছ সমূহের বিপরীতে পেশ করা যাবে না। কেননা لأنه نافٍ وتلك مُثْبِتَةٌ ومن المقرَّر في علم الأصول أن المثبتَ مقدَّمٌ علي النافي- ‘এটি না-বোধক এবং ঐগুলি হাঁ-বোধক। ইলমে হাদীছ-এর মূলনীতি অনুযায়ী হাঁ-বোধক হাদীছ না-বোধক হাদীছের উপর অগ্রাধিকার যোগ্য’।[105]
শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী বলেন,وَالَّذِيْ يَرْفَعُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّنْ لاَّ يَرْفَعُ ، فَإِنَّ أَحَادِيْثَ الرَّفْعِ أَكْثَرُ وَأَثْبَتُ- ‘যে মুছল্লী রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে, ঐ মুছল্লী আমার নিকট অধিক প্রিয় ঐ মুছল্লীর চাইতে, যে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে না। কেননা রাফ‘উল ইয়াদায়েন-এর হাদীছ সংখ্যায় বেশী ও অধিকতর মযবুত’।[106]
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 767
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، كَانَ يُكَبِّرُ فِي كُلِّ صَلاَةٍ مِنَ الْمَكْتُوبَةِ وَغَيْرِهَا فِي رَمَضَانَ وَغَيْرِهِ، فَيُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْكَعُ، ثُمَّ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. ثُمَّ يَقُولُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ، ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ. حِينَ يَهْوِي سَاجِدًا، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَسْجُدُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ مِنَ الْجُلُوسِ فِي الاِثْنَتَيْنِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ حَتَّى يَفْرُغَ مِنَ الصَّلاَةِ، ثُمَّ يَقُولُ حِينَ يَنْصَرِفُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَقْرَبُكُمْ شَبَهًا بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَتْ هَذِهِ لَصَلاَتَهُ حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا. قَالاَ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. يَدْعُو لِرِجَالٍ فَيُسَمِّيهِمْ بِأَسْمَائِهِمْ فَيَقُولُ " اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ، وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ، اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ ". وَأَهْلُ الْمَشْرِقِ يَوْمَئِذٍ مِنْ مُضَرَ مُخَالِفُونَ لَهُ.
৭৬৭ - আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ বকর ইবনু আবদুর রাহমান (রহঃ) ও আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) রামযান মাসের সালাত (নামায) বা অন্য কোন সময়ের সালাত (নামায) ফরয হোক বা অন্য কোন সালাত (নামায) হোক, দাঁড়িয়ে শুরু করার সময় তাকবীর বলতেন, আবার রুকূ’তে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। তারপর (রুকূ’ থেকে উঠার সময়) ‘সামিয়াল্লাহু লেমান হামিদাহ’ বলতেন, সিজদায় যাওয়ার পূর্বে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বলতেন। তারপর সিজদার জন্য অবনত হওয়ার সময় আলআহু আকবার বলতেন। আবার সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। এরপর (দ্বিতীয়) সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন এবং সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। দু’ রাকাআত আয়ায় করে দাঁড়ানোর সময় আবার তাকবীর বলতেন। সালাত (নামায) শেষ করা পর্যন্ত প্রতি রাকআতে এইরূপ করতেন। সালাত (নামায) শেষে তিনি বলতেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমাদের মধ্য থেকে আমার সালাত (নামায) রাসূল ﷺ এর সালাত (নামায)-এর সাথে অধিক সা’দৃশ্যপূর্ণ। দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত নাবী ﷺ এর সালাত (নামায) এরূপই ছিল। উভয় বর্ণনাকারী (আবূ বকর ইবনু আবদুর রহমান ও আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূল ﷺ যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন ‘সামিয়াল্লাহু লেমান হামিদা, রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বলতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের জন্য দু’আ করতেন। দু’আয় তিনি বলতেন, ইয়া আ্লাহ্! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদ, সালামা ইবনু হিশাম, আইয়্যাস ইবনু আবূ রাবী’আ (রাঃ) এবং অপরাপর দুর্বল মুসলমাদেরকে রক্ষা করুন। ইয়া আল্লাহ্! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যুগে যেমন খাদ্য সংকট ছিল তাদের জন্যও অনুরূপ খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন। (রাবী বলেন) এ যুগে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নাবী ﷺ এর বিরোধী ছিল।
আতা (রঃ) বলেন, আমীন হল দু’আ। তিনি আরো বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) ও তার পিছনের মুসল্লীগণ এমনভাবে আমীন বলতেন যে মসজিদে গুমগুম আওয়াজ হতো। আবু হুরায়রা (রাঃ) ইমামকে ডেকে বলতেন, আমাকে আমীন বলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবেন না। নাফি(রঃ)বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) কখনই আমীন বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদের (আমীন বলার জন্য)উৎসাহিত করতেন। আমি তাঁর কাছ থেকে এ সম্পর্কে হাদিস শ্তনেছি । ( সহীহ বুখারী,২য় খন্ড, অনুচ্ছেদ-৫০২, পৃষ্ঠা নং ১২০ ও ১২১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।)
রফুলইয়াদাইন না করার এক হাদিস নিয়ে আসছে অথচ তা স্পস্ট ভাবে বলছে “সালাম ফিরানোর সময় হাত না দেখাতে”
তারাই এর স্পস্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেখেন “উরুর উপর হাত রাখবে অত:পর ডানে বামে উপবিষ্ট ভাইদের সালাম দিবে।” এই হাদিস দিয়ে তারা রফউল ইয়াদাইন বন্দ করতে চায়। অথচ স্পস্ট হাদিস আছে সকল হাদীসের গ্রন্থে রফউল ইয়াদাইন সম্মন্ধ্যে।
তাই বলতে চাই “এনারা আল্লাহ ও তার রসুলের (সা) নুরকে ফুতকারের মাধ্যমে নিভেয়ে দিতে চায়” কিন্তু তা কখনো সম্ভব নয়।
বরং এদের দারা আল্লাহ আরো অনেককে ভ্রান্ত পথ থেকে কোরআন ও সহীহ হাদিসের সঠিক পথে নিয়ে আসবেন ইনশাআল্লাহ।
তাই এই নাওয়াইতুবিদআতি দের থেকে দুরে থাকাই ভাল।
আর এনারা শুধু কপিপেস্ট করেন সাধারনত নিজেরা কখনো দেখেন না হাদীসের গ্রন্থ গুলোতে কি বলা আছে। এনারা বেশির ভাগ সময় জামিআতুল ফ্যাসাদ থেকে কপিপেস্ট মারে।
“তাই বলতে চাই “এনারা আল্লাহ ও তার রসুলের (সা) নুরকে ফুতকারের মাধ্যমে নিভেয়ে দিতে চায়” কিন্তু তা কখনো সম্ভব নয়।” আপনার এই কথার মধ্যে কারা অন্তর্ভূক্ত? যারা মাযহাব মানেনা নাকি যারা মানে!
Click this link
Click this link
http://jamiatulasad.com/?p=2174
http://jamiatulasad.com/?p=2198
http://jamiatulasad.com/?p=2202
http://jamiatulasad.com/?p=1389
http://jamiatulasad.com/?p=1551
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6461/asksumon/40836#193459
=========
মাকতুবাত আশরাফ থেকে প্রকাশিত সলাত সম্পর্কিত প্রামাণ্য গ্রন্থটি বির্তক মুক্ত নয়। সেখানে এমন বিষয়সমূহ আছে যা নিোয় মুহাদ্দিসগণ বির্তক করেছেন।
===============
সব মিলিয়ে আপনার লিখাটি আমার ভালো লেগে। কিন্তু আহলে হাদিস সম্পর্কে যা বললেন মনে হলো তাহা সংশোধন উদ্দেশ্য নয় বরং বিদ্বেষ উদ্দেশ্য। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সহনশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন।
তবে হ্যা। কেউ না মানলে যে তার সাথে যুদ্ধ করতে হবে এটা নিশ্চই মুর্খামি। তবে তাওহীদের ক্ষেত্রে নয়।
এজন্য আমার কিছু জিজ্ঞাসা।
সাহাবীরা মাযহাব অনুসরণ করেননি, তাবেয়ীরা করেননি। তাঁরা কি সঠিক পথে ছিলেননা?
একটা সিম্পল বিষয় মনে রাখবেন। সকল বিতর্কের উর্ধে্ব একমাত্র আল কুরআন। একমাত্র আল কুরআনই নির্ভূল জ্ঞানের একমাত্র উৎস।
এরপর ক্রমান্বয়ে হাদীস ও অন্যান্য।
হাদীসের কোনো বক্তব্য কুরআন এর বক্তব্যকে ভায়োলেট করতে পারবেনা। এমন কোনো হাদীস পাওয়া গেলে বুঝতে হবে সেটা সহীহ হাদীস নয়। হাদীস বিকৃতির কারণে এটা ঘটেছে।
যেমন- আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটা হাদীস(দূর্বল সনদের)হচ্ছে এমনঃ অন্তরের কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিহাদ।
অথচ কুরআনে জিহাদ এর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এবং জিহাদকে ফরয করা হয়েছে। উক্ত হাদীস(??) যেহেতু কুরআনের মূলনীতিকে লংঘন করেছে সেহেতু অবশ্যই তা বাতিলযোগ্য।
একইভাবে মাযহাবের কোনো বক্তব্য সহীহ হাদীস এর বিরুদ্ধে গেলে সেটা বাতিল করতে হবে অবশ্যই। আপনি ততক্ষণ মাযহাব মানুন যতক্ষণ সেটা কুরআন হাদীস সমর্থিত।
ইমাম আবু হানীফা স্বয়ং বলেছেনঃ আমার কোনো বক্তব্য সুন্নাহ বিরোধী পেলে সেটা তোমরা ছুঁড়ে ফেলে দিও।
হানাফী মাযহাব অনুযায়ী, সারাবিশ্বে একই দিন রোজা ঈদ ফরজ? আমরা কি সেটা মানি?
আপনার সুচিন্তিত জবাবের অপেক্ষায় রইলাম। আমি আপনার শুভাকাঙ্খী। চিনতে পেরেছেন হয়তো।
এজন্য আমার কিছু জিজ্ঞাসা।
সাহাবীরা মাযহাব অনুসরণ করেননি, তাবেয়ীরা করেননি। তাঁরা কি সঠিক পথে ছিলেননা?
একটা সিম্পল বিষয় মনে রাখবেন। সকল বিতর্কের উর্ধে্ব একমাত্র আল কুরআন। একমাত্র আল কুরআনই নির্ভূল জ্ঞানের একমাত্র উৎস।
এরপর ক্রমান্বয়ে হাদীস ও অন্যান্য।
হাদীসের কোনো বক্তব্য কুরআন এর বক্তব্যকে ভায়োলেট করতে পারবেনা। এমন কোনো হাদীস পাওয়া গেলে বুঝতে হবে সেটা সহীহ হাদীস নয়। হাদীস বিকৃতির কারণে এটা ঘটেছে।
যেমন- আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটা হাদীস(দূর্বল সনদের)হচ্ছে এমনঃ অন্তরের কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিহাদ।
অথচ কুরআনে জিহাদ এর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এবং জিহাদকে ফরয করা হয়েছে। উক্ত হাদীস(??) যেহেতু কুরআনের মূলনীতিকে লংঘন করেছে সেহেতু অবশ্যই তা বাতিলযোগ্য।
একইভাবে মাযহাবের কোনো বক্তব্য সহীহ হাদীস এর বিরুদ্ধে গেলে সেটা বাতিল করতে হবে অবশ্যই। আপনি ততক্ষণ মাযহাব মানুন যতক্ষণ সেটা কুরআন হাদীস সমর্থিত।
ইমাম আবু হানীফা স্বয়ং বলেছেনঃ আমার কোনো বক্তব্য সুন্নাহ বিরোধী পেলে সেটা তোমরা ছুঁড়ে ফেলে দিও।
হানাফী মাযহাব অনুযায়ী, সারাবিশ্বে একই দিন রোজা ঈদ ফরজ? আমরা কি সেটা মানি?
আপনার সুচিন্তিত জবাবের অপেক্ষায় রইলাম। আমি আপনার শুভাকাঙ্খী। চিনতে পেরেছেন হয়তো।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য করতে হবে যে, তিনি কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন এবং কী বলেছেন। ইমামগণ তাদের ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমরাও গবেষণা করো। শুধুমাত্র আমার কথার উপর নির্ভর করো না। সুতরাং যারা সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা বের করতে পারে না অর্থাৎ যারা মুজতাহিদ নয়, তাদের জন্য এ কথাকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করাটা নিতান্তই বোকামী।
قال ابو داود: قلت لأحمد: " الأوزاعي اتبع أم مالكا؟ قال: " لا تقلد دينك أحدا من هؤلاء!! ما جاء عن النبي فخذ به "
যেমন ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি ইমাম মালেককে অনুসরণ করবো না কি ইমাম আওযায়ীকে? ইমাম আহমাদ (রহঃ) উত্তর দিলেন," لا تقلد دينك أحدا من هؤلاء!! ما جاء عن النبي فخذ به "
“দ্বীনের ব্যাপারে এদের কারও অনুসরণ করো না। হুজুর (সঃ) থেকে যা কিছু এসেছে, সেগুলি গ্রহণ করো”[ই’লামুল মুওয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহঃ), খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২০০]
আল্লামা মাইমুনী (রহঃ) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) আমাকে বলেছেন,يا أبا الحسن ! إياك أن تتكلم في مسألة ليس لك فيه إمام
“হে আবুল হাসান! যে মাসআলায় তোমার কোন ইমাম নেই, সে মাসআলায় সম্পর্কে কিছু বলা থেকে বিরত থাক।
আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে-من تكلم في شيء ليس له فيه إمام أخاف عليه الخطأ“যে ব্যক্তি এমন বিষয়ে কথা বলল, যে বিষয়ে তার কোন ইমাম নেই, তবে আমি তার ভুল করার ব্যাপারে ভয় করছি” [আল-ফুরু, আল্লামা ইবনে মুফলিহ্ (রহঃ), খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮০]إنما هو يعني العلم ما جاء من فوق হযরত আছরম (রহঃ) বলেন-ইমাম মালেক (রহঃ) পূর্ববর্তীদের থেকে বর্ণিত ইলমকেই ইলম বলতেন” [আল-আদাবুশ শরইয়্যাহ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৬২]এ সমস্ত বক্তব্য থেকে সুস্পষ্ট যে, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) তাঁর এক ছাত্রকে বলছেন, কারও অনুসরণ করে না, সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করো, আরেকজনকে বলছেন, কোন ইমামের অনুসরণ ব্যতীত কোন মাসআলা প্রদান করো না। তবে কি তিনি স্ববিরোধীতার আশ্রয় নিয়েছেন? কখনও নয়। বরং তিনি যে ইজতেহাদের যোগ্য, যে সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসআলা বের করতে সক্ষম তাকে বলেছেন, তুমি কাউকে অনুসরণ করো না, সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করো। অথচ বর্তমান সময়ে মাসআলা বের করা তো দূরে থাক, শরীয়তের ইলমের ক্ষেত্রে যার অবস্থান পাতালে, সে নিজেকে মনে করে যে, সে ছুরাইয়্যা তারকার উপর রয়েছে।
ইমাম মালেক (রহঃ) এর নিচের উক্তিটি লক্ষ্য করুন!عن خلف بن عمرو قال سمعت مالك بن أنس يقول: ما أجبت في الفتيا حتي سألت من هو أعلم مني هل يراني موضعا لذلك، سألت ربيعة و سألت يحي بن سعيد، فأمراني بذلك فقلت له: يا أبا عبد الله! فلو نهوك؟ قال : كنت أنتهي ، لا ينبغي لرجل أن يري نفسه أهلا لشيئ حتي يسأل من هو أعلم منه
খালাফ ইবনে উমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে বলতে শুনেছি-“আমি ততক্ষণ পর্যন্ত ফতোয়া দেইনি, যতক্ষণ না আমার চেয়ে অধিক জ্ঞানীজনকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তারা আমার অবস্থানকে সঠিক বলেন কি না। আমি রবীয়া (রহঃ) এবং ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করতাম। তারা আমাকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিতেন।খালাফ ইবনে আমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, যদি তারা আপনাকে নিষেধ করতেন? ইমাম মালেক (রহঃ) উত্তর দিলেন, ‘তবে আমি ফতোয়া থেকে বিরত থাকতাম’। কারও জন্য কোন বিষয়ে নিজেকে যোগ্য মনে করা উচিৎ নয়, যতক্ষণ না সে তার চেয়ে যোগ্য কাউকে জিজ্ঞেস করে”[আল-হিলইয়া, আল্লামা আবু নুয়াইম (রহঃ), খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১৬]
“যদি কারও নিকট রাসূল (সঃ) এর লিখিত হাদীসের কিতাবসমূহ থাকে এবং সাহাবা, তাবেয়ী, তাবেয়ীনদের মতপার্থক্য যদি তার জানা থাকে, তবে তার জন্য যে কোন একটাকে গ্রহণ করে তার উপর আমল করা কিংবা তার দ্বারা বিচার করা জায়েয হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে আলেমদেরকে জিজ্ঞেস করবে যে, কোনটি গ্রহণ করবে? অতঃপর সে সঠিকটার উপর আমল করবে।[ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৪]
খালাফ ইবনে উমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে বলতে শুনেছি-“আমি ততক্ষণ পর্যন্ত ফতোয়া দেইনি, যতক্ষণ না আমার চেয়ে অধিক জ্ঞানীজনকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তারা আমার অবস্থানকে সঠিক বলেন কি না। আমি রবীয়া (রহঃ) এবং ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করতাম। তারা আমাকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিতেন।খালাফ ইবনে আমর (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, যদি তারা আপনাকে নিষেধ করতেন? ইমাম মালেক (রহঃ) উত্তর দিলেন, ‘তবে আমি ফতোয়া থেকে বিরত থাকতাম’। কারও জন্য কোন বিষয়ে নিজেকে যোগ্য মনে করা উচিৎ নয়, যতক্ষণ না সে তার চেয়ে যোগ্য কাউকে জিজ্ঞেস করে”[আল-হিলইয়া, আল্লামা আবু নুয়াইম (রহঃ), খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১৬]
মন্তব্য করতে লগইন করুন