সংসার সুখী হয় উভয়ের গুণে ॥ সুখী হতে হলে উভয়কে ছাড় দিতে হবে।

লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৩:৩৯:৫২ দুপুর



স্বামীর গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য:

১।আল্লাহ তায়ালা আপনাকে একজন স্ত্রী দান করেছেন, সে জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকুন, তার শোকর করুন।

২। স্ত্রীকে বুঝবার চেষ্ঠা করুন। তার জ্ঞান, বুদ্ধি, মানসিকতা, স্বভাব-প্রকৃতি প্রভৃতি জেনে সেভাবে তার সাথে আচরণ করুন।

৩। তাকে আল্লাহর বান্দীরূপে এবং আপনার মনের মতো স্ত্রীরূপে গড়ে তুলবার পরিকল্পনা নিন।

৪। তার জ্ঞান, বুদ্ধি, যোগ্যতা, প্রতিভা ও গুণাবলীকে বিকশিত করে তুলুন। তাকে সম্ভাব্য সর্বগুণে ফুলের মতো প্রস্ফুটিত করে তুলুন।

৫। তার মধ্যে যে সব ত্রুটি ও দূর্বলতা আছে, একজন সুচিকিৎসকের মতো ধৈর্য্য দিয়ে সেগুলো নিরাময়ের চেষ্ঠা করুন। আর এর সংশোধনের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করুন।

৬। তাকে অন্তর থেকে গভীর ভাবে ভালোবাসুন এবং একান্তভাবে আপন করে নিন।

৭। তার সাথে সর্বদা হাসি খুশির সাথে কথা বলুন।

৮। মাঝে মাঝে তাকে নিয়ে জায়িয গন্ডির ভিতরে কোথাও বেড়াতে যান।

৯। তার কাজকে উত্তমভাবে মূল্যায়ন করুন, তার ভালো গুণাবলীর প্রশংসা করুন।

১০। তার সাথে ভরসাপূর্ণ, বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্ববান হোন।

১১। তার সাথে পরামর্শ করে কাজ করুন।

১২। তার চিন্তা চেতনার গুরুত্ব দিন।

১৩। তার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করুন এবং জৈবিক চাহিদা পূরণ করুন।

১৪। কথা, কাজ এবং আচার-ব্যবহারে তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন।

১৫। তার ছোট খাটো ত্রুটি বিচ্যুতি উপেক্ষা করুন।

১৬। তার ভালো দিকগুলো বিবেচনা করে মন্দ দিকগুলো ভুলে থাকুন।

১৭। নিজেকে তার কাছে কুলুষমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখুন, কোন ব্যাপারে লুকোচুরি করবেন না।

১৮। তার সঙ্গত আবদার রক্ষা করুন।

১৯। আপনার জন্য কোনরূপ কষ্ট ও মেহনত করলে তাকে ধন্যবাদ জানান।

২০। আপনার কোনরূপ উপকার করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

২১। অযথা তাকে অবিশ্বাস করবেন না, তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন।

২২। মাঝে মধ্যে তাকে উপহার দিন।

২৩। সাধ্যানুযায়ী তার খোরপোষ ও আবাসনের উত্তম ব্যবস্থা করুন।

২৪। তার মন বুঝুন, বৈধ বিষয়ে তার মন রক্ষা করুন।

২৫। নিজের সমস্যা ও সংকট নিয়ে প্রয়োজনমত তার সাথে আলোচনা করুন। আপনার কর্ম ও ব্যস্ততা সম্পর্কে তাকে অবহিত করুন।

২৬। তাকে সব সময় হাত খরচের জন্য কিছু টাকা পয়সা দিন।

২৭। তার মনের মতো করে ঘর সংসারের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাকে দিন।

২৮। তার উপার্জিত অর্থ তাকেই স্বাধীনভাবে খরচ করতে দিন। এতে আপনি হস্তক্ষেপ করবেন না বা ভাগ বসাবেন না।

২৯। তার অভিযোগ ও অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখুন এবং তা দ্রুত দূর করার চেষ্ঠা করুন। তাকে বুঝতে দিন, আপনি সত্যিই তার ভালো চান।

৩০। তার যে কোন ভাল পদক্ষেপ ও উত্তম প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।

৩১। তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খোঁজ- খবর রাখুন। অসুস্থ হলে দ্রুত তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

৩২। তার কাছে ভুল করলে তা স্বীকার করুন। অন্যায় হলে অনুতপ্ত হোন।

৩৩। তাকে একান্ত বন্ধু বানিয়ে নিন। তার সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করুন।

৩৪। ঘরের যাবতীয় ইন্তিজামের ব্যাপারে তার মতামতকে অগ্রাধিকার দিন।

৩৫। কখনো অন্যের কাছে তার বদনাম করবেন না।

৩৬। তার আত্মীয় স্বজনদেরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করুন।

৩৭। ঘরোয়া কাজে তাকে সাধ্যমত সাহায্য করুন।

৩৮। সন্তান-স্বজন বা কারো সামনে তাকে অপমানিত করবেন না।

৩৯। তার মন জয়ের চেষ্ঠা করুন।

৪০। তাকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি আপনাকে কেমন দেখতে চান এবং তার কাছে আরো প্রিয় হবার জন্য আপনার কী কী করা দরকার।

স্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য:

============

১। আল্রাহ তায়ালা আপনাকে জীবনসঙ্গীরূপে একজন স্বামী দান করেছেন, সে জন্য মহান আল্লাহর শোকর আদায় করুন।

২। স্বামীকে বুঝুন, তার মন মানসিকতা, স্বভাব-প্রকৃতি, যোগ্যতা, গুণাবলী, সামাজিক মর্যাদা প্রভৃতি উপলদ্ধি করুন এবং সেভাবে তার সাথে আচরণ করুন।

৩। তাকে হৃদয়ের গভীরে স্থান দিন। তাকে প্রাণ খুলে ভালোবাসুন। হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসুন। সেই সাথে অভিভাবক হিসেবে অন্তর দিয়ে শ্রদ্ধা করুন।

৪। তার সাথে সর্বদা হাসি খুশি ভাবে কথাবার্তা বলুন।

৫। তার কাছে মনের সব কথা খুলে বলুন। সুখ-দু:খ, আনন্দ-বেদনা, সমস্যা-সংকট প্রভৃতির কথা তার সাথে শেয়ার করুন।

৬। তার বিশ্বস্ত হোন। কখনো তার অবিশ্বাসের কোন কাজ করবেন না।

৭। তার সব ধরণের আমানত রক্ষা করুন।

৮। তার গুণাবলীর প্রশংসা করুন।

৯। তার সব ধরণের গোপন বিষয়াদি গোপন রাখুন।

১০। কখনো কারো কাছে তার বদনাম করবেন না।

১১। তিনি চাইলে তার সাথে বেড়াতে যান।

১২। তিনি যেভাবে চান, সেভাবে নিজেকে সাজান।

১৩। তার সুখে সুখী, তার দু:খে দু:খী হোন।

১৪। সময়-সুযোগ ও সামর্থমত তার সেবা করুন।

১৫। তার সমস্যা ও সংকটে তাকে সাহায্য করুন, তাকে শান্তনা দিন, পরামর্শ দিন, প্রয়োজনমত তাকে সহযোগিতা করুন।

১৬। তার প্রতি প্রেম- ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তাকে বলুন- আমি আপনার চিরদিনের জীবনসঙ্গীনী।

১৭। তার আদেশ পালন করুন। কিছুতেই তার অবাধ্য হবেন না। তবে তিনি যদি আল্রাহর ইচছা ও সন্তুষ্টির বিপরীত কোন আদেশ করেন, তখন সে ব্যাপারে ভালভাবে বুঝিয়ে উজর পেশ করুন।

১৮। স্বামীর কোন বদ অভ্যাস থাকলে ভালোবাসা দিয়ে বিজ্ঞ চিকিৎসকের মত তা শুধরানোর চেষ্ঠা চালিয়ে যান।

১৯। স্বামীর কল্যাণ ও উন্নতির জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন। স্বামীর মধ্যে যা কিছু মন্দ আছে সেগুলো যেন দূর হয় সে জন্য প্রচেষ্ঠার সাথে আল্লাহর কাছে দুআ করুন।

২০। তাকে একান্ত বন্ধু বানিয়ে নিন। আর তাকে আপনার অভিভাবক মনে করুন।

২১। তার কাছে নিজেকে পেশ করুন, তার কাছে কোন কিছু লুকিয়ে রাখবেন না।

২২। তার সাথে পরামর্শ করে কাজ করুন।

২৩। তার মর্জিমত চলুন, কাজ করুন এবং রান্না করুন।

২৪। তার পিতা মাতাকে নিজের পিতা মাতার মতো শ্রদ্ধা করুন, সম্মান করুন, সম্ভব মত সেবা করুন।

২৫। তার কৃতিত্ব ও অবদানের মূল্যায়ন করুন। এ ব্যাপারে তাকে উৎসাহিত করুন।

২৬। তিনি বাইরে থেকে এলে হাসি মুখে তাকে বরণ করে নিন এবং অভ্যর্থনা জানান। তার আসার সাথে সাথে অভিযোগের ঝুড়ি খুলে দিবেন না।

২৭। কোন ভুল বা অন্যায় করে ফেললে তা নি:সঙ্কোচে স্বীকার করুন। সেজন্য অনুতপ্ত হোন, প্রয়োজনে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।

২৮। তার সকল আত্মীয়-স্বজনকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করুন।

২৯। সন্তানদের সামনে তার সাথে ঝগড়া বিবাদ বা কথা কাটাকাটি করবেন না। তেমনি অন্য কারো সামনেও না। আর সর্বদা এ ধরণের পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করুন।

৩০। কারো সামনে তার অপছন্দনীয় আচরণ প্রকাশ করবেন না।

৩১।তার সামর্থের অধিক টাকা পয়সা, অলংকার, পোশাক-পরিচ্ছদ বা অন্য কিছু আবদার করবেন না।

৩২। সু পরিকল্পিত ভাবে সুন্দর ও কাঙ্খিত পর্যায়ে সন্তানদের প্রতিপালন ও শিক্ষা দীক্ষায় যত্নবান হোন।

৩৩। নিজের হাত খরচ থেকে মাঝে মাঝে স্বামীকে উপহার দিন।

এভাবে আরো যে সকল দায়িত্ব সময় অনুযায়ী অর্পিত হয়, সেগুলো স্বামী-স্ত্রীকে মেনে চলতে হবে। আর নিজেরা পূর্ণভাবে দ্বীন পালন করুন এবং সন্তানদেরকে দ্বীনদার রূপে গড়ে তুলবেন। তবেই সংসার সুন্দর হবে। সর্বশেষ কথা হলো- একে অপরকে বেশি বেশি ছাড় দিতে হবে।



বিষয়: বিবিধ

১২৮১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

169610
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৫
হতভাগা লিখেছেন :





০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১৩
125019
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : হতভাগা কাঁদে না নাকি হাই তুলে?
169617
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
ফেরারী মন লিখেছেন : ভালো লাগলো পোষ্টটা পড়ে। আশা করি বিয়ের পর আপনার কথাগুলো কাজে লাগাতে পারবো।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১২
125018
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : আজও বিয়ে করেন নি! আর কত ফেরারী জীবন?
169661
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৬
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : ভালো লাগলো
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১২
125017
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে।
169677
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
সজল আহমেদ লিখেছেন : জটিল পোস্টাইছেন!
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১১
125016
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : কাজে লাগলেই হল।
169741
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সবার আগে মেয়েদের সিরিয়াল দেখা বন্ধ করতে হবে।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১০
125013
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : একমত।
169805
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২১
জবলুল হক লিখেছেন : ভালো লাগলো ।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১১
125015
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ভালো লাগলেই ভাল।
170296
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৯
আলোকিত ভোর লিখেছেন : ধন্যবাদ Rose
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১১
125014
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
187993
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৫৯
স্বপ্নকন্যা লিখেছেন : একদম সত্যি কথা, অনেক ভাল লাগলো ...
১১ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:০১
141394
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File