প্রেমের বিয়ে অত:পর...

লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ১৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৩৭:৪৬ সকাল



হুমায়ুন কবীর এক গরীব ঘরের ছেলে। তারা তিন ভাই এক বোন। বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ জানতেন তাই তাদের বড় দুই ভাইকে শিখিয়েছেন। ছোট ভাইটি মাদরাসায় পড়ে। বোনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শুনা করে। সংসারে অভাব বলতে কিছু নাই। কারণ তিনজন রোজগার করেন। বাবা এখন কাঠমিস্ত্রীর কাজ না করলেও নিজের জমি-জমার কাজ করেন। কিছুদিন হল হুমায়ুন একটি মোটর সাইকেল কিনল। একদিন তার মামার বাড়ী বেড়াতে গেল সেই মোটর সাইকেল নিয়ে। তাদের গ্রাম থেকে মামার বাড়ী অনেক দূরে ভাটি বাংলায়। মামার গ্রামে প্রবেশের মুখে রাস্তায় একটি মেয়ের সাথে সাক্ষাত হয়। মেয়েটিকে তার পছন্দ হয়। মেয়েটির সাথে কথা বলার ইচ্ছা হল তার। কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করে তার পরিচয় নিল। সাথে তার মোবাইল নম্বরও সংগ্রহ করল। বাড়ী আসার পর থেকে তারা মোবাইলে প্রেম শুরু করে। মাস খানেক কথা বলার পর তাদের সম্পর্ক আরো গাঢ়ো হয়। এ বিষয়টি জানতে পারে হুমায়ুনের বাবা। তিনি ছেলের পছন্দকে মর্যাদা দিয়ে মেয়ের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালেন। মেয়ের বাবা সব কিছু শুনে রাজী হলেন। যেহেতু ছেলে মেয়ে উভয়ে একে অপরকে পছন্দ করে তাই উভয় পক্ষই বিয়ে তে রাজী। একদিন ঘটা করে হুমায়ূনের বিয়ে হল। দু মাসের ভালোবাসা বাস্তবে পরিণত হল।

বউ বাড়ী নিয়ে এসে তাদের সংসার ভালই চলছে। নতুন বউ পেয়ে সবাই খুশি। মেয়ের বাবার কোন খরচ হল না। কোন যৌতুক বা উপঢৌকন দিতে হয়নি বরকে। ছেলের বাবাও এতে অখুশী নন। নাইওর- ফিরতি নাইওর শেষ হল। হুমায়ুন এখন মাঝে মাঝে বউ নিয়ে শশুর বাড়ী যায়। কারো বাড়ী বেড়াতে গেলে হাতে করে কিছু নিতে হয়। এটা সৌজন্যতা। হুমায়ূন তার শশুর বাড়ীর লোকদের জন্য কিছু না কিছু অবশ্যই নিয়ে যায়। এতে বউ বেশি খুশী নয়। তার ইচ্ছা জামাই আরো বেশি করে নিবে। তার নেওয়াটা কম হয়ে যায়। স্বামীর উপর চাপ সৃষ্টি করে বেশি করে মিষ্টি বা তার পিতা মাতার জন্য অন্যান্য উপহার বেশি নেওয়ার জন্য। অনেক বুঝিয়ে তাকে চাপ দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। সময়ের স্রোতে ভাসতে ভাসতে তাদের সংসার জীবনের একটি বছর অতিবাহিত হয়। এরই মধ্যে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। উভয় সংসারেই আনন্দের ফোয়ারা বয়ে যায়। মেয়ের মা খুশি হয়ে নাতিকে গোসল করানোর জন্য বড় একটি গামলা দেয়। একদিন এই গামলা নিয়ে ঝগড়া হয় হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর মধ্যে। হুমায়ুনের বাবার চোখের সামনেই এই গামলাটি দা দিয়ে কুপিয়ে কাটতে উদ্যত হয় হুমায়ুনের স্ত্রী। অনেক বাধা নিষেধ দিলেও সে কুপিয়ে গামলা কেটে ফেলে। হুমায়ুনের পিতা ভাবেন মেয়ে যদি তার বাবার বাড়ী অন্যান্য উপহার সামগ্রী আরো বেশি আনতো! তাহলে না জানি রকম রাগ-গোস্বা দেখাত!

হুমায়ুনের শশুর আসবে বলে তার স্ত্রী বলে মুরগী কিনে আনার জন্য। সে বলে আব্বা আগে আসুক। তারপর দেখা যাবে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঝগড়ায় রূপান্তরিত হয়।

রাতের বেলায় মেয়ের জামাইর বাড়ীতে উপস্থিত হন আবদুল্লাহ সাহেব। সাথে এনেছেন স্ত্রীর হাতে তৈরী করা শীতের পিঠা ও কিছু কৈ-শিং মাছ। রাতে খাবারের বেলায় মেয়ে বাবার সামনে আবার কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয় স্বামীর সাথে। কেন মুরগী আনা হয়নি। ঝগড়া চুড়ান্ত পর্যায়ে রূপ নেয়। রাতে খেয়ে না খেয়ে অনেকে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল বেলা মেয়ে তৈরী হয় বাবার সাথে চলে যাওয়ার জন্য এবং কথামত কাজ করে। পরদিন তার বাবার সাথে চলে যায় একমাত্র ছেলে সন্তানটিকে রেখে। কিন্তু ভুলে যাননি তার বাবার আনা মাছগুলি সাথে নিতে। হুমায়ুনের বাবা বলেন- তার বাবা বাধ্য হয়ে হুমায়ুন ফুফু শাশুরীর বাড়ীতে দুধের ছেলেটিকে রেখে আসে গিয়ে। সেখান থেকে তার সন্তানকে মায়ের কাছে পাঠানো হয়। হুমায়ুনও বাড়ী থেকে রাগে চলে যায়। বর্তমানে হুমায়ুন ঢাকায়। আর তার স্ত্রী বাবার বাড়ীতে। উভয় সংসারে টানাপোড়েন চলছে। কী করবে তারা। এই মেয়েকে নিয়ে আবার সংসার চালাবেন নাকি তালাক দিবে। যে মেয়ে কথায় কথায় স্বামীর সাথে ঝগড়া করে। বিশেষ করে সন্তান জন্ম হওয়ার পর থেকে। হুমায়ুন এর বাবা আবুল মিয়া মনে মনে ‍ভাবেন তার সহজ সরল ছেলের কথা। না জানি কী করে।

বিষয়: বিবিধ

২৪৭৫ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

163188
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
আলোর আভা লিখেছেন : সত্যি দুঃখজনক.....।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫৪
119205
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : আমি কোন সুপরামর্শ ছেলের বাবাকে দিতে পারিনি। এতটুকু বলেছি। যেহেতু মেয়ের বাবা নিজে এসে নিজের মেয়েকে নিয়ে গেছেন। সেহেতু বউকে কিছুদিন তার বাবার বাড়িতে থাকতে দিন। যখন নিজে থেকে ইচ্ছে করবে আসার জন্য তখন গিয়ে নিয়ে আসবেন।
163328
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৩৪
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : অনেক প্রকারের মানুষ আছে! কিছু মেয়ে, কিছু ছেলেও Frustrated Frustrated
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫৫
119206
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ছেলেটির সাথে আমার দুই মাসের সম্পর্ক। আমি যতটুকু জানি ছেলেটি খুব ভাল। নম্র, নামাজী, পিতা মাতার বাধ্য। খুব সাদাসিদে জীবন যাপন করে।
163480
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:১২
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : প্রথমত, শুধুমাত্র চেহারা দেখে বিয়ে করলে এর চেয়ে ভাল ফলাফল আশা করা যায়না।
দ্বিতীয়ত, সন্তান ধারনের সময় এবং এর পর পর হরমোনের ওঠানামার কারণে মহিলাদের মাঝে অনেক অস্বাভাবিক আচরন পরিলক্ষিত হয়, এখানে ব্যাপার সেটা কিনা তা বিবেচনা করা উচিত।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
118088
মিশেল ওবামা বলছি লিখেছেন : রেহনুমা আপুর সাথে একমত...
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫৬
119207
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ভাল ডাক্তার দেখানোর দরকার। বিশেষ করে মানসিক।
163840
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪০
উম্মু রাইশা লিখেছেন : গল্পটাপুরাই একপেশে মনে হল। আর সম্পাদকরা সবসময় মেয়েদের ছোট করা হয় এমনব্লগ পছন্দ করেন
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫২
119202
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : উম্মু রাইশা আপু এমন কথা বলার কারণ কি? আমার লিখাটি সম্পাদকের পছন্দের তালিকায় নাকি?
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:০৪
119210
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : আমার মনে হচ্ছে এই জন্যই। সত্য ঘটনা এটি । একটু ও বানিয়ে লিখা নাই। ছেলের বাবা নিজে বলেছেন আমার কাছে এই কাহিনী। তিনি আমার মুসুল্লী ছিলেন।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:১৩
119211
আশা জাগানিয়া লিখেছেন : কিন্তু ভাইয়া ব্যপারটা শুধু এক দিক শুনে যাচাই করা হয়ে গেল না...কি
জানি!এ ধরনের পরিস্তিতি জটিল বটে,আল্লাহই ভালো জানেন।
163841
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
মিশেল ওবামা বলছি লিখেছেন : দুঃখজনক কাহিনী। কেমন আছেন আপনারা টোনাটুনি?
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫০
119200
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের সুখে রেখেছেন। তবে বাবুটা বেশি কান্না করে।
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:০৩
121187
মিশেল ওবামা বলছি লিখেছেন : বেবী কবে হোল, ছেলে না মেয়ে? মিষ্টি কই? আল্লাহপাক বাবুটাকে সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুন। বেবীরা অনেকসময় প্রথম তিনমাস রাতের বেলা বেশ কান্নাকাটি করে। পরে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়...
163846
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৫১
আশা জাগানিয়া লিখেছেন : আল্লাহ্ই ভালো জানেন আসল কাহিনী কি! কখনো কখনো ঘটনার আড়ালেও ঘটনা লুকিয়ে থাকে।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫৩
119204
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : সত্য ঘটনা। গত দুই মাস ওদের এলাকায় আমি মসজিদের ইমাম ছিলাম।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৩৮
119226
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : @নকীব ভাইয়া, আপনি কি মেয়ে পক্ষের বক্তব্যও শুনেছেন? যে কোন ঘটনা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত/মতামত নেয়া, আলোচনা করা, কিংবা কোন জায়গায় উপস্থাপন করার আগে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনা জরুরী মনে করি আমি।
163911
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩৯
সাজজাদ রিয়েল লিখেছেন : গল্পটা সত্য না মিথ্যা আমি জানিনা তবে আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগেনি, কারন মেয়েরা যেমন হয় এটা তার একটা রুপ, আর হ্যা মেয়েরা বিয়ের আগে একরকম বিয়ের পরে অন্যরকম মা হইলে একরকম আবার দাদি নানি হইলে অন্য রকম, কেন যেন আমার মনে হয় এরা অধিকাংশই সমতায় বিশ্বাসি নই হয় নাচাঁয় নয়তো নাচেঁ কিন্তু বুঝের মাঝে থাকতে চায়না এদের মতো অদ্ভুত খুব জান্তা মনোভাবের মেয়েদেরকে কন্ট্রোলে না রাখতে পারলে সারা জীবন পস্তাতে হবে।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫১
119201
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : সত্য ঘটনা। গত দুই মাস ওদের এলাকায় আমি মসজিদের ইমাম ছিলাম।
164160
১৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫৫
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : ;Winking ;Winking ;Winking ;Winking ;Winking
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
119208
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ভাইজান কেমন আছেন?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File