জাতে জাত মিলে
লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৯:৩৯:১০ রাত
একজন গরীব লোক। পৌরসভার অফিসের দেয়াল ঘেষা ছোট্ট একটি ফলের দোকান।
দুটি মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়েই তার ছোট সংসার। বড় মেয়েটা সবে মাত্র ক্লাস ফোরে পড়ে। ছোটটা পড়া শুনা করে না। বাবার কাজে সহযোগিতা করে। ইদানীং বড় মেয়েটাকে বিকেল বেলা বাবার দোকানে আসতে দেখি। বেশিক্ষণ সে তার পিতার দোকানে সময় দেয় না।
চৌরাস্তার মোড়ে একটি ছেলে গরম গরম বুট- বাদাম ভেজে বিক্রি করে। ছেলেটা দাড়িয়ে থেকে বাদাম ভাজে আর বিক্রি করে। তার একটা বসার টুল রয়েছে। এই টুলে এসে মেয়েটা বসে। তার সাথে আলাপ করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। বেশ গায়ে পড়ে কথা বলে ছেলেটার সাথে। বয়স অর্ধেক পার্থক্য হবে। বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সময়টা মেয়েটি ছেলেটির দোকানের পাশে ঘুর ঘুর করে আর হাসি-তামাশা করে।
একদা সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে ডেকে বললাম। তুমি কোন ক্লাশে পড়, ক্লাস ফোরে। তাহলে এখন তো তোমার পড়তে বসার কথা। তুমি মেয়ে মানুষ এখানে কেন বিড়বিড় করছ। বাসায় যাও। তুমি তো মেয়ে মানুষ। সন্ধ্যার পর বাজারে থাকবে কেন তুমি?
জবাব দেয়: বাবার দোকানে এসেছি।
তাহলে এখানে কেন?
প্রায় সময়ই তো তোমাকে এখানে ওর সাথে হাসিমুখে কথা বলতে দেখি।
যাও। বাড়ি যাও।
মেয়েটি কোন কথা আমলে নেয়না। সে তার মত বসে থাকে। বাদাম-বুট নিজের হাতে নিয়ে খেতে থাকে আর ছেলেটির সাথে হাসি তামাশা করতে থাকে।
বেশ কয়েকদিন দিন ধরেই দেখতেছি। তাদের মধ্যে একটা কেমন যেন ভাব।
ছেলেটাও মেয়েটার প্রতি দূর্বল। দেহের গঠন-গড়ন বেশ সুন্দর। কিন্তু একটি দোষ আছে মেয়েটির। গলার আওয়াজটা ভূতে ধরা রোগীর মত শোনায়। নাকে সমস্যা আছে মেয়েটির।
একদিন পাশের দোকানের একটি ছেলেকে বললাম। ওই মেয়েটি ছেলেটিকে ভালবাসে। আমাকে প্রশ্ন করে কিভাবে বুঝলেন?
আপনি এখানে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করুন আর শুনুন ওদের বাক্যালাপ।
ঘন্টা খানেক পরের মন্তব্য:
এই বয়সে? এই আলাপ করতে পারে মেয়েটি? মানুষ তো রাতের বেলা ভাগে, এই মেয়ে দিনের বেলা ছেলে নিয়ে ভাগবে।
হাসতে হাসতে জবাব দিলাম: সমস্যা কি?
বাবা কলা বিক্রেতা আর বর বাদাম-বুট বিক্রেতা।
একদম সোনায় সোহাগা। খাপের খাপ।
তবে- এই ধরণের ছেলেরা মধু খাইয়া উড়ে যায়।
চালিয়ে যাক। অসচেতন অভিভাবক পরিণাম পরে বুঝবে।
জাতে জাত মিলবে সমস্যা নাই।
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন