চাঁদপুরে ছাত্রীদের সাথে শিক্ষকের বিকৃত যৌনাচার: ভিডিও ক্লিপ এখন সবার হাতে হাতে

লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৩:১৭:২৫ দুপুর

চাঁদপুরে গণিতের এক শিক্ষকের বিকৃত যৌনাচার নিয়ে ফুঁসে উঠছে অভিভাবকরা। তারা লিখিতভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এতে করে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন। আর ওই শিক্ষকের বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ক্লিপস এখন চাঁদপুরের যুব সমাজের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে, যার বেশ কয়েকটি আরটিএনএন’র হাতে এসেছে। এসব ভিডিও ফুটেজ থেকে শিক্ষক ইমাম হোসেনের যৌনাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে।

ভিডিও ক্লিপস ছড়িয়ে পড়ায় নিজ সন্তানদের ভবিষ্যত্ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তারা ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন। তবে শিক্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় সরাসরি কেউই মুখ খুলতে চাননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাইমচরের চরভাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইমাম হোসেন (বিএসসির) প্রাইভেট ও কোচিংয়ে পড়ানোর নাম করে কোমলমতী ছাত্রীদের সঙ্গে অবৈধ যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

শুধু তাই নয়, এসব কর্মকাণ্ডের গোপন ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি দিনের পর দিন ওই ছাত্রীদের তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইমাম হোসেন চাঁদপুরের হাইমচরের চরভাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের সহকারী শিক্ষক। তিনি স্কুলের ছাত্রাবাসে থাকেন এবং সেখানে ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ান।

প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ নিয়ে ইমাম হোসেন বেশ কিছু ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর এসব ভিডিও ধারণ করে তার ব্যক্তিগত কম্পিউটারে রেখে দেন। সমপ্রতি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহানাজ টেলু একটি তথ্য প্রিন্ট করার জন্য ইমাম হোসেনের কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে তা দেখতে পান।

পরে বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে তিনি জানান। সে সময় ইমাম হোসেন সবাইকে ম্যানেজ করে রক্ষা পান। তবে বিষয়টি আস্তে আস্তে এলাকায় জানাজানি হয়ে যায় এবং তার ভিডিও ক্লিপস মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা শিক্ষক ইমাম হোসেনের বিচার ও শাস্তির দাবিতে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আবেদন করে। তবে প্রধান শিক্ষক তা গ্রহণ না করে তাদের তাড়িয়ে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরভাঙা বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমরা ইমাম স্যারের বিচার চেয়ে দরখাস্ত জমা দেয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের তিন-চারজন শিক্ষক বিনা কারণে শ্রেণীকক্ষে তাদের মারধর করেন।’

তবে সম্প্রতি ভিডিও ক্লিপস আকারে ইমাম হোসেনের বিকৃত যৌনাচারের দৃশ্য এলাকার যুবকদের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়লে আবারও ইস্যুটি নতুন রূপ পায়। এখন ইমাম হোসেনের বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠছে অভিভাবকরা।

শিক্ষক ইমাম হোসেনের লালসার শিকার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে শিক্ষক ইমাম জোর করে এ অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে। এ ঘটনার পর আমার মেয়েকে আমি অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘লম্পট ইমাম অগণিত কোমলমতী মেয়ের সর্বনাশ করে চলেছে। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার চাইলে তিনি উল্টো আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।’

মেয়ের সর্বনাশের প্রতিবাদে মামলার বিষয়ে ওই অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষক ইমাম হোসেন খুব প্রভাবশালী লোক। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে চেপে গেছি। তাছাড়া মান-সম্মানের বিষয়ও ছিল।’

তিনি জানান, ‘আমি যদি ইমাম হোসেনের বিরদ্ধে মামলা করি তাহলে তার লোকজন আমাকে মেরে ফেলবে। আমরা এমনিতেই সংখ্যালঘু। তার ওপর এই বিপদ ডেকে আনতে চাইনি।’

অভিযোগের ব্যাপারে চরভাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসমাইল হোসেন প্রথমে এ ধরনের কোনো ঘটনা এই বিদ্যালয়ের ঘটেনি জানালেও একপর্যায়ে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘এলাকার সবাই যা জানে, আমিও তাই জানি। সত্য কখনও গোপন থাকে না। তবে আমি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

ঘটনা যে শিক্ষকের মাধ্যমে জানাজানি হয় সেই শিক্ষক শাহানাজ টেলু বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। আমি ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করি। পরে প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানায়।’

তিনি জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জেনে তদন্তসাপেক্ষে শিক্ষক ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে হাইমচর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শিক্ষক ইমাম হোসেন এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। এরপরও সন্তানতুল্য কোমলমতীদের সঙ্গে বিকৃত যৌন সম্পর্ক গড়ে তাদের সর্বনাশ করে চলেছেন তিনি। স্থানীয়রা ইমাম হোসেনের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এলাকায় জানাজানির পর তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিষয়: বিবিধ

১৪২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File