সুখী হওয়ার কিছু টিপস
লিখেছেন লিখেছেন নকীব কম্পিউটার ২৫ মে, ২০১৩, ০৮:০৬:০৫ রাত
যে দক্ষতাগুলো আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা এড়াতে সাহায্য করে সেই একই দক্ষতা আপনাকে একটি আনন্দদায়ক, অর্থপূর্ণ এবং সবার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য সাহায্য করে না। আপনি যদি সত্যিই সুখী হতে চান, আপনার একটি নতুন জীবন ধারা প্রয়োজন।
নিচে আটটি উপায় রয়েছে যেখানে আপনি খুঁজে পাবেন কেন সুখী মানুষ অন্য সবার তুলনায় ভিন্ন।
প্রথমত : তারা হন প্রানবন্ত
সুখী মানুষ যে কোনো বাধা থেকে দ্রুত উত্তরণ করে ফিরে আসে। জীবনের কঠিন এবং ধ্বংসাত্মক ও চলার পথের অনমনীয় বাধা যা সুখী হবার অন্তরায় তা সমস্যা হিসেবে না দেখে বরং সুখী হবার জন্য বাঁধাগুলোকে পরাস্ত করেন এবং একটি সুন্দর জীবন-যাপনের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতিকে অস্থায়ী ও দমনীয় হিসেবে দেখেন।
দ্বিতীয়ত : তারা আশাবাদী
এটা সত্য যে অধিকাংশ মানুষ তাদের সমস্যা সম্পর্কে, তাদের অভাব সম্পর্কে কথা বলতে চান। অন্য সবার মতো সুখী মানুষদেরও একই সমস্যা থাকে, কিন্তু তারা শুধু সমস্যা সমাধানে কাজ করেন, নিজেদের সমস্যা সম্পর্কে অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে তারা অপছন্দ ও অস্বস্তিবোধ করেন। সমাধান খোঁজার জন্য তাদের কিছু অসাধারন দক্ষতা আছে যা হয়ত আর কারো আছে সহজে পাওয়া যায় না। মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য তাদের আলাদা একটি সময় এবং স্থান নির্দিষ্ট করা থাকে।
তৃতীয়ত : তাদের অনেক ধরণের অভিজ্ঞতা থাকে
যদিও সুখী মানুষের নেতিবাচক ভাবাবেগের চেয়ে ইতিবাচক ভাবাবেগই বেশী। বাস্তবিকে অন্যদের মতো তাদেরও নেতিবাচক আবেগের অভিজ্ঞতা থাকে। যাইহোক, তারা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তাদের অভিজ্ঞতা লাভ করেন এবং তারা তাদের নেতিবাচক আবেগকে সম্পূর্ণ দমন করেন না। তারা তাদের নেতিবাচক আবেগের মুখোমুখি হন নিজেকে জানার জন্য। তাদের নেতিবাচক আবেগ তাদেরকে সাহায্য করে তাদের ব্যক্তিগত আচরণ পরিবর্তনে, আত্মদর্শী হতে, এবং একটি খারাপ সম্পর্ক থেকে বের হবার পথ খুঁজে পেতে। তারা তাদের নেতিবাচক আবেগকে তাদের নিজেদের পরিবর্তন বা পুনরায় মূল্যায়ন করার একটি আহবান হিসেবে দেখেন।
চতুর্থত : তারা এমন কিছুর স্বাদ নেয় যা অধিকাংশ মানুষই উপেক্ষা করে
সুখী মানুষেরা নিত্য নতুন জিনিষের স্বাদ নেবার ব্যপারে দক্ষ হন। তারা সহজেই ঘটনা পূর্বানুমান করেন, ঘটনা স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করেন এবং ঘটনার পরে তা স্মরণ রাখেন। তারা এই কাজ করেন কারণ তাদের শেষটা দেখে ছাড়েন। তারা জানেন যে বাচ্চারা বেড়ে উঠবে, সময় চলে যাবে, এবং আমরা সবাই এক সময় মারা যাব। সুখী মানুষ “কার্পে দিয়েম পধৎঢ়ব ফরবস দর্শনের মাধ্যমে বেঁচে থাকেন, যাদের উদযাপন করার জন্য বিশেষ কোন উপলক্ষের প্রয়োজন হয়না।
পঞ্চমত : তারা নিত্য চ্যালেঞ্জ ও আধিপত্য খোঁজে
সুখী মানুষেরা তাদের নিজেদের চ্যালেঞ্জ করতে পছন্দ করে এবং নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে। তারা খুব কম আত্মসন্তুষ্টিতে থাকে এবং ব্যক্তিগত সাফল্য কেমন হবে সে সম্পর্কে তাদের একটি ধারণা থাকে। তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা সুস্থ মাত্রায় আত্মসমালোচনা করেন। তারা নিজেকে অপছন্দ করেন না কিন্তু তারা তাদের নিজেদের সঙ্গে এবং তাদের ঘাটতির সঙ্গে পরিচিত। তারা খুঁজে বের করেন সেই মানুষগুলো, শখগুলো, জীবিকাগুলো, বা ধারণাগুলোকে যা তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে এবং তাদের আত্ম ধারণাসমূহকে উজ্জীবিত করে।
ষষ্ঠত : তারা তাদের পছন্দের মানুষের সঙ্গে প্রচুর সময় ব্যয় করেন
সুখী মানুষেরা জানেন যে, একটি ভাল জীবন-যাপনের জন্য সর্ম্পকগুলি জরুরি। মানব জীবন বলতে বিচ্ছিন্নভাবে বাস করাকে বোঝায় না। যখন আমরা কোন কাজ করি, আমাদের মাঝে একাকীত্ব আসে, বিষণœতা ঘিরে ফেলে। কখনও কখনও আমরা নিজেদেরকে নেতিবাচক এবং কাজ থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের একটা নিম্নগামী সর্পিলের মধ্যে খুঁজে পাই। সুখী মানুষের কাছে সর্ম্পকগুলি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে মূল চাবিটি হচ্ছে আপনি তাদের সঙ্গে সময় অতিবাহিত করুন যে মানুষগুলো আপনার ভালো লাগে এবং যাদের সঙ্গে আপনি সময় কাটাতে চান।
সপ্তমত : তারা দ্রুত ক্ষমা করেন
একটি অন্যায়ের ক্ষমা করা সহজ নয়। খুব ভালো লাগে যখন কোন কিছু শেষ করা যায়, বা একটি বিচারের রায় পাওয়া যায়। এভাবে আত্ম ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে নিজের ভেতরে মৃদু স্বস্তি তৈরি করা সম্ভব হয়। সুখী মানুষেরা ক্ষমা করাকে প্রাধান্য দেন। তারা ক্ষমা করাকে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দেখেন। এই মনভাব অপরাধী এবং বিক্ষুব্ধ উভয়ের জন্যই বিরোধ থেকে সরে আসার একটি সম্ভাবনা তৈরি করে দেয়। সুখী মানুষ জানেন যে, কাউকে ক্ষমা করার যে অপারাগতা তা অপরাধীকে কষ্ট দেয় না বা উপরেও তোলে না বরং এটি শুধুমাত্র তার আত্মাকে কষ্ট দেয়।
অষ্টমত : তারা একটি উদ্দেশ্যকে নিজেদের চেয়েও বেশী প্রাধান্য দেয়
সুখী মানুষ বাস্তব উপায়ে তাদের মূল্যবোধ খোঁজেন। তারা অর্থপূর্ণ কিছুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে আগ্রহী হন। একটি কারণ, উদ্দেশ্য, বা বিশ্বাস তাদের কাছে নিজেদের চেয়েও বড়। মানুষের বেঁচে থাকার দুটি লক্ষ্য আছে- মানবতার জন্য একটি অবদান রাখা এবং বেঁচে থাকার জন্য একটি উদ্দেশ্য থাকা। সুখী মানুষ তাদের এই দুটি উদ্দেশ্যকে সঠিকভাবে নিশ্চিত করার জন্যই অনেকটা সময় ব্যয় করেন।
সুতরাং আপনিও যদি সুখী হতে চান তবে এ গুনগুলো আত্মস্ত করুন এবং এখনই।
বিষয়: বিবিধ
২১৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন