যমুনা চরের নদীভাঙ্গন ও বন্যায় আক্রান্ত মানুষদের দেখার কি কেউ নেই??
লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ২৯ আগস্ট, ২০১৪, ১২:১৮:৩৬ দুপুর
যমুনা চরের মানুষ!!!!
বর্ষার দিনে বন্যা এসে/ মাঝে মাঝে করে ঘর ছাড়া
কখনও বন্যার প্রবল প্রতাপে /হয়ে যাই মোরা সব হারা!!
অজ্ঞাত সীমান্তে মরলে/ পুলিশ যেমন মাথা হেলায়
ত্রাণের বেলায় আমরাও তেমন/ স্থান পাইনা কোনো জেলায়।
সিরাজগঞ্জের শেষ সীমান্তে/ নিকটে টাঙ্গাইল মানিকগঞ্জ
ওরা বলে ত্রাণ পাবে না/ তোমাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ।
চরাঞ্চলে জন্ম মোদের/ নিয়তি মোদের যাযাবর
নিজ দেশেই উদ্বাস্তু হলেও/ খবরের কাগজেও নেই খবর।
উপরের লাইনগুলো একটি পূর্ণাঙ্গ কবিতার অংশ। যেখানে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলার সীমান্তবর্তী যমুনা পাড়ের এবং যমুনার মাঝের চরের মানুষের জীবন চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
নদীভাঙ্গনে সব হারিয়ে নির্বাক হয়ে বসে আছেন এক হতভাগা!
বাংলাদেশ নদী-মাতৃক দেশ। প্রকৃতিক দুর্যোগ, নদীভাঙ্গন, বন্যার সাথে মিতালী এদেশের গ্রামের মানুষদের চিরন্তন। কিন্তু একই সাথে নদীভাঙ্গন ও বন্যার প্রকোপ খুব কম এলাকাতেই দেখা যায়। এই খুব কম এলাকার মধ্যে আমার জন্ম স্থান সিরাজগঞ্জের চেৌহালী অন্যতম। উপজেলাটির ৮০ ভাগেরও বেশি যমুনার পেটের মধ্যে বিভিন্ন চরের সমষ্টি। বর্ষায় নদী ভাঙ্গন এখানে চিরাচরিত এক বিধিলিপি। (আমার ৩৮ বছরের জীবনে পঞ্চমবারের মতো নদীগর্ভে বিলিীন হয়েছে বসত ভিটা।) কিন্তু যখন নদী ভাঙ্গনের সাথে ভয়াবহ বন্যার মিতালি হয়, তখন দেখা যায় এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগের হৃদয় ভেঙ্গে দেয়া চিত্র। এবছর এমনই পরিস্থিতিরি সৃষ্টি হয়েছে চরাঞ্চলের গরীব মানুষদের। নদীভাঙ্গনে সর্বশান্ত মানুষগুলো অর্থের অভাবে যখন যমুনার উদরে জেগে উঠা চরে ঘর বাধতে বাধ্য হয়েছে, তখনই উজান থেকে ধেয়ে আসা বন্যায় তাদের সেই নতুন বসতি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিনা নোটিশে।
বন্যার পানিতে ভাসছে চরের বাড়িগুলো
এই মানুষগুলোর জন্য এখন প্রয়োজন পর্যাপ্ত ত্রাণ ও অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ। কিন্তু সরকারী উদ্যোগ এক্ষেত্রে সে প্রয়োজন পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যক্তি, বিভিন্ন সংস্থার পর্যায়ে অনেকেই এগিয়ে আসছে সামর্থ অনুযায়ী ত্রাণ নিয়ে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য বৈ নয়।
এমতাবস্থায় আমারও ইচ্ছে হয় জন্মস্থানের দুর্ভাগা মানুষদের পাশে দাড়িয়ে তাদের দুর্দশায় কিছুটা হলেও লাগবে সচেষ্ট হই; কিন্তু সে সামর্থ্য আমার নেই।
সামান্য ত্রাণের আশায় পানি সাতরিয়ে নেৌকার পাশে বুভুক্ষ মানুষগুলো।
তাই আমি চাই সেই মানুষগুলোর সহযোগিতা, আল্লাহ যাদের সম্পদ দেয়ার পাশাপাশি মানব সেবার মতো মন-মনন সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এমন কাউকে/কোনো সামষ্টিক ব্যক্তি/সংগঠন পেলে আমি তাদের উদ্যোগে সহযোগী হতাম মাত্র।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন