ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে বিমান ধ্বংস কি মোসাদের এসাইনমেন্ট?
লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১৮ জুলাই, ২০১৪, ০৬:৩০:২০ সন্ধ্যা
বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ
সারা বিশ্ব যখন গাজায় ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে ক্রমে, তখন দৃষ্টি তো ফেরাতেই হয় অন্যদিকে। আর এই দৃষ্টি ফেরানোর কাজটা ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ যে খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারে তা জানেনা এমন রাজনীতি সচেতন মানুষ আছে বলে মনে করার কারণ নেই। বিশ্বের একমাত্র জারজ রাষ্ট্র ইসরাইল এখন গাজায় তাদরে ভয়াবহ বিমান হামলা বন্ধ করে ‘স্থল অভিযান’ শুরু করেছে। হত্যার হলিখেলায় মেতে উঠেছে জায়নবাদী জঙ্গিরা। মেরে সাফ করে দিচ্ছে হতভাগা ফিলিস্তিনিদের। আর এ অবস্থায় বিশ্বের একজনই প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন, তিনি মি. পুতিন, এখন অবশ্য অনেকেই করছেন।
ইসরাইলী আগ্রাসনে পুড়ছে ফিলিস্তিন
তার মানে কী দাঁড়াচ্ছে? সিরিয়ায় যখন নৌবহর পাঠানো শুরু করলো আমেরিকা, পুতিনও রুখে দাঁড়ালেন, ফল হলো যে, সেই নৌবহর ফেরত গেল। ইউক্রেন ইস্যুতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে, পুতিন অনড়। এমতাবস্থায় এক ঢিলে অনেক পাখি মারার কাজটি সম্পন্ন করতেই কি ইউক্রেন-রাশিয়ার বিরোধপূর্ণ এলাকায় বিমান ধ্বংস?
মূল টার্গেট কে আসলে? মালয়েশিয়ার বিমান কোম্পানি? নাকি রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দেওয়া? নাকি গাজা থেকে বিশ্ববাসীর নজর ফেরানো? কোনটাতে কার লাভ, এবং কত লাভ?
আসলে মূল টার্গেট এখানে একটি নয়। বরং উপরের সবগুলোই।
বিমান ভুপাতিত হওয়ার পর যেসব পক্ষকে দায়ী করে আলোচনা হচ্ছে সেটার সম্ভাবনা কতটুকু তা কিন্তু কেউ তলিয়ে দেখছেন না। বিমান থাকে অনেক ওপরে। আলোচিত বিমানটি আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে ইউক্রেন-রাশিয়ার সীমান্তের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। সাধারণত এ সময়ে বিমানটি প্রায় ৩৩ হাজার ফুট বা কমবেশি উচ্চতায় থাকার কথা। অত ওপরে কী করে বা কোন ধরনের মারণাস্ত্র দিয়ে বিমান ভূপাতিত করা সম্ভব? রুশপন্থী বিদ্রোহীদের হাতে যে অস্ত্রশস্ত্র আছে তা দিয়ে আশপাশের মানুষকে হত্যা করা বা ভয় দেখানো ছাড়া আর কিছু সম্ভব না। তারা এই অভিযোগ অস্বীকারও করেছেন। দোনেৎস্ক অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একজন নেতা জানিয়েছেন, ১০ কিলোমিটার উঁচু থেকে উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার মতো কোনও অস্ত্র তাদের হাতে নেই।
এমন খবরও বাতাসে ভাসছে যে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিমান ভেবে ইউক্রেন নাকি এই হামলা চালিয়েছে। বিশ্ব রাজনীতির ধারেকাছের কেউ না হয়েও, কিছু না বুঝেও এইটুকু বলতে পারবো যে, ইউক্রেন কোনদিন ‘এরকম ভেবে এরকম কাজ’টি করবে না। পুতিনকে মারতে পারে না ইউক্রেন। ইউক্রেনকে যেভাবেই লেলিয়ে দেওয়া হোক না কেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে, যদি না আমেরিকা সেখানে নিজের হাতে কিছু না ঘটায় তাহলে ইউক্রেনের হাত দিয়ে এমন কাজ করা কোনওদিন সম্ভব হবে না।
কুখ্যাত মোসাদের লোগো
মালয়েশীয় বিমানটি কাদের দ্বারা ভূপাতিত হওয়া সম্ভব সেটা নির্ণয় করতে গিয়ে সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সুপ্রীতি ধর তার লেখায় মোসাদের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। তিনি যে ভুল দিকে ইঙ্গিত করেননি তা উপরের আলোচনায় অবোধগম্য নয়।
মি. সুপ্রীতি ধর তার লেখায় আরো একটি বিষয় উল্লেখ করে বলেছেন- ‘আগেরবার বিমান নিখোঁজ হওয়ার পর কোথায় যেন পড়েছিলাম যে, একই আদলের মালয়েশিয়ার বোয়িং একটা বিমান ইসরায়েলে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাহলে সন্দেহ তো আমাদেরও হয়, অনেক কিছুই হয়।‘
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর যদি যুদ্ধ একটা লেগেই যায় তাহলে আমেরিকা ও ইসরায়েলের খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হয় না ।
যুদ্ধ করতে করতে আমেরিকান সোলজাররা অনেকটা ক্লান্ত । তাদের আপনজনেরাও এই অনর্থক যুদ্ধে তাদের ছেলেপেলেদের যেতে দিতে চায় না ।
আর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শ্রাদ্ধ তো আছেই ।
ফিলিস্তিন থেকে বিশ্বের দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরানোর উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটান হতে পারে। তবে এখনও আলজাজিরা ফিলিস্তিন কে আগের মতই কভারেজ দিচ্ছে। বিরোধপুর্ন এলাকা হওয়ায় বিদ্ধস্ত বিমানের বিশেষ লাইভ টেলিকাষ্ট নাই।
যাই হোক না কেন? ঝরছে কিন্তু মুসলিমেরই রক্ত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন