আহলে হাদিস ‘জঙ্গিবাদের দোসর’? কেউ কি কোনো কিছুর আভাস পাচ্ছেন?
লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১৩ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:৪০:৫৭ বিকাল
‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ (‘ভাগ করো এবং শাসন করো’) নীতি নাকি ইংরেজদের মস্তিষ্ক প্রসূত। এই নীতিতেই তারা দীর্ঘ ২০০ বছর উপমহাদের শাসন ও শোষণ করেছেন। বর্তমান আমাদের দেশের আইন-কানুনও সেই ব্রিটিশদেরই দান(!)হিসেবেই এখনও সমভাবে চলে আসছে। শোনা যায় বিশিষ্ট ইংরেজ লর্ড ম্যাকল‘ এদেশের মানুষেরজন্য এক নতুন শিক্ষানীতির সুপারিশ করে। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করেন। তাতে সে উল্লেখ করেন- এখন আমাদের কর্তব্য হল, এমন একদল মানুষ তৈরি করা যারা আমাদের অধিকৃত অঞ্চলের অধিবাসী ও আমাদের মাঝে দোভাষীর দায়িত্ব পালন করবে। যারা রক্ত ও বর্ণে ভারতবর্ষের হলেও চিন্তা-চেতনা, মেধা-মনন ও চারিত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে হবে ইংরেজ”।
মা শাআল্লাহ। একদম খাপে খাপ। লর্ড ম্যাকলের সেই সুদূর প্রসারী লক্ষ্যের কারণে আজও আমরা রক্তে মাংসে মুসলিম হলেও মন-মস্তিষ্কে অনেকটাই পশ্চিমা ভাব-ধারার অনুসারী।
সে যাই হোক- সেই ইংরেজদেরই যে নীতি দিয়ে শুরু করেছি অর্থাৎ ভাগ করো এবং শাসন করো নীতির নতুন এক মঞ্চায়ন সম্ভবত ইসলাম প্রিয় বাংলাদেশীদের সামনে হতে যাচ্ছে।
হেফাজতে ইসলামের শানে রেসালত সম্মেলন নিয়ে মিডিয়া, ফেসবুক, ব্লগে নানা কথাই হচ্ছে। গত দুদিন হলো- হেফাজত আমির আল্লামা আহমেদ শফি প্রদত্ত বক্তব্য নিয়ে আগ্রহী সবার মাঝে গুঞ্জন চলছে। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন হাসিনা সরকার হেফাজতের বন্ধু। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগও তাদের বন্ধু।
মাত্র কিছুদিন আগে হেফাজত আওয়ামী লীগ সরকার ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে বিরোধপূর্ণ বক্তব্য রেখে ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত মানুষদের মাঝে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তার মুখে নতুন করে আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনা ও তার দল এবং ছাত্র সংগঠনকে বন্ধু বলে ঘোষণা দেয়া অত্যন্ত তাৎপর্যবহ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কেউ বলছেন এটা হেফাজতের ‘বোধদয়, কেউ সাময়িক আত্মরক্ষার কৌশল, কেউ বলছেন হেকমত আবার কেউ কেউ একে ঠেলার নাম বাবাজি বলতেও কসূর করছেন না।
এটা নিয়ে আলোচনা হয়তো খুব তারাতারি শেষ হতো, কিন্তু সম্মেলনের শেষ দিনে হেফাজতের দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব, কারা নির্যাতিত আলেমে দ্বীন, মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন- আহলে হাদীস' সম্প্রদায় ‘জঙ্গিবাদের দোসর’। বাংলাদেশে তাদের তৎপরতা নিষিদ্ধ করা হোক।
এই খানেই মূলত ইংরেজদের সেই কথা আবার চলে আসছে- ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’। যারা হেফাজতের উত্থানকে ইসলামী পুনর্জাগরণ বলে উৱফুল্ল হচ্ছিলেন তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন আর ভাবছেন এটা কী?
এখানে কেউ কেউ কবি নেইমুলারের কবিতা আবৃতি করতে পারেন আবার কেউ কেউ হালাকু খানের বাগদাদ ধ্বংসের সময়ে শিয়া-সুন্নি, রাফেজী-খারেজী বিতর্কে লিপ্ত অর্বাচীনদের কথাও স্মরণ করতে পারেন। কিন্তু তাতে কি কোনো লাভ হবে?
বাংলাদেশে যখন ইসলামপন্থীদের ঐক্যের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। যখন সাধারণ মুসলমানরা আশায় বুক বেধে অপেক্ষা করছে ক্ষুদ্র মতানৈক্য ভুলে আলেম-উলামাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান; ঠিক সেই সময়েই একটি হকপন্থী দলকে এভাবে আক্রমণ কার স্বার্থে?
আমি আর ভাবতে পারছি না। বন্ধুদের প্রতি আহ্বান, আমার এই মনের কালিমা(!) দূর করতে আজ্ঞা হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭৮৮ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পেঠে পড়লে যা হয়। ইহা তাহার ফলাফল।
হজুরের টনিক নেয়াটা একটু বেশী হয়েছে। এই যা -
উপরের বেশভূষায় যথার্থ কিন্তু ভিতরে সাধারন মানুষ হতে কোন পার্থক্য নাই।
হেফাজত মুখনিঃসৃত এ অমীয় বানীদ্বয়ের দ্বারা - এ দেশের সহজ সরল সাধারন মুসলিমদের আশা ও প্রত্যাশাকে পদদলিত করে ফেলেছে।
হলুদ মিডিয়ার ছড়ানো বিভ্রান্তিতে মানুষের চিন্তা ও বিবেচনা বোধ কত নীচে নামতে পারে!
আল্টিমেট আপনার আশংকা প্রকাশের যথাযথ কারন রয়েছে। আশাকরি এ হেফাজত প্রশ্নে এ অনুমান ভুল প্রমানীত হবে। এবং হওয়া উচিৎ
মন্তব্য করতে লগইন করুন