একজোড়া খড়ম ও ৮০’র দশকে ফিরে যাওয়া

লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:৪১:৪৯ রাত

আমাদের কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত উত্তরবঙ্গের এক ভদ্রলোকের সাথে অফিসের সবারই মোটামুটি ভালো সম্পর্ক। তবে এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবার চেয়ে আমার সাথে একটু বেশি বলে মনে হয়। কারণ হচ্ছে- তিনি নাকি আমার ভায়রা ভাই। তো কীভাবে?

পাঠক অনেকেই হয়তো জানেন, আমার শশুড়বাড়ী বনলতা সেনের নাটোরে। ঐ ভদ্রলোকের শশুড়বাড়ীও নাটোরে! সুতরাং তিনি আমার ভায়রা ভাই!!

সে যাই হোক, ভদ্রলোকের বাড়ি বগুড়ায় হওয়ায় একবার তিনি আমাদের বিখ্যাত বগুড়ার দই খাইয়েছেন। তা যাক সে প্রসঙ্গ।

এখন যে প্রসঙ্গের অবতারণা করতে কী-বোর্ড চালাচ্ছি তা হলো- তিনি আজকে আমার জন্য একজোড়া খড়ম পাঠিয়েছেন। খড়ম জোড়া পায়ে দিয়ে দাদার স্মৃতি মানসপটে ভেসে উঠছে বার বার।



দাদা ভাইকেই আমি প্রথম খড়ম পায়ে হাটতে দেখি। সেটা অবশ্য শেষ বারও মনে হয়। সময়টা ছিল ৮০’র দশক। এর পরে আর সেভাবে খড়ম পায়ে কাউকে হাটতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না।



খড়ম কী?

উইকিপিডিয়ার সংজ্ঞা মতে, খড়ম একপ্রকার কাঠের পাদুকা। হিন্দি "খড়ৌঙ" শব্দটি থেকে বাংলায় "খড়ম" শব্দটির উৎপত্তি। সংস্কৃতে খড়ম "পাদুকা" নামে পরিচিত।



একখণ্ড কাঠ পায়ের মাপে কেটে খড়ম তৈরি করা হয়। সম্মুখভাগে একটি বর্তুলাকার কাঠের গুটি বসিয়ে দেয়া হয় যা পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও পাশের আঙ্গুলটি দিয়ে আঁকড়ে ধরা হয়। বর্তমানে পা আটকে রাখার জন্য কাঠের গুটির পরিবর্তে রাবার খণ্ড ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন কালে খড়মের উদ্ভব। খড়ম পায়ে হাঁটা সহজ নয়। এছাড়াও খড়ম পায়ে হাঁটার সময় চটাশ্‌ চটশ্‌ বেশ শব্দ হয়। বাংলাদেশের নিম্নোদ্ধৃত লোকজ ছড়াটিতে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে :

হরম বিবি খড়ম পায়

খটটাইয়া হাঁইটা যায়

হাঁটতে গিয়া হরম বিবি

ধুম্মুড় কইরা আছাড় খায়

আছাড় খাইয়া হরম বিবি

ফিরা ফিরা পিছন চায় ....


ভারত উপমহাদেশের বিশিষ্ট আউলিয়া হযরত শাহজালাল (রহHappy ১৪শ শতকে বাংলাদেশের সিলেটে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তাঁর ব্যবহৃত খড়ম এখনো তাঁর সমাধিস্থল সংলগ্ন স্থাপনায় রক্ষিত আছে।

‘খড়ম’ এখন শুধুই স্মৃতি

বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ায় কাঠ নির্মিত পাদুকা খড়ম এখন শুধুই স্মৃতি। এককালে সমগ্র দেশের মানুষই ছিলো খড়ম নির্ভর। কিন্তু বর্তমানে এ শিল্পটি হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে।

বর্তমানে চামড়া, রেকসিন, প্লাস্টিক, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি জুতা (পাদুকা) মানুষের পায়ে শোভা বর্ধন করে। বিগত কয়েক বছর ধরে বার্মিস জুতায় ছেয়ে গেছে বাংলাদেশের নগর মহানগর শহর এমনকি গ্রাম বাংলার মানুষের পায়ে পায়ে। বলতে গেলে এখন দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষই বার্মিস জুতা ব্যবহার করেন। অথচ ৭০’র দশক পর্যন্ত গ্রাম বাংলায় অনেক জনপ্রিয় ছিল এই খড়ম পাদুকা। জানা যায়, কাঠ দিয়ে তৈরি খড়ম পরিবেশবান্ধব। তারপরও মানুষ এটিকে পরিহার করেছে। অপরদিকে বার্মিস জুতা মানুষের মাথা গরম করা, পায়ের নিচের স্তর চামড়া মোটা করে বয়রা নামক রোগের সৃষ্টি করে।



বিষয়: বিবিধ

৩১১০ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

206625
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৫৯
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমাদের গ্রামের একজন মুরব্বি ছিলেন উনি আমাদের মসজিদে প্রতিদিন সকালে আসতেন খড়ম পায়ে দিয়ে ,,এসে আমাদেরকে কালিমা পড়াতেন আর বলতেন "আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুওয়াহদাহু লা শারীকা লাহুওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহুওয়ারাসুলূহু’ ( লা শারীকা লাহুওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহুওয়ারাসুলূহু ) স্পষ্ট করে বলতে হবে। আজ উনার কথা মনে পরে গেল আপনার উপহার পাওয়া খড়ম দেখে। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করায়
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২১
155266
আবু আশফাক লিখেছেন : আমিও ছোট বেলায় এটি মুরুব্বিদের পায়ে দেখতাম। কোনো কোনো দিন হয়তো সেগুলোর মধ্যে পা গলিয়ে দিয়ে আছাড়ও খেতাম। আজ পায়ে দিয়ে কিন্তু তেমন সমস্যা হচ্ছে না।
206649
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:১৮
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : খরম আমিও পড়েছি কিন্তু সাচ্ছন্দ্য বোধ করিনাই।
আচ্ছা খরম কি লুঙ্গীর সাথে বেশি মানান সই??
নাকি পায়জামাতে ? ? Smug ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
পিলাচ ++
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৪
155268
আবু আশফাক লিখেছেন : অভ্যাস্ত না হলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার প্রশ্নই আসে না। তবে আজ আমার কাছে তেমন লাগছে না। ভালোই লাগছে। তবে নিয়ত করেছি- শুধু অফিসেই এটি ব্যবহার করবো। এরপর যাদুঘরে না হলেও বাসায় খুব যত্ন করে রাখবো।
দ্বিতীয়ত, খড়ম পাজামা নাকি লুঙ্গির সাথে মানানসই তা হয়তো বলতে পারবো না, তবে সে সময় লুঙ্গি পরিহিতদের পায়েই বেশি দেখেছি বলে মনে পড়ে।
206654
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : খড়ম.....
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৭
155270
আবু আশফাক লিখেছেন : জ্বী। আপনার জন্য

১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৯
155271
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আমার আজকের পোষ্টটি পড়ার অনুরোধ করছি।রাজনীতি বিষয়ক লেখা।
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৩৮
155276
আবু আশফাক লিখেছেন : একটু আগেই পড়ে এলাম মনে হয়।
206674
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৪৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক দিন পর খড়ম !!!
আমার দাদা-দাদিকে ব্যবহার করতে দেখতাম। আব্বাও একসময় ব্যবহার করতেন। গ্রামের দিকে অনেককে কয়েকবছর আগে ব্যবহার করতে দেখেছি। খড়ম এর আরেকটা ভাল ব্যবহার আছে। পিটানর জন্য বেশ ভাল!!
ধন্যবাদ স্মৃতিময় পোস্টটির জন্য।
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
155280
আবু আশফাক লিখেছেন : হঠাত খড়ম দিয়ে পিটানোর কথা মনে হলো কেন? অভ্যাস ছিল? খড়ম তো কোনোদিন পায়ে দাওনি, আমার অফিসে এসো খড়ম পায়ে ছবি তোলা যাবে।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:৪৩
155364
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আইজ্ঞা দিছি!!!!
206685
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:০৪
বাকপ্রবাস লিখেছেন : খড়ম পায়ে ঠেড়ম ঠেড়ম
ঢোলের তালে ঢেড়ম ঢেড়ম
লাগছে আহা লাগছে চরম
চলছি পাযে শাহী খড়ম
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫২
155408
আবু আশফাক লিখেছেন : -
শাহী নহে গ্রাম্য খড়ম
পায়ে দিয়ে লাগছে চরম
কাঠের উপর পা দিয়েছি
মনে মনে ভাবছি নরম!
206688
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:০৬
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : অফিসে পড়লে একদিন পড়েন না হলে এটার শব্দ অফিসকে লাটে ওঠাবে সাথে আপনার বিব্রত হওয়া ফ্রি।
অনেকদিন আপনার কবিতা দেখছিনা???(!)
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫৫
155409
আবু আশফাক লিখেছেন : -
অফিসে আমার নিজেই রাজা
বিব্রত করা নয়তো সোজা
আস্তে হাটলে হয় না আওয়াজ
শৈল্পিক এক ভাবনা খোজা।
206695
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৩২
মুক্ত কন্ঠ লিখেছেন : খড়মেরর কথা শুনলে জমিদারী আমলের কথা মনে পড়ে। ধন্যবাদ!
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫৮
155410
আবু আশফাক লিখেছেন : -
দাদা ছিলেন ঠাকুর মশায়
খড়ম পায়ে হাটতো বাসায়
জমিদারী ছিলোও বটে
ছিল আরো আশয়-বিষয়।
206708
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:০৮
গ্রাম থেকে লিখেছেন : স্মৃতিকাতর করে ফেললেন ভাই। আমার এক নানা এখনো খড়ম পায়ে দেন। ছোটবেলা কতো চেষ্ঠা করতাম খড়ম পায়ে দিয়ে হাটার। কিন্তু তাল মেলাতে পারতাম না।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০০
155411
আবু আশফাক লিখেছেন : এখনও খড়ম পায়ে হাটেন!!! নানার বয়স কেমন? ৮০' বেশি নাকি?
আমি কাল থেকে প্র্যাকটিস করছি। খারাপ না চলছে। অবশ্য বাইরে কোথায়ও যাচ্ছি না, শুধুই অফিসে।
206724
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৪১
পবিত্র লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ Happy Happy
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০১
155412
আবু আশফাক লিখেছেন : কি ভালো লাগলো? খড়ম নাকি উপহার হিসেবে খড়ম?
১০
206737
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৫৫
মাটিরলাঠি লিখেছেন : খড়ম ছোটবেলায় ব্যাবহার করেছি। আমাদের এখানে এখনো খড়ম তৈরী হয় ও বিক্রি হয়। মনে হয় সংখ্যায় খুবই নগণ্য হলেও কিছু মানুষ এখনো খড়ম ব্যবহার করেন। দাদা-নানারা ফিতা ছাড়া খড়ম ব্যবহার করতেন। পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৩
155413
আবু আশফাক লিখেছেন : আপনাদের কোন এলাকা ভাই? এখনও খড়ম ব্যবহৃত হয়? অবশ্য কোনো এক এলাকায় হওয়ারই কথা, না হলে আমি উপহার পেতাম কেমনে? অবশ্য গুগলে গিয়ে নতুন কোনো খড়মের ছবি পাইনি, তাই আমার উপহার পাওয়াটার ছবিই দিয়েছি।
১১
206782
১৩ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:৪৩
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : শাহজালাল (র)র খড়ম এবং তলোয়ার দেখেছিলাম প্রথমবার সিলেট বেড়াতে গিয়ে। কিন্তু দ্রুত বেরিয়ে যেতে হয়েছিল যেহেতু বার বার বুঝিয়ে দেয়া সত্ত্বেও স্টাডি ট্যুরের কিছু কিছু ছাত্রী ওখানে গিয়ে শিরকী কাজকারবার শুরু করে দেয়।
কিছু কিছু খড়মে ওপরের বর্তুলাকার পা বন্ধনীটিও থাকতনা, শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ধরে রাখার মত একটি কাঠের পেরেকের মত থাকত। দেখে মনে হয় স্বাস্থ্যকর হলেও এটি পরে হাঁটা বেশ কঠিন এবং দক্ষতার বিষয় ছিল।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৬
155414
আবু আশফাক লিখেছেন : আপনি সম্ভবত এমন খড়ম দেখেছেন।

আমারও মনে হয় এগুলো পায়ে দিয়ে হাটা একটি শৈল্পিক ভাবের প্রয়োজন।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
155498
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : ঠিক ধরেছেন, আমি ভেবে পাইনা তাঁরা এগুলো পরে অমসৃন পথে হাঁটতেন কিভাবে। আমরা তো ঘরের ভেতরেই পরে হাঁটতে তিনবার হোঁচট খাব, যদি না আগে পা থেকে খুলে পড়ে যায়। Tongue
১২
206811
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৫:৪৭
শেখের পোলা লিখেছেন : ছোট বেলা খড়ম পরে মাদ্রাসায় যেতাম৷ আজ আবার তা ছবিতে দেখলাম৷ ধন্যবাদ৷
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৭
155415
আবু আশফাক লিখেছেন : ছোট বেলায় দাদার পায়ের খড়মে পা গলিয়ে মাঝে মাঝে হাটতে চেষ্টা করতাম। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই আছাড় খেতাম।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫২
155446
নেহায়েৎ লিখেছেন : ছোটবেলায় জেঠাকে পরতে দেখেছি খটর খটর খটর - - --
১৩
206848
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫৬
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : আমি কাউকে খড়ম পরতে দেখেছি কি না মনে করতে পারছিনা। তবে আব্বা আম্মার মুখে তাদের মুরুব্বিদের খড়ম পড়ার কথা শুনেছি। প্রায় বিলুপ্ত হওয়া বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী খড়মীয় পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
155440
আবু আশফাক লিখেছেন : এইবার দেহেন একজন পায়ে দিয়ে বইস্যা আছে।

১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫১
155445
নেহায়েৎ লিখেছেন : আমি ছোটবেলায় আমার জেঠাকে খড়ম পরতে দেখেছি। খটর খটর খটর খটর খটর-----------------------
১৪
206865
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:২৬
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : একেবারে নষ্টালজিক করে দিলেন। আমার দাদাও পড়তেন এই জিনিসটি। সুন্দর কাঠের তৈরি। একই খড়ম দাদাকে ১০ বছরেরও বেশি ব্যবহার করতে দেখেছি, নষ্ট হয়নি। সে খড়ম রাখার জন্যও সুন্দর একটি কাঠের বাক্স ছিল।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫১
155444
আবু আশফাক লিখেছেন : আমিও ভাবছি কিছুদিন ব্যবহার করে সুন্দর একটি বাক্স বানিয়ে সংরক্ষণ করবো। তার আগে চেষ্টা করবো খড়ম পায়ে আপনাদের সাথে আবার হাতিরঝিল বা চলনবিল ভ্রমণ করতে পারি কিন না।
১৫
206869
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
আয়নাশাহ লিখেছেন : আমাকে নষ্টালজিয়ায় ফেলে দিলেন ভাই।
আমি তো নিজেই খড়ম পরছি। দুই ধরণের খড়মই পরেছি। একেবারে ছোটবেলায় রাবারের বেল্ট যা সাধারণত গাড়ির চাকার টিউব কেটে ফিতার মতো করে লাগানো ছিল ঠিক আপনার দেয়া ছহবির মতো। এটা পায়ে দিলে দুইটা শব্দ হয়। প্রথম শব্দ হয় মাটিতে পা পড়ার সাথে সাথে। এই শব্দটা মাটিতে কাঠের আঘাত করার জন্য তৈরী হয়। যখন পেছনের পা তুলে সামনে বাড়িয়ে দিতে যাবেন এমনি রাবারের বেল্টের টানে কাঠ খন্ডটি পায়ের তলায় আঘাত করে আরেকটা শব্দ বানায়। আমরা সাধারণত সন্ধ্যয় পুকুরে হাত পা ধুয়ে ও্জু করে ঘরে আসতাম খড়ম পায়ে দিয়ে। সে সময় সেন্ডেল বা জুতার প্রচলন তেমন ছিলনা।
কিছু বড়ো হয়ে খুঁটি যুক্ত খড়ম পরেছি। বড়ো চাচা ছিলেন গ্রামের মসজিদের ইমাম। তিনি খুঁটি ওয়ালা খড়ম পরতেন। ওটা অনেক উঁচু ছিল। অন্তত তিন চার ইঞ্চি পুরু কাঠের মাঝখানের অংশ কেটে বাদ দিয়ে সামনের এবং পেছনের দুই দিকের অংশ রেখে দেয়া হতো। বুড়ো এবং অনামিকা আঙুলের মাঝখানে একটা খুঁটি ঠিক লাটিমের মতো করে বাসিয়ে দেয়া হতো যা দিয়ে খড়মকে ধরা হবে। এই খড়ম পায়ে দেবার বায়না ধরলে প্রথমে দেয়া হয়নি কারণ ওটা পরে হাঁটতে পারবোনা বলে। যখন চাচার খড়ম পরে হেঁটে দেখালাম যে আমি পারি, তখন বাবা একটা ছোট খড়ম কিনে এনেছিলেন। তবে বেশীদিন পরা হয়নি কারণ এর মাঝেই দুই ফিতাওয়ালা স্পঞ্জের সেন্ডেল বাজারে এসে গেছে।

খুঁটি ওয়ালা খড়ম পায়ে দিলে নিজেকে মুরব্বি মুরব্বি মনে হতো। সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।

১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪১
155438
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকে দাদাভাই বা নানাভাই ডাকার অনুমতি দিতেন যদি।Happy Happy (এমনিতেই আপনি বেশ প্রবীণ)।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫৩
155447
আবু আশফাক লিখেছেন : এইট্যা আপনার চাচারটার ধরণ



আর এইটা আপনারটার ধরণ বলে মনে হচ্ছে-



১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫৪
155448
আবু আশফাক লিখেছেন : ওহিদ ভাই যদি আয়না শাহকে নানা ভাই ডাকেন, তয় আমি একখান চিঠি পাঠাই দিমু।
চিঠি খানা এই হানে আগে দিলাম-

নানা ভাই
সালাম নেবেন। আমাদের এখন ছুটি। মাকে নিয়ে আপনার কাছে বেড়াতে যাব। আমাদের লাল মুরগী ডিম দিয়েছে। আটটা ফুটফুটে বাচ্চা হয়েছে। দেখতে খুব সুন্দর।
আমাদের পেয়ারা গাছে টুনটুনি বাসা বেধেছে। আমি আর আবু টুনটুনির গান শুনি। আবু একটু একটু পড়তে পারে।
আল্লাহর রহমতে আমরা ভালোই আছি। আপনি আর নানি ভালো আছেনতো? নানীকে ছালাম দেবেন।


১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৩০
155471
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : ছোটবেলায় ক্লাস ওয়ানে এ সুন্দর চিঠিটি পড়েছিলাম। এখনো মনে আছে আপনার।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
155499
আবু আশফাক লিখেছেন : ওহিদ ভাই, ছোট বেলার অনেক কিছুই মনে আছে, কিন্তু এখনকারগুলো মনে রাখতে পারি না!!
১৬
206874
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
নেহায়েৎ লিখেছেন : ছোটবেলায় আমার জেঠাকে খড়ম পরতে দেখেছি। খটর খটর করে হেটে বেড়াতেন। ফিতা ছাড়া কিভাবে তিনি হাটতেন ভেবে পাই না। আপনারটায় দেখি লেদার লাগানো। খড়ম হতে হবে খড়ম এর মতো কোন লেদার ফেদার কিচ্ছু থাকতে পারবে না। হুদাই কাঠ।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
155449
আবু আশফাক লিখেছেন : তাইলে গুগল মামা থেকে ধার করা এইটা লন। আমি এটা পায়ে হাটতে পারুম না।

১৭
206883
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : আমিতো একবার নিজেই খড়ম তৈরি কর্ছিলাম বর্ষাকালে হাটার জন্য Winking তক্তাকে ছোট্টকরে কেটে বেল্ট জাতীয় কিছু একটা পেচিয়ে পা-বন্ধনীর মতো পেরেক মেরে হাটা শুরুকরি, একপর্যায়ে এমন আছাঁড় খেয়েছিলুম... যা এখন বলতেও লজ্জা লাগে। I Don't Want To See Big Grin I Don't Want To See
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪০
155474
আবু আশফাক লিখেছেন : নিজেই যখন মিস্ত্রি!!
আমিও দাদার খড়ম পায়ে দিয়ে কয়েক বার আছাড় খেয়েছি।
১৮
206912
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৩০
গ্রাম থেকে লিখেছেন : আমার নানার বয়স ৯০/৯১ হবে।
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪২
155479
আবু আশফাক লিখেছেন : এজন্যই এখনও তিনি খড়ম পড়েন। পুরোনো অভ্যাস কিনা!!
১৯
206914
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৩০
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : আজকের নতুন প্রজন্ম...খড়ম কি জিনিস তা তো চিনেই না...এর প্রচলন এখন নেই বললেই চলে...ধন্যবাদ আপনাকে স্মৃতি গহীনে হারিয়ে যাওয়া একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য... Good Luck
১৩ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
155480
আবু আশফাক লিখেছেন : নতুন প্রজন্মকে জানাতেই আমার হটাত ব্যতিক্রমি উপহার পাওয়ার ঘটনা শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File