মেধামূল্যায়ণ মঞ্চ : চাকরিতে কোটা প্রথা আপনি সাপোর্ট করেন কি?

লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১০ জুলাই, ২০১৩, ০৪:৩৬:০৫ বিকাল



এই সেই গণজাগরণ মঞ্চের আলোচিত স্থান। বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই। হ্যাঁ, যেটা ভাবছেন সেটাই- শাহবাগ মোড়। শাহবাগ মোড়ে এবার অবস্থান নিয়েছে দেশের সচেতন-মেধাবী শিক্ষার্থীরা। যারা দেশকে মেধাহীন করার চক্রান্ত রুখে দিতে চায়, যারা দেশকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের উপযোগী করে গড়তে চায়, যারা জাতিকে উন্নত জাতি হিসেবে তুলে ধরতে চায়, জাতির সেই সচেতন প্রজন্ম গঠন করছে- ‘মেধামূল্যায়ন মঞ্চ’। দাবি একটাই- কোটা প্রথার অবসান চাই।

বাংলাদেশের বর্তমান কোটা প্রথার এই অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করার লড়াইয়ে আপনিও হতে পারেন একজন সিপাহসালার/সৈনিক।

কেন আপনি সমর্থন করবেন?
বর্তমান কোটা প্রথায় একজন বৈষম্য এমন যে, ৮০ পেয়ে ফেল করবে, আর কেউ ৫০ পেয়ে পাস করবে।

এত দিন প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত পর্যায়ে কোটা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হতো। কিন্তু ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পর্যায় থেকেই কোটা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে মেধাবীদের একটা বড় অংশ শুরুতেই সরকারি চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। অন্যদিকে কম নম্বর পেয়েও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা, আদিবাসী ও নারী কোটায় লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়ে যাবেন। আর অপেক্ষাকৃত বেশি নম্বর পেয়েও এই কোটার বাইরের অনেকে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। -এই বৈষম্য চলতে পারে না।

কোটা প্রথার স্বরূপ
বর্তমানে কোটা প্রথায় ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, এক শতাংশ প্রতিবন্ধী, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-নাতি-পতী, ১০ শতাংশ নারী ও জেলা কোটা। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ।

ফলে এর কোনো শ্রেণিতে যারা পড়েন না, তাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাকি ৪৪ শতাংশের জন্য।

পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৪১ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং ২০ লাখ ১৬ হাজার ৬১২ জন প্রতিবন্ধী।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় দুই লাখ।

এই হিসেবে মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ১০ শতাংশ নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা সংরক্ষিত থাকছে পাঁচ শতাংশ, ১ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধীর জন্য এক শতাংশ এবং ০(শূন্য) দশমিক ১৩ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ।

এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে মেধাবীদের জায়গা কোথায়?

মেধাবিদের আহবান
চাকরিতে কোটা প্রথা আপনি সাপোর্ট করেন কি? করলে কেন করেন? আপনার দুর্বলতাটা কোথায়? যদি কোনো দুর্বলতা না থাকে, তাহলে আসুন কোটার বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই; দেশকে মেধাশূন্য করার হাত থেকে রক্ষা করি। বিশ্ব যখন মেধার প্রতিযোগিতায় রকেট গতিতে এগিয়ে চলছে, তখন আমরা কোটা প্রথা আর হাই হ্যালোর ক্ষমতা নিয়ে দেশকে পিছনের দিকে টেনে ধরছি।



দেশ, জাতি ও মেধাবীদের স্বার্থে চাকরিতে কোটা প্রথার অবসান জরুরি।
যদি আপনি বর্তমান প্রচলিত এই মরণঘাতি কোটা প্রথার বিরোধী হন, তাহলে অনুগ্রহ করে মন্তব্য করে মত প্রকাশ করুন। আর যাদের পক্ষে সম্ভব মেধাবীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে স্ব-শরীরে যোগদান করুন।

বিষয়: বিবিধ

৪৮১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File