ব্লগে ভুল বানানের ছড়াছড়ি : একটু সচেতন হতে পারি কি?

লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ০২ জুলাই, ২০১৩, ১০:২১:৪৫ সকাল

যারা ব্লগিং করেন তারা অবশ্যই জানেন ব্লগে না আসলে, বিভিন্ন জনের উপলব্দি শেয়ার না করলে কত অস্বস্তি লাগে। ব্লগ যেন আলাদা একটি জগত, আলাদা একটি জ্ঞান ভাণ্ডার, আলাদা একটি লাইব্রেরি, স্বতন্ত্র একটি পাঠশালা। এখানে যেমন একজন অন্যজনের জ্ঞান, উপলব্দি, মনোভাব ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন; তেমনি ভাষাগত বিভিন্ন বিষয়েও অবহিত হন।



আজ আমি ব্লগের বিভিন্ন ব্লগারের ইচ্ছাকৃত/অনিচ্ছাকৃত বানান ভুল সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলতে চাই। যদিও আমিও বিভিন্ন লেখায় বানান ভুল করে থাকি, তারপরও আমি চাই অন্যরা এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিক; যাতে করে যারা ব্লগকে একটি স্বতন্ত্র পাঠশালা হিসেবে ব্যবহার করে তাদের উপকার হয়।

আজকাল ব্লগের লেখাগুলো পড়লে বানান ভুলের ছড়াছড়ি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসাবে সচেতন পাঠকের চোখে ধরা দিতে বাধ্য। হাতেগোনা গুটিকয়েক ব্লগার ছাড়া বেশিরভাগ ব্লগারই ভুল বানানে লেখার যেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এটা যে তারা জানেনা বলে লেখে এমন নয়। বরং এগুলো সচেতনার অভাব বলেই আমার কাছে প্রতিভাত হয়। অথচ একটু সচেতন হলে, একটু কষ্ট করলে এ-ভুলগুলো অনেকাংশে পরিহার করা যায়।

আমি সাধারণত যাদের লেখা মিস করি না, তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্লগারই ভাল লেখেন। কিছু কিছু ব্লগার এর লেখাতো অত্যন্ত উঁচু মানের। তাছাড়া এ ব্লগের লেখা গুলো মার্জিত এবং পরিশীলিত। কিন্তু যে বিষয়টি আমাকে পীড়া দেয়, তা হল শব্দের বানান। ভাল লেখেন, এমনকি যাদের লেখা অত্যন্ত উঁচু মানের, তাদেরও অনেকে বানান ভুল করেন এবং অনেক ক্ষেত্রে এমন বানান ভুল করেন, যে বানান ভুলের ফলে শব্দটির উচ্চারণ এমনকি অর্থ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে যায়।

আবার কেউ কেউ আছেন, যাদের সামান্য ভুলের কারণে বাক্যটিই ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। কেউ কেউ লিখেন- মন চাই। মূলত সে বুঝতে চায়- মন চায়। এখানে ‘চায়’-কে ‘চাই’ বলে উল্লেখের কারণে পড়তে গিয়ে অস্বস্তি লাগে।

সাধারণত দু’ধরনের বানান ভুল আছে :

প্রথমত, যে ধরনের বানান ভুল করলে (ব্যতিক্রম ছাড়া) শব্দের উচ্চারণ বা অর্থের পরিবর্তন হয় না।

দ্বিতীয়ত, যে ধরনের বানান ভুল করলে (ব্যতিক্রম ছাড়া) শব্দের উচ্চারণ বা অর্থের পরিবর্তন হয়।

প্রথম ধরনের বানান ভুলের ক্ষেত্রে যেহেতু শব্দের উচ্চারণ বা অর্থের পরিবর্তন হয়না, তাই এধরনের বানান ভুলকে অতটা মারাত্মক বলা যায় না। বাংলা বানান ভাল জানেন এমন অনেকেও এ ধরনের বানান ভুল করে থাকেন। তারপরও এ ধরনের বানান ভুলও যাতে না হয় সে চেষ্টা করা উচিত।

দ্বিতীয় ধরনের বানান ভুলটা অত্যন্ত মারাত্মক এর ফলে শব্দের উচ্চারণের সাথে সাথে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শব্দের অর্থেরও পরিবর্তন হয়ে যায়। যে লেখায় এ ধরনের বানান ভুল থাকে তাকে কোনোভাবেই মান সম্পন্ন লেখা বলা যায় না।

তাই যারা ভাল লেখেন, লেখার সময় তাদের কোন বানান নিয়ে সন্দেহ হলে যদি একবার অভিধান খুলে দেখে নেন, তাহলে আর এধরনের ভুলের সম্ভাবনা থাকে না।

আর একটি কথা, মডারেটরগণ কী কী বিষয় বিবেচনা করে একটি লেখাকে 'নির্বাচিত পোস্ট' নির্বাচিত করেন তা জানিনা। তবে অনেক সময়ই ‘নির্বাচিত পোস্ট’ লেখায় দ্বিতীয় ধরনের বানান ভুলের ছড়াছড়ি দেখা যায়। যা অত্যন্ত দৃষ্টি কটু, এমনকি এ ধরনের লেখা ‘নির্বাচিত পোস্ট’ হলে ব্লগের মানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই কোনো লেখা ‘নির্বাচিত পোস্ট’ ‘নির্বাচিত ব্লগ’ ইত্যাদি নির্বাচত করার আগে অন্যান্য বিষয়ের সাথে বানান এর বিষয়টিও বিবেচনা করার জন্য মডারেটরগণকে অনুরোধ করবো।

টুডে ব্লগের বেশিরভাগ ব্লগারকে আমার চেয়ে জ্ঞানী মনে করি। অন্যদিকে আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রও নই; তাই আমার এধরণের লেখা অনেকের কাছে ধৃষ্টতার শামিল। এজন্য কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।


বিষয়: বিবিধ

৩৩১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File