রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব হবে না; নাস্তিক আর নাস্তিকের বাচ্চাদের কর্তৃত্বই থাকবে?
লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১০ মে, ২০১৩, ১০:১২:১১ সকাল
৯ এবং ১০ মে ২০১৩ সংখ্যায় এদেশের অতিপরিচিত বাম বুদ্ধিজীবী(!) নাস্তিক্যবাদীদের দোষর মুনতাসির মামুন দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় এক দীর্ঘ কলাম লিখেছেন। তার কলামের শিরোনাম হচ্ছে-
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না
লেখার শুরুর দিকে তিনি খালেদা জিয়ার পোশাক-আশাক নিয়ে তামাশা করেছেন। তিনি বলেছেন- ‘‘৩ মে খালেদা জিয়া যখন চকচকে পোশাক-আশাকে প্রফুল্ল চিত্তে জনসভায় এলেন তখনই শঙ্কিত বোধ করলাম।’’
শুরুতেই ভুল করেছেন যে, সে জনসভা হয়েছিল ৩ মে নয় বরং ৪ মে।
এরপর তিনি শ্রদ্ধেয় আল্লামা আহমদ শফীকে বানিয়েছেন- ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী বা রাজাকার। এখানে তিনি আবিষ্কার করেছেন- ১৯৭২ সালে খালেদা জিয়া সাংসারিক সমস্যা মেটানোর জন্য মাথা নিচু করে বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে গিয়েছিলেন।
তিনি ঘটা করে জানান দিয়েছেন- তার বন্ধু শাহরিয়ার কবিরসহ তারা ৬ মে’র ভিসা-টিকেট ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। বলেছেন হেফাজতিরা শ্লোগান দিয়েছে-‘আমরা হবো তালেবান, বাংলা হবে আফগান।’ পাঠক হয়তো জানেন এদেশের আলেম ওলামগণ উক্ত শ্লোগান কোনো এক সময় দিতো। মিস্টার মুনতাসির মামুন আগাচৌদের সমগোত্রীয় কিনা, তাই তিনি চামে চালিয়ে দিলেন যে, এদিনও তারা উক্ত শ্লোগান ব্যবহার করেছে।
দ্বিতীয় কিস্তিতে তিনি উল্লেখ করেছেন ‘‘সম্মিলিতভাবে আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটের সংখ্যা বেশি। সে জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা সবসময় ভোটার নিয়ে চিন্তিত থাকেন বেশি। আওয়ামী লীগেও ডানপন্থার ঝোঁক প্রবল, হেফাজতী ইস্যুতে যা ফুটে উঠেছে। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের দু’টি দিক আছে। তার বর্তমান আমলে, সবচেয়ে বেশি নাশকতামূলক ঘটনা ঘটেছে এবং এর পিছে কোন না কোনভাবে বিরোধীদের চক্রান্ত ছিল। এত চক্রান্ত দমন করে টিকে থাকা দুষ্কর। সে কারণে তিনি মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন গুটিকতক নেতা-আমলা ও সেনাবাহিনীর ওপর। তার পৃষ্ঠপোষকতায় যারা নেতা বা ক্ষমতাবান তারা সবাই যোগ্য ও বিশ্বস্ত এমন কথা শেখ হাসিনার একান্ত শুভার্থীরা তার সামনে বললেও, অপ্রকাশ্যে বলেন না। পৃষ্ঠপোষকতায় যারা নেতা হয়েছেন তারা ‘ইয়েস মিনিস্টার’ ছাড়া কোন পরামর্শ দেয়ার সাহস রাখেন না বা নেতা সেই সুযোগও দেন না। শুধু তাই নয়, মধ্যবিত্ত সিভিল সমাজের সঙ্গে তার সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন। এ কারণে, তার অবস্থান এখন দুর্বল, যদিও তিনি ভাবেন সবল। এর প্রতিফলন দেখি, আওয়ামী লীগের মিছিলে যেখানে ৫০ জনের বেশি হয় না বা সমাবেশে যেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কতজন আসে সন্দেহ।’’
এখানে তিনি খুব কষ্টে তাদের দুর্বলতাগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীসহ নীতিনির্ধারকদের জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
মুনতাসির মানুষ সবচেয়ে বড় যে আশঙ্কা করেছেন তা হলো- দেওবন্দী, আহমদিয়া, আহলে হাদিস, জামায়াতী; এদের মাঝে বিরোধটা খুবই সামান্য বিষয় নিয়ে। তাই যে কোনো সময় এরা ঐক্যবন্ধ হতে পারে। আর ইসলামপন্থীরা ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবন্ধ হলে আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় যাওয়া আর হবে না। তাই যে কোনো পন্থায় এদের এক হতে দেওয়া যাবে না। তিনি আরো বলেছেন- তাদের সেক্যুলার টিভি চ্যানেলগুলোও নাকি জামায়াতের টাকার লোভ সামলাতে না পেরে তাদের তোষণে লিপ্ত।
তার ভাষায়- ‘‘আমরা সবাই মিলে বিএনপি-জামায়াত হেফাজতী ও অন্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছি এবং এ কাজগুলো করছে সমাজে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হিসেবে পরিচিত টিভি চ্যানেলগুলো। বিরোধীরা এ ভাবে জায়গা ছেড়ে দেয় না। এখন কে যে জামায়াতী পয়সা খাচ্ছে না, আর কে খাচ্ছে, বলা দুষ্কর।’’
তার আক্ষেপ, জনগণ তাকে, শাহরিয়ার বা জাফর ইকবালকে মুরতাদ বলে। শেখ হাসিনার মতো ধর্মপ্রাণ (!) মহিলাকে নাস্তিক বলে।
তবে আমার জানা ছিল না যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেউ নাস্তিক বলেছে। যদিও মাঝে মাঝে কপালে টিপ, রুদ্ধাক্ষের মালা, গজে চরে ইত্যাদি নানা কাণ্ড রয়েছে।
তিনি মিডিয়াকে জ্ঞান দিয়েছেন হেফাজতকে কাভারেজ না দিতে।
এরকম নানা আলোচনায় তিনি তার ভাষায় দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের (সম্মিলিতভাবে আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটের সংখ্যা বেশি-মুনতাসির) রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চা অভিধায় অভিহিত করে তাদের ক্ষমতায় আসতে না দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন।
জনগণের প্রশ্ন হচ্ছে- দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারা যদি (সম্মিলিতভাবে আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটের সংখ্যা বেশি-মুনতাসির) দেশের কর্তৃত্ব না করতে পারে তাহলে কর্তৃত্ব কি শুধূ গুটি কয়েক নাস্তিক, নাস্তিকের দোষর, আর নাস্তিকের বাচ্চাদের থাকবে?
বিষয়: বিবিধ
২৫৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন