গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গ্রেপ্তার : মুক্তি চাই
লিখেছেন লিখেছেন আবু আশফাক ১১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:৫১:১৩ সকাল
দেশ, জাতি আর গণতন্দ্রের অতন্দ্র প্রহরী দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে পুলিশের একটি দল কাওরান বাজারস্থ ‘আমার দেশ’ কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সাদা একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অফিসে অবস্থান করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের অফিসে নেয়া হয়েছে। ডিবি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির বিশেষ একটি দল মাহমুদুর রহমানের অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আধা ঘণ্টা পর ডিবির ওই দলটিই পুনরায় ‘আমার দেশ’ অফিসে আসে। এ সময় মাহমুদুর রহমানের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ, কয়েকটি পেনড্রাইভ, দু’টি হার্ডডিস্ক, একটি সিপিইউ জব্দ করে নিয়ে যায়। শেষ খবর পর্যন্ত কাওরান বাজারস্থ বিএসইসি ভবনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ভবনেই ‘আমার দেশ’ কার্যালয়। ভবনটির নিরাপত্তাকর্মী সাইফুল ও আতিকুল জানান, ডিবির লোকজন সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই বিএসইসি ভবনের সামনে জড়ো হয়। একসময় পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা ভেতরে ঢুকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সদস্যরা সরাসরি মাহমুদুর রহমানের রুমে ঢুকেন। তখন তিনি নাস্তা করছিলেন। পুলিশ তাকে বলে আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি। তখন মাহমুদুর রহমান তাদের বলেন আমাকে একটু সময় দেন দুই রাকয়াত নামাজ পড়ব। এই কথা বলার সংঙ্গে সংঙ্গে একজন পুলিশ তাকে যা ইচ্ছা তাই ব্যবহার করেন। একপর্যায় বন্দুক তাক করেন। তখন মাহমুদুর রহমান বলেন আমি আপনাদের সংঙ্গে যাব। কেন এ ধরনের ব্যবহার করেন। কি করবেন? গুলি করবেন, করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে নামাজ পড়ার সময় দেয়া হয়নি।
মাহবুব বলেন, মাহমুদুর রহমান আবার পুলিশকে অনুরোধ করে বলেন, আমাকে দুটো বই এবং কোরআন শরীফটা নিতে দেন। এ সময় পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন আপনি পাক পবিত্র আছেন? মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি পাক পবিত্র আছি্ তখন তাকে একখানা ছোট কোরআন শরীফ সাথে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তখন তিনি কোরআন শরীফ ও দুইটি বই সাথে নিয়ে নেন।
এর আগে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পাজামা পড়তে চাইলে পড়তে দেয়া হয় নাই। জুতা পড়তে চাইলেও পারেনি, স্যান্ডেল পড়েই তাকে পুলিশের সংঙ্গে গাড়িতে উঠতে হয়েছে।
মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, মাহমুদুর রহমান একান্ত আলাপে আমাদের বলেছেন, আমার কাছে সংবাদ এসেছে, আমাকে গুম ও হত্যার চেষ্টা চলছে। গাড়িতে তোলার সময় আমাদের উদ্দেশে বলেন, “তোমরা সত্যের পথে এগিয়ে যাও।”
মাহবুব বলেন, “আমি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উপরের নির্দেশেই। আমার দেশে’র সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে জাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতা থাকলে সবই করা যায়।”
সিকিউরিটি সুপারভাইজার আব্দুর রহমান নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “পুলিশ আসলে আমি তাদের বসতে বলি। কিন্তু তারা তা না শুনে আমার মুখে কয়েকটি থাপ্পর ও ঘুষি মেরে বসিয়ে দেয়।”
সরকার এমনই এক সময়ে বাংলাদেশের এই মুহূর্তের সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদ কর্মী, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য একজন কলম যোদ্ধা কে গ্রেফতার করলো, যখন সরকারী দলের একজন নেতার বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদ করছিলেন; এমনকি নিজের আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বাংলাদেশের তৌহিদী জনতার প্রিয় ব্যক্তিত্ব মাহমুদুর রহমানকে সরকার গ্রেফতার করে কোন ফায়দা অর্জন করতে চায় তা সময়ই বলে দেবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সরকার সকল ফ্রন্টে যুদ্ধে নেমে বুদ্ধিমানের কাজ করেনি।
বিষয়: বিবিধ
৩৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন