ভার্চুয়াল জগতে ‘তারেক-জয়’ বিতর্ক
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ মাহবুব হাসান ০৯ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৫৩:৫০ সন্ধ্যা
ফেসবুকে সেদিন একই বিষয়ে বেশকিছু কমেন্ট লক্ষ্য করলাম। তারেক না জয়- ভবিষ্যতে দেশের জন্য কে বেশি যোগ্য! এ নিয়ে তারুণ্যের মাতামাতি। ‘উই নিড চেঞ্জ’- এর স্লোগানধারী তরুণই সবচে’ বেশি পেলাম। বাকশালী কন্যা শেখ হাসিনার ‘সোনাপুত্র’ জয়ের সমর্থনও পেলাম অনেক। আমার ধারণার বাইরে। আর তারেকের সমর্থন পেলাম খুব কম। সেখানে আবার তারেককে ‘দুর্নীতিবাজ’ তকমা লাগিয়ে দিয়েছে তরুণরা। তাই তার রাজনৈতিক দক্ষতার প্রাচুর্য প্রশ্নবিদ্ধ। আমি বিতর্কের প্রায় সমাপ্তি টানতে চেষ্টা করলাম। খানিকটা বাধ্য হয়েই বড়োসড়ো একটা কমেন্ট করলাম। ভাবার্থে যেটা এমন দাঁড়ায় : “জয় ১০০বার জন্মগ্রহণ করলেও তারেকের সমান হতে পারবে না। এদেশের মাটি মানুষের গন্ধ তারেক বোঝে, জয় না। ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগ তারেকের জানা, জয়ের না। খেটে খাওয়া দিন মজুরের ব্যথা তারেকের বুকে বিদ্যমান। তাদের পাশে দাঁড়ানো সক্ষমতাও কেবল তারেকেরই। চেষ্টা করলেও জয়ের পক্ষে পারা সম্ভব না। বিলেত-আমেরিকার যাপিত জীবন দিয়ে, ধর্মকর্ম প্রত্যাহার করে খ্রিষ্টানকে বধূ সাজিয়ে, হুইস্কি-ভদকার মাতলামিতে ড্রাইভিং করে, বাংলাদেশের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি (দৈনিক ‘আমার দেশ’-এ প্রকাশিত) করে শুধুমাত্র মিডিয়ার বদৌলতে পার পেয়ে, দেশে দেশে ‘বাংলাদেশ ও ইসলামবিরুদ্ধ’ কথা বলে- আর যাই হোক বাংলাদেশে রাজনীতি সম্ভব না।
সাম্রাজ্যবাদ উপনিবেশ গোষ্ঠির স্বীকৃত দালাল ওয়ান ইলেভেনের সামরিক জান্তা এবং আওয়ামীলীগ মিলে তারেকের বিরুদ্ধে যতোটা দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে, বর্তমান সরকারের দলীয় বিচারপতিগণ অসৎ আইনজীবীদের মিথ্যের উপর মিথ্যে সাজাতে দেখেও তারেককে দুর্নীতিবাজ বলে রায় দিতে চেষ্টা করে গেছে। যদিও শক্তভাবে সুস্পষ্টকরে কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি।
ভারত ও পশ্চিমাবিশ্ব বেশ কিছু যৌক্তিক কারণেই এদেশে তারেকের মত দেশপ্রেমিক, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী এবং ধর্মীয় চেতনায় বিশ্বাসী কাউকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায়না। তাই তাকে প্রতিরোধে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা শুরু করেছে। জরুরী আমলে তাকে জানে মেরে ফেলতে গিয়েও সফল হয়নি। মিডিয়ার মাধ্যমে এখন তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। সংখ্যায় অধিক আওয়ামী মিডিয়া হাউজগুলো দায়িত্বজ্ঞান করে মহাফুর্তির সঙ্গে সেটা আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সেখানে জয়কে ‘ধোয়া তুলসিপাতা’ প্রমাণের চেষ্টারও কোনো ধরনের কমতি দেখা যাচ্ছে না।”
কবুল করতে দ্বিধা নেই- ফেসবুকের কমেন্টের কথাগুলোকে ব্যাখ্যা করতে করতে প্রায় দ্বিগুন করে ফেলেছি। তবে দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, এটার পক্ষে তেমন সাড়া পাইনি। অবশ্য যে সময়ে ফেসবুক-টুইটারে তরুণরা অভব্য কাজেই বেশি সময় নষ্ট করছে, তখন আমার মতো এক অকিঞ্চিতকরের ‘নীতিকথা’ পড়ার আর সময় কই!
বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হাবিবের সঙ্গেও কথা হলো। সেও দেখি মিডিয়াগুলোর হলুদ সাংবাদিকতার শিকার। তাকে আরো খোলামেলা করে বোঝালাম। বললাম, তারেকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্যি নয়। তারেকের ইমেজ বিনষ্ট করার অপচেষ্টা এটা। তারেকের প্রতি জনগণের যে আস্থা আছে, অগুন্তি মিথ্যের মাধ্যমেও যদি সেটা জনগণের মন থেকে বিদূরিত করা যায়, তাহলেই তো ওদের মতলব হাসিল! বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী কেউ ক্ষমতায় আসুক। এদেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে ধর্মকর্ম করুক- তা ওরা চায় না। আর খালেদার বিকল্প বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তারেক ছাড়া আর কেউই এতোটা উজ্জ্বল অবস্থানে নেই। হোক তা বিশ্বাস, জনপ্রিয়তা কিংবা রাজনৈতিক দক্ষতায়। শুধুমাত্র এই একটা কারণেই তারেকের বিরুদ্ধে এতো এতো প্রপাগাণ্ডা।
আমি আর কথা বাড়াইনি। সম্ভবত হাবিবকে বোঝাতে পারিনি। হাবিব বোঝেনি। বাংলাদেশের জনগণও যদি হাবিবের মতো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদকে সত্য ভেবে বসে থাকে। তার অন্তর্নিহিত সূক্ষ্ম চক্রান্তগুলো অনুধাবনে সক্ষম না হয়। তবে আর দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখে লাভটা কী! শঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে।
শেষ কথাগুলো আমি ফেসবুকেও বলেছি।
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন