বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে ‘আমার দেশ’ এগিয়ে

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ মাহবুব হাসান ১৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৫:৫৯:৫৯ বিকাল





আমি প্রতিদিন সব প্রথম সারির দৈনিক পড়ি। অধিকাংশ সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনও প্রায় আত্মস্থ করে ফেলি। এর ব্যতিক্রমও ঘটে মাঝে মধ্যে; সব পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। সমকালের বেশ আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘মিডিয়া ওয়াচ’। সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দিন। ম্যাগাজিনটির প্রায় সব বিভাগই দেশের প্রথমসারির দৈনিকগুলোয় ছাপানো সংবাদের সমালোচনা দ্বারা সাজানো হয়। সব সমালোচনাই যে অযৌক্তিক বা ভুয়া, তা নয়: বরং অধিকাংশ সমালোচনাই থাকে যুক্তিভিত্তিক, তথ্যনির্ভর ও গ্রহণীয়। জানা দরকার, অযৌক্তিক, মিথ্যে, বানোয়াট, দলীয়করণের ভিত্তিতে ছাপানো সংবাদ কিংবা দেশীয় সংস্কৃতির বিপক্ষ সংবাদ—এসবেরই মূলত সমালোচনা করা হয় এই ম্যাগাজিনে। অতএব, যদি কোনো প্রথমসারির দৈনিক নিয়ে তারা সমালোচনা না করে তাহলে বুঝতে হবে, সে পত্রিকার সংবাদ যথেষ্ট তথ্যনির্ভর, বস্তুনিষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য। দৈনিক আমার দেশ দেশের প্রথমসারির একটি দৈনিক—এ কথা আজ সবাই বলে। আমিও এর প্রবক্তা। তাই যখন কারও এই ম্যাগাজিনে (মিডিয়া ওয়াচ) দেশের প্রথমসারির দৈনিকগুলোর মধ্য থেকে আমার দেশ ছাড়া অন্যসব দৈনিকের সমালোচনা চোখে পড়বে তখন আমার দেশের সংবাদের প্রতি তার আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে—একজন বাস্তবতায় বিশ্বাসীর তো এমনি হওয়া উচিত। ঠিক আমারও দৈনিক আমার দেশের প্রতি এমন ধারণাই সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পুরোপুরি নয়, আংশিক। আমার দেশ-এর সংবাদের সততা, বিশ্বস্ততা ও বস্তুনিষ্ঠতার যে ‘আংশিক’ ধারণা আমি হৃদয়ে লালন করছিলাম, তা যাচাইয়ে খানিক উদ্যমী হয়ে উঠলাম। ফোনও করে বসলাম মিডিয়া ওয়াচের অফিসে। রিসিভ করলো কমার্শিয়ালে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা। তাদের ম্যাগাজিনে (মিডিয়া ওয়াচ) দৈনিক আমার দেশ-এ প্রকাশিত সংবাদের সমালোচনা না লেখার কারণ জানতে চাইলে বললেন, ‘আসলে সমালোচনা করার ইস্যু না পেলে আমরা কীভাবে করব?’ তাহলে কি আমার দেশ-এর সংবাদ এতই বস্তুনিষ্ঠ যে তাদের সংবাদে কোনো ইস্যু পাওয়া যায় না? ফের জিজ্ঞেস করলাম। বললেন, ‘খানিকটা এমনই’। বলেই তিনি থতমত খেয়ে গেলেন। সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দিনের নাম্বার দিয়ে বললেন তার সঙ্গে আলাপ করার জন্য। সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিলাম তাকে। জিজ্ঞাসিলে, ‘আমার দেশকে তো আমি কোনো পত্রিকাই মনে করি না’, কর্কশ গলায় জবাব দিলেন। ফোন রেখে দিলাম। বেশ চিন্তায়ও পড়ে গেলাম এ নিয়ে। দু’জনের দ্বিতাত্ত্বিক তত্ত্ব শুনে। খানিক বাদেই হকার মিডিয়া ওয়াচ (বর্ষ : ১, সংখ্যা : ১৮) ম্যাগাজিনটি নিয়ে এলো। পাতা খুলেই ‘ব্রেকিং নিউজের তাজা খবরের বিভ্রান্তি ও সংবাদপত্রের পরস্পরবিরোধী তথ্য’ শিরোনামে প্রণব সাহার একটি লেখা পেলাম। তিনি লেখাটি শুরুই করেছেন দৈনিক আমার দেশ-এর একটি সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে। লেখাটির ভেতরেও কয়েকবার আমার দেশ-এর কথা উল্লিখিত হয়। পরে আরও কিছু পত্রিকার সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রায় লেখাটির শেষ পর্যায়ে প্রণব সাহা উপরে আলোচ্য পত্রিকাগুলোকে ‘প্রথমসারির পত্রিকা’ বলে একটি শব্দ উল্লেখ করেন ও সংশ্লিষ্ট আরও কিছু কথা লেখেন। কী বলেছেন সেটা আমার উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু ‘প্রথমসারির পত্রিকা’র মধ্যে যে দৈনিক আমার দেশও দাখেল—তা একজন পাগলও বুঝবে। ফলাফল এই দাঁড়াল যে, সম্পাদক সাহেব দৈনিক আমার দেশকে ‘পত্রিকা’ মনে না করলেও তার ম্যাগাজিনের লেখকরা দৈনিক আমার দেশকে ঠিকই প্রথমসারির দৈনিক মনে করেন। বেশ গুরুত্ব দিয়ে তা পাঠও করেন। কেবল সম্পাদক সাহেবের ব্যক্তিগত মতামত যে, তিনি দৈনিক আমার দেশকে ‘পত্রিকা’ মনে করেন না। কিন্তু একজন পাঠক, যে তার কাছে তার পত্রিকার অবস্থান জানতে চেয়েছে তাকে ব্যক্তিগত মত প্রচারের অর্থটা কী? এর দ্বারা তিনি কিই বা বোঝাতে চাইছেন? তাই খালেদ ভাইকে বলব— আমি তো একজন পাঠক ছিলাম মাত্র। একটি দৈনিকের প্রতি আপনার বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব প্রচার করে আপনার কী ফায়দা জুটল? হ্যাঁ, এটুকু লাভ হলো যে, আপনার ব্যক্তিত্বের এপিঠ-ওপিঠ আমার জানা হয়ে গেল। আর একদমই অহেতুক, অযৌক্তিক কারণে একটি দৈনিকের প্রতি আপনার বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ এবং একজন অতি সাধারণ পাঠকের কাছে সেই মনোভাবের প্রচার—দৈনিক আমার দেশ-এর প্রতি আমার ধারণা আরও উঁচুতে পৌঁছাতে বেশ সহায়ক হলো। লাভের বিপরীতে আপনার ক্ষতিই হলো।



দ্রষ্টব্য : লেখাটি আমার দেশ-এর উপসম্পাদকীয় পাতায় ইতোপূর্বে ছাপা হয়েছে। {Click this link} আমার ব্যক্তিগত ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখাটি রচিত। তখন নাঈমুল ইসলামের 'মিডিয়া ওয়াচ' নামে একটা ম্যাগাজিন ছিল। গণমাধ্যম বিষয়ক। চমতকার। ম্যাগাজিনটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছিল।

সরকার বর্তমানে আমার দেশ পত্রিকা এবং এর সম্পাদকের বিপক্ষে যে অবস্থানে গিয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে এটা আবার প্রকাশের দাবী রাখে। তাই ব্লগে প্রকাশ করলাম। তখন আমি ব্লগ চিনতামই না। তাই স্যরি।

লেখাটি আমার অন্যান্য ব্লগেও প্রকাশিত

বিষয়: বিবিধ

১১৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File