স্বপ্নের দেশে কয়েক মুহুর্ত্য (শিশুতোষ গল্প)

লিখেছেন লিখেছেন রাইস উদ্দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৪:৪২:৩১ বিকাল



জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট জাহাঙ্গীর নাহলেও,মনের দিক দিয়ে সে শতভাগ সম্রাট।উদার মন যেন হিমালয়ের মত বিশাল।ছোটদের প্রতি তার অত্যাধীক দরদ।তিনি সর্বদা ভাবেন শিশুদের সূখ দুঃখের কথা।ভেবে অস্থির হন-

আমাদের জীবন তো যন্ত্রের নিগঢ়ে শিকলে আবদ্ধ।মাঠ নেই বিল নেই পুকুর নেই গাছ নেই ছাঁয়া নেই হাওয়া নেই শুধু না পাওয়ার বেদনা।পকৃতি বিহিন জীবন শিশুমনে বিকশিত হতে দেয়না কোন সুকুমার অনুভুতি।তার উপর মাত্রাতিরোক্ত পড়ার চাপ।তার ছোট্ট ছেলে নাম তুহিন,সকাল ভোরে উঠতে হয় এক বিশাল বইয়ে বোঝা কাধেঁচেপে স্কুলে যেতে হয়।স্কুল থেকে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে সামান্য রেস্ট নিয়ে আবার বিকেলে প্রাইভেট সন্ধায় আবার পাঠে মনোনিবেস করতে হয়।স্ত্রী আয়শার ইচ্ছে ছেলে তার ভাল রেজাল্ট করবে,অন্য ছেলেমেয়েদের চেয়ে বেশি নাম্বার পেয়ে তাদের নাম উজ্জল করবে।পিতা জাহাঙ্গীর ছোটবেলার সেই স্মৃতিময় দিনগুলির কথা মনে করে।ভাবে আমাদের সময় তো এত গাদা গাদা বই পড়তে হতোনা!সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকতে হতোনা।বিকেল বেলায় সব ছেলে মেয়ে মিলে দল বেধেঁ কত রকম খেলাই না খেলতাম-গোল্যাছুট,দাড়িয়া বাধাঁ.বউচি,ইত্যাদী ইত্যাদী।এবার ভারাক্রান্ত হদয়ে স্ত্রী আয়শাকে জিজ্ঞেসকরে'

-এই তুমি কি ছেলেটাকে একটু বিশ্রাম করতেও দিবেনা!যখনী দেখি শুধু পড়ার জন্য চাপাচাপি!ছোট্ট মানুষ তারও তো একটা মন আছে!

-তুমি বুঝবেনা!ছেলেকে নিয়ে যদি স্কুলে যেতে তাহলে বুঝতে!জান সেখানে ছেলেমেয়েদের মায়েরা আসেন' কত কি গল্প তোমাকে কি বলবো!কারে ছেলের কজন গৃহশিক্ষক রয়েছে কত ঘন্টা পড়ে,প্রত্যেকের মায়েরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে গর্বকরে বলেন তার ছেলেই এবার ভাল রেজাল্ট করবে।স্ত্রীর কথার যুক্তি খন্ডাতে না পেরে দাতঁ ব্রাশকরতে করতে নদীতে চলে গেল।জাহাঙ্গীরের প্রতিদিনের অভ্যাস সকাল সকাল নদীতে গোসলকরা।

নদীর পানি ঘোলা ভাল

জাতের মেয়ে কালো ভাল,

এ প্রবাদটি এখন আর কার্যত নেই।নদীর পানি আগেরমত যদিও পরিচ্ছন্ন নেই,তবুও সকাল বেলা একটু পরিস্কার থাকে।নদীর পাড়েই হাটবাজার!পারঘেষে পাকাঁঘাট অনেকেই সেখানে গোসলকরে।লূঙ্গী ঘাটের সিঁড়িতে রেখে গোসলের তিন ফরজ আদায় করেডুব দিলেন!ডুব দিয়ে দেখেন এক অজানা রাজ্যে চলে এসেছেন।সুবহান আল্লাহ!একি অবাক কান্ড!এ রাজ্যে কোন বয়স্ক মানুষ নেই।।এখানে এমন শিশুরা রয়েছে যাদের বয়স দশের উর্দ্ধে নয়।সাদা ধবধবে পশমী পোশাকে এদের এত সুন্দর লাগছে অপলক দৃষ্টিতে জাহাঙ্গীর চেয়ে আছে।হায় আলএলাহ এত সুন্দর দেশ চারদিকে সবুজের সমারহ।হাজারও ফলের গাছ নয়নজুড়ানো দৃশ্য!রঙবেরঙের পাখীর কলতান হরেক রকম ফুল ঘ্রানবুকে চেপে যেন তারই অপেক্ষাকরছিল।ফুলের সৌরভে রহস্যময় আলিঙ্গনে স্নিগ্ধকরে তুলেছেপরিবেশ!পকৃতিতে যেন একটা সৌন্দর্য্যের প্রবাহ বইছে।আকাশটা সূউচ্চ শান্ত যেন দিগন্তে মিলিয়ে গেছে।সাদা ঘননীলে পূর্বাকাশেলাল সূর্য্যটা দেখতে এত সুন্দর লাগছে এমন সূর্য্য পৃথিবীতে কখনো দেখেনী জাহাঙ্গীর।স্বদেশের মত সেখানেও রয়েছে অসংখ্য নদী,নদীর পানিএত স্বচ্ছ যে তার রঙ আকাশের নীলীমার সাথে তার রঙ মিলিয়ে গেছে।সে এমন একটি নদীতটে দাড়িয়ে এতসব দৃশ্য অবলোকন করছিলো সে নদীর পাড়ে একটি নৌকা এস ভিড়লো!ময়ূর পণ্খী নৌকার কথা রুপকথার গল্পে কত পড়েছে আজ বাস্তব দেখার সুযোগ সে কিছুতেই হারাতেচাইলোনা।

অতি ধীরে শান্তপায়ে নদীর পাড়ের দিকে এগুচ্ছে।কত কারুকার্য্য খচিঁত সে নৌকা!ময়ূরের মাথার মত সে নায়ের অগ্রভাগ।একজন বয়স্কলোক নৌকার মাঝি।সাদা সাফায়েত দাড়ী সাফায়েত পোশাক এবং পাগড়ীতে তাকে এত অপূর্ব লাগছে সত্যি তা অব্যাক্ত।এই একজন মাত্র বয়স্ক লোক দেখা গেলো।সাথে কয়েকজন শিশু রয়েছে।এটা জান্নাত তো নয়!অপলক চেয়ে আছে জাহাঙ্গীর।

এখানকার শিশুরা কত সুন্দর,মুক্তবাধাবন্ধনহীন।পড়ার চাপ নেই কোন কিছুরই বাধ্যবাধকা নেই।কেউ তাদের সাথে রুঢ় আচরণ করেনা!তারা শোনেনা কার কটুকথা।পানাহারের কোন চিন্তানেই, পকৃতি নিজেই তাদের আহার জোগায় অকৃপণভাবে।হঠাতএকটা শিশূএসে জাহাঙ্গীরের হাতধরে ময়ূরপণ্খী নায়ের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।জাহাঙ্গীর ভাবছে শিশুটি আমাকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়?বাঁধা দিতেই অবচেতন থেকে চেতন হলেন।তাত্খনিক সে তার পূর্বের অবস্থানে ফিরে এলেন।দেখছেন পূর্বের মতই সকলে গোসল করছে,কেউ কাপড় কাচ্ছে,কেউ আবার গোসল সেড়ে লুঙ্গী পড়ছে।জাহাঙ্গীর যেনো এখনো সেই জগতেই রয়েগেছে।এখনো সেখানকার সূগন্ধী যেনো তার সারা শরীরে লেগে আছে।সে নিরব নিথর হয়ে ভাবছে তার সাথে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কথা কেউ বিস্বাশকরবে না।এসব কাউকে বলাও ঠিক হবেনা।এ ঘটনা তো রাসু সঃ এর মেরাজের ঘটনার মতই অবিস্বাশ্য।কতক্ষন দাড়িয়ে ভাবলেন তারপর বাড়ী গেলেন।এর পর থেকে এবিষয়টি তার চিন্তার জগতে ঘোরপাক খাচ্ছিলো।এভাবে বছরখানেক কেটে যায় তার পর হঠাত্করেই সে তার স্বপ্নের দেশে চলে যান।

যবনিকা

বিষয়: বিবিধ

১২৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File