হে আল্লাহ আরকত পরিক্ষা নিবে মজলুমদের?
লিখেছেন লিখেছেন রাইস উদ্দিন ২৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৩:৪৯:৩৭ দুপুর
৯৪হিজরীর সনের কথা,ইসলামী ইতহাসের নিকৃষ্টতম ব্যক্তি হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ প্রখ্যাত তাবেয়ী সাঈদ'ইবনে জুবায়র আল-ওয়ালিয়ীকে নির্মম ভাবে সাহীদ করে।কারন তিনি তার জুলুমের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন।তাকে গ্রেপ্তারের পর যখন বদ্ধ ভূমির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তার ঠোঁটে হাসি শোভা পাচ্ছিল"একজন হাজ্জাজকে বললো সাঈদ হাসছেন।হাজ্জাজ তাকে থামিয়ে ফিরিয়ে এনে জিঙ্গেস করলো'
- আপনি হাসছেন কেন? সাঈদ দৃঢ়তার সাথে বললেন'
- আমি হাসছি সর্বশক্তিমান রবের বিপরিদে তোমার দুঃসাহস দেখে এবং তোমার বিপরিদে তাঁর ধর্য্য ও সহনশিলতা দেখে।
সাথে সাথে হাজ্জাজ হত্যার চামড়া বিছানোর আদেশ দেন এবং কতলের ইশরাকরেন,অতঃপর নির্মম ভাবে তাকে কতল করাহয়।মৃর্তুর পূর্বে দুরাকাত নামাজ পড়তে চাইলে তাকে বলা হয় যদি পূর্বদিকে ফিরে পড়তে রাজি হোন তাহলে পড়তে পারেন।তিনি কোরানের ঐ আয়াত তেলাওয়াত করলেন"পূর্ব পশ্চিম যেদিকেই মূখফিরাও না কেন সবদিকেই আল্লাহর মূখ দেখতেপাবে।তিনি পূর্ব দিকে মূখকরে নামাজ আদায় করলেন এবং দোয়া করলেন' হে আমার প্রভু!আমার মৃত্যুর পর আর কাউকে হত্যাকরার সুযোগ তুমি তাকে দিওনা।
ইতিহাস বলে হাজ্জাজ এর পর থেকেই মস্তিষ্কের রুগে পাগল হয়ে মৃত্যু বরন করে।আজ যখনই আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর কথা ভাবি তখনই সেই বিখ্যাত তাবেয়ী সাঈদ রঃ এর কথা মনে পরে যায়।হাজ্জাজ জাহান্নামে অবশ্যই পৌছে গেছে,ভাবছি এই যুগের নব হাজ্জাজদের কি হবে?যদি সাঈদী সাহেব সহ আলেম উলামাদেরকে জালিম সরকারের দ্বাড়া একট বড়ধরেনর ক্ষতি সাধিত হয় তাহলে জাতি হিসেবে আমরাও এর দায়মুক্ত হতে পারবোনা।মনে রাখা আবশ্যক'সেই জাতি আল্লাহর গজব থেকে আত্মরক্ষা করতে পারেনা যে জাতি ইতিহাস থেকে শিক্ষানেয় না।
মজলুমের দোয়া আল্লাহর দরবারে খুবই দ্রুত পৌছে যায়।মুহতারাম মাওলানা তার ছেলের জানাজাতে এসে যে দোয়া করেছেন তা অবশ্যই কবুল হবে।
মহানবী সঃবলেন'মজলুম জালিমের বিরোদ্ধে বদদোয়া করলে,তাকে মেঘের উপর উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তারজন্য আসমানের দরজা খুলে দেওয়াহয়,অতঃপর আল্লাহ বলেন'বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করবো।আজ জাতীয় ভাবে আমরা বড়ই অভগা।জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জালিম সরকার লাঞ্চিত করছে আর আমরা একটু প্রতিবাদ করতে পারছিনা।জালিমদের চিন্তাকরা উচিত যে ব্যাক্তি
পঞ্চাশ বছর ধরে কুরআনের তাফসীর করে আসছেন সেই ব্যক্তি কি করে নারী ধর্ষণ করতে পারে!বাংলাদেশে সাঈদী একজনই দ্বিতীয় কোন সাঈদী নেই।হাজার হাজার মানুষ তার কন্ঠ ও স্টাইল অনুসরণের চেষ্টা করেন।তবে সাঈদীর তুলনা তিনি নিজেই। যারা তাঁকে চিনেনা, তারা সত্যিই হতভাগা। এমন সোনার মানুষকে আমরা কষ্ট দিচ্ছি।আল্লাহর গযব কখন যে নাযিল হয়, তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।তিনি বাংলাদেশের সূর্য সন্তান।এদেশকে তিনি অনেক দিয়েছেন।আলোকিত হয়েছে তার দ্বারা অসংখ্য পথহারার মানুষ। তিনি মানুষকে দিয়েছেন সত্য পথের সন্ধান। যাকে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করা ও স্বীকৃতি দেয়া উচিতছিল!আফছুস তা নাকরে তাকে মিথ্যাবদনাম দিয়ে জেলপুরে রাখা হয়েছে,বিচারের নামে প্রহসন চলেছ।তিনি এ জাতির গৌরব।একদিন হয়ত বাঙ্গালী জাতি আফসুস করবে সাঈদীর জন্য।সেদিন হয়ত তিনি থাকবেন না।আল্লামা সাঈদীর নাম শুধুমাত্র বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়!তিনি মধ্যপ্রাশ্চ্যসহ পাশ্চাত্যের সব গুলো দেশে পরিচিত।বিশ্বে ইসলাম বিরোধী চক্রের ষরযন্ত্রের বিরোদ্ধে রুখে দাড়ানো এবং তাদের ষড়যন্ত্রে মুকাবেলায় সবাইকে সচেতন করেন বিধায় পশ্চিমা বিশ্বেও তিনি আলোচিত সমালোচিত হয়েছেন।
তিনি তার বক্তৃতায় ইসলামের পূর্ণাঙ্গরুপ তুলে ধরেন।তার বক্তৃতায় কোন কিচ্ছাকাহিনী স্থান পায়না।তিনি বক্তৃতা ও তাফসির করে বিশ্বে শ্রেষ্ঠতম আলেমদের মধ্যে অনন্য কৃতিত্ত্ব কুড়িয়েছেন।মানজীবনের প্রত্যেকটি বিভাগ তার আলোচনায় স্থান পেয়েছে।যেমন ইহজীবনে- সামাজিক অর্থনৈতিক,শিক্ষানিতী,রাজনৈতিক এবং মানুষের পারস্পারিক সূসম্পর্কর প্রতি তিনি পথনির্দেশ করেছেন।
রাজনৈতিক আলোচনার জন্য তিনি একশ্রেনীর আলেমদের বিরোধীতার রুষানলে পরেছেন,অথচ দেখা গেছে ঐ আলেমগণ কোন না কোন ইসলমবিরোধী আর্দশবাহী দলের সমর্থক।ওদের মত যদি এই মহান ব্যাক্তিটি নিজের স্বার্থচাইতেন তাহলে তিনি কি না পেতেন?তিনি মনে করতেন শত্রুতা,হিংসা বিদ্বেষের বশবতি না হয়ে ইসলামী আর্দশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির কিভাবে উন্নয়ন হয়এমন গঠনমূলককাজকরাই জাতীয়জীবনের মূল ব্রত হওয়া অত্যাবশক।
তিনি যদি ঐ সমস্ত স্বার্থন্নেষী আলেমদের মত সময়ের স্রুতে গাভাসিয়ে দিয়ে স্বার্থ হাসিলে স্বচেষ্ট থাকতেন তাহলে কতবার মন্ত্রীহতে পারতেন।অর্থবৈভব প্রতিপত্তি তার চারপাসে আনাগুনা করতো।কিন্তু তিনি তা আদৌ চাননি।আল্লাহর রাহে কোরানের জন্য নিজেকে উত্সর্গ করেছেন।সময়ের শ্রুতে যারা গাভাসিয়েদেন তাদেরকে বলা হয়; ইবনুল ওয়াক্ত"সময়ের সন্তান।তিনি দুঃখ দৈন্যের সময়ও যথাস্থানে অটল ও স্বকীয়তাবজায় রেখে দুনিয়ার জন্য নমুনা বনেগেছেন হয়েছেন সম্মানের অধিকারী।আজ এই মহান সিংহপুরুষ অসুস্থতায় ভুগছেন-আমাদেরউচিত একজন মাজলুমকে মিথ্যা অপবাদ না দিয়ে তার সুস্থ্যতার জন্য সকলেই আসুন কায়মনে তাঁর জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করি;
হে আল্লাহ, তুমি এই মানুষটাকে আর কষ্ট দিও না।
এই মজলুম মানুষটি বড় মানসিক চাপে আছে। কয়েক মাস আগে মা মারা গেল। মা মহামান্য আদালতকে বলেছিলেন, "আমার মৃত্যুর আগে যেন আমি আমার ছেলেকে দেখতে পাই।" সাঈদী সাহেবের মায়ের সেই কষ্টমাখা চাওয়াটা সরকারের পক্ষপাততূষ্ট আদালত বুঝল না। অবশেষে মায়ের মৃত্যু হল। মাত্র কিছুটা সময়ের জন্য জেল থেকে বের হতে পেরেছে ঠিক; মায়ের জানাযা নিজে পড়ে মাকে নিজের হাতে কবর দিতে পারলো না। কি কারণে নিজের মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-মুসলিম ভাইদের থেকে আলাদা হাসিনা সরকারের খোয়াড়ে বন্দি থাকতে হল, আমি সাধারণ মানুষ রাজনীতি কিছু না বুঝলেও আঁচ করতে পারছি যে কি কারণে তাঁর এমন বেহাল দশা। এক হল তিনি বার্ধক্যে উপনিত হয়েছেন। আবার তার উপর টর্চারিং। চলছে মিথ্যা অপবাদ। চলছে হুমকি-ধমকি।কতভাবে যে নির্যাতন হতে পারে তা আজ জাতি প্রত্যক্ষ করছে।
আমি বিশ্বাস করি, ইতিহাস স্বাক্ষি; মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদেরে পৃথিবীর বেহায়া-বেয়াদবদের দ্বারা লাঞ্চিত করেন না।সাময়িক কিছুটা কষ্ট হলেও অবশেষে মুর্খ বেয়াদবদের অপমানজনক কাজের মাধ্যমে সেই প্রিয় বান্দার মুক্তি এবং মুসলিমদের ইজ্জত বৃদ্ধি করেন। তাই আমিও আজ তাঁর কাছে হাত পাতছি, তিনি যেন মাওলানা সাঈদীসহ সম্মানী গন্যমান্য ব্যক্তিদের আওয়ামী সরকারের পোড়া হাত থেকে বাঁচিয়ে বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মুসলমানদের মনের যথার্থ প্রশান্তি এনে দেন।
আবার কয়েকমাস হল সাঈদী সাহেবের বড় সন্তান তাঁকে দেখতে না পাড়ার শোকে ইন্তিকাল করেছেন। তিনিই আবার সেই একই যায়গায় সেই মায়ের মত করে জানাযা পড়ে জেলে ফিরেছেন। আদরের ধন, কলিজার টুকরা সন্তানকেও তিনি নিজ হাতে মাটি দিতে পারলেন না। চোখ, মন, হৃদয়, ভালবাসা আর সহ্য করতে পারে না। সকল ব্যাথায় শরীরের, হার্টে রক্তক্ষরণ চলছে সারাক্ষণ।এমন পরিস্থিতিতে যারা মাওলানা সাঈদীকে কটাক্ষ্য করছে, আর আমাদের মনে কষ্ট দিচ্ছে তাদের জন্য আজ লা'নতের দোয়া করছি;
হে আল্লাহ, তুমি মাজলূমের পক্ষে থাক।আর যারা তোমার কুরআনকে অবজ্ঞা করে, কুরআনের অনুসারীদের অবজ্ঞা করে, ঘৃণার চোখে দেখে, তারা একেবারেই নিম্ন মানসিকতার লোক।তুমি এসব মুর্খদের দ্বারা আর অযাচিৎ পরিস্থিতির সৃষ্টি করো না।মনেবড় ব্যাথা নিয়ে বলছি তুমি তাদের হেদায়েত দাও নতুবা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দাও।আর ইসলাম প্রিয়দের শক্তি বৃদ্ধি করো, যেন জালেমদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয়। সব শেষে মাওলানা সাঈদীকে তুমি ইসলাম বিজয়ের পূর্বে দুনিয়া থেকে নিও না। লোকটা সারা জীবন তোমার কথাই আমাদেরকে শুনিয়ে গেছেন। আর কেউ না হোক, আমি নিজে তাঁর সাক্ষী হয়ে তাঁর জন্য মাগফেরাতে কামনাকরি, তুমি তাঁকে সুস্থ্য করে, তথা কথিত যুদ্ধাপরাধীর মামলা থেক মুক্তি দিয়ে আবার আমাদের মাঝে কুরআনের আলোচনা করার যথাযথ সুযোগ-তৌফিক দাও।
শেষে সম্মানিত বিচারকবৃন্দের প্রতি কয়েকটি হাদীস উপাস্থাপন করে শেষ করতে চাই,তিনারা যদি মুসলিম হোন তাহলে রাসুলসঃএর এই হাদিস সুমহের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধারেখে আমল করবেন বলে আশা রাখি।
রাসুল সঃ বলেন'তিন শ্রেনীর বিচরক,(১)প্রথম শেনী জান্নাতে যাবে;যারা স্বজ্ঞানে সঠিক বিচারকরে।(২)দ্বিতীয়টিজাহন্নামে যাবে;যারা জেনশুনে অন্যায় রায় প্রদান করবে।(৩)তৃতীয় শ্রেনী ও জাহান্নামে যাবে যারা অভিজ্ঞনয় আন্দাজে ফায়সালা দেয়।
(ইবনে আজা,আবুদাওদ)
মহানবী সঃ বলেন'তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবেন-(১)ন্যায়পরায়ণ বাদশা(২)দয়ালু ব্যক্তি(৩)যে ব্যক্তি অন্যায়কারীকে ক্ষমাকরে (দেয়।মুসলীম)
বিষয়: বিবিধ
১৯১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন