দেহমোহর (যাকাত নিয়ে....)
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ১৯ জুলাই, ২০১৪, ০৬:৩৮:৪৪ সন্ধ্যা
...অফিসে বসে আপন মনে সিয়াম ভবছে কাজের ফাঁকে ফাঁকে।মনের ত বিশ্রাম নেই ।একটু বিরতি পেলেই মন উকি দেয় ডানা মেলে আপন ভুবনে।আজ হুট করে ভাবতে বসেছেঃ কি কি অন্যায় সে করে এসেছে পরিবাবের সকলের সাথে তুবার সাথে।আচ্ছা রমজান মাসটা এমন কেন খালি মনে হয় আচ্ছা ঐ কাজটা ভুল ছিল কেন করেছিলাম।আচ্ছা ওকে বকা দিয়েছি কেন ক্ষমা চাওয়ার দরকার ছিল চাওয়া হয়নি।
আচ্ছা এখন ত ভর দুপুর হয়ত রান্না নিয়ে ব্যস্ত তুবামনি ঘরের এপার থেকে ওপার ছোটাছুটি চলছে ।হুট করে ফোন দিয়ে বলব
'আমার সকল ভুলের জন্য
যদি ক্ষমা চেয়ে নেই তোমার কাছে তাহলে কেমন হয় বলত? ক্ষমা করে দিবা।'
আচমকা ভয় পেয়ে কেঁদে ফেলবে মেয়েটা। এই কথা ভাবনায় উঁকি দিতেই
সিয়াম আপন মনে হেসে উঠল।বাচাধন তুমি বহুত পাগলামী কর এখন আমার পালা।রোযা মাসে ক্ষমা চাওয়ার উত্তম সময়।
কিন্তু চেহারাটা ত দেখা যাবে না মোবাইলের ওপারে বেচারীর চেহারায় কিসের মায়া পড়ে দেখা দরকার।
ভাবতে ভাবতে মোবাইল বেজে উঠল চমকে ওঠে ফোনের দিকে হাত বাড়াল সিয়াম।
আরে জুয়েলার সামিমের ফোন ।আজকাল কোটি পতি দোস্তরা স্বরণ করে দেখা যাচ্ছে।সেই বিয়ের সময় কথা হয়েছে তাও অনেক দিন হল...
<আসসালামুআলাইকুম
হ্যা সামিম বল?
>ওয়ালাইকুমআসসালাম ,দোস্ত ভাবি এসেছিল (কোন ভনিতা ছাড়ায় দ্রুত বলছে ) বুচ্ছিস সকালের দিকে পাঁচ ভরি গলার হার আমার হাতে দিয়ে বললঃভাই এটার দাম কত হতে পারে?আচ্ছা তুই কি জানিস?
এসব পাগলামী করছে কেন ?
(যদিও সিয়াম জানে না তাই চুপ করে শুনে যাচ্ছিল)
<হুমম বল ত কি হয়েছে।
>আসলে ভাবিকে জিঞ্জাস করলাম যাকাত দিব কিভাবে।
ওনি যা একটা আইডিয়া দিলেন না দোস্ত ।
<তাই নাকি ।কি বললেন ?
>ভাবছিলাম দুই লাখ টাকার শাড়ি কিনে গ্রামে
দারিদ্র মানুষকে বিলি করব।
ভাবি বললেনঃ
এত কষ্ট করে শাড়ি কিনবেন অতঃপর মানুষের হাতে হাতে দিবেন এটা যেমন কষ্টের তেমনি অনেক সময় অপচয় ।
আবার বছরের পর বছর ত এই প্রক্রিয়ায় দিচ্ছেন কি মনে হয় আপনার গ্রামে আর গরিব মানুষ নাই।
আমি বললাম কি যে বলেন ভাবি দারিদ্র কি এভাবে দুর হবে একটা শাড়ি আর লুঙ্গি দিয়ে।
অতঃপর উনি চৌদ্দ বংশের খোঁজ নিয়ে খুঁজে বের করে দিলেন দুজনকে চাচী আম্মা আর দুরসম্পর্কের মামা
বুঝিয়ে দিলেন আরেকটু টাকা যোগ দিয়ে তাদের এমন কিছু যানবাহন বা দোকান করে দিন ।যাতে স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারেন তারা ।আর যাতে শেষ পর্যন্ত কার কাছে যেন হাত পেতে নিতে না হয় ।খুব ভাল লাগল আইডিয়াটা বুচ্ছিস।
<সবি ত বুঝলাম দোস্ত তাহলে আমাকে কেন এই কাহিনীর মধ্যে ঢুকাচ্ছ ।
>দোস্ত ভাবি সম্ভবত একা নন আরও কয়েকজন ভাবি মিলে ২০ বা ২৫ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করে যাকাত দিবেন।
<(এবার স্পষ্ট বুঝেছি মনে মনে ভাবে সিয়াম)
হুম তাহলে আমি কি যেন করব দোস্ত।
>তুই যদি আমার দোকানে সবগুলো বিক্রি করার জন্য বলতি ।
<ও আচ্ছা এই ব্যাপার ।দোস্ত কি যে বলি তোকে এটা নারী মহলের ব্যাপার তাছাড়া এক্ষেত্রে আমার কথা কি আদৌ বলা উচিত হবে ।তুই কি বলিস?
>আচ্ছা পাগল ত তুই ।তোর ঘরে থেকে তোর জিনিস বিক্রি করবে ,আর তুই সামান্য পরামর্শ দিতে পারবি না।জানিস বাজারে স্বর্ণের মূল্য কি ?
<হুম জানি ত ।তবে জান্নাতের চেয়ে যে মূল্যটা নিতান্ত কম তা তোর দুনিয়ামূখী চিন্তা দেখে বুঝতে পারছি।
তবে একটা কথা বলি তুই বললি আমার ঘর মোটেও না বরং বল ওটা ত ওর ঘর দয়া করে আমাকে ঢুকতে দেয় এই আর কি।বাসাটা হয়ত আমার কেনা কিন্তু ওরই ।আর হ্যা আমার জিনিস বলছিলি ওর দেনমোহরে আমার কোন হক নেই ।এখন ও বিক্রি করবে নাকি যাকাত দিবে তাতে আমার কোন অধিকার নেই।
তবে আমি অবশ্যই পরামর্শ চাইলে বলব যাতে তোর ওখানে বিক্রি করে।
>তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে সংসারটা দারুণ সুখের জায়গা।
<হুম, এক টুকর জান্নাত বলতে পারিস ।
>থাক দোস্ত ভাবিকে কিছু বলিস না।তোকে অনুরোধ করছি ।দুনিয়ার মোহে অন্ধ হয়ে নিজের সন্মান টুকু বিলিয়ে দিচ্ছি দেখ কি বোকা আমি।ওনি যেখানে ভাল মনে করেন সেখানেই বিক্রি করুন।
সিয়াম বেশ অবাক হয়ে ফোন রাখল মানুষের মনকে কত দ্রুত পরিবর্তন করে দেন সৃষ্টিকর্তা।
তবে সিয়াম উল্টো অবাক হল ।এবার মেয়েটা জিতে গেল।
গল্পের শেষে কিন্তু তুবা গয়না বিক্রি করেছিল সিয়ামকে নিয়ে ঐ বন্ধুর দোকানেই।অতঃপর ওরা তিনজন মিলে রিক্সা ,ভ্যান, হাত মেশিন ,ছোট্ট মুদির দোকান করে দিবে ।এ নিয়ত করে ছয়জন হত দারিদ্র ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে।তিন জন ব্যক্তিকে দিয়ে ছয়জন ব্যক্তির দারিদ্র মোচন হল।দেখতে দেখতে এভাবে পুরো দেশ একদিন দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্তি পাবে ।ইনশাআল্লাহ#নতুন_মস
বিষয়: বিবিধ
১৯৪০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন