'আগন্তুক- পর্ব(১)'
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:০৭:৪৪ রাত
আগন্তুক(খুব বয়স্ক ভদ্রলোক)-আসসালামুআলাইকুম..
শুনুন।
-হকচকিয়ে... আমাকে বলছেন।
আগন্তুক-
জ্বী আপনাকে বলছি ম্যাম।আপনি?
-আমি নতুন এসেছি এ শহরে (রূঢ় কন্ঠে)।
আগন্তুক-জ্বী
একদম আমার কাছে তাই মনে হচ্ছিল।কেমন লাগছে এই শহর...
-মনে হচ্ছে কোন অন্ধ কুয়ার মধ্যে ভুলে ঢুকে পড়েছি।অদ্ভুত!!!
আগন্তুক-তাই নাকি।
তা কেন?
-এখানে নারীরা থাকে কিভাবে?
এভাবে অমানবিক অত্যাচার।
আগন্তুক-(ভয়ানক অবাক)আপনি একটু বুঝিয়ে বলবেন ম্যাম অনুগ্রহপূর্বক।
-এরা সব কাপড় দিয়ে নিজেকে ঢেকে রেখেছে। কি অবস্থা আল্লাহ?এই রূপ পুরুষ শাসিত সমাজ।নারী স্বাধীনতার উপর হাত।
আপনারা কি মানুষ?
আগন্তুক-আল্লাহ।সত্যিই কি আপনি আল্লাহকে ডেকেছেন?একটু অবাক হলাম যে ম্যাম।
-কি বলতে চাচ্ছেন?
আমি একজন মুসলমান নারী।আল্লাহ আমার সৃষ্টিকর্তা।
আগন্তুক-আলহামদুলিল্লাহ..
খুব ভাল লাগল মা।খুব চমত্কার উত্তর দিয়েছেন আপনি।
দুঃখিত আপনার অনুমতি না নিয়েই মা ডেকে ফেললাম।
অনেক চমত্কার না ভোরের আলোটা।
-হুমম..খুব ভাল লাগছে।এ যেন প্রশান্তির আলো।আমি উঠতে পারি না ভোরে।
আগন্তুক-অভ্যাস বুচ্ছেন মাগো অভ্যাস।আমরা ভয়ানক অভ্যাসের দাস।
সেই ছোট্ট বয়স থেকে বাবার হাত ধরে ফজরের নামাজ পড়ি।তারপর হাটতে বের হতাম।অপর দিকে মা আর বড়পা নামাজ পড়ে হাটতে বের হতেন।অতঃপর একত্রে আমরা ভোরের আলো ছুঁয়ে ঘরে ফিরতাম।
-কি চমত্কার স্মৃতি আপনার!একদম হৃদয় ছুঁয়ে গেল।আর আমার বাবা মা ৯টার সময় ঘুম থেকে উঠেই অতঃপর অফিসে দুজনই চলে যেতেন।
আগন্তুক-দীর্ঘঃশ্বাস।এটাই ত যুগের হাওয়া।আপনি ত এ শহরে এসেছেন।কোন উদ্দেশ্য আছে মা।
-বলতে গিয়েও দ্রুত প্রশ্ন ঘুরিয়ে ফেলে..
আচ্ছা আপনারা কেন নারীদের এত ঢেকে রেখেছেন বলুন ত।
মায়া হয়না আপনাদের একটুও এই অবলা নারীদের জন্য।
আগন্তুক-মাগো একটা কথা বলি।আমি নিজেই এত বয়স্ক একটা লোক খুব অপ্রস্তুত হয়ে যাচ্ছি।
-না না সমস্যা নেই।
আপনি বলুন দাদাভাই।আপনার আচার-ব্যবহার আমাকে খুব অবাক করেছে।অনেক সুন্দর।
আগন্তুক-আমার নোংরা চাদরটা একটু গায়ে জড়িয়ে নিবেন মাগো।তাকাতে সমস্যা হচ্ছে।চোখের বড়ই খারাপ একটা দৃষ্টি আছে মা।
-মেয়েটা একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়।এই প্রথম সম্ভবত।এমন করে হঠাত্
কখনই ঘটেনি।তাই ত
টিশার্ট পরা ছিল।ও ত
গেন্জি,ফতুয়া আর কামিজ অথবা পাতলা শাড়ি পড়ে ঘুরতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।নারী স্বাধীনতার প্রথম ধাপই ত পোশাক যতটা খোলামেলা হয়,আরামদায়ক হয়,ততটা নিজেকে অন্যের চোখে গুরুত্বপূর্ণ রূপে প্রস্ফুটিত করাই ফ্যাশন।নিজেকে সন্মানিত ভাবতে শেখা।
বৃদ্ধ একজন মানুষ তাকে কেন এত দ্বিধার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।আশ্চার্য! টুক করে চাদর নিয়ে গায়ে জড়িয়ে ফেলল ও।অপ্রস্তুত মুহুর্ত্বটি লুকাতে
আগন্তুককে বলল চলুন ঐ সমুদ্রের পারে গিয়ে বসি।নিজের ব্যক্তিগত দুবর্লতা অন্যের কাছে প্রকাশ করতে নেই।এ পৃথিবী এই পয়েন্টে নারীদের দূবর্ল ভাবতে শিখেছে।
অতঃপর..
আগন্তুক তার লাঠিতে ভর করে আস্তে আস্তে হেটে হেঠে সামনের
ঐ বিশাল নীলসে জলের সৈকতের পথে যাচ্ছে।
পিছনে অবাক বালিকা হাটছে।
(চলবে)
(আলহামদুলিল্লাহ একটা নতুন গল্প লিখছি।সকলের দোয়াপ্রার্থী।)
#নতুন_মস
সূর্যবাড়ি
বিষয়: বিবিধ
১১৪১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন